সঞ্চিতা ও স্বপ্নের পাখিরা

মা সঞ্চিতাকে পাঁচতলার এই বাসা থেকে কিছুতেই নামতে দেন না। কারণ প্রতিদিনই রাজধানীর কোনো না কোনো স্থান থেকে শিশুদের অপহরণ করা হচ্ছে। বাবা অফিসে থেকে এসে যখন সঞ্চিতাকে মন ভারি করে ব্যালকোনিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন, তখন তার মনের মধ্যে ব্যথার ঢেউ খেলে যায়। সঞ্চিতার বিনোদনের একমাত্র সঙ্গি টিভি দেখা আর বাবা অফিস থেকে ফিরলে তাঁর মোবাইল নিয়ে গেম খেলা।

স্কুল থেকে ফিরেই সঞ্চিতা আজ মায়ের কাছে অভিযোগের ঝুড়ি ঢালতে থাকে। তার প্রথম অভিযোগ– স্কুলে মাঠ নাই, যেখানে প্রাণ খুলে দৌড়াতে পারবে। যেটুকুন আছে তা আবার ইট দিয়ে সোলিং করা। সেদিন ছুটি শেষে দৌড়ে আসতে গিয়ে পড়ে তার পা মচকে যায়।

সঞ্চিতা বাবা-মার কাছে শুনে এসেছে ঢাকা শহরের নামকরা দু-চারটা স্কুলের মধ্যে এটাও একটা। গতবার লটারিতে চান্স না পাওয়ায় এক বছর পর সঞ্চিতাকে আবার দ্বিতীয় শ্রেণিতেই ভর্তি হতে হয়েছে শুধুমাত্র এই স্কুলটার জন্যে।

বিকেলটা শেষ হয়ে যাচ্ছে, সঞ্চিতা পায়চারি করে বাবার প্রতীক্ষায়। মা দুশ্চিন্তায় ছায়া নিয়ে বসে থাকেন টিভির সামনে। স্ক্রলে ব্রেকিং নিউজে ভেসে উঠছে–বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন বারো।

এই মুহূর্তে সঞ্চিতার পায়চারি খুব বিরক্তিকর লাগছে তাই মা বলেন, সঞ্চিতা দুষ্টমি করো না। তোমার বাবা যেখানে গেছে সেখানে গ্রেনেড হামলা হয়েছে, ফোনে রিং হচ্ছে কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না, বিরক্ত না করে চুপচাপ বসে থাকো। ইতোমধ্যেই কলিংবেলের শব্দে সন্দেহের অবসান ঘটে। বাবা হাসফাস করতে করতে টিভির সামনের সোফায় এসে এড়িয়ে পড়েন। টিভিতে মৃতের সংবাদ শুনলেও তার মনের মধ্যে ভেসে উঠছে রোমহর্ষক, মর্মান্তিক আর বীভৎসতার ছবি।

সঞ্চিতার মুখটা ভার করে থাকা দেখতে চান না বলেই অনেকদিন পর বাবা আজ হঠাৎ করেই অ্যাকুরিয়াম নিয়ে হাজির। অ্যাকুরিয়ামের আনন্দে সঞ্চিতা ভাসতে থাকে। সেই আনন্দে বাবাও খুশি হন। সঞ্চিতা বাবার কাছে মাছগুলোর নাম জানতে চাইলে মা এসে বলেন– মাছের চেয়ে পাখি পোষা অনেক ভালো। এই মাছগুলো বেশিদিন বাঁচে না। সেক্ষেত্রে পাখির সঠিকভাবে যত্ন নিলে ডিম দেয়, বাচ্চা ফোটায়।

সেদিন স্কুলের পাশেই এক ভাবির বাসায় গিয়েছিলাম সঞ্চিতার পড়া দেখিয়ে নিতে। সেখানে দেখলাম– মুনিয়া পাখিগুলো কী সুন্দর বাচ্চা দিয়েছে।
মায়ের সাথে সাথে সঞ্চিতাও এবার পাখির জন্য বাবার কাছে বায়না ধরে। তার সপ্তাহ দুয়েক পরই এ বাসায় খাঁচাসহ দুটি লাভবার্ড পাখির আগমন ঘটে। পাখির প্রতি ভালোবাসা একটু বেশি বলেই এ বাসায় ধীরে ধীরে পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। ছোট্ট খাঁচার বদলে ব্যালকোনির বেশিরভাগ অংশ জুড়েই নেট দিয়ে বানানো হয় পাখির ঘর। সেই ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে দেওয়া হয় আধাভাঙা মাটির হাঁড়ি। কারওয়ান বাজার থেকে অনেক কষ্টে পুরাতন বাবুই পাখির পরিত্যক্ত বাসা আর পেয়ারা গাছের শুকনো ডাল সংগ্রহ করতে হয়েছে। ব্যালকোনির এমন দৃশ্য দেখলে সতি সত্যি এটাকে পাখির চিড়িয়াখানা বলেই মনে হবে।

২.
সারাদেশে একযোগে গ্রেনেড হামলা সঞ্চিতার মনেও ভীতির সঞ্চার করে। সঞ্চিতা বাবাকে যখন প্রশ্ন করে– বাবা এভাবে ওরা একসঙ্গে বোমা মেরেছে কেন? চলো আমরা মুন্সিগঞ্জ যাই?

কেন, মুন্সিগঞ্জ কেন?

বারে, সেখানে তো হামলা হয়নি, তাই!

দীর্ঘশ্বাস টেনে হালকা হাসি ঝুলিয়ে দিয়ে বাবা বলেন, ছোটোদের এসব নিয়ে ভাবতে হয় না।

সঞ্চিতা ক্লাস সিক্সে ওঠার পর থেকেই একটা নতুন নেশা যুক্ত হয়েছে। টিফিনের সময় লাইব্রেরিতে গিয়ে দৈনিক পত্রিকা পড়া। সঞ্চিতা পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে বলে, আচ্ছা ঋতু বলতে পারবি প্রতিদিনই আমরা একটা সংবাদ অন্তত কমন পাই সেটার নাম কী? ঋতু চোখ বড় করে বলে, প্রতিদিন একই সংবাদ! এমন তো শুনিনি? কি বলতো!

আরে বুঝলি না, সেটা হলো মৃত্যু।

সে-রকমই একটা সংবাদ আজ সঞ্চিতার মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রতিবাদ করলে পুলিশের গুলি চালাতে হবে কেন?

কয়লা খনির প্রতিবাদ করার ঘটনায় প্রাণ গেল তিনজনের। সঞ্চিতার বাবা এ ঘটনার জন্য সরকারকে যাচ্ছেতাই বলে একহাত নিয়ে নিলেন। এমন সময় সঞ্চিতার মা এসে বলেন– কি যা-তা বলছো।

সঞ্চিতার বাবা বিরোধীদলের সমর্থক আর মা ক্ষমতাসীনদের। কোনো কোনো দিন বাবা-মার মধ্যে তর্ক বাড়তে থাকলে সঞ্চিতাই এসে তার সমাধান করেছে।
আজ প্রধানমন্ত্রী বিদায়ী ভাষণ শুরু হলে সঞ্চিতার মা খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে থাকলে সঞ্চিতা স্কুল থেকে ফেরার পথে শাইনপুকুর মোড়ে দেখা বানঅলার গল্প বলতে থাকে; দুইটা বানর দুইপাশে। বানরঅলা যখন বলে, ধানের শীষ তখন বামপাশের বানরটার কী আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর লাফালাফি। আবার যখন বলে নৌকা– তখন ডান পাশের বানরটার আনন্দের বহিঃপ্রকাশ তোমাকে বোঝাতে পারবো না মা।

মায়ের মনোযোগ তখনও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের দিকে। সঞ্চিতা তা বুঝতে পেরে বলে, কি শুনছো তো?

মা সঞ্চিতার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছে এমন ভান করে বলেন, হ্যাঁ।

আবার যখন বলে, খালেদা জিয়া তখন বিএনপি বানরটা যে-রকম আনন্দের সাথে অভিনয় করলো ঠিক তেমনি অভিনয় করলো অপর বানটারটা শেখ হাসিনা বলার সাথে সাথে। শেষে হলো কি জানো? যখন দর্শরা টাকা দিতে শুরু করলো তখন দুটো বানরই কাড়াকাড়ি শুরু করে দিল। বাবার মোবাইলটা থাকলে ভিডিও করে আনতাম। অনেকেই ভিডিও করেছে।

তারপর দিন পল্টনে যা শুরু হলো তার বর্ণনা ব্যাখ্যাতীত। ছয় জনের মৃত্যু। দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে অসন্তোষ বাড়লে জরুরি অবস্থা জারি করে নির্বাচন স্থগিত করা হলে সঞ্চিতার বাবার স্বপ্নে কিছুটা ভাটা পড়ে। তিনি ভেবেছিলেন এবার দল ক্ষমতায় এলে আবার বদলি হয়ে হিমছড়ি ফিরে যাবেন পরিবার নিয়ে। ঢাকা শহরের যানজট, খাবারে ভেজাল, সন্তানের গুম হওয়ার চিন্তা থেকে অন্তত রেহায় পাওয়া যাবে। প্রতীক্ষার অবসান ঘটে তিন বছর পর। এরই মধ্যে দিন-তারিখ ঠিক হলো রাতুলরা হিমছড়ি থেকে ঢাকায় আসছে। তখন সঞ্চিতার আনন্দ আর দেখে কে?

৩.
আষাঢ়ে তেমন বৃষ্টি না হলেও এই শ্রাবণে এসে জানিয়ে দিচ্ছে বর্ষা কাকে বলে। চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এমন টানা বৃষ্টি ঢাকা শহরে হয়নি। মাত্র দু’দিন হলে সঞ্চিতাদের বাসায় এসেছে রাতুল। রাতুল সঞ্চিতার এক বছরের ছোট হলেও সঞ্চিতার এক ক্লাস ওপরে পড়ে। পড়া প্রসঙ্গ নিয়ে কথা তুললে সঞ্চিতার মন খারাপ হয় রাতুলের চেয়ে এক বছর নিচে পড়ার কারণে। কিন্তু বুদ্ধিসুদ্ধিতে সঞ্চিতা আবার রাতুলের দ্বিগুণ।

একটানা বৃষ্টি থামলে দুজনে এসে ব্যালকোনিতে দাঁড়ায়। ব্যালকোনির পাখি ঘরের মধ্যে– ককাটেল, লাভবার্ড, হামিংবার্ড, মুনিয়াসহ আরো বেশ কয়েক ধরনের বিদেশি পাখি।

রাতুল ব্যালকোনির পাখির দরজা খুলে দিতেই সঞ্চিতা চেঁচিয়ে ওঠে– রাতুল, কী করছো? দরজা খুলো না, পাখিগুলো তো উড়ে যাবে।

রাতুল বইতে পড়েছে, পাখিকে খাঁচায় পুষতে নেই। পাখি পোষা ভারি অন্যায়। বিরোধিতার ছলে রাতুল সঞ্চিতাকে বলে, আমাদের ওখানে পাখি শিকার করলে তাকে পুলিশে ধরে নিয়ে যায়। তা ঠিকই বলেছো।

তাহলে?

এই পাখিগুলো তো বিদেশি। এই পাখিগুলো ছেড়ে দিলে কোথায় যাবে? এখানে তো গ্রামের মতো কোনো ঝাউবন নাই। বাবা বলেছেন, এই পাখিগুলো এখানেই নাকি নিরাপদ জীবন-যাপন করে। এই পাখিগুলো আমাদের দেশি পাখিদের মতো ঝড়, বৃষ্টি, রোদ সহ্য করতে পারে না। রাতুল যুক্তিতে সঞ্চিতার সাথে পেরে না উঠে আবার আকাশের দিকে তাকায়। সঞ্চিতা রাতুলকে প্রশ্ন করে–

রাতুল জানো, আমাদের পাখিগুলো ডিম পাড়ে, সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায়। ওই যে দেখছো হলুদ রঙের লাভবার্ড, সাতদিন আগে সেটা ডিম থেকে বাচ্চা দিয়েছে। দ্যাখো দ্যাখো বাচ্চাগুলো পানি রাখা মাটির পাত্রের মধ্যে পাখনা মেলে গোসল করছে।

সঞ্চিতার কথা না-শোনার ভান করে রাতুল আকাশের দিকে চেয়েই থাকে, স্থির দৃষ্টি নিয়ে।

সঞ্চিতাও রাতুলের পাশে এসে আকাশের দিকে তাকায়। এখন বৃষ্টি নাই, আশেপাশে দু-একটা তারা দেখা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে মেঘ সরে গিয়ে চাঁদটা আলো দিয়ে আবার মেঘের আড়ালে চলে যাচ্ছে। মেঘ আর চাঁদের লুকোচুরি খেলা বেশ ভালোই লাগে রাতুলের।

রাতুল বুঝতে পারে না, খণ্ড খণ্ড মেঘগুলো দৌড়াচ্ছে না চাঁদটা দৌড়াচ্ছে। সঞ্চিতাকে প্রশ্ন করে–

সঞ্চিতা বলতে পারবে চাঁদ দৌড়াচ্ছে, না মেঘ দৌড়াচ্ছে?
সঞ্চিতা বলে মেঘ।
রাতুল বলে চাঁদ।
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় চাঁদ আর মেঘের দৌড়ের প্রতিযোগিতায় সঞ্চিতার কাছে হেয়ে যায় রাতুল।

এই কয়েকদিনেই সঞ্চিতাদের বাসায় অ্যাকুরিয়ামের মাছগুলোর সাথে হৃদ্যতা বেড়ে গেছে রাতুলের। বিশেষ করে গোল্ড ফিস, অ্যাঞ্জেল ফিস আর ক্যাট ফিসের কথা মনে পড়ছে বার বার। এমন সুন্দর মাছ তারা হিমছড়ির জলপ্রপাতে বেড়াতে গিয়েও কখনো দেখেনি।

এই সাতদিনে ঢাকা শহরের সব দর্শনীয় স্থান দেখা শেষ হয়ে গেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ভাষানী নভোথিয়েটার। কাপড়ের ব্যাগগুলো গোছানো হয়ে গেছে। রাত বারোটায় কমলাপুর থেকে রওনা দেবেন চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে, অতপর কক্সবাজার তারপর রওনা দেবেন রাতুলের হিমছড়ি। রাতুল অ্যাকুরিয়ামের কাছে দাঁড়িয়ে অপলকে দেখতে থাকে– কমেট। কমেট গোল্ড ফিসের অন্য আরেক প্রজাতির নাম। এই মাছটার লেজ ঠিক শরৎকালের কাশফুলের মতো।
রাতুল যখন অন্য মাছটার নাম বলতে পারে না, তখন সঞ্চিতা বলে এটা অ্যাঞ্জেল ফিস। রাতুল বলে এইটা তো আমাদের খইলসা মাছ। দেখতে খইলসা মাছের মতো মনে হলেও জেব্রার মতো হলুদ আর নীল, সাথে ধূসর রঙের ডোরাকাটা দাগের কারণেই বিদেশি মাছ মনে হয়।

একটু পর হাওয়া মেশিনের সুইচ অন করতেই যে মাছটা দৌড় দেয় অন্যদিকে, সেটাকে বলে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চা।

সঞ্চিতা তখন হেসে কুল পায় না; বলে, রাতুল এটা পাঙ্গাস নয়, এটার নাম হচ্ছে ক্যাট ফিস।

৪.
সবাই ঘুমিয়েছে। সঞ্চিতা কেন যেন একা একা ব্যালকোনিতে দাঁড়িয়ে। রাতুল বেশ কয়েকবার ডেকে গেলেও সঞ্চিতা ব্যালকোনিতেই দাঁড়িয়ে থাকে। তাহলে সঞ্চিতা কি আসলেই আবিষ্কার করার চেষ্টা করছে চাঁদ দৌড়াচ্ছে? না মেঘ দৌড়াচ্ছে?

ব্যালকোনির পাখিঘর থেকে প্রথমে একটা শিশুর হাসির শব্দ আসে। সঞ্চিতা প্রথমে খেয়াল করেনি। তারপর আবারো কি যেন অস্পষ্ট সুরের কথা শোনা যায়। সঞ্চিতা এবার পাখির ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায়।

যে পাখিটা কবুতরের মতো গুজরে গুঁজরে ডাকছে সেটার নাম স্মরণ করতে থাকে। মানে রাতুল যে নামটা দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর মনে হয় ও-কাকাতুয়া। এই কাকাতুয়া টিয়ার মতো হলেও তা সাদা রঙের। তার পাশেই সবুজ আর হলুদ রঙের মিশ্রণে লাভবার্ডগুলো ফরফর করে উড়ছে। আর মুনিয়ার ফুড়-ৎ ফুড়-ৎ করে নিত্যা ওড়াউড়ি অন্য পাখিগুলোকে অতিষ্ঠ করে মারে।

হ্যাঁ, ওই কাকাতুয়াই কথা বলছে।
সঞ্চিতা, সঞ্চিতা বলে ডাকছে।

সঞ্চিতা বিস্ময়ের দৃষ্টি নিয়ে পাখিটার ঠোঁটের দিকে চেয়ে আবিষ্কার করতে থাকে তাকে সঞ্চিতা নাম ধরে কে ডাকে।

সঞ্চিতা, কি অবাক হচ্ছো? অবাক হবার কিচ্ছু নেই। আমরা তোমাদের কথা শুনতে শুনতে বলতে শিখেছি। আমার কথা শুনে আবার ভয় পেয় না। আমি যে তোমাদের মতো কথা বলতি পারি তা কাউকে বলো না।

কাউকে বললে আবার আমাকে ভূতপ্রেত মনে করে যদি বাড়ি থেকেই বের করে দেয় তাহলে কাটাবনের কোন দোকানে ঠিকানা হবে জানি না। মিনা আর রাজুর কার্টুনটা টিভিতে দেখনি?

তোমরা একটা ময়না পাখিকে কথা বলার জন্য কত চেষ্টা করে উচ্চারণ শিখিয়ে দাও। আর আমাদের উচ্চারণ শেখানো তো দূরের কথা মাঝে মাঝে খাবার দিতেও ভুলে যাও। ভাগ্যিস, তুমি ছিল নইলে যে আমাদের কী দশা হতো?

আচ্ছা সঞ্চিতা রাতুলরা চলে যাবার সময় আমাদের কি সঙ্গে নিয়ে যাবে?
কোথায়?
ওদের গ্রামে, হিমছড়ি।
সঞ্চিতা অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো।

পাখিটা যে কথা বলতে পারে সেটা বাবা-মাকে বলতে চায়, কিন্তু পাখিটার নিষেধ সঞ্চিতাকে বেশ করে ভাবায়। বাবা-মাকে বললে পাখির সাথে ওয়াদা ভঙ্গ হবে। পাখিটা সঞ্চিতাকে মিথ্যাবাদী বলুক, এমন কথা সঞ্চিতা শুনতে চায় না। মা কপালে হাত বোলাতেই সঞ্চিতার ঘুম ভেঙে যায়?

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত