বাড়ীতে আমার বিয়ের কথাবার্তা চলছিলো।অনেক প্রস্তাব আসে।একটা পছন্দ হলে আরেকটা পছন্দ হয় না।এভাবেই যাচ্ছে দিন।
সেটা ছিলো গরমের দিন।কয়েকদিন ধরে খুব গরম পড়ছিলো।মনের ভিতর ঠান্ডার প্রত্যাশা। হঠাৎ একদিন দুপুরে আকাশ কালো হয়ে খুব বৃষ্টি আসলো।
আমি ছুটে গেলাম ছাদে বৃষ্টি তে ভিজতে।এত গরমের মাঝে এই বৃষ্টি আল্লাহ্ র রহমত ছিলো।
আমি বৃষ্টিতে পাগলের মত ভিজছি।চারপাশে কে দেখছে না দেখছে এত খেয়াল করিনি।আমি মনের আনন্দে ভিজে বাসায় নেমে আসলাম। মনটা একদম শান্ত হয়ে গেলো এমন বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে।
এই ঘটনার কয়েকদিন পর আমাদের বাসায় এক মহিলা ঘটক আসলো একটা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।আর আমার আম্মাকে বললো,
” আপনার মেয়ের জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব আনছি।ছেলে আপনার মেয়েকে দেখেছে।পছন্দও করেছে।”
আমার আম্মা তো অবাক।ঘটক কে বললো,
” আমার মেয়েকে কই দেখলো ছেলে?”
ঘটক মহিলা বললো,
” একদিন আপনার মেয়ে বৃষ্টি তে ভিজছে, সেটা আপনাদের বাসার সামনে যে দোকান আছে না ওখান থেকে ছেলে দেখলো।তাই তো আমাকে পাঠালো।আপনারা ছেলের বায়োডাটা দেখেন।”
তারপর আমি ছেলের বায়োডাটা দেখলাম।ওনি একটা স্কুলের টিচার।সেই স্কুলের টিচার আমি যে স্কুলে পড়াশুনা করেছিলাম।ওনি ২/৩ বছর হলো জয়েন করেছে।ওনি জয়েন করার কয়েক বছর আগেই আমি পাশ করে বের হয়ে গেছিলাম।ভাগ্যিস আমি পড়াকালীন টিচার ছিলো না।
তবে যাই হোক,
কোন একটা কারণে আমার ওনাকে পছন্দ হয়নি।তারপরও পরিবারের সবার জোরাজোরি তে ওনার সাথে দেখা করি।কথা বলে বাসায় এসে আমার মতামত জানালাম।মানে আমার পছন্দ না।সবাই মানলো।
কিন্তু টিচার নাছোড়বান্দা।আবার ঘটককে পাঠালো আমরা মানা করার পরেও।আম্মা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলে দিলো।ঘটক চলে গেলো।
বেশ কিছুদিন পর,
একটা ঘটনা শুনে আমরা সবাই খুব অবাক।যে টিচার আমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হলো, সে নাকি তাঁর স্কুলের এক ছাত্রী নিয়ে পালালো।আসলে স্কুলটা আমাদের বাসার কাছেই ছিলো।
তাই সব খবর আমরা শুনতাম।আর এসব খবর তো বাতাসের আগে ছড়ায়।
হায় আল্লাহ্, জোর বাঁচা বেঁচে গেলাম।ভাগ্যিস সেইদিন বিয়েতে রাজী হলাম না।রাজী হলে না জানি কি হতো।তবে বৃষ্টির দিনটা স্মরণীয় হয়ে রইলো।
টিচার ছাত্রী প্রেম, অতঃপর পালিয়ে বিয়ে।
গল্পের বিষয়:
গল্প