বল তুই আমার | পর্ব -৩

রুম থেকে বাহিরে এসে তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। আমাদের বাড়ীতে এত মানুষ এসেছে কেনো? আমি কলেজে যাওয়ার জন্য রওনা দিচ্ছি তখনি বাবা বলে।
বাবা:- আলিফ কোথায় যাচ্ছিস?
আলিফ:- কলেজে যাচ্ছি।
বাবা:- আজকে যেতে হবে না। রাত্রিকে দেখতে ছেলে পক্ষ এসেছে ঐ যে ম্যারোন কালার সাট পড়া ছেলেটা পাত্র। তুই গিয়ে ওদের সাথে বসে কথা বল তোর মা রাত্রিকে সাজিয়ে নিয়ে আসছে।
আলিফ:- বাবা রাত্রির এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবার কি দরকার?
বাবা:- দরকার আছে এখন তোকে যা বলি তুই সেটা কর। আমি মন মেজাজ খারাপ করে গিয়ে সামনে বসেই একটা হাসি দিয়েছি। ছেলেটা তো মাশাল্লাহ তবে আমার কেনো জানি ভালো লাগছে না। তবে নিশ্চিৎ রাত্রিকে দেখে পছন্দ করবে।
আলিফ:- আপনার নাম কি?
ছেলে:- রনি।
আলিফ:- তা কি করেন আপনি মানে জব না বিজনেস?
রনি:- জব।
আলিফ:- ভালো তা কোন কম্পানিতে?
রনি:- রাত্রি গ্রোপে।
আলিফ:- মানে আমাদের কম্পানিতে?
রনি:- হ্যা! তখনি মা রাত্রিকে নিয়ে এসেছে। রনি তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। আমার কেনো জানি খারাপ লাগছে তাও বসে বসে সহ্য করছি।
বাবা:- মা রাত্রি রনিকে আমাদের বাড়ীটা একটু দেখাও তো।
রাত্রি:- ঠিক আছে। রনিকে নিয়ে চলে গেছে আমি তো অবাক রাত্রিও কি তাহলে রনিকে পছন্দ করছে? করুক তাতে আমার কি আমি তো রাত্রিকে বিয়ে করছি না। অনেকক্ষণ হয়ে গেছে ওরা গেছে এখনো আসেনি আমার কেমন জানি ছটফট লাগছে। প্রায় ৩০ মিনিট পরে বেড়িয়ে এসেছে।
আলিফ:- এই তুই এতক্ষন কি করছিস?
রাত্রি:- মানে তুমি এমন করছো কেন?
বাবা:- এই আলিফ কি হয়ছে এমন করছিস কেনো?
আলিফ:- আমার ভালো লাগছেনা আমি কলেজে যাচ্ছি বলে বেড়িয়ে গেছি। বাইকটা নিয়ে এসেছি কলেজে রিপাকে খোঁজে বের করেছি। রিপা তোমার মোবাইলটা বন্ধ কেনো গতকাল কোথায় ছিলে?
রিপা:- কাজ ছিলো আর গতকাল আপুর বিয়ে ঠিক হইছে আমি অনেক ব্যস্ত ছিলাম।
আলিফ:- চলো আজকে আমরা ক্লাস করবোনা আমরা কোথাও গিয়ে বসে আড্ডা মারবো।
রিপা:- না আলিফ আমার ভালো লাগছেনা আমি ক্লাস করবো বলে রিপা ক্লাসের দিকে ছুটে গেছে। রিপার সাথে আমার দুই বছর যাবৎ সম্পর্ক রিপা কখনো এমনটা করেনি কিন্তু এই কিছু দিন যাবৎ রিপার মাঝে কেমন একটা পরিবর্তন লক্ষ করছি। আমিও রিপার সাথে ক্লাসের দিকে গেলাম।
আলিফ:- চলো রিপা আমরা ঐ পাশে বসি?
রিপা:- আলিফ এমন করছো কেনো?
আলিফ:- কি করছি?
রিপা:- তুমি যেখানে খুশি সেখানে বসো আমাকে বলছো কেনো কোনায় গিয়ে বসতাম। তখনি সবাই আমার দিকে তাকিয়েছে। আমি তো অবাক রিপার এমন ব্যবহারে। আমি চুপচাপ বেড়িয়ে এসেছি কোনো কথা বলিনি মন খারাপ করে ক্যাম্পাসে বসে রইলাম। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারছি কেউ এদিকে আসছে পেছনে তাকিয়ে দেখি রাত্রি এসেছে।
আলিফ:- রাত্রি তুমি কেনো এসেছো?
রাত্রি:- ছেলেটা অনেক ভালো আমাকে নিজে ড্রাইব করে দিয়ে গেছে।
আলিফ:- তো আমি কি করবো?
রাত্রি:- তা এখানে বসে আছো কেনো?
আলিফ:- এমনিতেই তুই যা আমাকে একা থাকতে দে মন ভালোনা। তখন রাত্রি আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে উঠিয়েছে। রাত্রি টেনে আমাকে বাহিরে নিয়ে এসেছে। আমি চেয়ে দেখি রিপা একটা ছেলের সাথে বাইকে করে যাচ্ছে।
রাত্রি:- রিপা আজ অন্য ছেলের সাথে যাচ্ছে কেনো?
আলিফ:- চল ফলো করি বলে রাত্রিকে নিয়ে পিছু পিছু যেতে লাগলাম। অনেকটা দুর যাবার পরে চেয়ে দেখি একটা শপিং মলে গেছে। আচ্ছা ওরা এখানে আসছে কেনো?
রাত্রি:- আমি কি করে বলবো চল গিয়ে দেখি। রিপাকে ফলো করতে লাগলাম চেয়ে দেখি রিপাকে ছেলেটা অনেক কিছু কিনে দিচ্ছে আর রিপাও খুশি মনে নিচ্ছে। আমি অবাক দৃষ্টিতে দেখছি। অনেক্ষন ফলো করেছি। যখনি রিপা ছেলেটার হাত ধরে বেরুচ্ছে তখনি আমি গিয়ে রিপার সামনে দাঁড়িয়েছি।
আলিফ:- রিপা তুমি এত অল্প সময়ে এতটা পরিবর্তন হয়ে গেলে বাহ রিপা বাহ।
রিপা:- আলিফ সরি আমার সাথে তোমার আর কোনো রকম সম্পর্ক নেই। তখনি রিপাকে ঠাসস করে একটা থাপ্পড় দিয়েছি রিপাকে ঐ ছেলেটা ধরেছে।
ছেলে:- তোর এত বড় সাহোস?
রাত্রি:- ঐ তুই করে বলছিস কেনো? আলিফ রিপাকে ভালোবাসে ওদের মাঝে তুই এসেছিস কোথা থেকে?
ছেলে:- রিপার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হইছে আগামী কাল।
আলিফ:- ছিঃ রিপা তুমি এতটা নিচ ছিঃ আমাকে বলতে আমি নিজে থেকে দুরে সরে যেতাম কেনো এমনটা করছো?
রিপা:- সরি আলিফ বাবা আমাদের দুই বোনের বিয়ে একিই পরিবারে দিতে চাচ্ছে সাহেদের বড় ভাইয়ের সাথে আপুর বিয়ে হবে। আজকের পর আর আমাদের দেখা হবে না ভালো থেকো?
আলিফ:- তাহলে এই দুইবছর কেনো এমনটা করেছো? তখন রিপা সাহেদকে নিয়ে চলে গেছে। আমি নিচে বসে গেছি। রাত্রি আমাকে টেনে সান্তনা দিতেছে। রাত্রি জড়িয়ে ধরে আমাকে নিচে নিয়ে এসেছে। আমি বাইক চালাচ্ছি অনেক কষ্টে এসেছি। বাসায় এসে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে অনেক কান্না করেছি। জীবনের প্রথম ভালোবাসাটা হারিয়ে গেছে জীবন থেকে। আমার অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এদিকে রাত্রির বিয়েটা প্রায় ঠিকঠাক হয়ে গেছে।
বাবা:- আলিফ কি হলো তোর কেনো এমন করছিস?
আলিফ:- কিছুনা।
মা:- আলিফ রিপার আজকে বিয়ে নাকী?
তখনি মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়েছি। দেখতে দেখতে আরো বেশ কিছুদিন চলে গেছে।
রাত্রি:- আলিফ আমার তো বিয়ের কেনা কাটা করতে যাবো তুমি কি আমার সাথে যাবে?
আলিফ:- সরি রাত্রি আমি যেতে পারবোনা। আচ্ছা রাত্রি তুই রনিকে পছন্দ করিস?
রাত্রি:- আমার কি পছন্দ সেটা তুমি জানো তবে বাবা মা পছন্দ করছে এটাই সবচেয়ে বেষ্ট। আচ্ছা আমি গেলাম রনির বাড়ীর মানুষ এসে বসে থাকবে।
আলিফ:- ঠিক আছে যা। রাত্রি চলে গেছে আমি একা একা ঘুরতে গেলাম কিছুটা যাওয়ার পরে যা দেখাল তা দেখে আমি নিজেই অবাক। চেয়ে দেখি রনি একটা মেয়ের সাথে হাত ধরে হাটছে। আমি পিছু পিছু গেলাম তখনি রনি বলে।
রনি:- রিয়া আমাদের বিয়েটা হোক কারন রাত্রিকে বিয়ে করলে অনেক টাকা পাবো।
রিয়া:- আমাদের বিয়ের কথা তাহলে কি অজানা থাকবে?
রনি:- নাহ আমাদের বিয়ের কথা বলবো আগে রাত্রিকে বিয়েটা করি এরপর ওর টাকা গুলি নিয়ে তোমাকে নিয়ে কোথাও পালিয়ে যাবো কেমন। তখনি পেছন থেকে আমি বলি।
আলিফ:- রাত্রির সাথে আগে বিয়েটা হবে তো? তখন রনি চেয়ে দেখে আমাকে আর ওর কথা বলা একদম বন্ধ হয়ে গেছে। চলবে,,,

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত