পাশের বাসার আন্টি আজ বিরিয়ানী রান্না করতেছে।দুইবার গেছি! আরেকবার যাব দিলে দিবে না দিলে নাই।আমার কিন্তু বিরিয়ানী খাওয়ার এতো শখ নাই।বিরিয়ানীর ঘ্রাণে আর থাকতে পারছিনা তাই আবার গেলাম। “আন্টি আঙ্ককেল কোথায়?
-তোমার আঙ্ককেল তো বাজারে গেছে।
“তাহলে আপনার ছেলে সাকিব কই।
-এইতো ঘুমাইতেছে।
” আন্টি আপনি এত সুন্দর কেনো। পূর্নিমার মত চোখ , আঙ্ককেল দেখলে হারিয়ে যাবে শরতের চিলেকোঠার মাঝে।আমার মনে হয় আপনার জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে যেমনটা পদ্মাবতীকে দেখার পর হয়েছিলো।আর আঙ্ককেল এতো কাইল্লা কেনো। আন্টি আমার কথা শোনার পর একটা মৃদু হাসি দিলো। “প্লিজ আপনি আর হাইসেন না।কোন শত্রুর মোকাবেলা করতে গেলে কোন অস্র/ একে৪৭ লাগবেনা।কারণ শত্রুকে ঘায়েল করার জন্য আপনার এই মিস্টি হাঁসিটা
যথেষ্ট।
-আমাকে বেলুনের মত পাম দিতে হবেনা।তুমি স্বার্থ ছাড়া আসোনা সেটা আমি ভালভাবেই বুঝি। “কি যে বলেন আন্টি।কাছের থাকলে তো আপনি আছেন।
-তোমার মাথা হচ্ছে নিউটনের মাথা।সারাক্ষণ বুদ্ধি কাজ করে।নিশ্চয়ই কোন স্বার্থ ছাড়া আমার দরজা নক করোনি।
“আন্টি আপনি কি ব্যস্ত। সুস্বাদু কিছু একটার ঘ্রাণ আসতেছে।রান্না বান্না করতেছেন নাকি?
-হ্যাঁ বিরিয়ানী রান্না করতেছি।
“তাহলে তো কোন কথা নাই।আপনার বিরিয়ানী খেয়েছি অনেক দেরী হলো। আজ পেট ভরে খাওয়া যাবে।
-না আজ বিরিয়ানী অল্প রান্না করছি।তোমার যে পেট মাশাল্লাহ্ আর একটুও থাকবেনা। “সেই জন্য তো আপনার বিরিয়ানীর ঘ্রাণে থাকতে পারলাম না।পুরান ঢাকার বিরিয়ানী যতটা ফেমাস তার চেয়ে বড় ফেমাস আপনি।
-হয়েছে হয়েছে তোমার এতো সুন্দর সুন্দর কথা আমি আর থাকতে পারছিনা।আমি জানি তুমি অনেক সুন্দর করে কথা বলতে পারো।প্রতিদিন রাতে কোন মেয়ের সাথে এতো সুন্দর করে কথা বলো দেখিতো।যে তোমার প্রেমে পড়ছে তার পোড়া কপাল। “আবার জিগায়। আমার মত স্মার্ট ছেলে কয়টা পাবে।আপনার হাজব্যান্ডের মতো আর কাইল্লা না।
“এমন সময় আঙ্ককেলও হাজির।”
“কিরে তুই আমাকে কাইল্লা বললি।
“কাইল্লা মানে কলিজা।আপনিতো আন্টির কলিজা।
“কি যে বলিস রুপিম এই বয়সে কী এগুলো আর শোনা যায়।
“এসব রোমান্টিক কথা যে কোন বয়সে রসায়নের মত ঘটে! আর আপনার মত হ্যান্ডসাম ছেলে কয়টা পাবে। আপনার সাথে আন্টির মানায় না।সাবানা যেমন আলমগীরের সাথে মানায়।ঠিক আপনার সাথে মানাবে
কবরীর।
“ঠিক বলছিস।আমি আমেরিকা থাকি বলে আর হ্যান্ডসাম বলে সেই জন্য আমার সাথে বিয়ে দেওয়ার
জন্য ওর আব্বা আজিজ মিয়া পাগল হয়ে গেছে। মনে মনে বললাম।তোমার মতো নিগ্রো আর একটাও নাই।মূলত পাম দিচ্ছি তোমাকে?যাতে একসাথে বিরিয়ানী টা খেতে পারি।
“কি বললি আবার বল। “আরেই না কিছুই না।আফসোস হয় ,খুব আফসোস আপনার জন্য।এমন বউ পাইছেন বলে।
-তুই এতক্ষণ আমার সুনাম করলি।এখন কি বুঝে আমার জামাইয়ের সুনাম করতেছিস। আমিতো আপনার কাছে আমার হ্যান্ডসাম আঙ্ককেলের সুনাম করলাম।
“বাদ দাও। বিরিয়ানীর ঘ্রাণ পাচ্ছি মনে হচ্ছে।
“হ! আঙ্ককেল চলেন।একসাথে খাই আর গল্প করি।
-তোমাকে কে বিরিয়ানী দিবে।
“বিরিয়ানী তুমি খাওয়াতে হবে না আমি খাওয়াবো রুপিম কে।তুমি দেওয়ার কে।
“আন্টি রাগী মুখে চলে গেলেন।এই সুখে কিচেন থেকে মনের মত করে বিরিয়ানী নিয়ে আসলাম ডাইনিং
টেবিলে।”
“আঙ্ককেল আমাদের তো সামনে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। যদি কিছু টাকা দেন তাহলে ভাল হয়।
“কত লাগবে।
“এইতো দুই তিন হাজার।সবাই আপনাকে এক নামে চিনবে।রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যাবেন আপনি।
“সত্যি বলছ নাকি।
“হ!আংকেল একদম অস্ট্রেলিয়ার খাঁটি গরুর দুধের মতো সত্যি।
যাই হোক ,একটা চাপা অনেক ওষুধ কাজ করছে। পেট ভরে বিরিয়ানী খেয়ে চলে আসলাম বাসায়। ঠিক দুই দিন পর।আবার বিরিয়ানী রান্না করলো।দরজার সামনে গিয়ে দরজা নক করলাম। “আন্টি আপনার কোন কিছু হেল্প লাগবে।
-বুঝতে পারছি এখন তোমার আসার উদ্দেশ্য কী।চাপা আর মাইরা লাভ নাই।বিরিয়ানী খেতে আসছো তাই না।দরজার সামনে দাড়িয়ে থাকো। এই কথা বলে দরজা টা বন্ধ করে দিলো পাশের বাসার আন্টি। দু’বার আসছি। আরেকবার দরজা নক করবো খুললে খুলবে না খুললে নাই। আমার কিন্তু এতো শখ নাই তোমার পঁচা বিরিয়ানী গুলো খাওয়ার জন্য!
গল্পের বিষয়:
গল্প