আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি ॥
আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়
তুমি ছিলে আমার কাছে, তোমার কাছে যাই নি ॥
তুমি মোর আনন্দ হয়ে ছিলে আমার খেলায়–
আনন্দে তাই ভুলেছিলেম, কেটেছে দিন হেলায়।
গোপন রহি গভীর প্রাণে আমার দুঃখসুখের গানে
সুর দিয়েছ তুমি, আমি তোমার গান তো গাই নি ॥
তারমধ্যে আকাশ অভিমান কে ফোন দিয়ে শোনাচ্ছে, আমি গান শেষ করে সেখানে থেকে দৌড়ে ঘরে চলে আসলাম।
আকাশ ডাকছে আমি দরজা খুলতেই ও আমার হাতে ফোনটা দিয়ে চলে যায়।
অভিমান : হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।
ফুল : হ্যালো, ওয়ালাইকুমুস সালাম। আসসালামু আলাইকুম।
অভিমান : ওয়ালাইকুমুস সালাম। কেমন আছো প্রিয় তুমি।
ফুল : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন।
অভিমান : আলহামদুলিল্লাহ। প্রানোসী তুমি বিহনে হয়ত বেঁচে আছি। এ বাঁচা বেঁচে থাকা নয়। মন চাইছে ছুটে চলে আসি কিন্তু তুমি যে এখনো অনেক ছোট।
ফুল : ইশ ! এমন করে বলেন কেন। আপনার মিষ্টি অত্যাচার গুলো যে খুব মিস করি।
অভিমান : কি কি মিস করছ। বল একটু শুনি জড়িয়ে ধরা চুমু খেতে চাওয়া তাও জোর করে।
ফুল : এভাবে বলছেন কেন, আমার লজ্জা করে না বুঝি।
এরমধ্যে আমার ডাক পড়ল বড় মার ঘরে। সেদিনের মত কথা শেষ করে দেই।
সেদিনের পর থেকে চার বছর কোন কথা হয় নি আর। প্রতি রাতেই তাকে অনুভব করতাম। কষ্ট পেতাম প্রচুর। হৃদয়ঙ্গনে শুধু তার বিচরণ ঘটত সব সময়।
একদিন দুপুরে কলেজ থেকে ফিরে দেখি বাড়িতে মেহমান প্রচুর। প্রশ্ন করতেই শুনি যে আমার অভিমান ফিরে আসবে আজ। বাড়ির সবাই তাকে আনতে যাচ্ছে এয়ার পোর্টে শুধু আমি ছাড়া।
যখন সে বাড়িতে ফিরে আসে । তখন তাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। কিন্তু আমার খুশি বেশিক্ষণ থাকল না। পেছন থেকে এক শাকচুন্নী এসে ওকে জড়িয়ে ধরল। ওর গার্লফ্রেন্ড, বলাতে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
আমি কংগ্রেস জানিয়ে আমার ঘরে চলে এলাম। তখন শুধু আমি অবাক হয়ে যাই নি আকাশ অবাক হয়ে গেছিল। আকাশ তো সব জানতো।
ঘরে এসে বিড়বিড় করে রেদোয়ান মাসুদ, এর কষ্ট আবৃত্তি করতে লাগলাম। তবে যদি এই কষ্ট লাঘব হয়।
আমাকে কষ্ট দিতে চাও?
দাও!
আমি কষ্ট নিতেই এসছি।
আমাকে কাঁদাতে চাও?
কাঁদাও!
আমি কাঁদতেই এসেছি।
আমাকে হারাতে চাও?
হারাও!
আমি হারতেই এসেছি।
আমাকে সাগরে ভাসাতে চাও?
ভাসাও!
আমি ভাসতেই এসেছি।
আমাকে পোড়াতে চাও?
পোড়াও!
আমি পুড়তেই এসছি।
আমাকে বুকে টেনে নাও
নিবে না?
আমি সবকিছু সয়েই এসছি।
আকাশ পেছনে থেকে বলল রাগ করিস না দোস্ত। সে গেছে তো গেছে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখবি।
আকাশ জুড়ে মেঘ ডাকছে আমার পানে। আকাশ আমি তো তাকে ভালবাসতে চাই নি।
“” তবে কেন সে লাল সবুজের খামে নীল রঙের কাগজে লিখেছিল প্রণয়ের অনুভূতি।””
আকাশ বলল নিজেকে শান্ত কর। বলে চলে গেল।
****
রাতের বেলা খাবার টেবিলে সেই মেয়ের কি আদিক্ষেতা এই খায়না সেই খায়না। অভিমান তেমন কি সুন্দর মেয়েটাকে গুছিয়ে গুছিয়ে খাওয়াচ্ছে।
ভাইয়া তখন বলল বাবা ও চাচা আপনাদের একটা অনুমতি চাই। বোনের জন্য একটা ভালো পাত্র পেয়েছি। তাই তাদের দেখতে আসতে বলেছি। যদি আপনারা বলেন তো বিয়ে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আমি কিছু না বলে উপরে চলে আসলাম। বিয়ের কথা শুনে সে কোন রিয়েক্ট করল না। এতে আরো বেশি কষ্ট অনুভব করলাম।
কেন এমন কষ্ট পেতে হয় বারবার ভালোবাসার। তবে ভালবাসা থাক দুরে এবার পরিবারের কথা ভাবব।
রাতের দ্বি প্রহরে ঘুম ভেঙ্গে গেল ফুলের। চারদিকে শুনসান নীরবতার বদলে, এখনেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে কোলাহল।
মনে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
তখনই ব্যালকনি তে আওয়াজ হয়। দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে কেউ এমন লাগছে।
গিয়ে খুলে দিতেই হুড়মড়িয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ল অভিমান। ঢুকেই জাপটে ধরল আমাকে আষ্টেপৃষ্টে। আমার যেন শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এমন অবস্থা।
অভিমান : কি ব্যাপার আমার সাথে একজনকে দেখেও কোন রিয়েক্ট করলি না কেন।
ফুল : তুমি সুখ যদি নাহি পাও যাও সুখের সন্ধানে যাও আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন তোমাতে করিব বাস।
অভিমান : উত্তর দে ফুল, আমি তোর উত্তরের অপেক্ষায়।
ফুল : ভালোবাসা সে তো চারবছরে একবারো মনে হয় নি। তবে কেন আজ আমার দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছেন।
অভিমান : এটা আমার জবাব নয়। ভালো ভাবে জবাব দে।
পরের পর্ব: