ঈশিতা আপু

ঈশিতা আপু
অফিসে ইদানিং খুব খাটুনি যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বস ইচ্ছা করেই সব কাজ আমাকে দিয়ে করাচ্ছেন। এতো সব কর্মী বসে বসে কফি খাচ্ছে, নিচে যাচ্ছে, ঘুরছে-ফিরছে, ডেস্কে বসে গাল-গল্প করছে, অথচ আমার দম ফেলবার সময়টুকু নেই। ফাইলে শুধু গোল্লা আর গোল্লা। গতকাল সকালে বস আমাকে ডেকে বললেন, “তোমার উচিৎ ক্লাস টুতে ভর্তি হয়ে আবার বানান শিখা উচিত। ফাইলে এইসব কি হু?”
আমি বললাম, “বস এসব বানানই তো এখন চলছে। আধুনিক বানান। ইংরেজিতে নাইসকে (nc) বাংলায় অদ্ভুতকে (অদ্ভোদ), পৃথিবীকে (পিতিবি) এসবই চলছে বস।” বস বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “আধুনিক বানান শেখাচ্ছো আমাকে? রাবিস, যাও পুরো ফাইল ঠিক করে নিয়ে আসো।” আজ সকালে অফিসে ঢুকতেই বস ডেকে পাঠালেন। শার্ট-প্যান্ট ঠিক-ঠাক মত ইন করে বসের চেম্বারে ঢুকলাম। বস আমার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিয়ে বস বললেন, “বসো।” আমি বসলাম। কিছু সময় চুপচাপ থেকে বস বললেন, “তুমি ঈশিতাকে কিভাবে চেনো?” আমি বললাম, “কোন ঈশিতা বস?” বস ফোন বের করে একটা ছবি দেখিয়ে বললেন, “তাকে তুমি কি করে চেনো?”
ঈশিতা আপুকে আমি চিনি ফেসবুকের মাধ্যমে। তিনি আমাকে ছোট ভাই বলে ডাকেন। প্রথম প্রথম তুমি করে বললেও তিনি এখন আমাকে ডাকেন তুই করে। দিনে অন্তত একবার তিনি আমাকে ফোন করেন। আমার চেয়ে শিউলির সাথে তাঁর ভাব বেশি৷ ঈশিতা আপুর শুধুমাত্র চারটা ছবি ফেসবুকে দেওয়া। চারটা ছবিই তাঁর একমাত্র ছেলে রাহাতের সাথে। বস উত্তরের অপেক্ষায় গম্ভীরমুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি বললাম, “বস ঈশিতা আপুর সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকে। আপনি কিভাবে চেনেন বস?” বস আমার দিকে রক্তচোখে তাকিয়ে বললেন, “সে আমার স্ত্রী এই কথা কি তুমি জানো? তুমি তাকে আমার নামে কি বলেছ?”
ঈশিতা আপু যে বসের বিবাহিতা স্ত্রী সে কথা আমি ঘুনাক্ষরেও জানতাম না। সর্বনাশ হয়ে গেছে। ঈশিতা আপু বিভিন্ন সময় তাঁর ছবি, তাঁর একমাত্র ছেলে রাহাতের ছবি, শিউলিকে দেখানোর জন্য নানান পদের শাড়ীর ছবি পাঠালেও দুলাভাইয়ের কোন ছবি কখনো পাঠাননি। ঘটনা যা ঘটবার ঘটে গেছে। আমি এতোদিনে বস সম্পর্কে নানান ধরনের আজে-বাজে কথা ঈশিতা আপুকে বলেছি। ঈশিতা আপুর সাথে সর্বশেষ কথা হয়েছে গতকাল রাতে। ঈশিতা আপু জিজ্ঞাসা করেছিল, “কেমন আছিস ভাই?” আমি বলেছিলাম, “আর বলো না, কাজ করতে করতে জীবনটা একদম শেষ।”
–কিসের এতো কাজ?
–অফিসের কাজ। সালা পেট মোটা বস সব কাজ আমাকে দিয়ে করিয়ে নিয়ে রিভলভিং চেয়ারে বসে পেটে এসির হাওয়া লাগায়। আমার কি ইচ্ছা হয় জানো?
–কি ইচ্ছা হয় রে?
–ইচ্ছা হয় ওর পেট টা ফুটো করে দেই, সব হাওয়া বের হয়ে যাক।
ঈশিতা আপু আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ। তাঁর হাসি থামতে একমিনিট সময় লাগলো। হাসি থামবার পর আপু বলল, “অফিসে আর কেউ নেই বুঝি?”
–থাকবে না কেন? আছে না। কতজনই তো আছে। এক মুটি আছে। বস তাঁর ফাইলপত্র পর্যন্ত আমার ডেস্কে পাঠিয়ে দেয়। বলো দেখি কেমন টা লাগে! ঈশিতা আপু হাসতে হাসতে বললেন, “আমার মনে হয় কি, তোর পেট মোটা বস সেই মুটি মেয়েটার প্রেমে পড়েছে।” ঈশিতা আপু ছড়ার মতো করে বলল, “মুটিতে-মুটুতে হলো মিল এবার আসবে বিয়ের দিন। -ভালো কথা তাঁরা দুজন কি অবিবাহিত?”
–আরে নাহ, বুড়ো-বুড়ি হয়ে গেল, বাচ্চা-কাচ্চা আছে।
–তাহলে তো ঘটনা খারাপ।”
–খুবই খারাপ। দাঁড়াও তোমাকে কিছু ছবি দিচ্ছি, ছবিগুলো দেখো।”
আমি বেছে বেছে অফিসের কলিগ মৌসুমীর সাথে বসের তোলা কিছু ক্লোজ ছবি ঈশিতা আপুকে পাঠিয়েছিলাম। এরপর থেকে ঈশিতা আপু আমার ফোন ধরছে না। বসের অবস্থা বেগতিক, যে কোন মুহুর্তে তিনি আমাকে উপরে তুলে একটা আছাড় মারতে পারেন। আমি শান্ত গলায় মুখে হাসি হাসি ভাব এনে বললাম, “বস আপনাকে নিয়ে তো আমি কোন নেগেটিভ কথা বলি নাই, যা বলেছি সব পজেটিভ।”
বসের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে তিনি ভীষণ ক্ষুধার্ত। আমাকে কাঁচা গিলে ফেলতে পারলে তাঁর ক্ষুধা কিছুটা নিবারণ হয়। আগুন ঝরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, “আমি মৌসুমীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি?” আমি কি বলব ভেবে পেলাম না। এমন কথা আমি ঈশিতা আপুকে বলিনি। সে বসের সাথে মৌসুমীর ছবি দেখে সন্দেহ করেছে। কি সর্বনাশ যে ডেকে এনেছি, মনে হচ্ছে নিজের কপালে নিজে দশইঞ্চি একটা ইট দিয়ে বারি মেরেছি। মাথাটা ভনভন করে ঘুরছে। বস আবারও বললেন, “আমি মৌসুমীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি?” আমি বললাম, “ছি ছি বস আমি এরকম কোন কথা আপুকে বলিনি।”
–তুই বলিস নাই, তোর বাপ বলেছে।
–বস আব্বার তো কোন ফেসবুক আইডি নাই। বস বজ্রকন্ঠে বললেন, “আউট, গেট আউট।
–বস বিশ্বাস করুন এমন কোন কথা আমি বলি নাই।
বস এবার আগের চেয়ে দ্বিগুণ চেঁচিয়ে বললেন, “আই সে গেট আউট। কাল থেকে যেন তোকে অফিসের ত্রিসীমানায় না দেখি।” বস গায়ে ঝাঁপিয়ে পরার আগেই আমি কেটে পড়লাম। অফিস থেকে বের হয়ে সোজা কুরবানের চায়ের দোকানে গিয়ে বসে কুরবানকে চা দিতে বললাম।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে শুরু করলাম, কি করা যায়? আমার শিক্ষা জীবনে ফার্স্ট ক্লাস বলে কোন রেজাল্ট নাই, সব সেকেন্ড ক্লাস, সুতরাং চাকরি চলে গেলে মহা বিপদে পড়বো, সহজে চাকরি পাওয়া যাবে না। অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম, সমস্যা টা যার কারণে শুরু হয়েছে তাকে দিয়েই সমাধান করতে হবে। ঈশিতা আপুকে ফোন করলাম। সে প্রথমবার ফোন ধরল না, দ্বিতীয়বারেও ফোন ধরল না, তৃতীয়বারে গিয়ে ফোন ধরে অভিমান ঝরা কন্ঠে বলল, “এতো ফোন করছো কেন? দেখছো না ফোন ধরছি না।” ঈশিতা আপু, তুই থেকে তুমিতে চলে গেছে। আমি তুমিতে অব্যাহত থেকে বললাম, “আপু বিশ্বাস করো, আমি জানতামই না বস রাহাতের বাবা।”
–ভাল হয়েছে। আর কিছু বলবে?
–রাহাত কোথায়?
–ঘুমাচ্ছে। ফোন রাখছি। ঈশিতা আপু ঘ্যাচাং করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল। কুরবান জিজ্ঞাসা করল, “ভাইজানে কি খুব টেনশানে আছেন?”
–হু।
–নেন একটা সিগারেট খান। এইটা আমার পক্ষ থেইকা খাওয়াইলাম।
আমি খুব বেশি খুশি, খুব কষ্ট এবং খুব টেনশনে থাকলে কুরবান আমাকে ফ্রীতে একটা সিগারেট খাওয়ায়। দোকানের বিভিন্ন জিনিসপত্রের দিকে তাকাতে তাকাতে ইঁদুরের বিষের উপর চোখ পড়লো। ইঁদুরের বিষ থেকে বিষের কথা মনে পড়লো। এরমধ্যেই মাথায় দুর্লোভ একটা বুদ্ধি চলে এলো। ইন্টারনেটে সার্চ করে বিষের বোতলের ছবি পাওয়া গেল। ছবিটা দিনের আলোয় এক হাতে রেখে তোলা। আমি দ্রুত ছবিটা ডাউনলোড করলাম। নোটপ্যাডে লিখলাম,
“এই জীবন আমি আর রাখতে পারলাম না। খুব ইচ্ছা ছিল বেঁচে থাকার। দুলাভাইকে সন্দেহ করে থেকো না।
রাহাতকে আমার ভালোবাসা দিয়ো। তোমরা ভালো থেকো।” নোটপ্যাড থেকে লেখা কপি করে ছবি সহ ঈশিতা আপুকে ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিলাম। দুই মিনিট না যেতেই ঈশিতা আপুর ফোন। প্রথম দুইবার ফোন আসার সাথেই লাইন কেটে দিলাম। ঈশিতা আপু ম্যাসেজে লিখল, “সোনা ভাই আমার ফোন ধর।” তৃতীয় বারের বেলায় ফোন ধরলাম। ঈশিতা আপু বলল, “কি হয়েছে ভাইয়া? এমন পাগলামি করছিস কেন?” আমি কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম, “এই জীবন রেখে আর লাভ নাই আপু।”
–কি হয়েছে বলবি তো।
–দুলাভাই আমার চাকরি নট করে দিয়েছে।
–ও এই কথা, সেজন্য বিষ খেতে হবে? পাগল কোথাকার!
–তুমি ব্যাপারটা বুঝতে পারছ না।
–হয়েছে হয়েছে, আমার যা বুঝার বুঝেছি। তোর দুলাভাই আসুক আজকে, দেখ আমি কি করি।
ঈশিতা আপু কি করলো বোঝা গেল না। রাত সাড়ে বারোটার দিকে বসের নম্বর থেকে ফোন আসলো। আমি ফোন ধরে সালাম দিতেই বস বললেন, “তুমি কোথায়?”
–আমি বাসায়।
–তুমি যে এক নম্বরের একটা বদমাইশ এই কথা জানো তুমি? কেউ বলেছে এর আগে?
–জ্বী না দুলাভাই, থুক্কু বস, আপনিই প্রথম বললেন।
–তোমার মতো বদমাইশ ছেলে আমি আমার এই জীবনে আর একটাও দেখিনি।
–জীবনতো এখনো শেষ হয়ে যায় নি বস। আমার থেকে আরও বড় বদমাইশ দেখার সুযোগ আছে। যদি দেখেন তাকে বলবেন, আমি আমার জীবনে একটা বদমাইশ ছেলে দেখেছি, আমার ধারণা ছিলো তার চেয়ে বড় বদমাইশ আর কেউ হতে পারে না। তুমি তার চেয়েও বেশি বদমাইশ।
–চুপ, একদম চুপ। ঈশিতাকে তুমি কি বলেছ? আমি চুপ করে রইলাম। বস বললেন, “কথা কানে যাচ্ছে না? ঈশিতাকে কি বলেছ?” আমি এবারও চুপ। বস লাইন কেটে দিয়ে আবারও ফোন করে বিক্ষিপ্ত গলায় বললেন, “হ্যালো।” আমি বললাম, “বস আপনিতো আমাকে চুপ করে থাকতে বলেছেন, সেজন্য কথা বলছি না। খুবই অস্থির লাগছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে মরে যাবো।”
–আমার সাথে ইয়ারকি করতেছিস ফাজিলের হাড্ডি জানি কোথাকার। কালকে আয় অফিসে, তোর হাড্ডির জয়েন্টে জয়েন্টে পেরেক ঠুকে দেবো বদমাইশ।
-বস আপনি তো আমার চাকরি নট করে দিয়েছেন। অফিসের ত্রিসীমানায় যেতে বারণ করেছেন। অফিসে যাই কি করে?
–তুই আসবি তোর বাপও আসবে, ফাজিল জানি কোথাকার!
–আমি যাবো না এই ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত থাকুন। আব্বা যাবেন কি না, তাকে জিজ্ঞাসা করে আমি জানাবো। আচ্ছা বস আমার চাকরিটাকি আব্বাকে দেবেন? বস ফোন রেখে দিলেন। মিনিট পাঁচেক পর আবারও ফোন করলেন। আমি ফোন ধরতেই শান্ত গলায় বললেন, “দেখো নিবিড়, তুমি ঈশিতাকে কি বলেছ আমি জানি না। সে আমাকে বাসায় ঢুকতে দিচ্ছে না। এই মুহুর্তে ঘরে ঢোকা আমার বিশেষ প্রয়োজন।”
–বস একটা রাত বাইরে কাটান। মাঝে মাঝে শিউলি আমাকে বাসা থেকে বের করে দিলে আমি রাতটা বাইরেই কাটিয়ে দেই। আপনিও কাটিয়ে দিন। ভাল অভিজ্ঞতা হবে।
–আমার ভীষণ টয়লেট চেপেছে। তুমি কি চাও আমি প্যান্টে টয়লেট করে দেই।
–ছি ছি বস, এতো বড় একটা মানুষ প্যান্টে টয়লেট করে দিলে লোকে কি বলবে। আপনি আরেকটু চেপে রাখুন, আমি ব্যবস্থা করছি। আমি লাইন কেটে সাথে সাথে ঈশিতা আপুকে ফোন করলাম। ঈশিতা আপু ফোন ধরে বলল, “হ্যাঁ ভাইয়া বল।”
–কি করছো আপু?
–বেয়াদব টাকে শিক্ষা দিচ্ছি। আমার ভাইকে চাকরি থেকে নট করে, কতো বড় সাহস!
–শাস্তি তো অনেক দিলে, রাত প্রায় একটা বাজে, এবার ঘরে ঢুকতে দাও।
–আগে সে বলুক তোর চাকরি সে নট করবে না।
–তাকে জিজ্ঞাসা করে দেখো।
–বলছিস জিজ্ঞাসা করতে?
–হ্যাঁ জিজ্ঞাসা করো।
–তুই লাইনে থাক। আমি বলে দেখি।
ঈশিতা আপু আমাকে লাইনে রেখে দুলাভাইকে বললেন, “একটা রাত বাইরে কাটাতে পারলি না।”
বসের অস্পষ্ট কন্ঠস্বর শোনা গেল। তিনি বললেন, “প্লীজ দরজাটা খোল।”
–আমার ভাইয়ের চাকরি আর নট করবি? বল করবি?
–না করবো না। প্লীজ দরজা টা খোল।
–কান ধর, কান ধরে দশবার উঠবস কর। কোন রকম ছল-ছাতুরি করবি না। আমি দরজার ফুটো দিয়ে দেখছি।
বস সম্ভবত কান ধরে উঠবস করতে শুরু করলেন। ঈশিতা আপু গুনতে শুরু করলেন, এক. দুই. তিন. এরপর বলে উঠলেন, “উহু দাঁড়িয়ে পড়লে চলবে না।” দশ পর্যন্ত গোনার পর ঈশিতা আপু বসকে ভেতরে ঢুকতে দিলেন। ঈশিতা আপুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফোন রাখলাম। বস ঘরে ঢুকেই যে টয়লেটের দিকে দৌড় দিলেন এই ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নাই।
বেশকিছুক্ষণ পর বস ফোন করলেন। আমি ফোন ধরে চুপ করে রইলাম। ঈশিতা আপুর চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে। বস বললেন, “হ্যালো নিবিড়। স্যরি ভাই, তোমার সাথে আজকে খারাপ ব্যবহার করেছি। ভুল তো মানুষেরই হয় তাই না। এইসব কিছু মনে রেখো না। কাল থেকে আগের মতো অফিসে এসো।” বস ফোন রেখে দিলেন। এসব যে ঈশিতা আপুর ভয়ে তিনি করেছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। “জগতের কি নিয়ম! যাকে সবাই বাঘের মতন ভয় পায়, সেও কাউকে না কাউকে ভয় পায়, যেমন দুলাভাই দুঃখিত বস ভয় পান ঈশিতা আপুকে।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত