আজ ২০শে মে। আমার বিবাহ বার্ষিকী। আজকের এই দিনে জীবনে এমন একজন কে আপন করে পেয়েছিলাম সরি এমন একজন আমাকে আপন করে নিয়েছিল যে আমাকে নতুন জীবন এর সন্ধান দিয়েছে। আমাকে বাঁচতে শিখিয়েছে বাচার মত করে। আজ আমি সেই কথা শুনাবো আপনাদের।
২০১৩সাল আমাদের ফ্লাটে আমরা ৫জন এর পরিবার। আমি নিলয়, মা-বাবার ছোট আদরের সন্তান। আমরা ৪ভাই বোন। আপুদের বিয়ে হয়ে গেছে। আব্বু বাসায় থাকে ভাইয়া ব্যবসা দেখাশুনা করে।ভাবি বাড়িতে থাকে আব্বু আম্মুর সাথে। আর আব্বু আম্মু থাকে আমার ১মাত্র ভাতিজা সবার নয়নের মনি মিশকাত আহসান শুভ এর সাথে। আমি সবার ছোট তাই যা ইচ্ছে করতে পারি। অতি আদরে যা হয়, আমি দিন দিন উচ্ছন্নে চলে গেছিলাম।মহল্লার বাজে ছেলেদের সাথে ঘুরতাম, নেশা করতাম, বাজে কাজ করতাম, রাতে বাজে যায়গাতে যাইতাম, রাস্তাঘাট এ মেয়েদের কে উত্যক্ত করতাম।
একদিন বিকেলবেলা বাড়ির সামনে চা এর দোকানে বসে আছি বন্ধুরা সহ আড্ডা দিচ্ছি, দেখি একটা অপরুপ সুন্দরী মেয়ে আসতেছে। আমরা বন্ধুরা মিলে মেয়েটাকে নিয়ে অনেক বাজে কমেন্ট করি। মেয়েটা চূপচাপ শুনে চলে যায় আমাদের ফ্লাট এ। তারপর প্রায় দেখতাম মেয়েটাকে। ওরা আমাদের ফ্লাট এ উপর তলার নতুন ভাড়াটে। ৩জন এর পরিবার। মেয়েটা ভার্সিটি তে পড়ে ৩য় বর্ষ। পরিবার টি অনেক রক্ষনশীল পরিবার। আমি নিলয় অনেক ভাল ছাত্র ছিলাম মাস্টার্স কম্পলিট করে নেশার জগতে পরে আজ আমার এই দশা। মাঝে মাঝে প্রায়শই বাসায় গিয়ে দেখতাম মেয়েটা আম্মু অথবা ভাবি এর সাথে গল্প করছে।আমি কিছু না বলে চূপচাপ আমার ঘরে গিয়ে নেশায় ডুবে থাকতাম।ভাবি কে ও আম্মুকে আমার সম্পকে জিজ্ঞেস করতো। ও হ্যা ওর নাম ছিল নিরুপমা ।
আমার আব্বু আম্মু আমাকে ভাল করার অনেক চেস্টা করেও আমাকে নেশা ছাড়াতে পারে নাই সেটাও তাকে বলে। হঠাত একদিন আমি আমার রুমে ঢুকে দেখি নিরুপমা আমার মদ এর বোতল বের করছে।আমি আগে থেকেই বুঝতাম মেয়েটা আমাকে পছন্দ করে।আমি বল্লাম তুমি এখানে কেন? বোতল টা দাও আর যাও এখান থেকে।নিরুপমা বোতল টা আমাকে না দিলে আমি ধস্তাধস্তি শুরু করি । এক পর্যায় নিরুপমা বিছানায় পরে যায় & আমি ওর উপর উঠে বোতল টানতে থাকি।পরে বুঝতে পারলাম যে আমার ভেতরকার পশু টা জেগে উঠেছে তাই আমি বোতল ছেড়ে দিয়ে ওর জামা খুলতে শুরু করলাম। তখন নিরুপমা বুঝতে পেরে বোতল টা মেঝে তে আছাড় মেরে ভেংগে ফেলে, উঠেই দৌড়ে চলে যায়।
রাতের বেলা ওর আব্বু আম্মু কে আমার আব্বু আম্মুর কাছে পাঠায় আমাদের বিয়ের কথা বলতে।আমার আব্বু আম্মু আমার সবকিছু খুলে বলে। তখন তারা বলে নিরুপমা কে আমরা অনেক বুঝিয়ে বলেছি ও সব জেনেই আমাদের কে জোর করে পাঠিয়েছে।সে নিলয় কেই বিয়ে করবে নাহলে সুইসাইড করবে।আমাদের ১টাই মেয়ে। তখন সবার সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়। বাসর রাত এ আমি বাসর ঘরে ঢুকে খাটের উপর বসতেই নিরুপমা বলা শুরু করে “আমি জানি আমি তোমার বউ, আমার উপর তোমার বৈধ অধিকার আছে।কিন্তু আমি তোমাকে ততক্ষন পর্যন্ত কিছু দিব না যতক্ষন পর্যন্ত তুমি ভাল না হও।”
তারপর দিন থেকে শুরু হল আমার ভাল হবার চেস্টা। নিরুপমা আমাকে অনেক হেল্প করতে লাগলো। আমার নেশার ইচ্ছা হলে নিরুপমা আমাকে আদর করতো তাতে আমার নেশার ইচ্ছা কমে যেতে লাগলো। আমাকে নামাজ পরতে বাধ্য করলো। আমাকে দুধ খাওয়ানো শুরু করলো। আমার পরিবর্তন দেখে আমার পরিবারের সবাই খুশি নিরুপমা এর উপর। বাজে ছেলে দের সাথে চলা বন্ধ করতে নিরুপমা তার সাথে আমাকে ওর ভার্সিটি তে নিয়ে যেত। আমি আগের নিলয় হয়ে গেলাম।সবাই আমাকে সাদরে গ্রহণ করলো। আমি ভাইয়া কে সাহায্য করার জন্য ব্যবসায় বসতে শুরু করলাম।ভাইয়া আমাকে সবকিছু বুঝিয়ে দিল।ইতেমধ্য নিরুপমার অনার্স শেষ হয়ে গেল। ক্রিং ক্রিং নিরুপমা দরজা খুলে দিল।আজ অনেক সেজেছে মেয়েটা। এমনিতেই অনেক সুন্দরী তার উপর হালকা সাজে অপরুপ লাগছে ওকে। আমার ইচ্ছে করছিল ওকে কোলে তুলে নিয়ে একটু আদর করে দেই।কিন্তু না নিরুপমা এখনো আমাকে সে অধিকার দেয়নি।
রাত ১১টা আমি নিরুপমাকে ছাদ এ ডাকলাম। তারপর নিরুপমা অবাক পুরো ছাদে হাজার খানেক মোম জলছে আর মাঝ খানে লিখা “শুভ বিবাহ বার্ষিকী”। নিরুপমা বলল তোমার মনে ছিল?? আমি বল্লাম এটা কি ভুলতে পারি? তারপর নিরুপমা যা করলো সেটার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।সে আমাকে জরিয়ে ধরে বলল একটু আদর করবে আমাকে? তখন আমি ওকে ধরে ওর কপালে একটা ভালবাসার স্পর্শ দিলাম।তারপর ওকে কোলে তুলে নিয়ে ঘরে এসে দরজা বন্ধ দোয়া করবেন আমাদের জন্য…..
গল্পের বিষয়:
গল্প