অসাধারণ

অসাধারণ
আমার বউয়ের অসাধারণ রোগ হয়েছে। তাঁকে যে কথাই জিজ্ঞেস করছি উত্তর দিচ্ছে, অসাধারণ। যে কাজই করতে বলছি উত্তর দিচ্ছে, অসাধারণ। সকালে বললাম, কেমন আছ?
‘ অসাধারণ। ‘
‘ নাশতা কী রান্না করছ? ‘
‘ অসাধারণ। ‘
‘ শরীরে জ্বর আছে? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ কী বলো কখন জ্বর আসলো? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ আমি কিছু ভুল বলেছি তোমাকে? রেগে আছ? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ পাগল হয়ে গেছ? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ এ কী মুশকিলে পড়া গেল! ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ চলো খাওয়ার কাজটা শেষ করা যাক। ‘
‘ অসাধারণ! ‘
খাবার টেবিলে গেলাম দুজন। চেয়ার টেনে বসতেই ইউসুফ ঘরে ঢুকল। তাঁর মুখখানা দেখে বুঝা যাচ্ছে করুণ কিছু হয়েছে। আজকে তাঁর স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ফলাফল ঘোষণা করার কথা। ইউসুফ গোমড়া মুখে টেবিলের কাছে এসে বলল, আম্মা পরিক্ষায় তিন বিষয়ে লাড্ডু পেয়েছি! ছেলের মা বেশ উচ্ছ্বাসিত হয়ে বলল, অসাধারণ! রাগে আমার বুক ফাটে। ছেলেকে পড়ে ধরছি। আগে মাকে সোজা করতে হবে।
‘ ইউসুফ। ‘
‘ জি আব্বা। ‘
‘ তোমার বই কয়টা? ‘
‘ ছয়টা। ‘
‘ লাড্ডু পেয়েছ তিনটা থেকে? ‘
‘ জি আব্বা। ‘ এর মাঝে আবার ছেলের মা বলে উঠল, অসাধারণ না?
‘ এর মাঝে আবার তুমি অসাধারণের কী দেখলে শুনি? তিন বিষয়ে লাড্ডু পাওয়া যদি অসাধারণ হয়। তাহলে পরেরবার তো ছয় বিষয়েই ফেল করবে তখন? ‘
‘ তখন তো আরো অসাধারণ হবে! আজকাল সব ছেলেপেলে পাশ করে। আমার ছেলে একা ফেল করেছে এটা অসাধারণ না? আমার তো খুব ভালো লাগছে! ‘
‘ তোমাকে সাইক্রিয়াটিস্ট দেখাতে হবে। পাগল হয়ে গেছ! ‘
‘ বাহ, অসাধারণ! ‘
ইউসুফ মায়ের কাণ্ড দেখে মজা পাচ্ছে মনে হচ্ছে। ফেল করার দুঃখ মুখ থেকে মুছে গেছে! কী অদ্ভুত! আমি তাঁকে ধমক দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বললাম। এটা দেখে আবার ইউসুফের মা বলল, অসাধারণ! ‘ এখানে আবার অসাধারণ কী দেখলে? ছেলেকে ধমক দিয়ে বের করে দিয়েছি এটা অসাধারণ? ‘
‘ অবশ্যই অসাধারণ! এই ছেলে এখন রাস্তায় গিয়ে বসে থাকবে। খিদে লাগলে আর বাড়িতে আসবে না। ফুফুর বাড়ির দিকে রওনা দেবে। একা একা ফুফুর বাড়ি যাওয়া অতটুকু বাচ্চার জন্য সোজা ব্যাপার না। এভাবেই সে কঠিন কাজগুলো রপ্ত করে ফেলবে। তখন আর ফেল করবে না। তাই অসাধারণ! ‘ এরকম আক্কেলগুড়ুম যুক্তি আমি এর আগে শুনিনি। কিন্তু দেখা গেল তাঁর কথাই ঠিক। ছেলে আর বাড়িতে ফিরল না। সে ফুফুর বাড়ি চলে গেছে। ছেলের চলে যাওয়াতে আমি কথা বলার মানুষ পাচ্ছি না। তাঁর মা প্রত্যেকটা কথার উত্তর অসাধারণ দিচ্ছে। গোসল করব। বললাম, পানি কেমন?
‘ অসাধারণ! ‘
‘ গরম না ঠাণ্ডা? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ ধ্যাত্তেরি, গোসলই করব না! ‘
‘ বাহ, অসাধারণ! ‘
আমি গোসল করলাম না। কিন্তু সে গোসল করে একটা বিচ্ছিরি শাড়ি পড়েছে। বেগুনি রঙের শাড়ি। এই শাড়িতে মেয়েদের জঘন্য লাগে, একেবারে যা-তা লাগে। ভাবলাম কিছু বলব না। কিন্তু না বলেও পারছি না। রঙটা সহ্য করতে পারছি না। বললাম, হাবিবা! এই শাড়ি খুলে অন্যটা পড়ো। বিচ্ছিরি লাগছে!
‘ আমার কাছে তো অসাধারণ লাগছে! ‘
‘ তোমার কি চোখকান নাই? এই রঙের শাড়ি পরতে দেখেছ কোনো মেয়েকে? ‘
‘ আমার তো আর শাড়ি নাই! ব্যাপারটা অসাধারণ না? ‘
‘ আলমারি ভর্তি শাড়ি! শাড়ি নাই বলছ কেন? ‘
‘ ওগুলা একটাও অসাধারণ না। এটাই অসাধারণ। ‘
‘ না থাকলে চলো কিনে দেই। তাও এটা খুলে রাখো। ‘
‘ আরেকটা অসাধারণ শাড়ি ছাড়া এই অসাধারণ শাড়িটা খুলতে পারব না! ‘
‘ তাই হবে, চলো। ‘
বাড়ি থেকে বের হয়ে দশ মিনিটের মতো হাঁটতে হয়। তারপর অটো পাওয়া যায়। আমি রাস্তায় গিয়ে বললাম, হাঁটতে কেমন লাগছে?
‘ অসাধারণ। ‘
‘ আকাশের অবস্থা ভালো না। জলদি হাঁটো বৃষ্টি হতে পারে। ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ আরে বাপ বন্ধ কর তোর অসাধারণ! মাথা ব্যথা করছে আমার শুনতে শুনতে। ‘
‘ অসাধারণ তো! ‘
‘ মাথা ব্যথা অসাধারণ? ‘ অটো পাওয়া যাচ্ছে না তাই রিকশা নিলাম। রিকশায় উঠতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। আমি বললাম, হুড তুলে দেই?
‘ নাহ। বৃষ্টিতে ভেজা অসাধারণ হবে। ‘
‘ জ্বর আসলে? ‘
‘ আরো বেশি অসাধারণ হবে। জ্বর নিয়ে শুয়ে থাকতে ভালো লাগে। সারা দুনিয়ার রোমান্টিকতা মাথায় এসে ভর করে। অসাধারণ ব্যাপারস্যাপার। ‘
‘ কোন পাগলের পাল্লায় পড়লাম! ‘
বড় একটা শাড়ির দোকানের সামনে গিয়ে আমরা নামলাম। দোকানে ঢুকতেই একটা ছেলে সালাম দিয়ে বলল, কী লাগবে স্যার? পাঞ্জাবি দেখাব? নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি এসেছে। ‘ ভালো কিছু শাড়ি দেখান। ‘ ছেলেটা বিশ ত্রিশটার মতো শাড়ি রাখল আমাদের সামনে। একেকটা শাড়ি একেকরকম। একেক রঙের। সবুজ একটা শাড়ি দেখিয়ে বললাম, এটা কেমন?
‘ অসাধারণ! ‘
‘ লালটা? ‘
‘ সামান্য অসাধারণ! ‘
‘ নীলটা? ‘
‘ ভালো পর্যায়ের অসাধারণ! ‘
‘ আর কালোটা? ‘
‘ অতিরিক্ত অসাধারণ! ‘
‘ সোনালি রঙেরটা? ‘
‘ ভয়ংকর লেভেলের অসাধারণ! ‘
‘ শাপলা ফুলের চেকেরটা? ‘
‘ অতিশয় অসাধারণ! ‘
দোকানের ছেলেটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে যাবে ভাব। আমি পড়েই গেলাম! আমাকে ধরাধরি করে তুলতে তুলতে হাবিবা বলল, এ কী অসাধারণ অবস্থা হয়ে গেল আপনার?
‘ হবে না? তোর কোনটা চাই বলবি তো? সামান্য অসাধারণ না ভালো পর্যায়ের অসাধারণ না অতিরিক্ত অতিশয়? দোকানের সব শাড়িই দেখি তোর কাছে অসাধারণ লাগছে! ‘
‘ সব শাড়ি অসাধারণ এখানে আমার কী দোষ? ‘
‘ কোনটা নিব? ‘
‘ অসাধারণটা নেন। ‘
শাড়ির পছন্দের বিষয়টা দোকানের ছেলের উপর ছেড়ে দিলাম। বললাম, আপনার যে তিনটা শাড়ি পছন্দ হয়। সে তিনটা শাড়ি প্যাক করে দেন। ছেলেটা তিনটা শাড়ি তাড়াহুড়ো করে প্যাক করে দিয়ে বলল, স্যার ম্যাডামকে ডাক্তার দেখান না কেন? আমার পরিচিত এক অসাধারণ ডাক্তার আছেন। উনার কাছে নিয়ে গেলে অসাধারণভাবে ম্যাডামের অসাধারণ রোগ দূর হয়ে যাবে। এই কথা শুনে আমি হাবিবার দিকে তাকালাম। কী না কী বলে ফেলে! নাহ, সে হেসে বলল, অসাধারণ প্রস্তাব রাখলেন ভাই। আমি আর দেরি করলাম না। হাবিবাকে নিয়ে চলে এলাম। বাড়িতে এসে সে বেগুনি রঙের শাড়িটা অবশেষে খুলে রাখল। সন্ধ্যার দিকে থানা থেকে ফোন এসেছে। জরুরি একটা কেসের সমাধান করতে হবে। থানায় যাওয়ার প্রস্তুত হওয়ার সময় আর হাবিবাকে দেখতে পেলাম না। কোথায় গেল? শোবার ঘরে গিয়ে দেখি সে বিছানার সাথে মিশে গেছে! চোখেই পড়েনি।
‘ জ্বর এল তো? মানা করেছিলাম না? কেমন জ্বর কম না বেশি? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ আমার যেতে হচ্ছে থানায়। রাতে আসতে দেরি হবে। তুমি ঘরে যা নাপা-টাপা আছে খেয়ে শুয়ে থাকো। ‘
‘ কখন ফোন আসলো? অসাধারণ তো! ‘
‘ একটু আগে। ‘
এর মাঝে আবার ফোন বেজে উঠল। একবারের বেশি দুইবার থানা থেকে ফোন আসা মানে কেসটা ঝামেলার। দেরি করা যাবে না। আমি চলে গেলাম থানায়। থানায় এসে শুনি এক লোক তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রকে খুন করে ফেলেছে! কারণ হচ্ছে শুধু একটা পাখি, টিয়াপাখি। তাঁর টিয়া পাখিকে রেখে চলে গেছিলেন অফিসে। বাড়িতে তাঁর ছেলে ও স্ত্রী ছিল। দুজনই পাখিটাকে খাবার দিতে ভুলে গেছে। এজন্য রাগের মাথায় দুজনকেই মেরে ফেলেছেন ছুরি দিয়ে!
আমাদের দেশেও পশুপাখির প্রতি দরদী লোকজন কম নেই। পশুপাখির প্রতি দরদ দেখানো ভালো। অতিরিক্ত দরদ দেখানো ভালো নয়। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। খুন করার পরে লোকটা ছেলে এবং মা দুজনকেই নর্দমায় ফেলে দিয়েছেন। তারপর হয়েছেন লাপাত্তা। এখন আমাকে সেই লোকটাকে খুঁজে বের করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় কথাবার্তা বলে রাত বারোটায় বাড়িতে ফিরলাম। ভেবেছিলাম সঙ্গে করে ডাক্তার নিয়ে আসব। কিন্তু কী ভেবে যেন আর আনলাম না। ঘরে ঢুকতেই দেখি হাবিবার মুখ হাসিহাসি। এর মানে জ্বর কমে গেছে। ভালো কথা তাঁর জ্বর কমে গেছে। খারাপ কথা তাঁর অসাধারণ গতি আরো বেড়ে গেছে! এবার মনে হচ্ছে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতেই হয়। হাবিবাকে বললাম, তোমাকে পাগলাগারদে রেখে আসলে কেমন হবে?
‘ অসাধারণ হবে! ‘
‘ একা একা থাকতে পারবে? যদিও শুনেছি পাগলেরা সব একসাথে থাকে। ‘
‘ অসাধারণ পরিচালনা! ‘
‘ কালকে তোমাকে পাগলাগারদে দিয়ে আসা হবে। যা বলার আজকেই বলে নাও। ‘
‘ অসাধারণ, অসাধারণ, অসাধারণ… ‘
সে বলতেই থাকল। পরদিন নামকরা এক মনোবিজ্ঞানীর কাছে গেলাম। মনোবিজ্ঞানী হাবিবাকে জিজ্ঞেস করছে, আপনার নাম কী?
‘ অসাধারণ! ‘
‘ বাবার নাম? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ স্বামীর নাম? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম? ‘
‘ অসাধারণ! ‘
‘ বাহ, আপনার দেখি কোনো রোগই নেই! ‘ ভদ্রলোকের মুখে এই কথা শুনে আমি আঁতকে উঠলাম।
‘ এটা কেমন কথা? কোনো রোগ নাই মানে? ‘
‘ জি, রোগ নাই মানে নাই। আমি এক্ষুনি সামান্য একটা ওষুধ দিচ্ছি।
দুদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। তার আগে, অসাধারণ ম্যাম আপনি আমার জন্য পানি নিয়ে আসতে পারবেন? নিচের তলায় একটা হোটেল আছে। আমার নাম বললেই ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা পানি দেবে। হাবিবা উঠে গেল পানি আনতে। এর ফাঁকে চুল সাদা লোকটা বলল, আপনার স্ত্রীর রোগটা হলো কম-মোসোনিয়া। এই রোগের রোগীরা সাধারণত কোনো একটা শব্দ বারাবার বলতে ভালোবাসে।
‘ উপায় কী সেটা বলেন। ‘
‘ উপায় একটাই। আপনারও তাঁর সাথে তাল দিতে হবে। মানে আপনারও অসাধারণ অসাধারণ করতে হবে। তাহলে সে বিরক্ত হয়ে ছেড়ে দেবে। ‘
‘ আপনি বলছেন? ‘
‘ জি, বলছি। ‘
‘ আপনার ফি? ‘
‘ দশ হাজার টাকা মাত্র! ‘
মনে মনে বললাম দুই মিনিট কথা বলে দশ হাজার টাকা নিয়ে নিচ্ছ। ওষুধে যদি কাজ না হয়। তাহলে তোমার বাঙ্গি আমি ফাটাব। আসার সময় হাবিবাকে বললাম, হাবিবা তুমি দেখতে অসাধারণ। হাবিবা মুচকি হাসল। আমি আবার বললাম, তুমি মানুষ হিসেবেও অসাধারণ। সে আবার হাসল। আমি বললাম, তোমার কাজকর্মও সব অসাধারণ! সে একটু অবাক হলেও হাসি থামাল না। বাসায় এসে বললাম, আজকে কিছু অসাধারণ রান্না করো। সে যথাসাধ্য চেষ্টা করল। আমি খেতে খেতে বললাম, অসাধারণ!
‘ কোনটা? ভর্তা না চড়চড়ি? ‘
‘ দুটোই অসাধারণ! ‘
পরদিন ইউসুফ ফিরে এসেছে। হাবিবা তাঁকে নিয়ে পড়তে বসেছে। আমি গিয়ে বললাম, ইউসুফ। পড়ালেখা করে কে কী হয়েছে? আজকে থেকে পড়ালেখা করতে হবে না তোমার। হাবিবা অবাক হয়ে বলল, পড়ালেখা করে কে কী হয়েছে মানে? এমনিই তিন বিষয়ে লাড্ডু খেয়েছে। আরো যদি আপনি এই কথা বলেন। তাহলে তো ছেলে চান্দে চলে যাবে!
‘ সেটাই অসাধারণ হবে। মানুষ পড়ালেখা করে চান্দে যায় আর সে না করেই যাবে। ব্যাপারটা অসাধারণ না? ‘
‘ পাগল হয়ে গেলেন না কি? ‘
ইউসুফও ভেবে নিয়েছে সে পড়ালেখা না করেই চাঁদে যেতে পারবে। বইপত্র বন্ধ করে দিয়ে যা ইচ্ছে তা করছে। যত অকাজ আছে করছে। রাত তিনটা বাজে সে যাচ্ছে গোসল করতে! সকালে সে ঘুমাবে! দুপুরে তাঁর ধ্যানমগ্ন করার সময়। বিকেল হলে অসুরে গলায় গান ধরবে! হাবিবা আবার অতি দরদী। সে কখনোই ইউসুফের গায়ে হাত তুলে না। কালকে হাত তুলেছে! এমন জোরে এক থাপ্পড় দিয়েছে। ছেলের গাল হয়ে গেছে লাল। ছেলের সামনে নিজেকে শক্ত রাখলেও আমার কাছে এসে চোখের পানি ছেড়ে দিল। আমি বললাম, অসাধারণ!
‘ কী অসাধারণ? ‘
‘ সব অসাধারণ। ‘
‘ আমি মাত্র ইউসুফকে থাপ্পড় মেরে আসলাম! ‘
‘ অসাধারণ হয়েছে! ‘
‘ ও কান্না করছে আর আপনি বলছেন অসাধারণ হয়েছে? ‘
‘ অবশ্যই, যা ইচ্ছা তা করবে আর মার খাবে। অসাধারণ না? ‘
‘ ও কি আমাকে আর মা ডাকবে না? ‘
‘ অসাধারণ ডাকবে! ‘
‘ কেন? ‘
‘ কারণ তুমি একটা অসাধারণ! ‘
‘ কী আশ্চর্য! আমি তো আর অসাধারণ বলি না! ‘
‘ বাহ, অসাধারণ! ‘
বুড়ো মনোবিজ্ঞানীর ওষুধ কাজে লাগল। তাঁকে একবার গিয়ে ধন্যবাদও জানিয়ে এসেছি। কিন্তু আমার হয়ে গেল সমস্যা! এখন আমি সবকিছুতে অসাধারণ বলছি। রাত তিনটায় একটা মিশনে নেমেছি আমরা। এলাকায় ডাকাত দল এসেছে আমরা খোঁজ পেয়েছি। তাঁদের সাথে সংঘর্ষ হচ্ছে। ওরাও গুলি ছুঁড়ছে। আমরা ছুঁড়ছি। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন রফিক স্যার। হঠাৎ একটা গুলি লেগেছে উনার পায়ে! উনি সঙ্গে সঙ্গেই পড়ে গেলেন! আমি পেছন থেকে বললাম, অসাধারণ! এই কথা শুনে আমার সাথে থাকা শফিক আমাকে গুলি মেরে দিল! রফিক তাঁর বড় ভাই!
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত