বান্ধবী

বান্ধবী
হ্যাঁ, হ্যাঁ ওটাতো শিউলিই। হ্যাঁ, ওটা অবশ্যই শিউলি। আমাদের ক্লাসের মহসিনা আক্তার শিউলি, রোল নং-৭, ক্লাস নাইন। সেই পঁচিশ বছর আগে অপর্ণা চরণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়া আমার প্রাণের বান্ধবী শিউলি। তবে শিউলিই যদি হবে তবে আমাকে দেখে সে এমন করে লুকালো কেন?
ও বুঝি আমাকে চেনে না? ধুর, তাই হয় নাকি? শিউলি বুঝি আমাকে চিনবে না? আরে এই শিউলি একদিন আমাকে না দেখলে পেটের ভাত হজম হতো না। আমারও একই অবস্থা। সেই শিউলি আমাকে চিনবে না তা হতেই পারে না। অবশ্যই না। যদিও আমরা ছিলাম পাঁচ বান্ধবী। নাইনে উঠতেই বিয়ে হয়ে গেল শাহেদার আর মেট্রিকের পর মিতালীর। বিয়ের সাথে সাথে পড়ালেখাও বন্ধ। মিতালী একটু খারাপ টাইপের ছাত্রী হলেও শাহেদা ভীষণ ভালো ছাত্রী ছিল। এই মেয়েটা ইয়া বড় বড় প্যারাগ্রাফ মুখস্ত করে ফেলতো এক বসাতেই। রেজাল্টও ভালো করত। শাহেদার বিয়ের পর একবার দেখা হয়েছিল আমাদের সবার সাথে।
বাপের বাড়ি এসেছে শুনে আমরা সব বান্ধবী মিলে দেখতে গেলাম শাহেদাকে। হায়, হায়। শাহেদাকে দেখে আমার বেশ লজ্জা লজ্জা লাগছে। কত বড় বড় লাগছে মেয়েটাকে। আমাদের পরিচয় করিয়ে দিল তার বরের সাথে। শাহেদাকে ভীষণ খুশি খুশি দেখাচ্ছে। তার বরকে দেখে আমরা সবাই খুব লজ্জা পাচ্ছি। লজ্জায় মিতালীতো কথায় বলতে পারল না। আমাদের অবস্থা দেখে শাহেদা মুচকি মুচকি হাসছে। মনে হচ্ছে মেয়েটা আমাদের চেয়ে কত বছরের বড়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিরে শাহেদা তোর বুঝি আর পড়ালেখা করা হবে না? শাহেদা হাসতে হাসতে বলল, ধুর বিয়ে যখন হয়ে গেল তখন এই পড়ালেখা দিয়ে হবেটা কি শুনি? শিউলি বলল, তুই না কত ভালো ছাত্রী?
শাহেদা বলল, রাখ তোর ভালো। রোজ রোজ পড়া মুখস্ত করার চেয়ে শশুর বাড়ীতে রান্না বান্না করা অনেক ভালো।
শাহেদার কথা শুনে আমরা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ি। শাহেদার সাথে দেখা করে আসার পথে মিতালী বলল, হ্যাঁ রে, শাহেদার তো রানীর কপাল। বিয়ে শাদী করে কি সুন্দর ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ কাল মকবুল স্যারের এত বড় রচনাটা কেমন করে শিখবো এটা নিয়ে আমার আজ রাতে ঘুমই হবে না। মিতালীর কথা শুনে আমাদের সেই কি হাসি। রেবেকা ছিল ভীষণ ফাজিল। মুখের উপর যা ইচ্ছে বলে ফেলে। মিতালীর কথা শুনে হাসতে হাসতে বলল, দাঁড়া তোর জন্য একখান জামাইয়ের ব্যবস্থা করছি। পড়ালেখার দরকার নাই। শশুরবাড়ি গিয়ে শুধু বসে বসে খাবি।
শুনেছি শাহেদা এখন স্বামীর সাথে অস্ট্রেলিয়া থাকে। বেশ সুখেই আছে। বার তের বছর আগে আমার সাথে একবার দেখা হয়েছিলো। তারপর আর কোন যোগাযোগ হয়নি। যে নাম্বারটা দিয়েছিল তা এখন বন্ধ। মেট্রিক পরীক্ষার পর পরই মিতালীরও বিয়ে হয়ে গেল। যখন বিয়ের কথা বার্তা হচ্ছে তখন থেকে মিতালীর সেই কি খুশী। রোজ দিনই আমাদের বাসায় এসে বসে থাকে। শুধু বিয়ে নিয়ে কথা। তার কথা শুনে আমার খুব রাগ হতো। ভীষণ রাগ। পড়লেখা বাদ দিয়ে খালি বিয়ে বিয়ে। মিতালির বিয়ে হলো রাজীব দার সাথে। রাজীব দার কলকাতায় নাকি বিশাল বড় দোকান। বিয়ের পর মিতালী কলকাতায় যে গেল আর আসল না। মিতালীর বিয়ের বছর দুয়েকের মধ্যে তার বাবা মা-ও স্থায়ীভাবে কলকাতায় চলে গেল।
আমি, শিউলি আর রেবেকা ভর্তি হলাম কলেজে। আমি আর শিউলি গার্লস কলেজে। রেকেবা সিটি কলেজ। রোজ সপ্তাহে আমাদের আড্ডা হতো রেবেকার বাসায়। কি যে মজার সেই আড্ডা। রেবেকার কলেজ কো-এডুকেশন। গার্লস কলেজে পড়ি বলে আমার আর শিউলির সিটি কলেজের প্রতি বেশ আগ্রহ। সেই কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আমাদের নিয়ে গিয়েছিলো রেবেকা। রেবেকার কলেজ ঘুরে এসে শি্উলি রোজ দিন আমাদের গার্লস কলেজকে নিয়ে দুই চারটা গালি দেয়। শিউলির রাগ দেখে আমি শুধু হাসি।
হ্যাঁ, ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত আমরা বেশ ভালোই ছিলাম একসাথে। মাঝে মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হতো। বেশি হতো শিউলির সাথে। আমরা একসাথে কলেজে যাওয়া আসা করতাম বলে আমাদের সর্ম্পটাও বেশ ভালো ছিল। ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর রেবেকা মেডিকেলে চান্স পেয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও শিউলি কলেজের ডিগ্রীতে ভর্তি হলো। আস্তে আস্তে আমাদের যোগাযোগও কমে গেল। ডিগ্রীতে পড়াকালীন শিউলির বিয়ে হয়ে গেল। আমারও বিয়ে হলো অনার্স ফাইনাল ইয়ারে থাকাকালীন। পড়ালেখা শেষ করে স্বামীর সাথে চলে আসলাম ঢাকায়। ঢাকায় আসার পর বলা যায় যোগাযোগ কমেই গেল। বাড়ি গেলেও দেখা সাক্ষাৎ হয়ে উঠে না। রেবেকাও নাকি স্বামীর সাথে জার্মানী চলে গেছে। আমি বাড়ি গেলে সবাইকে খুঁজি। কোথাও আমার একজন  বান্ধবীকে খুঁজে পাই না। মাঝে মাঝে তাদের ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করে।
একদিন হলো কি, ঠিক ভোরের দিকে শিউলিকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে হলো আমার। ইচ্ছে বলতে ভীষণ ইচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে দেখতে না পারলে আমার বুকটা ফেঁটে যাবে। আমি ছটফট করছি। দেখতে না পারার কষ্টে আমি কাঁদছি। আমার খুব ইচ্ছে করছে আমার সেই সব বান্ধবীদের নিয়ে গোল হয়ে একটু বসে থাকি। শুধু একটু, হ্যাঁ শুধু একটু বসে থাকতে পারলে আমার মনটা শান্ত হয়ে যাবে। আমি কারও মোবাইল নাম্বার বা ফেসবুক আইডিও জানিনা। রোজ দিনই খুঁজি। কোথাও খুঁজে পাই না।
অথচ এত বছর পর শিউলি আমাকে দেখে এড়িয়ে গেল। আমার বুকের ভেতরটা কষ্টে ভরে গেল। তারপরও আমার ইচ্ছে হলো একটিবার শিউলির সাথে কথা বলতে। আমি দৌঁড়ে শিউলির সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার খুব রাগ হলো। রাগ ভেতরে রেখেই আমি শিউলিকে বললাম, এই তুই শিউলি না? শিউলি আমার চোখে চোখ রেখে একটা মলিন হাসি দিয়ে মাথা নাড়ল। শিউলির মাথা নাড়া দেখে আমার ভেতরে ভীষণ রাগ হলেও কি এক মমতায় আমি শিউলির হাত ধরে বললাম, হারামজাদী তুই আমাকে দেখেও চলে গেলি?
ঠিক এই কথাটা আমার মুখ থেকে বের হতেই শিউলি আমাকে জড়িয়ে ধরল। এমনটি করে শিউলি আমাকে স্কুলে জড়িয়ে ধরত। শিউলির জড়িয়ে ধরা দেখে আমার মনে হলো ক্লাস টেনের ক্লাসরুমে বসে শিউলি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। আমি বুঝতে পারছি শিউলি কাঁদছে। ফুঁপিয়ে কাঁদছে। শিউলির কান্নার ষ্পর্শে আমার সব রাগ, ক্ষোভ কোথায় যেন মিশে গেল। আমারও বেশ কান্না পাচ্ছে। আমি কান্না চেপে রাখতে চেষ্টা করছি। এই কান্না চেপে রাখা বেশ কঠিন। আমি আর পারলাম না। আমি যে আস্তে আস্তে খুব কম কাঁদতে পারি। আমি কাঁদি ঠিক বাচ্চাদের মত করে। হ্যাঁ, ঠিক বাচ্চাদের মত করে আমি কেঁদে দিলাম। চারপাশের লোকজন আমাদের কান্না দেখ তাকিয়ে আছে। থাকুক তাকিয়ে। ও এমন কিছু না। আমি ঠিক এমন করে কাঁদবো।
দুজনের কান্নার বেগ একটু কমতেই শিউলি চোখ মুছে হাসতে হাসতে বললো, তুই এখনও এমন করে কাঁদিস? আমি বললাম, তোর ঠিক মনে আছে শিউ (শিউলিকে আমি আদর করে শিউ ডাকতাম তবে যখন রাগ করতাম তখন ডাকতাম শেইল্লা)? আমার কথা শুনে শিউলি বলল, মনে থাকবে না। এই কান্নাকাটি দিয়ে তুই আমাদের কম জ্বালিয়েছিস? শিউলিকে জোর করে আমি নিয়ে গেলাম বাসায়। ঐ তো কাছেই আমাদের বাসা। শিউলি কেমন জড়োসড়ো হয়ে আছে। এমনটা চুপ চাপতো শিউলি ছিল না। আমার মাথায় শুধু একটা জিনিসই ঘুরপাক খাচ্ছে। শিউলি আমাকে দেখে কেন এমন করে এড়িয়ে যেতে চাইলো। আমি জানতে চাইলাম কেন সে এমন করল?
আমার কথা শুনে শিউলি অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল। বেশ খানিক চুপ করে থেকে শিউলি বলা শুরু করল।
‘বিয়ের পর বছর তিনেক আমাদের বেশ ভালোই কাটলো। তোর সাজ্জাদ ভাই বেশ ভালো একটা চাকরি করত। আমিও জয়েন করলাম একটা স্কুলে। সংসার ভালোই যাচ্ছে। আমাদের মেয়ে মিলু হওয়ার মাস তিনেক পর সাজ্জাদ অফিস যাওয়ার পথে একটা বড় এক্সিডেন্ট করল। একটা পা বলতে পারিস ক্ষতিই হয়ে গেল। তারপর থেকে সাজ্জাদ বাসায় বসে গেল। শুরু হলো আমার যুদ্ধ। নিজেকে অনেক কিছু থেকে গুটিয়ে নিলাম। টেনে টুনেই সংসার চলা শুরু হলো। মেয়েটাকে এক প্রকার যুদ্ধ করে পড়ালেখা করাচ্ছি। এখন ইউনিভার্সিটিতে ফাইনাল ইয়ারে। অনেক বছর বসে থাকার পর সাজ্জাদ একটা দোকান দিল। ফার্মেসীর দোকান। এই দিয়ে আমাদের সংসার চলে যাচ্ছে।’
শিউলি খুব চঞ্চল হয়ে বলে উঠলো, জানিস আমি তোদের সবার খবর জানি। বিশেষ করে তোর আর রেবেকার খবর আমি কিন্তু ভালোই জানি। আমিতো বাসায় প্রায় তোদের কথা বলি। কেন বলি জানিনা। আমার বলতে ভালো লাগে। তুই, রেবেকা, শাহেদা, মিতালী সবার কথা আমি আমার মেয়ে মিলুর সাথে গল্প করি। তোদের কত কথা আমি মিলুকে বলেছি। তোদের সবার নাম মিলুর মুখস্ত। আমারতো আর ঐ ফেসবুক টেসবুক নাই। মিলু একদিন কি করে জানি তোর ফেসবুক আইডি বের করে আমাকে দেখায়। কেমন করে যেন রেবেকাকেও বের করল মিলু। বিশ্বাস কর, তোকে দেখে আমি সেদিন কেমন করে কেঁদেছি আমি নিজেও জানিনা। ইচ্ছে করছিল দৌঁড়ে গিয়ে তোকে জড়িয়ে ধরি।
আমি বললাম, তো তুই আমার আইডি পেয়েও যোগাযোগ করলি না কেন? শিউলি চুপ করে আছে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, চুপ করে আছিস কেন? একটু নিঃশ্বাস নিয়ে শিউলি বলল, ভয়ে। আসলে আমার কেমন জানি ভয় লাগছিল। লজ্জাও হচ্ছিল। তোরা সবাই কত বড় লোক হয়েছিস। সবাই সুখে আছিস। আমার মত গরীব বান্ধবীর কথা যদি তোদের মনে না থাকে। যোগাযোগ করলে যদি এড়িয়ে যাস। তখন আমার ভীষণ খারাপ লাগবে। তোদের সবাইকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। ভীষণ। আমি তোদের আগের স্মৃতি নিয়েই থাকতে চেয়েছি। মাঝে মাঝে মিলুকে বলে তোদের, তোদের পরিবারের ছবি দেখি। দেখতে আমার কি যে ভালো লাগে বুঝাতে পারব না।
শিউলির কথা শুনে আমি আবার ঠিক বাচ্চাদের মত করে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। স্কুলে থাকতে একটা সিঙ্গারা, এক টুকরো তেঁতুলও কখনও আমরা একা খেয়েছি বলে মনে পড়ে না। অথচ সেই মানুষটার এত কিছু হয়ে গেল আমি জানিই না। সংসারী হওয়ার সাথে সাথে আমরা কতটা স্বার্থপর হয়ে গিয়েছি। আমি শিউলিকে জড়িয়ে ধরে আছি। আমার এমন অবস্থা দেখে ছেলে মেয়েগুলো হাসছে। আমার এত বছর আগের পুরনো বান্ধবীকে দেখে আমার ছেলে মেয়েরাও দেখি খুব খুশি। আজ আমি শিউলিকে ছাড়ছি না। শিউলির মেয়ে মিলুকে ফোন দেওয়া হয়েছে। আমার বড় ছেলে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে মিলু আর তার বাবাকে এই বাসায় নিয়ে আসতে।
আজ সারাদিন তারা আমাদের বাসায় থাকবে। শিউলি এতদিন কেন লুকিয়ে লুকিয়ে তার প্রিয় বান্ধবীগুলোকে দেখতো তার কারণটা শিউলির পরিবারও দেখুক। শিউলির মেয়েটাকে আমার দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। আমার মনে হচ্ছে শিউলির মেয়েটা দেখতে ঠিক শিউলির মত হয়েছে। শিউলির মেয়েটাকে দেখলে আমি ইন্টারমিডিয়েট পড়া শিউলির চেহারা দেখতে পারব। আমার ভীষণ ভালো লাগছে। রাতে আমি শিউলিকে বাসায় ফিরতে দেইনি। আমরা দুই বান্ধবী এক বিছানায় শুয়ে আছি। আজ সারারাত আমরা গল্প করে কাটাবো। বার্ষিক পরীক্ষার পর আমরা মাঝে মাঝে এমন করতাম। কত কত গল্প আমাদের জমে আছে। আমি শিউলিকে বললাম, শিউ তোর কি মনে আছে ক্লাস টেনে থাকতে আমরা একবার কাপ্তাই পিকনিকে গিয়েছিলাম? শিউলি বললো, মনে থাকবে না আবার। তুই যে কেমন করে কেঁদেছিলি আমার ঠিক মনে আছে।
শিউলির কথা শুনে আমি হাসছি। সেদিনের কথা মনে হলে এমনিই আমার চোখে পানি চলে আসে। স্কুল থেকে আমাদের পিকনিক যাচ্ছে কাপ্তাই। একশ আশি টাকা চাঁদা। আব্বার হাতে টাকা পয়সার অবস্থা তখন ভীষণ খারাপ। পিকনিকের কথা বলতেই রেগে গেলেন। আমি আর কিছুই বললাম না। শিউলি, মিতালি, রেবেকা, শাহেদা সবাই, সবাই যাচ্ছে পিকনিকে। এই নিয়ে তাদের কত কত আয়োজন। কে কোন জামা পড়বে, কেমন কানের দুল পড়বে এসব নিয়ে আলোচনা। আমি সবাইকে এড়িয়ে চলি। মাঝে মাঝে লুকিয়ে কাঁদি। আমার ভীষণ মন খারাপ হয়ে আছে। আমাকে দেখে শিউলি ঠিকই বুঝে গেল। একদিন জোর করে শিউলি আমার পিকনিকে না যাওয়ার বিষয়টি জানল। পরের দিন এই শিউলিই বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে তার মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে আমার পিকনিকের টাকা জমা দিয়ে দিল। সেদির কথা মনে হলে আমার বুকের ভেতরটা এখনও কেমনজানি করে। সেদিনও আমি শিউলিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলাম অনেক।
এই মানুষগুলো, এই বন্ধুগুলোর সাথে আমাদের কত কত স্বপ্ন, ভালোবাসা, স্মৃতি যে জড়িয়ে আছে তা কখনও হিসেব করে বলা যাবে না। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এই সুখ স্মৃতি লালন করি একান্তই নিজের করে। আমি ঠিক বুঝতে পারি। হ্যাঁ, বুঝতে পারি। সব মানুষের কিছু নিখাদ ভালোবাসায় থাকে, মায়া থাকে। এই ভালোবাসা, এই মায়ার সাথে কোন জাগতিক স্বার্থ নেই। কিছু সময়, কিছু ভালোবাসা, কিছু স্মৃতি লালন করে আমরা সব সময় একটা সুখ অনুভব করি। এই সুখ একান্তই নিজের এই সুখ সত্যিই সবকিছুর উর্ধ্বে।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত