মেঘের নেশা

মেঘের নেশা

-“এই আপনি আমাকে চুমু খেলেন কেন?”
-” আমার বয়ে গেছে আপনাকে চুমু দিতে! ”
– “তাহলে কে দিল আমাকে চুমু?”
– “আই ডোন্ট নো।”
-“আপনাকে আমার পাশের সিটে কে বসতে বলেছে হে?? আমার পিন্সিপাল দেখলে আমার চান্দি ফাটাই ফেলবে। বুজেছেন??”
– “বাই দা রাস্তা— চান্দি যানি কোনটা??”
— “মাথারে বাবা মাথা।”
– “ওহ তাই বলেন।”
– “সরেন আমার পিন্সিপাল আসবে আমি ভয় পাই তাকে ভিষন।”
— “আপনার পিন্সিপাল কই থেকে আসবে??”
–“কেন?? আমিত সিলেট যাচ্ছি আর আমার কলেজ টুর থেকে,।
কিন্তু আমি এই হাইএক্স গাড়িতে কি করছি, ”
কিছু না বুজে কান্না শুরু করল মেয়েটা।
— মানে,আসলে হয়েছে কি পথে ডাকাত ধরেছিল,তাড়া বাসের সুন্দরী মেয়েদের অজ্ঞান করে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, আমি বন্ধুদের নিয়ে সিলেট যাচ্চিলাম তখন দেখলাম যে ডাকাতরা আপনাদের বাস থেকে নামছে, আর সাথে শুধু আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে।
আমি গাড়ি নিয়ে তাদের পিছু পিছু চলে এসেছি।
তাড়া আপনাকে একটা বাড়ির ভিতরে নিয়ে যাচ্ছিল,আর আমি তখন তাদের সাথে হাতাহাতি করে, হাতের কাছে একটা ইট পেয়েছিলাম তা দিয়ে কোনরকম তাদের মাথা ফাটিয়ে আপনাকে উদ্দার করেছি ম্যাম।
—“” মানে কি বলছেন.?আমি কই এখন?”
— “আমরা সিলেট যাচ্ছি।আপনারা যেহেতু সিলেট যাচ্ছিছিলেন তাই ভাবলাম আপনাকে দলে দিয়ে আসি না হলে আপনার ঘুড়াঘুড়ি পানি ভাত।”
–” আমার ভয় করছে,, আপনার কাছে মোবাইল আছে?? আমার ফ্রেন্ড এর কাছে ফোন করতাম,।”
— “হ্যা অবশ্যই, এই যে নিন।আর প্লিজ কান্না বন্ধ করুন। আমার বন্ধুরা মাইন্ড করবে, ভাব্বে কি না কি করে ফেলছি।”

মেয়েটা কি অদ্ভুত কিভাবে আজব ভজ্ঞীতে কথা বলছে,কেদে ফেলেছে, আবার জুড়ে জুড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে, মনে হচ্ছে ভয় টা কমে গেছে,আবার খানিকক্ষণ বাদে ফিক ফিক করে হাসল,এই প্রথম মেয়েটা হাসল, একটা বাকা দাত আছে হাসির সময় দেখলাম, এই দাত টাই হাসিটা সুন্দর দশ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে।অন্য মেয়েদের মত এত ময়দা মেখে সাদা হয় নি মেয়েটা,একদম সিম্পল জিন্স আর টপ্স,লাল কেডস চুল মাথার বেশ উপরে জুটি করা, গায়ের রং বাবড়ি ডল,বুজে নিয়েন,,ডাকাতরা যখন নিয়ে যাচ্ছিল তখন হুস ছিল না, কিন্তু আমি দেখেছিলাম কি মায়া চেহারা তার, আর যখন তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আমার দুই বাহুতে স্থান দিলাম তখন মনে হচ্ছিল একটা তুলার বস্তা কোলে নিয়ে হাটছি, আচমকা চোখ গেল তার ঠোঠের নিচে লাল তিলটায়,কি যে ভাল লাগছিল,ভাবছি এত কি,!!!

বন্ধুদের সাথে সিলেট যাচ্ছি ভার্সিটি লাইফ প্রায় শেষ তাই ৪ বন্ধু মিলে টুর,
আমি মেঘালয়, আর সাথে আছে চশমাপড়া সাকিব সে কথা কম বলে,সাগর সে কথার বস্তা আর তুহিন এই সাগরের অবস্তা, কথার জুড়ি।

পাসে তাকিয়ে দেখলাম মেয়েটা বলছে,
-” এই এত নুন নুন করবিনা, রাখছি,আমি সিলেট গিয়ে তদের ঠিক খুজে নিব হ্যা।”

–“নুন নুন মানে কি??”
— “ওহ। আপনাকে ত বলাই হয় নি আসলে আমার নাম নুন। পুরু নাম জাকিয়া ইসলাম নুন।”
-, “একটু নেশাকাটা চোখে তাকিয়ে ছেলেটা বলল”অপূর্ব,”
নুন চোখের তাকানো টা বুজতে পেরে তার চোখ বড় বড় করে বলল “” মানে মানে কি?? ”
— মানে আমার নাম মেঘ।মেঘালয় হাসান
— গুড।

ধ্যাত নুন কি যাতা ভাবছে,লজ্জায় নুন নীল হয়ে যেতে লাগল, আর জিভ কাটল।

নুন কিছু বলছেনা দেখে মেঘ নিজেই বলল.
” বাড়ি কই আপনার ??
নুন মুখ তোলে বলল “দেশের বাড়ি কুমিল্লা, বাবা মিরপুর চাকরি করত,তার রিটার্ন হওয়ার পর ভাইয়া একি যায়গায় চাকরি করছে তাই সেই সুবাধে ছোটবেলা থেকেই আমাদের ফ্যামিলি ঢাকা থাকে। আপনার??
— আমাদের নিজস্ব কোন বাড়ি নেই।কিন্তু বাবা সিলেট চা বাগানের একটা বাংলো কিনে রেখেছেন, আমার দাদার বাড়ি কুমিল্লা ছিল কিন্তু সেখানে যাওয়া হয় না একটা পারিবারিক কারনে।
– মজা করছেন??
– না।
-আসলেই আপনার দেশের বাড়ি কুমিল্লা???
মেঘালয় কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারল না, তার ভয়ে হাত পা হিম হয়ে যাচ্ছে।
,নুন সামনে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেল আবার গলা ঝাঝিয়ে চিৎকার করে উঠল,,
.
কি হতে চলেছে নুন এর জিবনে,?????

হিমালয়দের গাড়ির সামনে সেই ডাকাতের দল দাড়িয়ে আছে,এবার ডাকাতের চেলারা না এবার ডাকাতের সর্দার এসেছে। তাদের গাড়ি থামার সাথে সাথে ডাকাতের দল হিমালয়দের গাড়ির কাছে আসে,সর্দার নুনের সাইটে এসে দাড়ায় আর নুনের দিকে তাকিয়ে অন্যদের জিজ্ঞাসা করে এই মেয়েটা কি না, তারা মাথা নেড়ে হ্যা বলে, আর ডাকাত অনেক জুড়ে খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে উঠে।
হিমালয় কি করবে বুজতে পারছেনা, তার কি করা উচিত? তাদের কাছে ছুরা বন্দুক আর অনেক অস্র আছে, আর হিমালয়দের কাছে কিছুই নেই।
সর্দার নুন এর কাছে মাথা নামিয়ে বলে তোমার সব আমার,, সুন্দরী,নেমে এস আজকে রাতের পাখি যে নাই তুমি আমার পাখি আস, ভাল ভাল কথায় আস না হলে কিভাবে ছোবল মারতে হয় তা আমি জানি।তা তোমার শরিরটা কি খাসা আমার ত এখনি মরে যাবার উপক্রম, সুন্দরি আজকে রাতে খেলা ভালই হবে। দরজা খোল.।

নুন এর মাথা ঘোরছে, সে এক হাতে হিমালয়ের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে,বার বার হিমালয় এর দিকে তাকাচ্ছে হিমালয় যেন সে ভাষা পরতে পারে, নুন এর চোখ বলছে “প্লিজ আমাকে তাদের হাতে তুলে দিবেন না আমি আপনাদের কে বিশ্বাস করি প্লিজ। ” তার ডাগর ডাগর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে, হিমালয়ের যেন এই চোখের মিনতি বুকে গিয়ে লাগছে,জিবনে এই প্রথম সে কোন মেয়ের চোখে পানি দেখে তার বুকের ঝরা পানির স্রোত অনুভব করতে পারছে।কিন্তু তাদের এখন কি করা উচিত।

ডাকাত আবার দরজায় জুড়ে জুড়ে আঘাত করে, আর বলে এই তারাতারি খুল না হলে ভাল হবে না,
সাকিব ড্রাইভ করছিল সে সেখানে বসে ই বলল “”ভাই কি চাই?? আমাদের ছেড়ে দেন প্লিজ আমাদের যা যা আছে রেখে দিন আমরা আপনাকে অনেক টাকা দিব প্লিজ নুন কে নিবেন না প্লিজ। “”
সর্দার আরো উত্তেজিত হয়ে বলল, ”
এই চশমাপরা কানা, তুই কে হে বাছা কথা বলিস না, রাত গভীর হচ্ছে আমাকে বিছানা ডাকছে,আমার এখনি এই মেয়েটাকে চাই দিয়ে দে না হলে তরা কেও জানে বাঁচতে পারবি না।হা হা হা”
সাকিব এভার বলে ” ভাই কত টাকা চাই বলেন আমরা দিব কিন্ত আমাদের যেতে দিন “”
ডাকাত এবার হো হো করে হেসে বলল এই তুই কি বোকা নাকি রে আমার দরকার পরি তাকে দিয়ে তরা চলে যাবি কিন্ত যে কোন মূল্যে ওই পরিটাকে চাই,”

হিমালয় এভার রেগে গেল আর ডাকাতের উদেশ্য করে বলল “কত টাকা চাই বল ”
ডাকাত আবার রেগে জানালার কাচে বাড়ি মেরে বলে ” এই কতবার বলল যে আমার টাকা চাই না আমার মেয়েটাকে চাই। দে দে ”
হিমালয় নুন এর হাত শক্ত করে ধরে বলল ” জিবন থাকতে তুই পাবি না নুন কে। যা ভাগ”
ডাকাত সন্দেহের চোখে বলল” কেন রে নুন কি তর বও নাকি এত দরদ কেন?? নুন দেখতে যা সুন্দর আমি ছারা এই দুনিয়ায় নুনন কে ভোগ করার মত কেও নাই বুজলি? ”
মেঘালয় হ্যা বলে দিল যে সে নুনের হাজবেন্ড,
নুন মেঘালয় এর কথাটা শুনে নুন মেঘালয় এর দিকে তাকায়, মেঘালয় তখন নুন এর হাত ছেড়ে নুনকে বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছে,কিন্তু নুনের কান্না থামছেনা।
ডাকাতের সর্দার এবার বলে ” তাহলে বেশ ভাল ত,আমি নুনের সাথে চাদ দেখব,আর তুই হবি আমাদের দর্শক, কি বলিস সবায়??
সব ডাকাতেরা একসাথে হইহই করে উঠল,
তুহিন,সাকিব, সাগর তিনজন এবার গাড়ির দরজা খুলে বাহিরে এসে ডাকাতদের মারতে উদ্যত হল,ডাকাতরা ঠায় সেখানেই দাড়িয়ে বিশ্রী ভাবে হাসল।এক চুলও নড়ল না।
মেঘালয়ের বুকেত ভিতরে নুন চলে যেতে চাইছে,সে যানে তাকে ডাকাতেরা ধরে নিলে কি অবস্থা হবে,সে টিভিতে ক্রাইম প্রেটোল এ দেখেছিল।সেটা মনে হতেই আবার মেঘালয় এর বুক জড়িয়ে কান্না করছে।নুন মেঘালয় কে বলল
” আমাকে প্লিজ আপনার বুকে মিশিয়ে নিন,আমি যাব না তাদের কাছে প্লিজ “”
মেঘালয় নুনকে বুকের সাথে মিশিয়ে বলল” ভয় নেই আমার জিবন থাকতে আমি ছাড়ছিনা।”
নুন এবার আরো জুড়ে কান্না করতে লাগল।
ডাকাতের সর্দার বলল ” তদের নাটক বন্ধ কর।
ডাকাত নিজে এবার নুনের হাতে ধরে টেনে হিচরে বাহির করল নুন কে।মেঘালয় বাধা দিচ্ছিল তাই তার হাতের বাশের কঞ্চি দিয়ে মেঘালয় এর গলায় প্রচন্ড আঘাত করে,তাও মেঘালয় দমে যায় নি, সে নুন এর হাত ধরে রেখেছে কিন্তু ডাকাতের আঘাতে আর বেশিহ্মন হাতটা নিজের আয়ত্তে রাখতে পারল না মেঘালয়।
নুনকে ডাকাতের সর্দার গাড়ির সামনে নিয়ে দাড় করিয়েছে,আর তাদের সবায় কে ডাকাতের চেলা পেলারা আটকে রেখেছে,

ডাকাত সবার উদেশ্য করে বলল “শুন সবাই এই মেয়ের জন্য নাকি তরা সবাই মরতে পারবি, আচ্ছা তাহলে তদের সামনেই আমি জোস্না বিলাস করি, কি বলিস?? “”
মেঘালয় তাদের কবল থেকে ছোটার জন্য হাতাহাতি করতে থাকে, আর তাতে সর্দার এসে মেঘালয় এর মাথায় ডান্ডা দিয়ে অনেক জোরে আঘাত করে,মেঘালয় সাথে সাথে নিচে বসে পরে তার মনে হচ্ছে মাথা ফেটে এখনি মগজ বেড়িয়ে যাবে। তাও ডাকাতের কমড় ধরে আটকায়,।এবার ডাকাত রেগে তার কমড়ে থাকা ছুড়ি দিয়ে মেঘালয় এর বাম হাতে আঘাত করে,আর সাথে সাথে রক্তে ভেসে যেতে থাকে,
নুন এসে ডাকাতের পায়ে পরে যায় আর বলে
“প্লিজ আমাকে যা করার করেন তাও মেঘালয় কে কিছু করবেন না”
মেঘালয় না করে আর বলে” নুন তুমি পালিয়ে যাও যাও নুন”
মেঘালয় এর কথা শুনে ডাকাত নুন এর হাত ধরে নিয়ে গাড়ির উপরে শুয়াতে চেষ্টা করে আর নুন এর টপ্স খুলার চেষ্টা করে নুন এখন খুব জুরে জুরে চিৎকার করছে,তার গলা দিয়ে মনে হচ্ছে এখনি রক্ত বের হয়ে যাবে, ডাকাত যেই নুন এর গলার কাছে মুখ নেবে তখনি মেঘালয় আকাশ কাঁপিয়ে বলে উঠল “””না তুই নুন কে কিছু করবি না “”
ডাকাত হেসে বলে” তরে আরর তর বন্ধুদের আটক করে রাখছি, দেখ এই মাঝ রাস্তায় তদের কে বাঁচাতে আসে,””
ডাকাতের এক ছেলে কথার মধ্যে বলে উঠল “ওস্তাদ শুরু করেন, “!!
ডাকাত নুনের গলায় একটা কামড় দেই অনেক জুড়ে,নুন জিবনে প্রথম এমন কিছুর সাথে পরিচয়, কামড় দেয়ার সাথে সাথে নুন মা বলে একটা ডাক দেয়,আর সাথে সাথে উপস্থিত সবার মুখ লাল হয়ে যেতে থাকে।।।।

কি হবে নুনের জিবনে এই লাল কি নুনের জিবন শেষ করে দিবে নাকি ভাল করবে!!!!

নুন মেঘালয়ের গাড়ি থেকে নামল এবং মেঘালয় কে তার হাত ধরে নামালো।।নেমেই সে তুহিনকে খুব তাড়াতাড়ি বললো”””
ভাইয়া তাড়াতাড়ি চলুন এখনই হাসপাতলে যাব আর ওর হাতের একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ”
এই বলে সামনে গেল, আর নুন সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার পরিচিত কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে সে লোকটাকে চিনতে পারছে তার ভাই ফার্মেসিতে ওষুধ কিনছে, মনে মনে কু ডাক দিল সে ভাবলো বাড়ির সবাই ঠিক আছে তো?? সে এই ভেবে দৌড়ে তার ভাইয়ের কাছে গেল এবং হাপাতে হাপাতে ভাই সামনে দাঁড়িয়ে বলল
“”” ভাই ভালো আছো?? বাড়ির সবাই ঠিক আছে??”””
জনি নুন কে দেখে চমকে গেলো সে বলল,
“” নুন তুই কখন এলি,তর কোন হ্মতি হয় নি ত বোন?? নুন কোন কথা বলল না সে কাপছে,
তা দেখে জনি বলল,
“বাড়ির সবকিছু ঠিক আছে। ”
এবার নুন বলল আমি ভাল আছি তুমি হাসপাতালে কেন এত সকালে???.
জনি আমতাআমতা করতে লাগল..তা দেখে নুন আরো ঘাবড়ে গেল,
জনি বলল মা বাবা তর কথা শুনে প্রেসার বাড়িয়ে ফেলেছে।তাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে এসেছি।
জনি ওষুধের প্যাকেটটা নিতে নিতে বলল চল হাসপাতালে ভিতরে।
নুন এবার আর নিজেকে সামলে রাখতে পারল না সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল ভাইকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“”ভাই সত্যি করে বল কি হয়েছে বাবা মা ভালো আছে??””
তার হাত পা কাঁপতে লাগলো। আর জনি বল, “”আরে পাগলি কিছু হয়নি বললাম না শুধু প্রেসার চল চল।
নুন চলে গেল তার ভাইয়ের সাথে

___________________________________
নুন একবারও পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখল না তার দিকে তাকিয়ে আছে এক জোড়া চোখ যে চোখে হাজারো মিনতি যেন না যায় কিন্তু না নুন আর পিছনে ফিরে তাকায় নি সে তার ভাইয়ের সাথে চলে গেছে মেঘালয় ভাবছে যে মেয়েটা আমার জন্য সারাটা রাত কান্না করলো সে কিনা এখন আমাকে না বলেই চলে গেল??? কেন কান্না করলো??? তাহলে সেটা কি ছিল নুন কি আমার জন্য কান্না করে নি??? নাকি সে নিজের জন্য কান্না করেছে?? যেন ডাকাতেরা তারা কান্না ধরে সে কি ভয় পেয়ে কান্না করেছিল?? এভাবেই হাজারো প্রশ্ন মেঘালয় নিজেকে করতে থাকে.
পাশে থেকে তুহিন বলে উঠলো কিরে মেঘালয় তুই আর নুন দুজন দুজনকে ভালোবাসি কিন্তু নুন তকে এভাবে এই অবস্থায় রেখে চলে যেতে পারল আবার কিছু বলে ও গেল না তাহলে তোদের ভালোবাসা মানেটা কি??? আর আমাদেরকে কেন জানাস নি এতদিন???
তুহিনের কথা শুনে মেঘালয় চমকে গেল তার দিকে দিকে তাকিয়ে বলল
“” সালা মদ খেয়েছিস?? এই আবোল তাবোল কথা বলছিস কেন??
শাকিব তাদের কথার মধ্যে ফোড়ন কেটে বলল “””মিথ্যে বলছি আমরা তাই না গাড়িতে কি করেছেন???নুন তর জন্য দেখেছিস কান্না করছে জড়িয়ে ধরে কি পাগলামি এটা তো শুধু একজন প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে হয়ে থাকে তাই না??
মেঘালয় এবার বলল
“”” আমিও জানিনা কেন নুন এমন করেছে কেন সে ধূমকেতুর মত আমার জীবনে এসেছে আর কেনই বা সে আমার জন্য এত কান্না করেছে জানিস ও মনে হয় আমার জন্য কান্না করে নি রে ভয় পেয়েছিল ডাকাতের ভয় তাই সে কান্না করেছে মেঘালয় আরো বললো যে তারা নুনএর মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই ওইদিনই তাদের প্রথম দেখা হয়।
এই কথা শুনে তার বন্ধুরা সবাই চমকে গেল একটা অচেনা মেয়ে একটা অচেনা ছেলের জন্য এভাবে কান্না করতে পারে তুহিন বিরক্তি ভরা কণ্ঠে বলল
“””এই বাদ দে তো চল আমরা মেঘকে ডাক্তার কাছে নিয়ে যাই এসব নাটক দেখার টাইম নাই বুঝলে দেখছিস না ওর হাত কেটে গেছে কষ্ট পাচ্ছে তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেল।
একটা ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে বসলো ডাক্তার ডেসিং করে তারপর সেলাই করে ব্যান্ডেজ করে দিলেন, আর বললেন বাসায় গিয়ে কিছুদিন রেস্ট নিতে হবে।
আর এদিকে মেঘালয় শুধু এটাই ভাবছি এটা কেন ধূমকেতুর মতো তার জীবনে এলো আবার কেনই বা সে উড়ে চলে গেল এর মানে তো বুঝলো না মেঘালয়।

________________________________________
জনি তার বোনকে তার বাবা-মায়ের কাছে নিয়ে গেল তার বাবা-মা নুন কে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল তাতে খুশি দেখে মনে হলো তারা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে। একজনের পর একজন নুনকে কাছে টেনে নিচ্ছে আর প্রতিযোগিতা লেগেছে কে নুনকে বেশি আদর করতে পারে বাবা-মায়ের কিছু হয়নি সেটা দেখে নুন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
আরিফ সাহেব বললেন,
“”নুন পিন্সিপাল বলল তোমাকে নাকি একটা লোক ডাকাতের হাত থেকে উদ্ধার করেছে,সে কই??
নুন বলল মেঘালয় বাবা,
“” কই সে??
নুন তার বাবাকে কিছু না বলে দৌড়ে আবার হাসপাতালের বাহিরে চলে আসলো এসেই মেঘালয় কে খুঁজতে লাগলো কিন্তু না কোথাও খুঁজে পেল না মেঘালয় চলে গেছে, নুন কি করে পারল তাকে এই অবস্থায় রেখে চলে যেতে,
নুন সেখানে দাঁড়িয়ে কান্না করতে লাগলো আরিফ সাহেব পিছনে পিছনে দৌড়ে এসেছিলেন এসে দেখলেন তার মেয়ে কান্না করছে তিনি মেয়ের কাধে হাত রাখলেন,
নুন তার বাবাকে দেখতে পেয়ে বলল
“”বাবা মেঘালয় চলে গেছে। “”
তখন নুনের বাবা বলল “”তার কোন মোবাইল নাম্বার আছে তোমার কাছে??
নুন বলল”” না বাবা””
তখন তিনি বললেন””” তাহলে তো আর যোগাযোগ করা সম্ভব না যেহেতু সে নিজ থেকে চলে গেছে ”
নুন বলল বাবা আমি ভাইয়াকে দেখে আর তার দিকে ফিরেও তাকাই নি তাকে নিচে রেখে উপরে চলে গিয়েছি।জানো বাবা ডাকাতরা না তার হাত কেটে ফেলেছে তা হাত দিয়ে অনেক রক্ত পরছিল নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিনা কি করবো বলো???
আরিফ সাহেব নিজেও কষ্ট পেলেন কথা শুনে তিনি মেয়েকে বুঝিয়ে শুনিয়ে তার মার কাছে নিয়ে আসলো।।
এসে বলল “””জনি তাড়াতাড়ি হাসপাতালে বিল মিটিয়ে দাও আর রনি কে ফোন করে বল গাড়ি নিয়ে আসতে আমরা এখনই বাড়ি যাবো।
তার কথামতো সবকিছু করল এবং এক ঘণ্টার মধ্যে তাদের বাড়িতে ফিরে গেল কিন্তু সারাদিনে একটিবারও নুন কারো সাথে ভালো মতো কথা বলে নি তার মন কেমন ছটফট করছে তার নিজেকে খুব অপরাধী লাগছে মেঘালয় চেহারা বারবার তার মুখের সামনে ভেসে উঠছে সে কিছু করতে পারছেনা তার খারাপ লাগছে বুকের ভেতর হাহাকার লাগছে সে বুঝতে পারছে কিছুটা সে হারিয়ে গেছে এমন ভাবেই সন্ধ্যার দিকে বসে বসে কান্না করছিল তার মনে হলো একেবারে বলা যেত না মেঘালয় তার ফোন নাম্বারটা দেওয়ার জন্য কিন্তু আমি তো এটা করিনি আহা কি ভুল করে ফেললাম মেঘালয় কে হারাতে হলো এই ভুলের জন্য। আহা আরেকবার যদি মেঘালয় কে খুঁজে পেতাম একদম মনের গভীরে জায়গা করে নিতাম। তখন হঠাৎ মনে হল আরে আমি মেঘালয় এর মোবাইল থেকে লামিয়া কে ফোন করেছিলাম তাহলে নিশ্চয়ই লামিয়ার মোবাইলের নাম্বার রয়েছে সাথে সাথে লামিয়াকে ফোন করলো আর তাদের বাড়ির সামনের মোড়ে আসতে বলল তাড়াতাড়ি মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে পরলো বাড়ির পাশে যে মোর আছে তার উদ্দেশ্যে।
তার মনে এখনও আশার আলো জ্বলছে আবার ফিরে পেতে চলেছে মেঘালয় কে, তার যেকোনো মূল্যে মেঘালয়কে চাই।

মেঘালয়কে ভালবেসে ফেলেছে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। একদিনে এক রাতে কি ভালোবাসা সম্ভব যদি সম্ভব হয় তাহলে নুন মেঘালয় কে ভালোবাসে।

নুন যখন মোড়ে পৌঁছাল তখন তার সাথে আবার আরেকটা দুর্ঘটনা ঘটলো এবার নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগল তার সাথে কেন এমন হচ্ছে সে খুজে পাবে না।। যে আশা ছিল সেটাও বন্ধ হয়ে গেল কি করবে সে কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল কোন মূল্য দিয়ে হোক। তখনই লামিয়া একটা আইডিয়া দিল যা শুনে নুন আবার দোড় লাগলো,,, তার মন বলছে মেঘালয় কে সে আবার ফিরে পাবে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত