আচ্ছা আপনি কখনো নিজের থেকে বড় বয়সের মেয়ের প্রেমে পড়েছেন? আমি পড়েছি,সে কোন সাধারন মেয়ে নয়,আমার ভার্সিটির শিক্ষিকা সে। আমি রাহিব আদনান,আজ আমার প্রথম ক্লাস ভার্সিটিতে আমি নিয়মিত ক্লাস করার মতো স্টুডেন্ট না।তবে খারাপ স্টুডেন্ট নই।সারা বছর যা কিছুই করি এক্সামের আগের একমাস আমায় বাহিরে খুজে পাওয়া যাবেনা। কেউ মারা গেলেও মনে হয় আমাকে পড়ার টেবিল থেকে উঠাইতে পারবেনা! হা হা হা আর বাকি সময় টেনেও আমাকে পড়ার টেবিলে আনা পসিবল না।
ওই যে একটা প্রবাদ আছেনা…(জাতে মাতাল তালে ঠিক) ঠিক অনেকটা সেই রকমই। এজন্য অবশ্য বাসা থেকে কিছু বলেনা আগে বলতো যানে আমায় বলে লাভ নেই আর কিসের ভিত্তিতে বলবে! বাবা-মা চায় সন্তানের ভালো রেজাল্ট আমি তো তাদের কখনো আশাহত করিনি ক্লাস ফাইবে ট্যালেন্টপুলে বিত্তি, এইটে ট্যালেন্টপুলে বিত্তি,ক্লাস টেনে গোল্ডেন,আর ইন্টারেও কে কি বলবে!আর ক্লাসে আমার উপস্থিতি ১২ মাসের একমাস ও পুরো হবে কিনা সন্দেহ্ ।আমরা দুই-ভাই ভাইয়া ডাক্তার,আর ভাবী ও ওরা এক সাথেই পড়তো।লাভ ম্যারেজ ওদের ওদের রিলেশন ছিলো ইন্টার ফাস্ট ইয়ার থেকে কত্ত এডভান্স ওরা। আর আমি ধরতে গেলে দুই বছরের সিনিয়র আমি মানে ওরা ইন্টার ফাস্ট ইয়ার থেকে রিলেশন করে আর আমি ইন্টার পার হয়ে আসছি ভার্সিটিতে উঠলাম,আজ অবধি একটা র্গালফেন্ড ও নাই!
অবশ্য এতে আমারই দোষ আছে আমি মেয়েদের থেকে দুরে থাকি অনেক মেয়েই প্রপোজ করেছে আমার মন চায়নি আসলে সুন্দর হলে কি হবে..আমি এমন একজন কে ভালোবাসতে চাই যাকে প্রথম দেখাতেই ভালো লাগবে….যাকে দেখলেই আমার Heartbit বেড়ে যাবে.. যাকে একবার দেখার জন্য হাজার ও ঘন্টা বসে থাকলেও বিরক্ত আসবেনা ।যার সাথে একবার কথা বলার জন্য মন উন্মাদ হয়ে যাবে কিন্ত কথা বলার সাহস হবেনা। আমরি কথা শোনার পর সবাই হাসে ওরা বলে আমি নাকি কখনোই এমন কাউকে পাবো না। যে মেয়ে গুলো আমায় প্রপোজ করে ওরা হইতো আমার গুড লুকিং(সবাই বলে) ভালো স্টুডেন্ট,ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড এর জন্যই লাইক করে আমি তো এরকম কাউকে চাইনা এরা সুখের পায়রা,আমার জীবনে কোন কষ্ট আসলে এদের হারিকেন লাগিয়েও খুজে পাওয়া যাবেনা।
আমার ফ্যামিলিতে আমরা ৫ জন সদস্য। আমি,ভাইয়া,ভাবী,আম্মু,আর বাবা। আম্মু রাজশাহী Girls কলেজ এর প্রিন্সিপাল।আর বাবা,ভাইয়া,ভাবী ৩ জনই MBBS ডক্টর। এলাকার লোকজন আমাদের বাসাকে ডাক্তার বাড়ী বলে। পরিবারের সবার ছোট আমি,তাই একটু বেশীই আদরের হ্যা একজন হিটলার ও আছে আমাদের বাসায় তিনি হলেন আমার শ্রদ্ধেয় বাবা সারাদিনে একবার আমার সাথে ঝগড়া না করলে তার পেটের ভাত হজমই হয়না। যদি কোন কারনে আমি বাসায় না ও থাকি ফোন করে ঝগড়া করবে। বাবা চাইছিল আমিও মেডিকেল এ পড়ি কিন্তু আমার ভালো লাগেনা। আমার প্রিয় সাবজেক্ট ইংলিশ আমি রাজশাহী ভার্সিটিতে ইংলিশ অর্নাস এ এডমিট হইছি।
পরিবারের বাকীরা আমাকে সব সময় সার্পোট করে অোম্মু তো আমি যা বলবো তাই,ভাইয়াও ভালোবাসে তবে আমার কেন যেন মনে হয় ভাইয়ার চেয়ে ভাবী আমাকে বেশি ভালোবাসে।ভাবী অসম্ভব ভালো একটা মেয়ে ..ভাবীর মতো খুব কম মেয়েই আছে যারা শশুড়,শাশুড়ি কে নিজের মা-বাবার চেয়েও বেশি আর দেবর কে নিজের ভাই মনে করে।মাঝে-মাঝে মনে হয় আমার আম্মুর ডুপলিকেট ভাবী, আম্মু,বাবাও আমাদের দু-ভায়ের চেয়ে ভাবীকে বেশি ভালোবাসে। ভাসায় নতুন কেই আসলে আম্মুকে যদি জিগ্গেস করে আপনার ছেলে মেয়ে কয়টা আম্মু বলে দেয়..২ ছেলে এক মেয়ে।রাস্তা-ঘাটে আম্মু ভাবী যদি একসাথে যায় যারা চিনে না তারা জিগায় এটাকে….আম্মু বলে আমার মেয়ে। মজার ব্যাপার হলো অনেক সময় অনেক এ ভুল করে ভাবীর বিয়েও নিয়ে আসে হা হা হা !
ভাইয়া যদি কিছু বলে আমায় আমি বলে দেয় বেশি কিছু বললে ভাবীরে বিয়ে দিয়ে দিবো ! এটা নিয়ে বাসায় অনেক মজা হয়। আর বাবা যতই আমার সাথে ঝগড়া করুক না ক্যানো ভাবীর সামনে আমাকে কিছু বলার সাহস পায়না! কারন টা হলো আমাকে কেউ কিছু বললে ভাবীর সেটা সহ্য হয়না সে যেই হোক ভাবী তার সাথে ঝগড়া করবে।এইজন্য বাবা কিছু বলতে গেলেই ভাবীকে ডাকি আর বাবা চুপ হয়ে যায়। ভাবীরা ৩ বোন ভাবীই সবার ছোট ,ভাই নেই তো তাই সব ভালোবাসাটা আমার। আলহামদুলিল্লাহ্ আমি খুবই ভাগ্যবান এতো ভালো একটা ফ্যামিলি আল্লাহ্ আমাকে দিয়েছেন। ভার্সিটির প্রথম দিন ক্লাসে গিয়ে জানতে পারলাম আমাদের ইংলিশ ক্লাসটা একজন ম্যামের তিনি তার পারিবারিক সমস্যার কারনে কিছুদিন ক্লাস নিতে পারবেন্না তার পরিবর্তে অন্য টিচার কিছুদিন ক্লাস নিবেন।অবশ্য আমার এতে কোন প্রবলেম নাই আমি এমনেই ক্লাস করিনা কে ক্লাস নিবে না নিবে আমার ওসবে যায় আসেনা।
প্রথম দিনের পর আর ক্যাম্পাসে যাওয়া হয়নি,ফ্রেন্ডসরা ফোন দেয় আমিই যাই না। অনেকদিন পর আজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হলাম ফোন চাপতে চাপতে ভার্সিটির গেট দিয়ে ডুকছিলাম,আশে-পাশে দেখিনি।হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগলো আমার হাত থেকে ফোনটা একটা ইটের টুকরার উপর পড়ে গিয়ে ফোনের স্কিনটা সুইসাইড করলো ফোনটা তুলে যে ধাক্কা দিয়েছে তার সামনে গিয়ে দাড়ালাম কিন্তু আজব ব্যপার হলো যেই আমি কিনা কাউকে ফোন ধরতেই দেয়না মনে হয় যেন সবচেয়ে বেশি আমি আমার ফোন কেই ভালোবাসি সেই আমি কিনা যার জন্য ফোনটা ভেজ্ঞেছে তাকে কিছুই বলতে পারলাম নাহ্! তার সামনে দাড়িয়ে শুধু তাকেই দেখছি।শুধু দেখছি তার ঠোট দুটো নড়ছে কিন্তু কি বলছে! আমার কানে কিছুই ডুকছেনা।
রাতুল: (আমার ফ্রেন্ড) রাহিব কি হয়েছেরে? ম্যাম তোকে কি বললো? সে কখন চলে গেছে আমি বুঝতেই পারিনি রাতুলের কথায় ঘোর কাটলো..
আমি: ম্যাম মানে? কে ম্যাম!
রাতুল:তোর সামনে যে দাড়িয়ে কথা বলছিলো সে।
আমি: কি বলছিলো সে?
রাতুল: আমি কি করে জানবো! তোকেই তো বললো…
আমি: আমি কিছুই শুনিনি। কিন্ত তাকে তুই ম্যাম বলছিস ক্যান?
রাতুল:তুই তো আর ক্যাম্পাসে আসিসইনা জানবি কি করে উনিই আমাদের ইংলিশ এর প্রফেসর,পুরো কলেজের ক্রাশ তুই আবার ক্রাশ খাশ খাশ নাই তো? আমি বুজতে ছিলামনা রাতুলের কথার কি উত্তর দিবো মনে মনে বল্লাম ভাই আমি ক্রাশ না প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেছি ঠিক যেমন টা আমি কল্পনা করতাম কিন্তু সে এতোটা সুন্দর হবে ভাবিনি।
আমি: না ভাই ওসব কিছুনা আচ্ছা আমি বাড়ী যাচ্ছি…তুই থাক।
রাতুল: আরে মাত্রই তো আসলি,আর তুইতো ভিতরেও আসলিনা আমি ওর কোন কথার উত্তর না দিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। ভাবী হসপিটালে যাচ্ছিলো আমাকে দেখে।
ভাবী: রাহিব! ক্যাম্পাসে যাওনি? এতো তাড়াতাড়ি আসলা? কি হয়েছে! মুখটা শুকনো শুকনো লাগছে যে? ভাবী আমার ফেস দেখলেই সব কিভাবে যেন বুঝে যায় মাঝে মাঝে মনে হয় ভাবী জোতিষ বিদ্যাও জানে আর না জানলেও আমার পেট থেকে কিভাবে কথা বের করতে হয় সেটা সে খুব ভালো পারে। ম্যামের ব্যাপার টা কিছু যেন না বুঝতে পারে তাই তাড়াতাড়ি ফোনটা বের করে দেখালাম।
ভাবী: রাহিব এই সাধারন ব্যাপার নিয়ে এতো মন খারাপের কি আছে? চলো এখনই কিনে দিচ্ছি তাও মন খারাপ করে থাকবানা,একদম ভালো দেখায়না। আর শোন ফোনের ব্যাপারটা যেন বাবা না জানে আবার তোমাকে কথা শোনানো শুরু করবে। মনযোগ দিয়ে ভাবীর কথা শুনছি কত ভালোবাসে আমাকে। আমি কোন কথায় বলছিনা দেখে
ভাবী: রাহিব শুধু কি ফোন নাকি অন্য কোন ব্যাপার আছে? এইরে সারছে তাড়াতাড়ি বল্লাম না ভাবী কই কিছুনা। তুমি হসপিটালে যাও, বিকেলে ফোন কেনা যাবে।
গল্পের বিষয়:
গল্প