-এই সাজ-সকালে সেজেগুজে কোথায় যাও আবার?
– আজ কলেজে এডমিট দিবে মা, যেতে হবে।
– ওহ। তা রান্না?
– সব করা হয়ে গেছে। বাবুকে এক বার খাইয়েছি। পারলে একটু হরলিক্স টা দিয়েন ও খেয়ে নিবে। দুপুরের খাবার আমি এসে খাওয়াবো।
– ঠিক আছে। দেখিও আবার বাপের বাড়ি উঠে বসে থেকো না।
শালা, সব করেও শান্তি নেই। এই শাশুড়ি নামক বস্তুটা না থাকলে সংসার টা শান্তির হতো। সব করে দিয়ে যায়। তারপর ও কিছু করি না। কোথাও বের হতে গেলে হাজার টা কৈফিয়ত দিতে হয়। তার উপর আছে হাজার টা দোষ ধরা, বউয়ের সব কিছু খারাপ। মাঝে মধ্য ইচ্ছে হয় নিজেই মেরে ফেলি সব গুলাকে, অসহ্য করে তুলে জীবনটাকে।
অনেক দিন পর কলেজে গেলাম। আজ মাস্টার্স এর এডমিট দিবে। সবার সাথে দেখা হলো। খুব ভালো লাগছে। বান্ধবীদের সাথে কিছুক্ষন মার্কেটে ঘুরলাম টুকটাক জিনিস কিনলাম। একটা সুপার সপে হঠাৎ মিতালীর সাথে দেখা৷ অনেক দিন, প্রায় অনেক বছর পর । ওর ইন্টারের সময় বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো। আর দেখা হয় নি। দুইজনেই দুজনকে দেখে ভীষণ খুশি লাগে। অনেক কথা হরবর করে বলে ফেলি। ও বলল, ওর বাসা খুব কাছে। বাসায় যেতে। আমিও রাজি হলাম। আরো ঘন্টাখানিক পরে গেলে হবে বাসায়। আর প্রতিদিন তো বের হয় না। মিতালীর বাসায় ডুকেই বেশ ভালো লাগল। সাদামাটা বেশ সুন্দর। বাসায় কেউ নেই। বাচ্চারা স্কুলে, জামাই অফিসে। ওকে বললাম,
-অনেক লাকি তুই, শশুড় শাশুড়ি সাথে নেই। মিতালী কিছু বলে না ,একটু হাসে। আমার জন্য শরবত বানায় ও, আমি ডায়নিং টেবিলে এক চেয়ার টেনে বসলাম। ও এসে বলল,
-তোর শশুড় শাশুড়ি সাথে থাকে নাকি?
– আর বলিস না। জ্বালায় খায়। একা আছিস ভালো আছিস।
-আরে এইভাবে বলিস না।
– আরে তোর নাই, যে তুই তো বলবি। থাকতো না সাথে। বুঝতি বাপু কত ধানে কত চাল। শোন আজকের কথা, সব রান্না বান্না করেই এসেছি।তাও ওনার সমস্যা। বলে বাপের বাড়ি উঠে বসে থেকো না৷ কোন দরকার আছে খোটা মারার?
– বাচ্চাটা তো রেখে আসতে পারলি নিশ্চিন্তে, তাই না?
আমি কিছু না বলে অন্য কথা বলতে শুরু করলাম। তারপর সংসারী দুই বান্ধবীর কথা ঘুরেফিরে সংসারেই ফিরে আসে। জামাই শাশুড়িতে। আমার সব শাশুড়ির বদনাম। দেখলাম মিতালী তেমন রেসপন্স করছে না।মানে ও তো বদনামের ঝুড়ি খুলে বসছে না। আমি চুপ হয়ে যাওয়ায় ও বুঝতে পারে। আমার সামনে আরেকটা চেয়ার টেনে বসে মিতালী ।
-শোন মোহনা, আমি জানি না তোর শাশুড়ি কেমন? আমি জানি না তুই কেমন ব্যবহার করিস? কিংবা তোদের ফ্যামিলি কেমন? আমি বলছি না তুই খারাপ তুই শাশুড়ির বদনাম করছিস। আমিও কোন ধোয়া তুলসি পাতা না। আমি তোর চেয়েও বেশি বিরক্ত ছিলাম যখন ওনি বেঁচে ছিলেন।
-মারা গেছে? আমি ভ্রু কুচকে তাকায়।
– হুম। জানিস তো আমার অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিলো।
-হুম।
– আমার তারাতারি বেবিও কনসিভ হয়ে যাই।
শাশুড়ি বাপের বাড়িও যেতে দিতো না। কারণ অশোক ওনাদের একটা ছেলে। আর আমার বাচ্চা ওনাদের একমাত্র নাতি। খুব রাগ হতো। জানিস আমি প্রায় ঝগড়া করতাম। এটা ওটা নিয়ে। ওনার উপর রাগ করে বাচ্চাকে মারধর করতাম। আমার শাশুড়ি ধরতে এলে কতবার ওনার গায়েও ফেলে দিয়েছি একটা ইচ্ছে করে। সেসব কথা এখন ভাবলে খুব ঘৃনা লাগে কিন্তু তখন খুব মজা লাগত। তারপর ও ওনি নাতিকে বাঁচাতে আসতেন। অশোকের সাথে প্রায় ঝগড়া হতো আমি ওনার সাথে এক ঘরে থাকতে পারব না। অশোক আমার কোন কথা শুনতো না। ও মাকে ছেড়ে যাবে না।
আমাদের ঝগড়া বেশি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যেতে পারত না কারণ ওর মা এসে থামিয়ে দিতো। আমাকে থামাতে না পারলে ওকে থামিয়ে দিতো। আমিও ঠান্ডা হয়ে যেতাম। আমার সত্যি অসহ্য লাগতো ওনার সব কিছু ভালো কিছু বললেও মনে হতো আমার উপর খবরদারি করছেন। এই নিয়ে আমার আর অশোকের সর্ম্পক কখনো ভালো ছিলো না। এই জন্য ও আমার ওনাকেই দায়ী মনে হতো। একদিন মাছ রান্নায় বেশি লবণ হওয়ায় ওনি আমাকে কথা শোনাচ্ছিলেন। আমার খুব রাগ উঠে সেদিন। আমিও খুব কথা শুনিয়ে দিই ওনাকে। কিছুক্ষন পর দেখি ওনি কাশতে শুরু করেন। আর ওনার ডং দেখে আমার বিরক্ত লাগছিল। আমি বাথরুমে গিয়ে বসে থাকি। অনেকক্ষন পর আমার ছেলে রাব্বি এসে বলে,
– মা ঠাম্মি অনেক কাশতেছে। আসো না, ডাক্তার ডাকো। প্লিজ মা। আমি বলি,
-যা তুই গিয়ে কর। এখন আমাকে লাগছে কেন? ছেলে কিছুক্ষন পর আবার আসে,
– মা ঠাম্মির মুখ দিয়ে রক্ত আসছে, প্লিজ আসো, তুমি না পারলে বাবাকে ফোন দাও।
এইবার আমি গিয়ে দেখি সত্যি ওনি বিছানার চাদর লাল করে ফেলছেন। আমি খুব ভয় পাই। আমি অশোকে ফোন দিয়ে, নিজেই ওনাকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যাই। ৩ দিন ওনাকে রাখা হয় হসপিটালে। ওনার সব আমাকেই করতে হচ্ছিল কারণ বিছানায় সব করছিলেন। আমার এত রাগ হচ্ছিল বলার মতো না। মনে মনে বলছিলাম, মরে গেলে তো বাচঁতাম। জ্বালায় খাচ্ছে। হসপিটাল থেকে আনার পর বাসায় একটা মেয়ে রাখি। অসুস্থ হওয়ার পর ও ওনার জেদ কমে না। সারাদিন প্যানপ্যান। কিছুদিন পর অশোককে বিছনায় মাথা হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখি। আমি ওর কাছে যাই। বলি,
-কি হয়েছে?
-কিছু না।
কিন্তু ওর গলাটা ধরা ধরা লাগছিল। আমি ওর পাশে বসে ওর কাধে হাত দিতেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে। আমি ওকে কখনো কান্না করতে দেখিনি।
-এই, কি হয়েছে তোমার? বলো,
– মিতালী তুমি আমাকে ভালোবাসো?
-এই আবার কেমন কথা, এত বছর পর?
-প্লিজ বলো।
-বাসবো না কেন? বলো কি হয়েছে?
– আমার জন্য একটা কাজ করতে পারবে?
– কি?
– তুমি মায়ের সাথে আর ঝগড়া করিও না।
যদি মায়ের কথা খারাপ লাগে তুমি আমাকে বলিও। পারলে আমাকে মারতেও পারবে রুমে এসে৷ প্লিজ, মা আর বেশি দিন বাঁচবে না। এই কয়েকটা মাস মায়ের সাথে মিলেমিশে থাকো না। আমি আর কিছু বলতে পারি না। বললে তো আর হয় না। আমি চেষ্টা করছিলাম ওনার কথার উত্তর না দিয়ে থাকতে। কিন্তু এতে কি হচ্ছিল আমার ভিতরে অনেক কিছু জমে যাচ্ছিলো। না পারছিলাম কাউকে বলতে না পারছি সহ্য করতে। কারণ মানুষ তো একদিনে বদলায় না।
ওনাকে আবার হসপিটালে দেওয়া হয়। এইবার আমার দরকার হয় না। আমি রাব্বিকে নিয়ে বাসায় থাকি। দুপুরে ঘুমাচ্ছিলাম হঠাৎ মনে হলো রাব্বির আওয়াজ পাচ্ছি না। দৌড়ে গিয়ে দেখি ও রেলিং ধরে ঝুলে বল নিচ্ছে। আমার বুক ধরপর করে উঠে। ওকে টেনে এনে বকা দিই ও মুখে মুখে কথা বললে ওকে মারতে শুরু করি। তখন তো আর শাশুড়ি নেই। কেউ ধরতে আসছে না। কিছুক্ষন পর খেয়াল হয় আমার ছেলেটা কেমন যেন করছে। তাড়াতাড়ি আবার ওকে পানি খাওয়াই। বুকে নিই। এত খারাপ লাগছিলো। তখন মনে হচ্ছিল শাশুড়ি থাকলে এমনটা কখনো হতো না। রাতে ছেলের খুব জ্বর আসে। অশোক বাসায় আসলে রাব্বি বলে দেয়, আমি ওকে মেরেছি। অশোক একে মাকে নিয়ে চিন্তায় তার উপর ক্লান্ত, ছেলেকে এইভাবে মেরেছি দেখে খুব রেগে যায়। কথা কাটাকাটি হয়, এক পর্যায়ে ঝগড়া বেড়ে যায়। আমিও চুপ থাকি না। অশোক রাগে আমাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বসে। আমি চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। ও আবার আমাকে সরি বলে। তখন আমি চিন্তা করি এর চেয়ে বেশি ঝগড়া হয়েছে, কখনো এমন হয় নি। আজ শাশুড়ি থাকলে এমন হতো না। ওনাকে কখনো মন থেকে মা ডাকি নি। সেদিন অজান্তে মন থেকে মা ডেকে উঠেছিলাম। ওনাকে বাসায় আনার পর আমার মুখে দাগ দেখে ওনি অশোককে অনেক বকাবকি করে।
– এই শিক্ষা দিসি তোকে? আমি এখনো বেঁচে আছি। এখন এইসব করছিস। আমি মরলে তো কাটাকাটি করবি।
এরপর আমি আসলেই ওনার সাথে টান অনুভব করছিলাম। ওনি কিছু বললে চুপ না থেকে ওনাকে হেসে হেসে বুঝাতাম। ওনি বুঝতেন। মাঝে মধ্যে বসে গল্প করতাম। প্রথম প্রথম সহজ ছিলো না ব্যাপারটা ওনার কথা গুলো ভালো লাগত না। তারপর ও বুঝার চেষ্টা করতাম। কিছু দিন পর ওনাকে আবার হসপিটালে দেওয়া হয় তখন মন থেকে ওনার সেবা করেছিলাম।
ওনি মুখে কিছু না বললেও চোখ গুলো ভীষণ মায়া দেখাত। আবার বাসায় নিয়ে আসি। তখন ওনার সাথে আমার সর্ম্পক অনেক ভালো। আমার আর অশোকের ঝগড়া হলে ওনি আমার হয়ে কথা বলতেন। তারপর ও কিছু জিনিস তো থাকতো। এইটা এমন কেন? ওটা এমন করছো কেন? চিন্তা করতাম ওনি আছে তাই কথা না শুনার জন্য ও এইসব ঠিক করে করি। না থাকলে তখন? শেষবার যখন হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় ওনাকে তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন কি হারিয়ে ফেলছি। খুব ইচ্ছে করছিলো একবার ওনাকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু স্বাভাবিক কি যেন একটা বাধা, ওনি শাশুড়ি। হসপিটালে নাকি ওনি অশোকে বলেছিলো, আমার তো মেয়ে ছিলো না। কিন্তু বৌমা শেষে হলেও একটু মেয়ের সুখ দিলো। এই কথা শুনে আমি অশোকের বুকে হাউমাউ করে কেঁদেছি,
– এমন শর্ত তুমি আমাকে আগে কেন দিলে না? আমি ওর কথা শুনতে শুনতে প্রায় কান্না করেই দিয়েছিলাম। কিছুক্ষন পর বললাম,
– সহজে মানুষ পাল্টায় না।শাশুড়িরা কখনো মায়ের মতো হয় না।
– সেটা সত্য। মা তো মায়ের জায়গায়। জিনিস টা আসলে খুব স্বাভাবিক। আমরা শুধু শুধু গুলিয়ে ফেলি। দেখ, তুই যখন মায়ের কাছে ছিলি কোন কাজ করতি না। এখন গেলেও করবি না। কিন্তু তোর ভাইয়ের বউ যখন আসবে তখন ঠিক চাইবে সে করুক। মা একটু রেস্ট নিক। তাই না? দায়িত্ব এক জায়গায় আর ভালবাসা এক জায়গায়।
-হয়ত। কিন্তু সব সময় বলা যত সহজ সব কিছু এত সহজ হয় না মিতালী। অনেক শাশুড়ি আছে বউ দের সুখ সহ্য করতে পারে না।
– আছে হয়ত। চিন্তা করে দেখ কত মেয়ে শশুড় বাড়িতে নির্যাতিত হয় রোজ। মাতাল স্বামী ঘরে এসে মারে। আমি শুনেছি অনেক মেয়ে আছে যাদের দেবর ভাসুর অবধি মারে। চিন্তা করে দেখ না তাদের তুলনায় আমরা কত ভাল আছি। আর আমাদের এই ভাল থাকাটা নির্ভর করে স্বামীর উপর। আর স্বামীটা কে ভালো রাখায় জন্য তাদের মায়ের কি অবদান নেই?
– হয়ত। কিন্তু,
– আমি বলছি না একদিনে গল্পের শেষের মতো সব মুহূর্তে ঠিক হয়ে যাবে শাশুড়ি তুকে বুকে জড়িয়ে নিবে। কিংবা তুই সব সময় তারা যা বলে চুপচাপ সহ্য করে নিবি। চুপ থাকা কখনো সমাধান হয় না। কিংবা সব সময় প্রতিবাদ ও সমাধান নয়। নিজেকে বুঝ তাকে বুঝা, এমন না যে তারা মা বলে ভুল করতে পারে না। সাধারণ মানুষ তারাও। বুঝিয়ে বলবি। তাদের পছন্দটা জানলেও জানতে চাইবি, বলবি বানিয়ে দিবো। আর এই ব্যাপারটা আমি অন্য কারো জন্য না তোর নিজের জন্য করতে বলছি। যদি ওনার সাথে তোর সর্ম্পক ভালো থাকে তার প্রভাব প্রথমে পড়বে তোর শরীর আর মনে। মানসিক শান্তি পাবি। তারপর পড়বে তোর সন্তানদের উপর। ওরা ভালো একটা পরিবেশ পাবে। এমন যেন না হয় তুই ওনার মৃত্যু কামনা করছিস আর ওনি তোর। তখন ব্যাপারটা কেমন হবে বল তো? আমি চুপ করে থাকি। হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠে।
-হ্যালো, বলেন।
– বাবু তো খুব কান্না করছে , আসবে কখন? কাজ শেষ হয়েছে?
-কেন? কান্না করছে কেন?
-পায়খানা করছে পরিস্কার করে দিসি।
– আচ্ছা আমি আসতেছি। মিতালীর থেকে বিদায় নিয়ে বের হলাম। আবার ফোন দিলাম শাশুড়িকে।
-হ্যালো মা, আপনার জন্য কিছু লাগবে?
– না।
তারপর ও এক আটি লাল শাক আর কচুর লতি নিলাম। মা এইসব খুব পছন্দ করে। আমার দুইটাই অপছন্দ। বাসায় কেউ খায় না। রান্না করলে ওনার সাথে সাথে আমারও খেতে হতো তাই আমি এইসব আনলে খুব রাগারাগি করতাম।
বাসায় গিয়ে ওনার জন্য রান্না করলাম। মিতালীর কথা মতো চেষ্টা করতাম ওনার সাথে ভালো সর্ম্পক করার। ব্যাপারটা সহজ ছিলো না। কিন্তু তত কঠিন ও ছিলো না। ওনার কোন কথা আমার ভালো না লাগলে আমি ওনাকে বলতাম। ওনাকে বলেছি পিছন থেকে না বলতে। ভুল হলে বলবেন,তাহলে আমি শুধরে নিবো। আর আমি খেয়াল করলাম এই সামান্য ব্যাপারটা সহজ হলে সব সহজ হয়ে যায়। কিছুদিন পর মা ইন্ডিয়া যায় তীর্থে। আগে ওনি বাইরে থাকলে আমার নিজেকে স্বাধীন মনে হতো কিন্তু এখন কেমন যেনো পুরো ঘর খালি খালি লাগছে। সব নিয়ম এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় নিজের কাজ গুলো ঠিক টাইমে শেষ করতে পারতাম না। ১৫ দিন পর যখন ওনি ফিরে আসে। সেদিন সবাই আসে। ওনি সবার জন্য কাপড় চোপড় আনে। ওনার দুই মেয়ে। ওদের জন্য ও আনে। আমার শাড়িটা সবার থেকে ভিন্ন। বড় দিদি ওটা পছন্দ করে। অন্য সময় হলে ওনি দিয়ে দিতেন। কিন্তু আজ দিলেন না। দিদি রাগ করায় আমি বলি,
-মা দিয়ে দেন দিদিকে।
-না, আমি তোমার জন্য পছন্দ করে এনেছি। শোন তোরা আমার মেয়ে হলেও আমি যদি মরে যাই তোরা আমাকে দেখতে আসবি পরে। আর মরার সময় আমাকে প্রথম দেখবে ঘরের বউ। আমার পাশে থাকবে সে। কথাটা শুনে সত্যি মনটা ভরে গেল। ব্যাপারটা হতো না যদি আমি মিতালীর কথা শুনে সর্ম্পকটা সহজ না করতাম।
আসলেই অন্ধকারকে অন্ধকার দিয়ে নয় আলো দিয়ে দূর করতে হয়।
গল্পের বিষয়:
গল্প