বাসর রাতে ঢুকে জানতে পারলাম যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে সে আমার প্রেমিকা নয়, তার জমজ বোন।
– মানে? আমিতো তিন্নির কোনো জমজ বোনকে চিনিনা। আর ও কোনোদিন বলেও নি তার কোনো বোন আছে আর তিন্নি কোথায়?
– কেনো বলেনি সেটা জানিনা আর সে বিয়ের আগে আরেকজনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
– মানে কার সাথে পালাবে? ও তো আমাকে ভালোবাসতো।
– সেগুলা আমি জানিনা তবে বিয়েটা আপুর সাথে হয়নি আপনার।
– দাড়াও তিন্নির নাম্বারে কল দিচ্ছি দেখি কার সাথে পালাইছে সে।
– এসব করে কোনো লাভ নেই তার ফোন অফ পাবেন আপনি আমার ফোনের ছবিগুলা দেখুন বুঝতে পারবেন আমরা জমজ বোন।
আদিরা ফোনটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো।
আমি হাতে নিয়ে দেখলাম দুই বোনের অনেকগুলা ছবি।
মেয়েটা আমেরিকাতে বড় হয়েছে মামার কাছে।
সেগুলার ছবিসহ প্রমানও দিলো।
এবার আরো একটা শক্ত প্রমান পেলাম মেয়েটার ঠোঁটের নিচে তিলটা নেই যেটা তিন্নির ছিলো।
পৃথিবীতে এমন হতভাগা মানুষ কয়টা আছে কে জানে।
চার বছর প্রেম করলাম, বিয়েও ঠিক হলো তার সাথেই কিন্তু সে পালিয়ে গেলো বিয়ে করলাম তার জমজ বোনকে।
কেনো পালালে তিন্নি? আর যদি পালানোরই ছিলো তবে বলে দিতে আমি বিয়ে পর্যন্ত আসতামই না।
মনের ভিতর হাহাকার আর কষ্টের কারনটা না হলেও পারতে।
আজকের রাতটা নিয়ে কত স্বপ্ন দেখিয়েছিলে মনে আছে?
তুমিই যেনো পাশে বসে আছো, দেখতেও একিরকম শুধু মানুষ দুইটা।
কিভাবে মনকে বুঝাবো?
যত সহজে বলা হচ্ছে পরিস্থিতির কথা সত্যিই কি ততটাই সহজ?
সেই মানুষটার মতো একই রকম দেখতে একটা মেয়েকে নিয়েই কাটাতে হবে সারাজীবন অথচ তাকে কোনোদিন তিন্নি বলে ডাকতে পারবোনা।
মেয়েটার দিকে তাকালাম।
দুজনের মধ্যে একটু পার্থক্য তো আছেই।
এই মেয়েটার নাম আদিরা না হয়ে হতে পারতো মিন্নি।
আমি মিন্নি ডাকতে গিয়ে ভুল করে তিন্নি ডাকতে পারতাম কিন্তু আদিরাকে কিভাবে তিন্নি ডাকবো?
সেটা তো ইচ্ছাকৃত হয়ে যাবে।
আদিরা মেয়েটা তিন্নির চাইতে একটু ফর্সা, না একটু না বেশ অনেকটাই।
আমেরিকায় থাকার কারনে এই পরিবর্তন।
– আপনি কিছু ভাবছেন?(আদিরা)
– হ্যা ভাবছিলাম।(আমি)
– কি ভাবছেন?(আদিরা)
– আপনি রাজি এই বিয়েতে?(আমি)
– হ্যা।(আদিরা)
– কোনো বয়ফ্রেন্ড ছিলোনা আপনার?(আমি)
– ছিলো।(আদিরা)
– তার কি হয়েছে?(আমি)
– সে দুবছর আগেই আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেছে।(আদিরা)
– ওহ আচ্ছা।(আমি)
– হিহিহি। আমার বয়ফ্রেন্ড ছিলোনা।(আদিরা)
– আমেরিকাতে ছিলেন আর কোনো বয়ফ্রেন্ড ছিলোনা?
– কেনো আমেরিকা থাকলে বয়ফ্রেন্ড থাকা আবশ্যক নাকি?
– না তা নয় তবে না থাকাটা কিছুটা অস্বাভাবিক।
– আমি ওসবের টাইম পাইনি। পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।
– লাভ কি হলো? সেইতো বিয়ে করে এখন বাড়িঘর সামলাতে হবে।
– একটা কথা আগেই বলে দেই?
– বলুন।
– আপু পালিয়েছে বলে কিন্তু আপনি বলতে পারবেন না তুমি বিছানায় ঘুমাও আমি সোফায় ঘুমাবো।
আপনি আমার সাথেই ঘুমাবেন। সময় নিন। শারীরিক সম্পর্ক দরকার নেই তবে ভালোবাসতে মানা করবেন না।
মেয়েটার কথায় কিছুটা অবাক না হয়ে পারলাম না।
তবুও বললাম,
– আচ্ছা।
সে এখন আমার বউ। আমার যেমন তার ওপর অধিকার আছে তেমন তারও আমার ওপর পূর্ন অধিকার আছে।
তিন্নি তো আরেকজনকে নিয়ে পালাইছে আমি কেনো এই মেয়েটাকে কষ্ট দিবো?
মেয়েটার দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম মেয়েটা মেকআপ করেনি।
কৌতুহল হলো কেনো করেনি?
– আপনি সাঁজগোছ করেননি কেনো?
– সময় কই? আব্বু এসে বললো তোর বোন পালিয়ে গেছে মান সম্মান বাঁচাতে হলে আমাকে এই বিয়েটা করতে হবে। আর এমনিতেও আমার মেকআপ করতে ভালোলাগেনা। চামড়ার ওপর সাদা একটা আস্তরনে নিজের আসল সৌন্দর্য ঢেকে কেনো রাখবো? হই কালো বা ফর্সা।
– তা খারাপ বলেন নি।
– আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারেন।
– সময় লাগবে। আপনার বোনকেই আমি রিলেশন হবার ৬ মাস পর তুমি বলছি।
– আপনাদের প্রেম কাহিনিটা বলবেন? আমার খুব শুনতে ইচ্ছে করছে।
বাসর রাতে বউকে প্রেম কাহিনি শুনাতে হবে যেই কাহিনিতে নায়িকা তার আপন বোন।
কি আর করার প্রেম কাহিনি শুনিয়ে রাত শেষ করি।
আমি বলতে শুরু করলাম,
– লাস্ট ইয়ারে যখন পরিক্ষা দিলাম তখন আপনার বোনের সাথে দেখা।
পাশাপাশি সিট পড়েছিলো আমাদের।
ফার্স্ট আর লাস্ট দুই সেমিষ্টারের পরিক্ষা একসাথে।
সেই পরিক্ষায় আমি খারাপ করি কারন তিন্নি।
সেই যে তাকিয়েছিলাম তার দিকে।
আমি পাশ মার্ক তুলে আর কিছু লিখতে পারিনি।
পুরো তিনটা ঘন্টা তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
এরপর খোঁজখবর নিলাম।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রোপোস করলাম সে রাজি হলোনা।
এরপর সেমিষ্টারের শেষ দিন পর্যন্ত তার পিছু ঘুরেছি।
একদিন সে রিক্সা নিয়ে যাচ্ছিলো আমি রাস্তায় এক্সিডেন্ট করি।
কারনটা আপনার বোন।
সেদিন সে নীল শাড়ি পড়েছিলো।
কপালে টিপ, হাতে কাচের চুড়ি ঠোটে হালকা লিপস্টিক।
শুধু বাকি ছিলো খোঁপায় বেলিফুলের মালা।
আমি বেলিফুলের মালা আনতে গিয়েই বাইক এক্সিডেন্ট করি।
হাত পায়ে কেটে গেছিলো গুরুতর কিছু না হলেও আঘাত পেয়েছিলাম ভালোই। সাদা বেলিফুলগুলা রক্তে লাল হয়ে গেছিলো। ভালোই লাগছিলো দেখতে, অন্যরকম জিনিস সবারই ভালোলাগে।
আমি বেলিফুলের মালা নিয়ে সেই জায়গায় গিয়ে দেখলাম সে নেই।
জ্যাম ছুটেছে, রিক্সা চলে গেছে।
আমি আমার রুমে কোনোদিন একটা পুরাতন জিনিসও রাখিনি কিন্তু সেই রক্তমাখা বেলিফুলের মালাটা আমার কাছে এখনও বেশ যত্নেই আছে।
শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে, নিষ্প্রান, নির্জীব।
তবুও যত্নে রেখেছি আজ দেওয়ার কথা ছিলো।
এরপরও সে আমাকে ভালবাসি বলেনি।
সেদিন কাঁঠফাটা রোদ।
রোদের তাপে ঘেমে একাকার হয়ে গেছি।
মনে হচ্ছিলো গোসল করে এসেছি কেবল।
গরম পানি এখনো গায়ে লেগে আছে।
তিন্নিকে দেখলাম সেও ঘামছে।
শরিরের ভাজগুলা বুঝা যাচ্ছে। ঘামের কারনে ফুটে উঠেছে দেহের কিছু অংশ। সে আইসক্রিম খাচ্ছে।
আমি তাকে রিক্সা ডেকে দিলাম বললাম কোথাও নামবেন না বাসায় গিয়ে গোসল করে নিবেন আর একটু ঢিলেঢালা পোশাক পড়বেন।
তিন্নি চলে গেছিলো সেদিনও ভালবাসি বলেনি।
এরপর আরেকদিন দেখা হয়েছিলো,
সেদিন আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান ছিলো,
সে আসলো এসে বললো,
– ভাইয়া অভিনন্দন। আপনাকে খুব মিস করবো চলে যাবেন আমাদের ছেড়ে।
আমি বোকার মতো বলেছিলাম তুমি বললেই থেকে যাবো।
ওগুলা নিয়ে সে কি হাসাহাসি।
এরপর দুমাস দেখা হয়নি। আমি ধরেই নিয়েছিলাম
আমার প্রেম অপূর্ন থেকে যাবে।
হঠাৎ করেই তিন্নির সাথে সেদিন দেখা হয়ে যায়।
রাস্তায় বাচ্চাদের সাথে ক্রিকেট খেলছিলাম আমি।
হঠাৎ সে ডাকে,
– এই বাচ্চা শুনেন।
আমি তাকিয়ে দেখি তিন্নি।
সে আমার হাতে একটা চিঠি গুঁজে দিয়ে বলেছিলো ভালবাসি।
সেদিনই প্রথমবার ভালবাসি বলে সে।
এরপর শুরু হয় প্রেম, প্রেমের সময় কি কি হয় সেগুলা নাহয় নাই বললাম আপনার অজানা নয় এগুলা তবে অনৈতিক কোনো দাবি কখনোই আমার ছিলোনা।
কথাগুলা বলতে বলতে চোখ ভিজে গেছে বুঝতে পারছি হয়তো আদিরাও বুঝতে পারছে।
– খুব ভালোবাসতেন আপুকে তাইনা?
খেয়াল করলাম তার চোখেও পানি।
আমি কি মানুষকে এত সহজেই কাঁদাতে পারি নাকি?
সে আবার বললো,
– বেলিফুলের মালাটা আমাকে দিবেন?
– কেনো?
এরপর সে যা বললো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
বেলিফুলের মালাটা আমাকে দিবেন?
– কেনো?
– আমি নাহয় তিন্নি হয়েই থাকি। আদিরা নামটা নাহয় ভুলে যান।
– নাহ।
– কেনো? আমিতো তিন্নির মতই দেখতে।
– বাইরের দিক থেকে হয়তো আদিরা তিন্নি চেনা যাবেনা তবে তিন্নির স্মৃতি সমসময় ঘুরবে মাথায়।
– একটা কথা বলবো যদি কিছু মনে না করেন?
– হ্যা বলুন।
– আপনি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হবেন? আমার না কোনো বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলোনা কখনো। আর শুনেছি এ দেশে নাকি মেয়েকে পছন্দ না হলে স্বামি মারধর করে, আপনি আমাকে মারবেন না প্লিজ। আমি আপনাকে বিরক্ত করবোনা।
মেয়েটার কথায় অবাক না হয়ে পারলাম না।
এত সহজে কিভাবে মেনে নিলো সবকিছু? আর স্বামিকে কেউ বেস্টফ্রেন্ড হতে বলছে এই প্রথমবার শুনলাম।
– কি হলো কথা বলছেন না কেনো?
– ভাবতেছি কি করা যায়।
– দেখুন আমরা বন্ধু হয়ে থাকলে তো আপনার জন্য ভালোই হবে। আংকেল আন্টি বুঝতেই পারবেনা যে আপনি আমাকে মেনে নেননি।
– কালকে জানাবো।
– আমার ঘুম পাচ্ছে আমি কি ঘুমাবো?
– ঠিক আছে ঘুমান।
রাত তখন দুইটা পনের। তাকে ঘুমাতে বলে একটা সিগারেট ধরালাম। কেমন একটা অদ্ভুত অনুভুতি পোড়াচ্ছে আমাকে। মাথা ঝিমঝিম করছে এখনো।
তিন্নি মেয়েটা যে আমাকে বিয়ে করার জন্য প্রায় পাগল হয়ে গেছিলো সে নিজেই পালালো!
মেনে নিবো কিভাবে?
হঠাৎ আদিরা উঠে বললো,
– আমাকে একটা দিবেন?
কিছুটা ধমকের সুরে বললাম,
– সাহস তো কম না আমার কাছে সিগারেট চাচ্ছেন?
– আপনি কেনো খাচ্ছেন?
– আপনাকে কেনো বলবো? চুপচাপ ঘুমান বেশি কথা বলবেন না।
মেয়েটা কান্নাজড়িত কন্ঠে বললো,
– সিগারেট তো দিলেনই না উল্টা বকা দিচ্ছেন।
– আচ্ছা দু টান দিবেন এর বেশি না ওকে?
– থাংকু
মেয়েটার হাতে সিগারেট দিয়ে ভরসা পাচ্ছিনা।
যা ভাবছি তাই।
দুই টান দিয়েই মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।
ধরার আগেই সে বিছানায় পড়ে গেলো।
বাসর রাতে সিগারেট খেয়ে বউ অজ্ঞান।
আমি রিপোর্টার হলে সিওর এই খবরটা ছাপাতে ভুলতাম না।
মেয়েটার কান্ড দেখে হাসি পাচ্ছে।
সিগারেটটা তুলতেই দেখলাম সিগারেটের গোড়ায় লিপস্টিক লেগে গেছে।
টানবো নাকি টানবোনা ভাবার সময় নেই,
পুড়ছে সিগারেট, উড়ছে ধোঁয়া।
তারপর কি?
ছন্দ আসছেনা।
তিন্নির কথা ভাবতে ইচ্ছা হচ্ছেনা।
এই মেয়েটার মোহে আটকা পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে।
মেয়েটার দিকে তাকালাম, এত রাতে চাঁদ থাকার কথা না তবুও বাইরে মস্ত বড় একটা চাঁদ।
জানালার পর্দা সরিয়ে দিলাম, চাঁদের আলো মেয়েটার মুখে এসে পড়লো।
এবার পরিপূর্ন।
কথা ছিলো তিন্নিকে এভাবে দেখবো।
তিন্নিকেই দেখছি তবে নাম তিন্নি না।
এর নাম আদিরা।
শীতকাল,
ঠান্ডায় মেয়েটা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।
আমি গিয়ে শুয়ে পড়লাম মেয়েটার পাশে।
কিছুক্ষণ যেতেই মেয়েটা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
তার শরিরের উষ্ণতা আমাকে কিছুটা কামুকী করে তুললেও সেটাকে মাথা থেকে নামিয়ে দিলাম।
পরদিন সকাল,
মেয়েটাকে কোথাও দেখতে পাচ্ছিনা।
হাত মুখ ধুয়ে এসে দেখলাম আদিরা আম্মুর সাথে রান্নাঘরে।
চা বানাচ্ছে। আমি বললাম আমাকে চিনি বেশি দিয়ে এক কাপ চা দিয়েন।
চায়ের অর্ডার করে বাইরের দিকে তাকালাম।
ভাবখানা এমন যে একটা কফিশপে বসে বসে অর্ডার করছি আর বাইরের প্রকৃতি দেখছি।
মেয়েটা চা আনলো,
নাহ চা বেশ ভালো বানায় মেয়েটা, ভেবেছিলাম হয়তো খাওয়া যাবেনা এখন দেখছি রোজ খেতে হবে।
আম্মুর সামনেই বললাম,
– প্রতিদিন সকালে চা নিয়ে আমার ঘুম ভাঙাবেন। কাপ পিরিচের টুংটাং শব্দে ঘুম ভাঙা সকাল কখনো খারাপ হবেনা মনে হয়।
মেয়েটা লজ্জা পেলো কিনা জানিনা তবে এবার আম্মুকে ভালোভাবে খেয়াল করতেই উঠে চলে এলাম।
বিয়ের ব্যস্ততা কাটতে কাটতে আরো পনের দিন।
এর বাড়ি যেতে হয় ওর বাড়ি যেতে হয়।
এত ব্যস্ত কোনোদিন হইনি তবে একটা জিনিস হাজার ব্যস্ততায় ও ভুলতে পারিনি।
তিন্নি,
চোখের সামনে মেয়েটা হাসে, দৌড়ায় কথা বলে আমি ছুঁয়ে দেখতে পারিনা আমি ভালোবাসতে পারিনা মেয়েটার সাথে মন খুলে কথাও বলতে পারিনা।
কেনো পারিনা?
সেটাইতো কেনো পারিনা।
ভাবাচ্ছে বিষয়টা প্রচুর। আমার কেনো জানি এখনো বিশ্বাস হচ্ছে এই মেয়েটা আদিরা। আমার মনে হচ্ছে এটাই তিন্নি। একটা মজার খেলা চলছে আমার সাথে।
আমি কি জোকার? সার্কাস দেখাতে এসেছি?
যদি কখনও এটা প্রমানিত হয় এই মেয়েটাই তিন্নি তবে মেয়েটাকে এতটা মারবো আমি এতটাই মারবো যে মে প্রায় মারা যাবে আবার বেচে ফিরবে।
– শুনছেন?
– জ্বি বলুন।
– আপু কল করেছিলো।
– মানে?
– তিন্নি।
– কই ফোন দিন আমি কথা বলবো।
– আপু কোনো রিসিপশন থেকে কল করেছিলো।
– ঠিকানা নেন।
– দরকার নেই। আপু আপনাকে কিছু বলতে বলেছে।
বলবো?
– বলুন।
– আপু আপনাকে কোনোদিনও ভালোবাসেনি তার আরো একটা রিলেশন ছিলো হিমাদ্র নামের এক ছেলের সাথে তার সাথেই পালিয়েছে আপু। কোথায় আছে খোজ নিয়ে লাভ নেই কারন তারা আবার অন্যকোথাও যাচ্ছে।
আদিরার কথা শুনে হার্ট অ্যাটাক হয়তো করিনি তবে মৃত্যুর ইচ্ছাটা খুবই তিব্রতর হলো।
সিগারেটে টান দিয়ে ভাবলাম উত্তর কি দিবো।
আদৌ কি মনকে বুঝানোর মত উত্তর আমার কাছে আছে?
নেই হয়তো।
আদিরার দিকে তাকালাম।
তার চোখে স্পষ্ট ভালোবাসা দেখতে পেলাম আমি।
আমি ডাকলাম,
– তিন্নি।
আদিরা ছলছল চোখে বললো,
– আপু কেনো এমন করলো? আপনার মতো মানুষকে কষ্ট দিয়ে সে কখনো ভালো থাকতে পারবেনা, কখনোই না।
আমি আদিরার গালে ঠাস করে দুইটা চড় মেরে দিলাম।
গালে ৪ আঙুলের দাগ পড়ে গেছে।
মেয়েটা এবার কেঁদেই ফেললো।