বিয়ে বাড়ি বলে কথা।কত মেয়ে আসবে সেখানে।নতুন দুই একটা গার্লফ্রেন্ড পেলেও পেয়ে যেতে পারি!কিন্তু কোন পান্জাবি পড়বো?ব্যস্ততার কারণে তো কিছু কিনতেই পারি নি।আরে!ঈশিতার দেওয়া পান্জাবির কথা তো ভুলেই গিয়েছিলাম।ওটাই পড়বো।
এক্স গার্লফ্রেন্ড দিয়েছে তাতে কি?সেখানে তো আর ও থাকবে না।কে দেখতে যাবে! অয়নের বড় ভাইয়ের বিয়ে আজ।সে জন্যই এতো প্রস্তুতি চলছে।বিয়ে বড় কথা নয়।বড় কথা মেয়ে পটাতে হবে! সুন্দরভাবে পরিপাটি হয়ে বেড়িয়ে পড়লো তারা বিয়েবাড়ির উদ্দেশ্যে।যদিও গাড়িতে সবাই অনেক মজা করছে।কিন্তু অয়ন ফেসবুকে তার দুপুরের প্রেমালাপ নিয়ে ব্যস্ত!অয়নের স্বভাব সে আগে তার ফেইক আইডি দিয়ে এক সপ্তাহ প্রেম করবে।ভালো লাগলে রিয়েল আইডি তে এড করবে!তিনদিন হলো এক মেয়ের সাথে তার নতুন প্রেম চলছে।মেয়েটার নাম এন্জেল মারিয়া!আইডির নাম আরকি!তার সাথেই চ্যাটিং এ ব্যস্ত অয়ন।
-কিরে ভাই!আজকেও তোর ফোন নিয়ে থাকতে হবে?আমাদেরও একটু সময় দে! এইবার ফোন টা সে রেখে দিলো।বিয়েবাড়িতে পৌঁছাতেই গেইট এর সামনে সুন্দরীদের দেখে অয়নের খুশি আর দেখে কে!এখনই কিছু করা যাবে না।সময় মতো কাজ চালাতে হবে!ব্যস্ততার কারণে পাত্রী দেখার সময় থাকতে পারেনি।তাই আগেই চলে গেলো নতুন ভাবি কে দেখতে! গিয়ে যা দেখলো তা দেখে অয়নের চোখ আলুর মতো বড় হয়ে গেলো!তার এক্স গার্লফ্রেন্ড বসে আছে বিয়ের মন্ডপে।
-ঈশিতাই কি তাহলে আমার ভাবি!না এ হতে পারে না।নিজের গার্লফ্রেন্ড কে ভাবি ডাকতে পারবো না।ব্রেকআপ যদিও আমি করেছিলাম।কিন্তু নিজের ভাইয়ের সাথে ঈশিতা এক রুমে এক বেডে থাকবে এসব সহ্য করতে পারবো না। বিয়ে ভাঙতে হবে।এসব ভেবেই অয়ন তার ভাই অনিকের কাছে চলে গেলো।
-কেমন লাগলো ভাবি?
-ভাই!মেয়ে তো সুন্দর না।দেখে ভয় লাগলো।পেত্নীর মতো!এই বিয়ে করো না।
-কি বলিস!আমার তো ভালোই লাগলো।
-মেয়ের থেকে মেয়ের বোন বেশি সুন্দর।তোমার সাথে মানাতো।কিন্তু এ মেয়ের সাথে তোমাকে মানাবে না।বাজে দেখতে।সবার সামনে যাবে কীভাবে এই মেয়েকে নিয়ে?
-তা ঠিক বলেছিস।মেয়ের বোন বেশি সুন্দর।কিন্তু বড় বোনের আগে তো ছোটো বোনের বিয়ে কেউ দিবে না।
তাই ওকেই বিয়ে করতে হবে।কিছু করার নাই ভাই।মেনে নে ওকেই তোর ভাবি হিসেবে! উপায় না পেয়ে অয়ন তার মায়ের ওষুধের বাক্স থেকে ঘুমের ওষুধ খুঁজতে লাগলো।বাক্সটা সব সময় কাছেই থাকে।পেয়েও গেলো।তাড়াতাড়ি এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে অনিক কে খায়িয়ে দিলো! এদিকে বিয়ের সময় পার হয়ে যাচ্ছে।পাত্র কে পাওয়া যাচ্ছে না।পাবে কি করে?পাত্র বিয়ের গাড়িতে শান্তিতে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে! মেয়ের বাবা কেঁদে কেটে অস্থির! এখন মেয়ের কি হবে?কে করবে তার মেয়েকে বিয়ে! অয়ন সাহসী ছেলের মতো এগিয়ে গিয়ে বললো,
-আংকেল!আমি করবো আপনার মেয়েকে বিয়ে!আমার ভাইয়ের ভুল আমিই শুধরে নিবো!
সবাই অয়ন কে বাহ বাহ্ করতে লাগলো।এতো ভালো ছেলে!কত বড় মন তার! শেষে অয়নের সাথেই ঈশিতার বিয়ে সম্পন্ন হলো!কিন্তু সবাই বিয়েবাড়িতেই থাকলো। বড় ছেলের চিন্তায় সবাই অস্থির হয়ে আছে।একদিন পড় অনিকের ঘুম ভাঙলো!সাথে সাথেই সে বিয়ের মন্ডপে এসে বসে পড়লো!
-কই ছিলি বাবা!
-মা!আমি তো ঘুমাচ্ছিলাম।জানিনা আমার কি হয়েছিলো।উঠে দেখি আমি গাড়িতে।আমার বউ কই?আমি বিয়ে করবো!
-তোকে খুঁজে পাওয়া গেলো না।তাই ওরা তোর হবু বউ কে তোর ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে বাবা!
-সমস্যা নেই!আমি ছোটোবোন কেই বিয়ে করবো! অতঃপর মেয়ের বাবাকে অনেক বুঝিয়ে ছোটো কন্যার সাথেই অনিকের বিয়ে দেওয়া হলো!বোঝানোর দায়িত্ব টা যদিও অয়ন নিজেই নিয়েছিলো!এবার তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।গাড়িতে গিয়ে বসলো দুই নতুন দম্পতি!
-এই ছ্যাঁচড়া! তুই এক্স গার্লফ্রেন্ড এর দেওয়া পান্জাবি পড়ে আসলি!তোর লজ্জা করলো না?
-আমি তো আগেই জানতাম তোমার সাথে আমার বিয়ে হবে জান!
এজন্যই তো এটা পড়েছি।শয়তানি হাসি দিয়ে ঝগড়া থামিয়ে ফেসবুকে রিয়েল আইডিতে ঢুকলো।হঠাৎ একটা পোস্ট দেখে চোখ কপালে উঠলো অয়নের।ঈশিতাকে ট্যাগ করে এন্জেল মারিয়া পোস্ট দিয়েছে!পোস্ট টি ছিলো- অতঃপর বড় বোনের বড় জা হলাম!সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন! অয়ন সাথে সাথে তার ফেইক আইডি ডিএক্টিভ করে দিলো!আর মনে মনে বলতে লাগলো,
-ভাই তোর কপালই খারাপ।এইবারও আমার গার্লফ্রেন্ড ই জুটলো তোর কপালে!
গল্পের বিষয়:
গল্প