আব্বু বলেছিলো কোনো বড়ভাই যদি আমার ফোন নাম্বার চায় তাহলে যাতে আমি উনার ফোন নম্বর দি। কি আজিব, চাইবে আমার ফোন নাম্বার, দিবো ওনার টা। যাইহোক এলাকার এক বড় ভাই ইমন উনাকে আমার খুব ভালো লাগে।আর উনিও দেখলে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়।আর তার এই হাসিতে আমি ফিদা।উনাকে প্রথম দিন সাদা কালারের একটা শার্টে দেখে আমি হা হয়ে ছিলাম।আমার সিরিয়াস লেভেলের ক্রাশ। কিছুদিন আগে ইমন ভাই হুট করে নাম্বার চেয়ে বসলো।তো আমিও আব্বুর কথা মত বুকে পাথর রেখে দিলাম আব্বুর নাম্বার। কিন্তু ভাইকে বলি নাই এটা যে আব্বু নাম্বার। তো কালকে রাতে শুনতেছি কে যেনো আব্বুর ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে অনেক গুলো প্রেমের কবিতা পাঠাইসে, তো আব্বু মনে মনে ধরেই নিসে আমাকেই কেউ দিসে।কারন এই বয়সে কেউ তাকে এই ম্যাসেজ দিবে না।আর আমার জন্য বলাই আছে কেউ নাম্বার চাইলে আমি যেন আব্বুর নাম্বারদি।
তো সকালে , আমি গভীর ঘুমে, ইতিমধ্যে আব্বু ডাক দিচ্ছে শুনতেসি। তার মধ্যে কবিতা পাঠ শুনতেছি একটু আকটু। তার মধ্যে আমি আবার প্রচুর ঘুম পাগল। তো আধা ঘুম, আধা জাগা অবস্থায় চিন্তা করতেসি কে কবিতা পাঠ করতে পারে, আম্মুর যে গলা ঐ গলায় গান গাওয়া ছাড়ছে অনেক বছর।আর এখন তার গলায় “নীহাইন্না পিড়াপাড়া খাইস না ” এই লাইন ছাড়া আর কোনো কবিতার লাইন মানায় না। তো বাকি রইল আব্বু তার মুখে এমন কবিতা শুনে আমি তো অবাক। তো আব্বুর কাছে গিয়ে চোখ মেলে জিজ্ঞেস করলাম, কি হইসে সকাল সকাল কবিতা বলছেন কেনো। একথা বলে আমিও মোবাইলটা নিয়ে কবিতা গুলো পড়া শুরু করলাম
১/ কোনো এক নিরিবিলি রাতে সোডিয়ামের আলোয় তোমার হাতের আঙ্গুলে আঙ্গুল রেখে হাটতে চাই, তুমি কি আমার পথ চলার সাথী হবে ?
২/আমি মেঘপুঞ্জ থেকে কিছু মেঘ এনে দিবো তুমি না হয় আমাকে সে গুলো দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়াবে।আর পর সন্ধ্যা বেলা দুজনে মিলে বাকি জীবনের গল্প করবো
৩/ কোনো এক ঝুম বৃষ্টিতে ভিজবো তোমার সাথে।(এরপরের অংশ মনে মনেই পড়ে নিলাম)বৃষ্টির ফোটায় তোমার চোখের কাজল ধুয়ে যাবে আমি অপলক তাকিয়ে থাকবো তুমি লজ্জা পেয়ে আমার বুকে মুখ লুকাবে।আমি ও তোমাকে বাহুডোরে আগলে ধরবো। আব্বুর সামনে এরপরের গুলো আর পড়ার সাহস হয়নি।তবে মনে মনে ধরেই নিয়েছি এগুলো ইমন ভাইয়ের ম্যাসেজ কারন নাম্বার তাকেই দিয়েছি।সে কথা ভেবেই মুচকি হেসে আম্মুর দিকে তাকাতেই দেখি আম্মু রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে। এরপর আব্বু ও বলা শুরু করলো নীহা তোমার ম্যাসেজ আমারে দিলে হইবো, আমি ত পটবো না।
আমি ও বললাম আপনিই ত বলেছিলেন, কেউ নাম্বার চাইলে আপনার নাম্বার দিতে তাই দিসি, আর এত সুন্দর কবিতা কোনো ছেলে পাঠাবে বলে মনে হচ্ছে না। দেখেন কে না কে দিসে আপনি আমার নাম দিচ্ছেন। ততক্ষণে আম্মার রক্তচক্ষু অন্যদিকে ট্রান্সফার হইছে। আর আব্বু আমার কথায় ভেবাচেকা খেয়ে বলে নীহা তুমি কি বলতে চাও তো আমি ও সুন্দর করে বল্লাম আম্মুর রিয়েকশন এ যা বলতে চায় এরপর আর কিছু জানি না।তবে এটা সিউর হইছে বিয়ের পর যত কিছুই হোক স্ত্রীকে রাগালে স্বামীর খবর আছে।
গল্পের বিষয়:
গল্প