গ্রীষ্মের গড়মের জন্য শুভ দরজা-জানালা খুলে শুয়ে আছে। এমন সময় শাড়ি পরা একটি মেয়ে দৌড়ে রুমে ডুকে দরজা অফ করে দেয়।
শুভ তখন বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে
-আরে কে আপনি? আমার রুমে আসছেন?
-প্লিজ আমাকে কয়েকটা দিন থাকতে দিবেন?
-কিসব আজেবাজে বলছেন?
-প্লিজ কয়েকটা দিন,আমি আপনার কোন ক্ষতি করবো না।
-শুভ তখন মনে মনে ভাবে এটা কোন ভূত না তো?
শুভ তখন আয়নার দিকে খেয়াল করে দেখে মেয়েটিকে আয়নায় দেখা যাচ্ছে।
শুভ তখন মনে মনে বলে যদি ভূত হয়ে থাকে তাহলে আয়নায় দেখা যাবেনা।
এই মেয়ে রক্তমাংসে গড়া মানুষ।
কিন্তু ও কে? ও কেনো আমার রুমে ডুকবে?
-আপনি কি কিছু ভাবছেন?
-আসলে……
-বললাম তো আমি আপনার কোন ক্ষতি করবো না।
-শুভ তার মুখের ওপরে কোন কিছু বলতে পারলো না,বলবেই বা কি করে?প্রথম থেকে যেভাবে অনুরোধ করে বলা শুরু করছে তার ওপরে কিভাবে বলবে।
শুভ তখন একটা বালিশ নিয়ে ফ্লোরে এসে শুয়ে পরে।
আর মেয়েটি বিছানায় ঘুমায়।
-এই উঠেন আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে(মেয়েটি)
-শুভ তখন চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ৮.৩০ বাজে।এই মেয়ে জানে কিভাবে যে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,ও কি আসলেই ভূত নাকি? ধূর এসব কি ভাবছি?
শুভ তখন ব্রাশ করে মা-বাবার রুমে গিয়ে নাস্তা করে নেয়।
শুভ নাস্তা শেষ করে টেবিল থেকে উঠবে এমন সময় মেয়েটির কথা তার মাথায় আসে।
শুভ তখন কিছু পাউরুটি আর কলা নিয়ে রুমে ডুকে মেয়েটির রুমে দিয়ে শুভ বাহির থেকে লক করে যায় কেননা যদি তার মা একবার রুমে ডুকে এই মেয়ে দেখতে পায় তাহলে শুভর নামে ওদের কাছে সন্দেহ ডুকে পরবে।
শুভ কখনো কোন মেয়ের পিছনে ঘোরে নাই, কখনো গার্লস স্কুলের সামনে দিয়ে যখন হেটে যেতো তখন কোন দিকে না তাকিয়ে তার গন্তব্য স্থানে যেতো আর যদি আজকে রুমে একটা অপরিচিত মেয়ে দেখে তাহলে তো আর কোন কথাই নাই।
এসব ভেবে শুভ বাহির থেকে দরজা তালা মেরে যায়।
কাজ শেষ করে দুপুরের দিকে বাসায় এসে দরজা খুলে দেখে মেয়েটি খাটের মাঝে বসে আছে।
দেখে খুব চিন্তিত হচ্ছে।
শুভ তখন মেয়েটিকে কোন কিছু না বলে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে।
-বাবা(শুভর মা শুভর উদ্দেশ্য তার রুমের সামনে এসে)
-হ্যা মা বলো
-দরজাটা খুল তো
-শুভ তখন মনে মনে ভয় পেয়ে যায়।হায় আল্লাহ এখন কি হবে? যদি আমার সাথে এই মেয়েকে দেখতে পারে তাহলে আমার কি অবস্থা হবে?
রুমে কোথায় লুকানোর জায়গা ও নাই আর যেখানে জায়গা আছে সেখানে মা যেতে পারে।
তাই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দরজা খুলে।
-খেতে আয়(মা)
-যাও আসছি
-হুম তাড়াতাড়ি আয়,সবাই অপেক্ষা করতাছে
-ওকে যাও তুমি, আমি আসছি
-শুভর মা তখন চলে যায়,শুভ তখন মনে মনে বলে আল্লাহ তুমি বাচাইছো।
যদি দেখে ফেলতো তাহলে কি কলঙ্কময় কাহিনী হয়ে যেতো।
শুভ দরজাটা অফ করে পিছনে দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটি চোখ বড় বড় করে শুভর দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েটির চোখেও ভয় পাওয়ার স্পষ্ট ছাপ দেখা যাচ্ছে।
এভাবে কয়েকদিন যাওয়ার পরে,একদিন তার পরিবারের সবাই কয়েকদিনের জন্য খালার বাড়ি যায়।
এই কয়দিনে মেয়েটিকে নিয়ে ছাদে চাদ দেখা, সন্ধ্যায় পার্কে যাওয়া,বিকালে নদীর পারে হাটাহাটি হয়।
শুভ আগের মতো মেয়েটিকে ভয় কিংবা অপরিচিত লাগতো এখন আর তেমন কিছু হয় না।
মেয়েটির প্রতি এখন শুভর কেমন জানি একটা ভালো লাগতে শুরু করে।
মেয়েটির হাসি আর কাজলকালো চোখ আর চাঞ্চল্য হাসিটার প্রেমে পরে যায়।
রাতে দুজন চাদের জোৎসনা দেখে ঘুমায়।
সকালে শুভর ঘুম ভাঙ্গার পরে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল ১০.৪০ এর মতো বাজে।শুভ তখন বিছানার পাশে তাকিয়ে দেখে মেয়েটি নেয়।
শুভর মনে তখন কেমন জানি একটা ভয় লাগা শুরু করে।
শুভ তখন বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে দিকে গিয়ে দেখে সেখানেও নেই।
শুভ তখন চিন্তার মধ্যে পরে যায়।
সেদিনের মতো পার হয়ে যায়।
রাতে শুভ ছাদে গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে ভাবে, হাসিটা কতো সুন্দর ছিলো।চোখগুলো কি বড় আর কি মায়াবী ছিলো।
আচ্ছা এমন কি কোন মেয়ে আছে যে মুচকি হাসলে গালে টোল পরে,হয়তো খুব কম সংখ্যক আছে কিন্তু এই মেয়েটা যখন মুচকি হাসতো তখন গালে টোল পরতো।দেখতে কি অদ্ভুত সুন্দর লাগতো।
মেয়েটার তো নাম ও জানা হলো না, এই রহস্যময়ী নারীটার প্রেমে পরে গেলাম।
হ্যা রহস্যময়ী নারী তুমি কি আমার জীবনে আবার কখনো আসবে? আসবে কি হঠাৎ করে?
এখন থেকে সবসময় দরজা খোলা রাখবো শুধু মাত্র তোমার জন্য, তুমি আসবে বলে
অপেক্ষায় থাকবো সারাজীবন।
আসবে কি তুমি?