মিসেস শিফার সাথে আজ ঠিক কত বছর পর দেখা, আমি মনে কইরা বলতে পারব না। তবে যখন আমি ক্লাস ফাইভের বৃত্তি পরীক্ষা দিয়া ঢাকায় বেড়াইতে আসছিলাম, তখন তার সাথে বেশ কয়েকটা দিন কাটাইতে হইছিল। স্মৃতিতে এখনো জাইগা আছে, অমন যাওয়া মনে হয় ওইবারেই প্রথম ছিল। এর আগে যদ্দূর মনে পড়ে, আমার নানির হাত ধইরা ঢাকা ডিঙাইয়া নারায়ণগঞ্জ গেছিলাম। অনেক ছোট থাকতেই আমি আমার মায়েরে ছাইড়া দূরে ঘুরতে যাইতাম। খারাপ লাগত না কখনোই। কারণ, নানি ছিলেন আমার কাছে মায়ের চাইতেও বেশি অভ্যস্ততা আর স্বাধীনতার জায়গা।
মিসেস শিফা সম্পর্কের দিক দিয়া আমার চাচি হন। সেই সূত্রেই বাবা আমার পরীক্ষা-পরবর্তী বেড়ানোর জন্য ঠিক করছিলেন কয়েক দিন কইরা ক্রমান্বয়ে আমাকে তিন ফুফু এবং চাচার বাড়িতে রাইখা আসবেন। আমরা বাদে আমাদের বাকি আত্মীয়স্বজন ঢাকায় থাকার কারণে সেইবার বড় একটা ট্যুর দেওয়া সম্ভব হইছিল। আমার তাতে আনন্দই ছিল, যেহেতু প্রথমবারের মতো একা এতগুলা দিন আমি বাড়ির বাইরে থাকতে যাইতেছি। নতুন জায়গা আর মানুষ—দুইটাই ভালো লাগত আমার, যদিও আমি কথা বলতাম খুবই কম। মিসেস শিফা কোনো এক সরকারি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। খুব স্বল্পভাষী, গোছানো–পরিপাটি এক ভদ্রমহিলা। গায়ের রং কালো। আমাদের পরিবারে মেয়েদের গায়ের রং নিয়া বাহ্যত কোনো নাক সিটকানি ছিল না। তারপরেও কেউ যেন বুঝতে না পারে, এমন এক লুকোচুরিতে আমার ফুফুরা, তাঁদের ছেলেদের বিয়ার সময় ফরসা এবং বিত্তবান পিতার মেয়েদের দিকেই নজর দিতেন। শুনছি কাকেরা নাকি চুরি করা খাবার লুকানোর সময় চোখ বন্ধ কইরা লুকায়, ঠিক তেমনি আমার আত্মীয়স্বজনও একই পদ্ধতিতে পাত্রী নির্বাচন করতেন। অবশ্য মিসেস শিফার প্রবল ব্যক্তিত্বের কাছে এই সব কালো–ফরসা ইস্যুর কোনো জায়গা ছিল না। তাঁর সাথে আমি বেশ অস্বস্তি নিয়াই মিশতাম, একটা বাইরে থেইকা বুঝতে পারার মতোই দূরত্ব ছিল আমাদের। তবে বেড়াইতে যাওয়া উপলক্ষে এক ছুটির দিনে তিনি আমাকে গাউছিয়ায় নিয়া গিয়া খুব সুন্দর দেখতে একটা মেরুন রঙের গাউন কিইনা দিছিলেন। তাতে আমি খুশি হইছিলাম বলা যায়। কারণ, ড্রেসটা কেমন ছিল, তা আজও আমার মনে আছে।
এরপরে মিসেস শিফার সাথে আর কখনো দেখা হইছিল কি না, আমার মনে পড়ে না। হইয়া থাকলেও খুবই সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। সেই হিসাবে তাঁর সাথে আমার অন্তত বিশ বছর পর দেখা। চেহারায় খুব বেশি বার্ধক্যের ছাপ চোখে পড়ে না। তবে হাসিতে বিষণ্ণতার ছাপ স্পষ্ট। আকস্মিকভাবে তাঁর সাথে দেখা হইয়া যাওয়ায় খানিকটা বিব্রতবোধ করতেছিলাম আমি। মনে হইল তাঁর বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আমিও কিছুটা দায়ী। তাঁকে দেইখা যতটা মায়া লাগবে বইলা ভাবতেছিলাম, তাঁর থেইকাও বেশি মায়া লাগতেছিল। তাঁর সোনালি রং করা ঢেউখেলানো ছোট কইরা ছাঁটা চুলগুলা দেইখা আমার বিষণ্ণবোধ হচ্ছিল। আগের সেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে মিষ্টি কইরা জানতে চাইলেন আমি কেমন আছি, আমার সংসার কেমন চলে। খুব ভালো কইরা নিজের ব্যাপারে বলতে পারি নাই আমি। আমার নিজের জীবন সম্পর্কে বলার তেমন কিছু ছিল না। ছাপোষা এক সাধারণ মানুষ; ডিভোর্সের পর থেইকা সন্তানসহ দীর্ঘকাল ধইরা একই রকমভাবে বাঁইচা আছি।
আমার চাচা প্রতিষ্ঠিত এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাস্টারি করেন। মিসেস শিফার সাথে উনার প্রেমের বিয়ে ছিল। ভদ্রমহিলা পুরান ঢাকার বনেদি পরিবারের সন্তান। আর আমার বাপ-চাচারা মফস্বলে বাইড়া ওঠা শিক্ষিত পরিবার। আমার চাচা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার পরে শিফার সাথে প্রেমের শুরু। একটু বড় হওয়ার পর শুনতাম বিয়ার উপহার হিসেবে কয়েক ট্রাক ভর্তি ফার্নিচার পাঠাইছিল শিফার ফ্যামিলি। কিন্তু আমার দাদা ওই সব কিছুই ঘরে উঠাইতে দেন নাই। তিনি বলতেন, ‘আমার মাইয়া হইয়া আসছে, আমরা যেইভাবে থাকি, সেইভাবেই থাকবে।’ শহুরে মেয়ে হওয়ার কারণেই কি না জানি না, মিসেস শিফার আন্তরিকতায় সবারই সন্দেহ ছিল। অবশ্য এই সবই আমার ধারণা। যদিও আমাদের পরিবারের প্রত্যেকেই নিজেদের উচ্চশিক্ষিত বইলা ভাবার কারণে অন্যদের তুলনায় বেশ নাকউঁচা ছিলেন। টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত পরিবারের আচরণগত জায়গাগুলো তাঁরা অ্যাভয়েড করতে চাইতেন সচেতনভাবে।
মিসেস শিফা যখন আমার দাদার বাড়িতে থাকা অবস্থায় কনসিভ করেন, তখন আমার চাচা আরেক শহরে শিক্ষকতা করতেন। সাত মাসের সময় বাচ্চা পেটের মধ্যেই মারা গেছিল আর দুই দিন ওভাবেই পেটের ভেতরে ছিল। এতে তাঁর শারীরিক নানা সংকটের পরে ডাক্তার জানাইছিলেন, তিনি আর কখনো সন্তান জন্ম দিতে পারবেন না। এর পরের ঘটনা বিশদভাবে আমার জানা নাই। তবে এই সব ঘটনার পরে মিসেস শিফা আমার চাচার সাথে ঢাকায় পাড়ি জমান বলে জানতাম। আমার চাচা এরপর থেকে বাড়ির সাথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ কইরা দেন। কিন্তু তার কারণ যে কী ছিল, সেইটা সবার কাছেই অজানা।
মিসেস শিফা আমাকে আমার সংসার নিয়া সামান্য কিছু প্রশ্নই করলেন এবং জানাইলেন, আমার শিশুসন্তানটিকে তিনি দেখছেন। বাচ্চা থাকাটা যে জীবনের এক বড় পাওয়া, তা বারবার করে বলতে লাগলেন। ঠিক ওই মুহূর্তে নিজের বাচ্চা থাকায় যেন নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছিল আমার। মিসেস শিফা জানাইলেন, বছরের কিছু সময় তিনি দেশে থাকেন আর বাকিটা সময় আমেরিকায় তাঁর মা–বাবার কাছে থাকেন। ঢাকায় শিফার এক পালক পুত্র আছে, বললেন তিনি। আর সেই পালক পুত্রের কারণেই ঢাকার প্রতি টান অনুভব করেন, বললেন সে কথাও। আক্ষেপ করলেন, পালক পুত্র নিয়াও লোকে কথা বলতে ছাড়ে না। শুইনা আমি রীতিমতো বাক্রুদ্ধ হইয়া গেলাম। মনে পড়ল, বেশ কিছুদিন আগে আমার মাকে এবং তারও আগে কিংবা পরে আমার দ্বিতীয় চাচিকেও মিসেস শিফার ‘কমবয়সী বয়ফ্রেন্ডের’ ব্যাপারে ছি ছি করতে শুনছিলাম। আমার নিজের পরিবার নিয়া আমার তেমন কিছুই বলার ছিল না। আমি শুধু শিফাকেই দেখতেছিলাম। তাঁর বিষণ্ণ চোখ, চুল আর হাসি দেখতে পাইতেছিলাম আমি। এর মধ্যে আমার বাবা আইসা আমাদের আলাপের মধ্যে ঢুইকা আমাকে বইলা বসলেন, ‘তোর চাচিরে একটু সময় দিতে পারিস না? কতকাল পরে আসছে। উনার মন ভালো থাকে না, খুব একলা মানুষ।’ আমার বাপের নির্বুদ্ধিতায় আমি লজ্জা আর রাগে এতটুকু হয়ে গেলাম।
আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন প্রতি মাসে একবার আমাকে ফুফুর বাড়িতে যাইতে হইত হাতখরচের টাকা আনতে। আমার বাবা কোনো দিন হলের সামনে আইসা আমাকে দেইখা যাইতেন না এবং টাকাটাও নিজ হাতে দিতেন না। এমনই এক দুপুরে আমি ক্লাস শেষ কইরা ফুফুর বাড়িতে যাই টাকা আনতে। ওইখানে এক ভদ্রমহিলা আর এক শিশুকে দেখতে পাই। ফুফুর খাটে বইসা তাঁরা গল্প করছিলেন। ভদ্রমহিলা দেখতে রাবীন্দ্রিক। কপালে লাল বড় টিপ আর পিঠভর্তি লম্বা চুল। মাত্র পান খাওয়া লাল ঠোঁটের হাসিতে আন্তরিকতার আভাস। উনি আমাকে দেইখা সুন্দর একটা হাসি দিলেন। অনেক গল্প হইল আমাদের। কিন্তু আমি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারি নাই তাঁর পরিচয়। অনেক পরে, দুপুরের ভাত খাওয়া শেষে বিকেলের দিকে যখন আমি ফিরব, তখন আমার ফুফু অন্য ঘরে আমাকে ডাইকা নিয়া জানাইলেন, এই ভদ্রমহিলা আমার চাচার দ্বিতীয় স্ত্রী। জাইনা আমার কেন যেন ভালোই লাগছিল, আপনও মনে হইতেছিল এবং আমার ফুফু চাচার দ্বিতীয় বিয়ার পক্ষে নানা রকমের কারণ দর্শানো শুরু করছিলেন, যার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
মিসেস শিফার সাথে আমার চাচার অফিশিয়ালি বিবাহবিচ্ছেদের মতো কোনো ঘটনা ঘটে নাই। যদিও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী চাইতেন ডিভোর্স হোক এবং শিফার সাথে আমার চাচার কোনো যোগাযোগ না থাকুক। সেই যোগাযোগটা আসলে পরবর্তী সময়ে তাঁদের মধ্যে ছিল কি না, তা–ও কেউ প্রমাণ দিয়া বলতে পারে না। আমার চাচা দীর্ঘদিন আমাদের পরিবারের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখেন নাই। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর ব্যাপারটা মোটামুটি পরিবারের সবাই জাইনা ও মাইনা নেওয়ার পরে চাচাকে প্রথম দিকে কিছু পারিবারিক অনুষ্ঠানে দেখা যাইত। পরের দিকে তা–ও বন্ধ হইয়া যায়।
দ্বিতীয় চাচির সাথে আমার সম্পর্ক বেশ সহজ ছিল। পরিবারের সবাইকেই তিনি নানাভাবে খুশি রাখার চেষ্টা করতেন। তাঁর ব্যাপারে আমাদের পরিবারে দুইটা ভাগ ছিল। একটা অংশ তাঁকে মাইনা নিছিলেন বাস্তবতার খাতিরে, আরেক অংশ নেন নাই। তাতে আমার দ্বিতীয় চাচির গভীর আক্ষেপ ছিল। অনেক সময় আমরা যারা ছোট ছিলাম, আমাদের বোঝাইতে চাইতেন আমার চাচা বিগত দিনগুলোতে কত দুঃখে ছিলেন। মিসেস শিফা, মিসক্যারেজের পর থেইকা চাচাকে নানাভাবে সন্দেহ করতেন এবং ওনার মধ্যে এমন কিছু চেঞ্জ আসছিল, যার ফলাফল হিসেবে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এ ছাড়া আমার চাচা চাইতেন তাঁর একজন উত্তরাধিকারী থাকুক। বর্তমানে তিনি একটা পূর্ণ সংসার পাইছেন এবং চাইলেন তিনি তাঁর বর্তমান সংসার নিয়া যেন সুখে–শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।
আমার চাচা তাঁর দ্বিতীয় বিয়ার পারিবারিক স্বীকৃতি দিলেও সামাজিক স্বীকৃতি কখনো দেন নাই। চাচাকে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীসহ সামাজিক কোনো জায়গায় কখনো দেখা যায় না। দুইজনেরই কর্মস্থলের কিছু ঘনিষ্ঠ মানুষ ছাড়া ছোট চাচির স্বামীর পরিচয় কেউ জানত না। তার পেছনের কারণ এখনো অস্পষ্ট। চাচা তাঁর প্রথম স্ত্রীর কাছে ডিভোর্স চাইছেন, এমনটাও জানা যায় না। হইতে পারে উনাদের ভেতরের প্রেমটা কোথাও গিয়ে কিছুটা অবশিষ্ট ছিল। মিসেস শিফাও আমার চাচার বিরুদ্ধে বড় কোনো অভিযোগ কোথাও করেন নাই। কোনো আইনি পদক্ষেপও নেন নাই।
চাচার দ্বিতীয় সংসারে আমার যাতায়াত ছিল। ক্লাস শেষে কিংবা আমার প্রেমসম্পর্কিত কোনো সাহায্যে আমি প্রায়ই চাচির কাছে যাইতাম। তাঁর আন্তরিকতার কোনো কমতি ছিল না কখনোই। দ্বিতীয় চাচির কাছে তাঁর বর্তমান জীবনের কষ্টের কথা শুনতাম। চাচা শুরুর দিকে ঠিকঠাক সংসার করলেও পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে নিজেকে অনেক কিছু থেইকাই গুটাইয়া নেওয়া শুরু করেন। তিনি পারতপক্ষে বাড়িতে থাকতেন না। কোনো কোনো রাতে বাড়ি ফিরতেন আবার নানা অজুহাত দেখাইয়া বাইরেও কাটাইয়া দিতেন। আরও পরে তাঁর চারিত্রিক অবনতির কথাও শোনা যাইত নানা মহলে। বাইরের সবাই ধারণা করত, প্রথম বিয়া ভাঙার পর থেইকাই নাকি চাচা নারী–পুরুষের সম্পর্কের ব্যাপারে এমন বীতশ্রদ্ধ আচরণ শুরু করেন। আমার দ্বিতীয় চাচি হয়তো এই সবই বুঝতে পারতেন, নিজেকে প্রতারিতও ভাবতেন। কিংবা অনেক ক্ষেত্রে নিজেকে দোষীও ভাইবা থাকতে পারেন। কিন্তু উনার কষ্ট ছিল বেশি বাচ্চাটাকে নিয়া। বাচ্চাটা তো কোনো পারিবারিক সুন্দর আবহাওয়া পাইল না।
মিসেস শিফার সাথে হয়তো আজকেই আমার শেষ দেখা। এরপর আর কখনো কোথাও আমাদের দেখা হবে কি না, কেউ বলতে পারে না। তাঁকে তো ঠিকভাবে কখনো মনেই পড়ে নাই আমার। অথচ এতগুলো বছর বুকের ভেতরে কষ্ট পুইষা নিয়া বাঁইচা ছিলেন। সেই যন্ত্রণাগুলা প্রতিটা দিন, রাত, ক্ষণ বহন করা একেবারেই তাঁর নিজস্ব। কেউ কোথাও ছিল না এতগুলো বছর তাঁর কষ্ট ভাগ কইরা নেওয়ার; কিংবা এখনো নাই। আমার এই সাময়িক কষ্ট পাওয়াও তাঁর কাছে অতি তুচ্ছ। তাঁর কষ্টের জায়গাগুলা বুঝতে পারা যায়, অন্তত আমি পড়তে পারতেছিলাম। উনার কিছুরই কমতি ছিল না। সাধারণ অর্থে টাকাপয়সা, ক্ষমতা—সবই ছিল। সরকারি ব্যাংকে কাজ করতেন। ব্যাংকে কাজ করা মানুষ হইয়াও যে তাঁর অনুভূতি বা কষ্ট কোথাও কম ছিল, আমার মনে হয় নাই।
আজ আমি একজন পূর্ণবয়স্ক নারী হিসেবে যখন বুঝতে চাই সম্পর্কের জটিলতাগুলো আসলে কোথায়, অনেক ক্ষেত্রেই হিসাব মিলাইতে পারি না। এই চারজন মানুষ নিজেরাই নিজেদের মধ্যে অসুখ নিয়া বসবাস করতেছে। এঁরা কিংবা আরও যত ভাইঙা পড়া জীবন আছে, সবাই–ই পৃথিবীর বুকে এইভাবেই বাঁইচা থাকবে। কেউ সব হারায়েই বাঁইচা থাকে, কেউ পায় ভাইবাও কিছু পাইয়া ওঠে না।
মিসেস শিফাকে বসাইয়া রাইখা আমি আমার বাচ্চাটার হাত ধইরা রাস্তায় নাইমা আসলাম। আকাশে সুন্দর চাঁদ। পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের জন্য এই একটাই চাঁদ। হাঁটতে হাঁটতে মিসেস শিফার চেহারায় নিজের মুখটা বসাইয়া নিজেকে পড়তে লাগলাম আমি।