আমার মায়ের গলায় সমস্যা, চিঁচি করে কথা বলেন।
আমার দাদির চোখ ছানি পড়ে অন্ধ হয়ে গেছে। এক চোখে ধূসর ছানি, আরেক চোখে নীলাভ।
আমার দাদার স্ক্রটাল হার্নিয়া।
অন্য এক নারীর গর্ভে আরেকটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন আমার বাবা। সেই অপর নারীকে আমি চিনি না, সন্তানটিরও কোনো খবর জানি না। শুধু জানি, সে বয়সে আমার চেয়ে বড়, আর সে জন্যে লোকে বলাবলি করে, আমার বাবা আসলে অন্য কেউ।
বাবা সেই অন্য সন্তানটিকে বড়দিনের উপহার কিনে দেন আর আমার মাকে বলেন, সেই অপর সন্তানের পিতা আসলে অন্য আরেকজন।
প্রতি নববর্ষে ডাকপিয়ন একশ ?লেই?-এর নোট ভরা একটা খাম তুলে দেয় আমার হাতে, আর বলে, এটা সান্টা ক্লজের কাছ থেকে এসেছে। তবে আমার মা বলেন, আমার অন্য কোনো বাবা নেই।
লোকে বলে, আমার দাদি আমার দাদাকে বিয়ে করেছিলেন দাদা জমিজায়গার মালিক বলে, আর দাদির আসলে প্রেম ছিল আরেক লোকের সঙ্গে আর সেই অপর লোকটাকে বিয়ে করলেই দাদি ভালো করতেন, কারণ আমার দাদা তার আত্মীয় সম্পর্কের মধ্যেই পড়েন, এতো ঘনিষ্ঠ আত্মীয় যে, ব্যাপারটা অজাচারের পর্যায়ে পড়ে যায়।
কিছু লোক এও বলাবলি করে, নানাজানও আসলে আমার মায়ের সত্যিকার বাবা নন। আর আমার মামারও সত্যিকার বাবা আসলে আরেকজন, সেই আরেকজন আবার আমার মায়ের সত্যিকার বাবা-লোকটি নন। সেই আরেকজন আসলে ?আরেকজন?।
আর এ কারণে অপর এক সন্তানের দাদা আসলে আমার সত্যিকার দাদা, আর লোকে বলে, আমার দাদা আসলে অন্য আরেকটি সন্তানের দাদা। একই ?আরেকটি? সন্তান নয়, ?আরেকটি? অপর সন্তান। লোকে আরো বলে, আমার দাদির আম্মা খুব অল্পবয়সে মারা গিয়েছিলেন, ধরে নেওয়া হয় ঠাণ্ডা লেগে, কিন্তু সেটা স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না মোটেও, সেটা ছিল আত্মহত্যা।
আরেক পদের লোকজন বলাবলি করে, এটা রোগে ভূগে মৃত্যু ছিল না বটে, তবে ঠিক আত্মহত্যাও ছিল না। ছিল হত্যা।
তার মৃত্যুর পর আমার দাদার বাবা দেরি না করে আরেকটি বিয়ে বসেন। তার সেই স্ত্রীর আগে থেকে একটি সন্তান ছিল অপর এক পুরুষের ঔরসজাত, সেই পুরুষের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল না তার। তবে সেই গর্ভধারণের সময় তিনি আবার অবিবাহিতও ছিলেন না। আমার দাদার বাবার সঙ্গে বিয়ে বসার পর তার আরেকটি সন্তান হয়। লোকে বলে, এই সন্তানটিরও সত্যিকার বাবা অন্য কেউ, আমার দাদার বাবা নন।
বছরের পর বছর ধরে আমার দাদার বাবা প্রতি শনিবার যেতেন একটা ছোট্ট শহরে, বায়ু পরিবর্তনকারীদের পছন্দের শহর।
লোকে বলে এই ছোট্ট শহরে অপর এক নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল।
সেই শহরে আমার দাদার বাবাকে প্রকাশ্যে অপর একটি শিশুর হাত ধরে চলাফেরা করতে দেখা গেছে, এমনকি সেই শিশুটির সঙ্গে অপর এক ভাষায় কথা বলছিলেন তিনি।
তবে সেই অপর নারীর সঙ্গে কখনই দেখা যায়নি তাকে। লোকে বলে, অপর নারীটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেশ্যা ছাড়া অন্য কিছু হওয়া সম্ভব নয়, যেহেতু তাকে নিয়ে কখনও প্রকাশ্যে বের হতে দেখা যায়নি আমার দাদার বাবাকে।
লোকে বলে, নিজ গ্রামের বাইরে যে লোকের আরেকটি নারী থাকে এবং আরেকটি সন্তান থাকে, সে ঘৃণার পাত্র আর এটা অজাচারের চেয়ে ভালো কোনো কর্ম নয়। বলতে কী, অজাচারের চেয়েও জঘন্য কর্ম।