আমি মরে গেছি দু’ বছর হলো। ইচ্ছে করে মরিনি বরং বাধ্য হয়েই মরেছি। বিষ খেয়েছিলাম। বিষ খাওয়ার পর আমার বুক আর পেটের ভেতরে তীব্র জ্বলছিল। তবুও আমি দাঁতে দাঁত চেপে সয়ে যাচ্ছিলাম। সেই মুহূর্তে বিচ্ছেদের যন্ত্রণার কাছে এই বিষের জ্বালাটাকে তুচ্ছ মনে হচ্ছিল। মনে মনে আমি বেশ খুশি ছিলাম এই ভেবে যে, এবার আমি তৌসিফকে ভুলে যেতে পারবো। তাকে দেখতে আমার আর ইচ্ছে করবে না। তার ইগনোর সহ্য করে আমার আর কাঁদতে হবে না।
এই সব যা-তা ভেবেই আমি চুপচাপ রুমে শুয়ে আছি। বিষের তীব্র জ্বালা চরমে পৌছে গেল। আমার সহনীয় ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে শুরু করলো। আমি ঘন্টাখানেক বিছানায় ছটফট করতে করতে তারপর মেঝেতে পড়ে গেলাম। তারপর কি লেগে খাটের পাশে রাখা ল্যাম্পটা মেঝেতে পড়ে গেল ঠিক মনে নেই। ল্যাম্পটা মেঝেতে পড়ে ভেঙে গেছে। আমার ছটফট করা শরীরে ল্যাম্পের কাঁচ ঢুকে গেছে। বুকের ভেতরটা এতটাই জ্বলছিল যে কাঁচ ঢুকে যাবার ব্যাথা অনুভব করতে পারছিলাম না। এমন কী কাঁচগুলো শরীরের কোন অংশে ঢুকছে সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। সম্ভবত ল্যাম্প পড়ে যাবার শব্দে আম্মু আমার রুমে চলে এলো। আমাকে এই বিভৎস রূপে দেখে আম্মু চিৎকার করে উঠলেন। ততক্ষণে বাসার সবাই জেগে গেছে।
এ্যামমম্বুলেন্স এলো, আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলো। মুখের ভেতরে নল ঢুকিয়ে আমার পেট থেকে বিষ বের করা হলো। তারপর শরীর থেকে কাঁচের টুকরোগুলোও বের করা হলো। কিন্তু রক্তের সাথে মিশে যাওয়া বিষগুলো থেকেই গেল। আমাকে আই.সি.ইউ. তে দু’দিন রাখা হলো। তারপর হঠাৎ মাঝরাতে দেখলাম, আমি সুস্থ হয়ে গেছি। আমি উঠে বসলাম এবং হাঁটতেও পারছি। কিন্তু শরীরটা অস্বাভাবিক পাতলা অনুভব হচ্ছে। আমি বাহিরে বেরিয়ে দেখলাম বাবা মা সবাই চেয়ারে বসে ঘুমোচ্ছে। কিছুক্ষণ পর একজন ডাক্তার রুমে ঢুকলেন তারপর বেরিয়ে এসে বাবা মাকে জাগিয়ে বললেন-“সী ইজ নো মোর।”
বাবা মা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলেন। আমি ওদের জিজ্ঞেস করছি যে, তারা কেন কাঁদছে কিন্তু কেউ যেন আমাকে দেখতেই পাচ্ছেন না আর আমার কথাও শুনতে পাচ্ছেন না। কিছুক্ষণ পর ঐ রুম থেকে দু’জন ওয়ার্ডবয় কাপড়ে ঢাকা কার যেন ডেড বডি বের করে আনলো। মনে হলো কেউ মারা গেছে। আম্মু এগিয়ে গিয়ে ওই ডেড বডির মুখ থেকে কাপড় সরাতেই আমি চমকে উঠলাম। ওই মৃত মানুষটা হুবহু আমার মতোই দেখতে। কিন্তু আমি তো এখানে তাহলে ওটা কে? আমি বুঝতে পারলাম যে, আমি আর বেঁচে নেই। আমি মরে গেছি। এই কথাটা মেনে নিতে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
আমার শরীরটাকে বাসায় আনা হলো। সাথে আমিও বাসায় এলাম। অনেক আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী আমাকে দেখতে এসেছে। আত্মীয়রা সবাই আমার দেহটাকে ঘিরে ধরে কাঁদছে। এটা দেখে আমারও খুব কান্না পাচ্ছিল। আমি ওদের সামনে গিয়ে সান্ত্বনা দিতে থাকলাম কিন্তু কেউ আমাকে দেখতে পেলো না। অনেকেই আবার আমাকে নিয়ে অনেক খারাপ মন্তব্যও করছে, সেগুলো শুনে আমার খুব রাগ হলো কিন্তু কিছু করার নেই। বাবার অনেক অনুরোধে আমার শরীরটাকে পোস্টমর্ট্যাম করানো হলো না বলে একটু স্বস্তি অনুভব করলাম। আমার শরীরটাকে ধুইয়ে কাফন পরিয়ে রেডী করা হলো। আম্মু আর আপা খাটিয়া আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন। কয়েকজন মহিলা তাদের টেনে ধরে রেখেছে। আমি আম্মুকে কাঁদতে বারণ করছি কিন্তু আম্মু আমার কথা শুনতেই পাচ্ছেন না। হঠাৎ আম্মু অজ্ঞান হয়ে গেলেন। আমার শরীরটাকে একটা বদ্ধ কুটিরে রেখে আসা হলো। ওখানে দরজা জানালা কিচ্ছু নেই, আছে শুধু ভয়ানক অন্ধকার।
আমি ওই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এলাম, আমার নিথর দেহ ওখানেই পড়ে রইল। আমি বুঝে উঠতে পারছি না যে, আমি এখন কোথায় যাব। আমি বাসায় গেলাম। ওখানে গিয়ে দেখলাম, আমার আম্মু এখনও খুব কাঁদছেন, আব্বুর ব্লাডপ্রেসার বেড়ে গেছে বলে ডাক্তার আব্বুকে ঘুমের ইঞ্জেকশন করে স্যালাইন পুশ করে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে। আমার ভাইটা চুপচাপ তার ঘরের মেঝেতে বসে আছে, আর কিছুক্ষণ পর পর চোখ মুছে চলেছে। আমার আপু আমার বাঁধাই করা ছবিটা বুকে নিয়ে আমার বিছানায় শুয়ে আছে। সারাটা দিন কেউ কিচ্ছু যে খায়নি সেটা কিচেনে ঢুকেই বুঝেছি।
আমি ওদের সাথে কথা বলতে চাইলাম কিন্তু কেউ শুনতেই পেলো না। খুব চেষ্টা করলাম বুঝাতে যে, আমি ওদের সামনে কিন্তু কেউ দেখতেই পেলো না। এই আফসোসে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। হঠাৎ আমার তৌসিফের কথা মনে পড়লো। সে কি জানে যে আমি মরে গেছি? আমি তৌসিফের বাসায় গেলাম। তার ঘরের দরজা বন্ধ ছিল, আমি নক করতে গিয়েই বন্ধ দরজার ভেতরে ঢুকে পড়লাম। রুমে ঢুকে দেখলাম খাটের পাশে মেঝেতে তৌসিফ হাতপা ছড়িয়ে বসে আছে। ঘড়িতে দেখলাম রাত তিনটা বাজে। আমি তার সামনে গিয়ে বললাম –
–“এই তুমি এখনো ঘুমাওনি কেন?”
তৌসিফও আমার কথা শুনতে পেলো না। হঠাৎ তৌসিফের বিছানায় চোখ পড়তেই দেখলাম আমার একগাদা ছবি সারা বেডে ছড়িয়ে আছে। আমি বুঝলাম তৌসিফ জেনে গেছে যে, আমি মরে গেছি। কিন্তু তাকে কি করে বুঝাবো যে, আমি তার পাশেই আছি? বুঝাতে পারলাম না। অনেক আফসোস নিয়ে আল্লাহকে বললাম- “হে মাবুদ তুমি একটিবার তৌসিফকে বুঝিয়ে দাও যে আমি এখানেই আছি!” সারারাত সে জেগেই কাটালো। আমিও সারারাত তার পাশে বসে তাকে দেখেই কাটালাম। ভালবাসার মানুষটাকে এভাবে দেখতে তো চাইনি আমি! চেয়েছিলাম তার বধূ হয়ে তার পাশে থেকে সারাটা জীবন তাকে দেখবো। রিলেশনের চার বছর পর হঠাৎ তৌসিফের কি হলো জানি না, সে একদিন আমাকে বলল, “অর্নিতা আমাকে মুক্তি দাও! আমি আর পারছি না!”
এটা ছাড়াও সে আরও অনেক কিছুই বলেছিল তাতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, বিচ্ছেদটাই তার প্রত্যাশিত ছিল। আমার কি অপরাধ, কেন মুক্তি চায় এসব সে কিছুতেই বলেনি। আমার ভালবাসার মানুষটি মুখ ফুটে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি সেটা দেবো না, সেটা কি করে হয়? বেঁচে থেকে তো মুক্তি দিতে পারতাম না কারণ আমি তাকে বড্ড ভালোবাসি, আমি তাকে ছাড়া থাকতে পারবো না তাই মরে গিয়ে মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষমেশ সেটাও হলো না। আমি মরার পরে আরও বেশী করে তার কাছেই থাকতে শুরু করলাম। আমি সেই থেকে তৌসিফের সাথেই থাকি। এক রুমে একই বেডে। কিন্তু তৌসিফ সেটা জানে না। আমি তার পাশে শুয়ে থেকে সারারাত তাকে দেখি। মাঝে মাঝে তার বুকে মাথাও রাখি। এরমধ্যেও একটা সুখ অনুভব হয়।
হঠাৎ একদিন শুনলাম তৌসিফের বিয়ে, আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। তৌসিফ প্রথমে রাজী না থাকলেও অবশেষে রাজী হলো। আমি আর এটা সহ্য করতেই পারছিলাম না। রাতদিন এক করে শুধু কাঁদছিলাম। একদিন রাতে আমার ধাক্কাতে ফুলদানি পড়ে গেল। আমি তো অবাক! আমার মরার পর কখনও কারও সাথে ধাক্কা লাগেনি, আজ ধাক্কা লাগলো কেন সেটা বুঝতে পারলাম না। তৌসিফ ঘুম থেকে জেগে উঠে লাইট অন করলো। তারপর কিছু দেখতে না পেয়ে আবার ঘুমিয়ে গেল। সেই থেকে আমার এটা ওটার সাথে ধাক্কা লাগে। শুধু মানুষের সাথেই লাগে না।
তৌসিফ বিয়ে করলো, বাসর ঘরে বউ বসে আছে। ওই রুমে আমিও বসে আছি, পার্থক্য হলো তার বউ লাল শাড়ী পরে আছে আর আমি সাদা শাড়ী পরে আছি। জানি না এই সাদা শাড়ীটা কবে কখন পরেছি। অবশ্য মরার পর থেকে এই এক শাড়িতেই আমার চলছে। অনেক রাতে তৌসিফ রুমে ঢুকলো। আমার বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। তৌসিফ তার বউকে বলল,
“তোমার সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠতে আমার একটু সময় লাগবে।”
মেয়েটা লাজুক স্বরে বলল,
“কেন?”
মেয়েটার কথা শুনে আমার তো ওর গলা টিপে ধরতে ইচ্ছে করছিল। তৌসিফ বলল,
“আমি একটা মেয়েকে ভালবাসতাম সেই মেয়েটা কয়েকমাস আগে সুইসাইড করেছে। তুমি কি বুঝতে পারছো যে, আমার মন কতটা আহত হয়ে আছে? তার স্মৃতিগুলো ঝাঁপসা হওয়া পর্যন্ত আমাকে সময় দাও!” মেয়েটা আর কিছু বললো না। আমি বেশ স্বস্তি অনুভব করলাম। স্মৃতি ঝাঁপসা হবার আগেই আমাকে কিছু করতে হবে। মেয়েটাকে বিছানাতে শুতে বলে তৌসিফ সোফাতে শুয়ে পড়লো। আমিও তার পাশে গিয়ে তার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লাম। তৌসিফ সারারাত ঘুমালো না।
তার বউ ঘুমানোর পরে তৌসিফ ফোন বের করে আমার ছবিগুলো দেখতে শুরু করলো। তারপর হঠাৎ তৌসিফের দু’চোখ জলে ছলছল করে উঠল। তার চোখে জল দেখে আমি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলাম না। আমি হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলাম। হঠাৎ তৌসিফ লাফ দিয়ে বসে বলল, “কে কাঁদছে এখানে?” আমি তো হতভম্ব হয়ে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছি। তৌসিফ মনের ভুল ভেবে আবার শুয়ে পড়লো। আমি বুঝতে পারলাম যে, আমার কান্নার আওয়াজটা তৌসিফ শুনতে পেয়েছে। মনে মনে খুশিও হলাম। তৌসিফের বউকে তাড়ানোর দায়িত্বটা আমিই নিলাম। তার রান্না করা খাবারগুলো নষ্ট করেই দায়িত্ব উদ্বোধন করলাম। চা বানানোর পরে আরও দু’চামচ চিনি মেশালাম। তরকারী রান্নার পরে এক মুঠো লবণ আর মরিচের গুড়ো ছড়িয়ে দিলাম। তার রান্নার জন্য সবাই তার উপর ক্ষিপ্ত হলো।
মেয়েটা একা একা রুমে বসে কাঁদে, এটা দেখে আমারও খারাপ লাগে কিন্তু কি করবো আমি? তৌসিফ আর আমার মাঝে অন্য কাউকে বরদাস্ত করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আর মরা মানুষের আবার মনুষ্যত্ব থাকে নাকি? কিন্তু তৌসিফ ধীরে ধীরে ঐ মেয়েটার প্রতি দূর্বল হতে শুরু করলো। আর এখানে আমার কিচ্ছু করার নেই। অথচ তার বউ হবার কথা ছিল আমার। আসলেই আমি খুব বোকা, বেঁচে থাকতেই যে মানুষটা আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, মরে যাবার পর সে কাছে টানবে কি করে? আমার ভালোবাসার মানুষটি আমার সামনে অন্য কাউকে ভালোবাসছে এটা সইবার ক্ষমতা যেমন জীবিত মানুষের নেই তেমনি মৃত মানুষেরও নেই। তাই তাকে মুক্তি দিয়ে তার রুম থেকে বিদায় নিয়ে ওদের ছাদে গিয়ে থাকতে শুরু করলাম।
রাতে ঘুমাতে যাবার আগে তৌসিফ ছাদে আসে সিগারেট খেতে। ওই সময়টুকু তাকে দেখবার জন্য আমি রোদ ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ছাদে বসে থাকি। সকালে যখন সে অফিসে বের হয় তখন আমি দৌড়ে ওদের সদর দরজার বাহিরে গিয়ে দাঁড়াই। তার কপালে একটা চুমু এঁকে দিয়ে চলে আসি। জানি না কেন তৌসিফ সদর দরজার বাহিরে কয়েক মিনিট একা দাঁড়িয়ে থাকে! তারপর বের হয়ে যাবার পর একবার পিছনে তাকায়। আমি হাত নাড়িয়ে তাকে বিদায় জানাই। তারপর সারাটা দিন ছাদে দাড়িয়ে তৌসিফের ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করি। একদিন মাঝরাতে ছাদে দাড়িয়ে তৌসিফ সিগারেট টানছিল। আমি তার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। সে হঠাৎ বলল, “এমনটা কেন করলে অর্নিতা?” তার কথা শুনে আমি তো চমকে উঠলাম! আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম না যে, সে আমাকে দেখতে পেলো কি করে?
“চুপ কেন আছো? বলো আমি শুনবো!” আমি বলার ভাষা হারিয়ে চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। সে এবার আমার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল, ” প্রথমদিন থেকেই আমি তোমাকে দেখতে পাই। কিন্তু তোমাকে বুঝতে দিইনি। তুমি পাশে আছো জেনেও বিয়ে করেছি, এটা তোমার প্রতি আমার দ্বিতীয় অপরাধ। ক্ষমা চাইব না তবুও, আমাকে অভিশাপ দিয়ে ভষ্ম করে দাও অর্নিতা! এটাই আমার প্রাপ্য।” আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে কাঁদছি। মানুষটার ভেতরটা যে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি। তাকে সুখী দেখতে আমার এই বসতিটাও যে, ছেড়ে দিতে হবে সেটা বুঝে গেছি। তাই বললাম, “ঠিক আছে চলে যাব আমি, তুমি ভালো থেকো তৌসিফ।”
তৌসিফ নিচে বসে পড়লো, তারপর ডুকরে ডুকরে কাঁদলো। এই দৃশ্যটা দেখার সামর্থ্য আমার ছিল না তাই ওখান থেকে সরে এলাম। তারপর থেকে ওদের বাসার কোণে একটা বকুল গাছের আড়ালে আমি বসে থাকি। দূর থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে তৌসিফকে দেখি। সে আমাকে দেখতে পায় না। কিন্তু রোজ রাতে সে ছাদে দাঁড়িয়ে আমাকে খুঁজে সেটা আমি রোজ দেখি। মাঝে মাঝে মনে হয় চুপি চুপি তার রুমে গিয়ে তার ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখখানা একটিবার দেখে আসি। কিন্তু একটা বিবাহিত পুরুষের রুমে গিয়ে আমার কষ্ট ছাড়া যে আর কোনো প্রাপ্য নেই সেটা আমি জানি। তাই দূর থেকেই তাকে দেখে আমি খুশি থাকি।
একটা জীবন জুড়েও ভালোবেসে শেষ করা যায় না। হয়ত অনন্ত জীবনেও এ ভালোবাসা শেষ হবে না। আমার এই উড়ে চলা জীবনের কোনো সীমানা নেই। দিনরাত জুড়ে শুধু একটা মানুষকে আড়াল থেকে দেখবার পিপাসায় অনন্তকাল জুড়ে আমি তৃষ্ণার্ত জেগে থাকবো। হারিয়ে গেছি, এ পৃথিবীর বুকে আরেকটি স্তুতি লেখা হলো অপ্রাপ্তির। আমি এমনই অভাগী যে, এজনম পরজনম কোথাও তোকে পেলাম না। আমার অনুসিক্ত ভালোবাসা তোকে ছুঁলো, দেখ আমি কতটা দূরে, যোজন যোজন দূরে রে! একফোঁটা ভালোবাসার জন্য আকুলতা থেকে গেল শুধু তোর কাছেই……
গল্পের বিষয়:
গল্প