একজন টিকটক সেলিব্রেটির সাথে কিছুদিন হলো প্রেম করছি। ফেবুতে আলাপ। তারপর আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম। কিন্তু এখন পযর্ন্ত আমরা সরাসরি দেখা করিনি। টিকটক স্টাইলে প্রপোজ করে আর তার একটা ভিডিও আমাকে দেয়। তাতেই প্রেমে পরে যায়।
ফেবুতে প্রেমতো অনেক হলো এবার দেখা করার পালা। দুজনের সিদ্ধান্ত মতো একটা রেস্টুরেন্ট ঠিক করি দেখা করার জন্য। পরেরদিন সকালে আমি রেষ্টুরেন্টে গিয়ে বসে আছি কিন্তু টিকটক সেলিব্রেটির কোন খবর নেই। কিছুসময় পরেই দেখি উনি আসছেন।আগে ছবি এবং ভিডিও দেখাতে চিনতে কোন অসুবিধা হয়নি। দশ কদমের রাস্তা সে গুনে গুনে পঞ্চাশ কদম ফেলে এসেছে।স্লো মোশনে। কয় কদম ফেলেছেন তা উনিই গুনেছেন।এসে আমাকে বললেন আরকি।তাতেও নাকি কম হয়ে গেছে।আরো স্লো আসা উচিত ছিল। আমি হা করে তাকিয়ে ভাবছিলাম একি পাগল নাকি। পরে মনে হলো না সে পাগল নয় টিকটক সেলিব্রেটি।
খাবারের অর্ডার নেওয়ার জন্য ওয়েটার এসে দাঁড়িয়ে আছে। ইশারাই কি সব বলছে।আমি মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। হ্যাঁ এই তো সে কথা বলছে কিন্তু শব্দ বের হচ্ছে না। তার মানে কি সে বোবা।তা কি করে হয় কিছুসময় আগেইতো কথা বললো।আর ফোনেও আলাপ হয়েছে। আমিও ও না পাগলের মতো কি সব ভাবছি সে বোবা হবে কেন? সে তো টিকটক সেলিব্রেটি। তাকে থামিয়ে আমি দুকাপ কফির অর্ডার দেই। আমি পলকহীন ভাবে তাকে দেখছিলাম। তখন থেকে এক-এক স্টাইল নিয়েই যাচ্ছে। চুলগুলো ও কাকের বাসা হয়ে আছে। কাক বুঝতে পারলে ডিম পেরে রেখে যাবে।যাই হোক টিকটক সেলিব্রেটির এই রকম একটু মাথার উপর কাকের বাসা থাকতেই পারে। কফি হাজির।সবে মাত্র কাপটা মুখের কাছে নিয়েছি তখনি সেলিব্রেটি চিৎকার দিয়ে উঠেছে – আরে থামো, থামো করছোটা কি? আমি আমতা আমতা করে বললাম,কেন কফিতে চুমুক দিতে যাচ্ছিলাম। হ্যাঁ ঠিক আছে আমার মতো খাও। ওকে। এই দেখো। আচ্ছা দাঁড়াও আগে ক্যামেরাটা অন করি। ক্যামেরা কেন?
আরে বুঝ না টিকটক করতে হবে তো। এখানে কেন? আরে সবাইকে দেখাতে হবে না আমি কত বড় রেষ্টুরেন্টে এসেছি। মানে??? আমি টিকটক সেলিব্রেটি বুঝো না।কত পোলাপান আমাকে ফলো করে।দেখলেই পিক নিতে চাই। ওহ।ঠিক আছে।চুপচাপ দেখছি সে কি করে। ভিডিও শুরু হয়েছে- হ্যালো ভাইরাস, সবাই নিশ্চয় আমাকে দেখতে পাচ্ছো। আরে পাবেই তো তোমাদের সবার নিশ্চয়ই এমবি আছে। দেখো আজ আমি লিভে এসেছি লিভে।লিভে বুঝো লিভে।আমিও না বোকা তোমরা কি করে বুঝবে।যাই হোক দেখো আমি কফি খাচ্ছি। কফি কফি।কোন্ড কফি না কিন্তু হট, হট কফি। ছুততততততত করে এক চুমুক দিয়ে বললো, দেখেছো কিভাবে খেতে হয়।এইভাবে টেনে টেনে।তোমরা বাড়িতে প্যাক্টিট করবা বুঝছো।আজকের মতো বাই।লাভ ইউ উম্মা।
আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এ আমি কার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। রেষ্টুরেন্টের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সবার দিকে তাকিয়ে একটা সম্মান সূচক হাসি দিয়ে বললাম,আসলে টিকটক সেলিব্রেটিতো তাই আর কি।আসলে উনি এমন না।অনেক ভালো একজন মানুষ। সেলিব্রেটি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললো, কি যা তা বলেন।আমার মধ্যে কোন ফরমালিন নাই। টিকটকে যা করি বাস্তবেও আমি তাই করি।বুঝলেন।কোন ভেজাল নাই আমার টিকটকে। নিজের মুখে একটা থাপ্পর দিয়ে বললাম, এ আমি কার সঙ্গে এত দিন প্রেম করছি।সেলিব্রেটির দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললাম, বাবু তুমি কখনও ব্রেকআপ টিকটক করছো। সে ও আগ্রহ নিয়ে বললো,না বাবু।তবে করব ভাবছি।
তাহলে এখনি করো।কেননা আজ থেকে তোমার আমার ব্রেকাপ।টা টা বলে চলে যাচ্ছি।পেছন ফিরে দেখি শুরু করেছে তার বিখ্যাত টিকটক। “চলে গেছো তো কি হয়েছে।ভেবেছো আমি কাঁদবো। আরে আমি ভালোবেসেছি। আমি কাঁদব না তুমি একদিন কাঁদবে”। বলেই এক হাসি। অসহ্য লাগছে।সোজা এসে পেছন থেকে মারলাম এক লাথি। সেলিব্রেটি এখন নিচে টাকি মাছ ধরছে। পড়ে গিয়ে বললো,এটা কি হলো? গালর্স পাওয়ার টিকটক দেখো নাই।এটা তাই হলো।বলেই এক হাসি দিয়ে চলে এলাম। জীবনে বেঁচে থাকলে আর টিকটক সেলিব্রেটির সাথে প্রেমতো দূরে থাক সামনেই যাব না।
গল্পের বিষয়:
গল্প