আলোর পথে

আলোর পথে
আমি:-আইরিন তুমি আমাকে ভালোবাসো?
আইরিন:-হুম পিচ্চি পাগল তোমাকে খুব ভালোবাসি।
আমি:-আমি প্রমান চাই।
আইরিন:-ভালোবাসার কোনো প্রমান হয়না পাগল।তবুও বলো তুমি কি প্রমান চাও?তুমি যা চাইবে আমি তাই দিবো।
আমি:-আগে প্রমিস করো।
আইরিন:-ওকে বুদ্ধু প্রমিস।
আমি:-আমার সাথে রুমডেট করতে হবে।
আইরিন:-রাজ তুমি কি বলছো এসব? তুমি ঠিক আছো তো?(অবাক হয়ে গেলো)
আমি:-আমি ঠিক আছি।
আইরিন:-রাজ আমি পারবোনা।বিয়ের আগে ওসব ঠিক না।
আমি:-আমরা তো বিয়ে করবো।
আইরিন:-তাহলে বিয়ের পর হবে।এখন আমি পারবোনা।
আমি:-তুমি আমাকে ভালোই বাসোনা। যাও কথা বলা লাগবেনা। বাই।রাজি হলে কথা হবে না হলে নাই।
আইরিন:-ওকে।আমি পারবোনা বাই।
ফোন কেটে দিলাম ।এদিকে আইরিন ভাবছে কি হলো রাজ এর।ও তো এমন ছিলোনা।ভাবতে ভাবতে কল দিলো রাজকে।কিন্তু রাজের ফোন বন্ধ।আইরিন এবার ভয় পাচ্ছে।রাজ যে রাগি আবার নিজের কিছু করে ফেললো নাতো ও। ভাবতে ভাবতে আরো কয়েকবার কল দিলো কিন্তু রাজের ফোন বন্ধ। সারাদিন আমার সাথে কথা হয়নি।খুব কষ্ট হচ্ছে আইরিনের।রাতে সে আবার আমাকে কল দিলো।এবার কল ঢুকলো।
আমি:-কি জন্যে ফোন দিয়েছেন আপনি?
আইরিন:-রাজ আমাকে কষ্ট দিওনা। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছিনা প্লিজ এমন করোনা।(কান্না করতে
করতে)
আমি:-হুম কথা শেষ।ওকে বাই।
আইরিন:-ওকে আমি তোমার শর্তে রাজি।(কান্না ভেজা কন্ঠে)
আমি:-আমি জানতাম তুমি রাজি হবে। লাভ ইউ বাবু।উম্মাহ।কাল ১০ টায় গুলশান পার্কের পেছন সাইডে চলে আসবা।
আইরিন:-আচ্ছা।
আমি:-উম্মাহ বাবু বাই।
ফোন রেখে দিলাম।তারপর আড্ডা দিতে গেলাম ইমন আর মেহেদীর সাথে নদীর পাড়ে।ইমন আর মেহেদী জানেনা।আমি আমার এক বন্ধু কৌশিক এর কাছে কল দিলাম।
কৌশিক:-কি ভাই কেমন আছেন?
আমি:-ভালো আছি একদম বিন্দাস।
কৌশিক:-তা এতো খুশি খুশি লাগছে কেন ভাইকে?
আমি:- তোমরা বলতেনা আমি পারবোনা কিছু করতে।কালই তোমার ভাবির সাথে ডেট করবো।
কৌশিক:-বাহ্। ভাই এর দেখছি উন্নতি হয়েছে।
আমি:-হুম।একটা রুম ঠিক করে দাও।
কৌশিক:-আরে পার্কে তো আর ঘর নাই আপনি ওনাকে নিয়ে পার্কে বসে থাকবেন দেখবেন এমনি কতোজন গিয়ে বলবে “এখানে নিরাপদ নয় রুম লাগলে আমার সাথে চলুন”
আমি:-ধন্যবাদ। এখন রাখি।
কৌশিক:-জ্বি ভাই ডুবে ডুবে মধু খান। ফোন রাখার পর আমার বেষ্টফ্রেন্ড ইমন বললো……
ইমন:-রাজ তুই কি করছিস ভেবে দেখেছিস?
আমি:-কেন কি করলাম।
ইমন:-তুই কি জানিস না বিয়ের আগে ওসব ঠিক না।
আমি:-বিয়েতো করবোই।
ইমন:-তাহলে বিয়ে করেই করিস।তুই আমার বন্ধু হয়ে একটা মেয়ের সাথে এরকম ছিহ্।
আমি:-ইমন এতো কথা বলিস কেন?
ইমন:-তুই কি জানিস কিছু হলে মেয়েটির সর্বনাশ হয়ে যাবে আর তখন তার মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ থাকবেনা তুই অস্বীকার করলে।
আমি:-আরে ছাতা তোর ভাষন বাদ দে তো চল।
মেহেদী:-না ও বাদ দেবেনা।তুমি শরীরের নেশায় পাগল হয়ে গেছো তুমি আর মানুষ নাই পশু হয়ে গেছো।
আমি:-মেহেদী একদম চুপ।(ধমক দিলাম)
ইমন:-কেন চুপ করবে কেন।
আমি:-এবার থাপ্পড় দিবো একটা।
ইমন:-আসলে ভাবতাম তুই আমাদের কলিজা আমাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু।আজ থেকে তোর সাথে কোনো সম্পর্ক নাই আমাদের। চলো মেহেদী আজ থেকে আড্ডা আমরা আলাদা হয়ে দুজনে দিবো। ইমন আর মেহেদী চলে গেলো।আমার ওদিকে খেয়াল নাই।বাসায় এসে খেয়ে ঘুমালাম।পরেরদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলাম।তারপর আইরিনকে কল দিলাম……
আমি:-হ্যালো বাবু আমি বের হচ্ছি।
আইরিন:-ওকে আমি আসছি কিছুক্ষন পর।
আমি:-ওকে বাবু।
ফোন রেখে বাইকটা নিয়ে বেড় হলাম। তারপর গুলশান পার্কের পেছনে চলে গেলাম।আশেপাশে অনেক কাপল দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে এমন ভাবে রয়েছে মনে হচ্ছে কাজী অফিস থেকে এইমাত্র বিয়ে করে এসে এখন বাসর করছে।কিন্তু একজনেরও বিয়ে হয়নি আমি শিওর। বিয়ে হলে পার্কে আসতোনা কেও।আমি একটু ফাকায় গিয়ে আইরিনের জন্যে অপেক্ষা করতে লাগলাম।নিজের কেমন যেন অস্থির লাগছে।মনে মনে ভাবছি এতো দেরি করছে কেন।মনে মনে ভাবছি কি কি করবো।হঠাৎ একটা পিচ্চির কন্ঠে আমার ভাবনা ভাঙলো।…
পিচ্চি:-ফুল নেবেন স্যার?
আমি:-না যা এখান থেকে।
পিচ্চি:-নেন না স্যার ম্যাডাম অনেক খুশি হবে।
আমি:-বললাম না লাগবেনা সর এখান থেকে।(রেগে বললাম)
পিচ্চি:-তাহলে এটা নিন স্যার আপনার কাজে লাগবে। (প্রটেকশন এর প্যাকেট)
আমি:-ওই পিচ্চি তুই এসব রাখিস কেন?
পিচ্চি:-এখানেই আমি থাকি আর এটাও জানি এখানে কেও ভালো কিছুর জন্যে আসেনা নিন স্যার আর ২০ টাকা দেন।
আমি:-তুই এতোটুকু বয়সে এসব করিস তোর বাবা মা কি করে হু।
পিচ্চি:-আমার কেও নেই আমি রাস্তার ছেলে।
আমি:-মানে।
পিচ্চি:-বাদ দিন এটা নিন আর টাকা দিন নইলে আবার আরেকটা রাস্তার ছেলে বৃদ্ধি পাবে আমার মতো।
আমি:-তোর কথা বুঝলাম না কেও না থাকলে তুই কিভাবে জন্মালি বল।
পিচ্চি:-এইতো আপনার মতো কোনো এক পুরুষ আর কোনো মহিলার অবৈধ সম্পর্কের ফসল আমি।আপনাদের মতো মানুষ এরকম জায়গায় এসে রুম ডেট করে নিজের চাহিদা পূরণ করে চলে যান আর পরে মেয়েটিকে ছেড়ে দেন।সেই মেয়ে জন্মায় আমার মতো জারজ সন্তান আর ফেলে দেয় ডাস্টবিনে।হয় রাস্তার শেয়াল কুকুর খাবলে খাই নইতো কোনো দয়ালু টোকাই বা ফকির কান্না শুনে ডাস্টবিন থেকে তুলে লালন পালন করে। মানুষটি মরার পর আবার যা তাই তৈরি হয় টোকাই অথবা এরকম রাস্তার ছেলে।আচ্ছা কি লাভ পাই ওই বাচ্চার বাবা মা।মা নাকি সবচেয়ে বেশি আপন। আমাদের মতো সন্তানের মায়েরা কি মা নই? তারা কি ডাইনি?তাদের কি মন নাই।সন্তানের জন্যে কি তাদের একটুও কষ্ট হয়না?আসলে তারা মা নয় তারা তো পতিতা।
শুনেন যারা পতিতা তারা পেটের দায়ে করে এসব বাজে কাজ।আসলে পতিতা ওরা না পতিতা তারা যারা বাবা মায়ের ভাত খেয়ে পরের ছেলেকে ভালোবেসে রুম ডেট করে জন্মায় আমার মতো একটা বেজন্মা।আরে মেয়েরা তোদের বোঝা উচিৎ যে যদি ওই ভালোবাসাটা তোর বাবা মা কে বাসতি তাহলে উপরওয়ালা তোকে অনেক ভালোবাসতো।মৃত্যুর পর আল্লাহ তোকে জান্নাত নসিব করতো।অথচো এরা বফ কে ভালোবাসে আর বিয়ের আগে বাসর করে এরাই আসল পতিতা।এরা আমার মতো বেজন্মাদের জন্মদাত্রী।আর আপনার মতো কয়েকজন জানোয়ার ওরকম পতিতাদের চিরে চিরে খাই। ধিক্কার জানাই এরকম মানুষদের।এই নিন প্রটেকশন এর প্যাকেট আর যান আমার মতো একজন বেজন্মাকে দমন করুন। পিচ্চির কথা শুনে আমি নিজের অজান্তেই কান্না করে দিলাম।আসলেই ওর কথাগুলে সত্যি।ওর কথা শুনতে শুনতেই আইরিন আসলো।
আইরিন:-চলো রাজ।(মন খারাপ করে)
আমি:-আইরিন আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি অনেক বড় ভুল করতে যাচ্ছিলাম। জেনে শুনে পাপ করতে গেছিলাম। আসলে আমি বুঝতে পারিনি যে একটি মেয়ের কাছে তার ইজ্জত সবচেয়ে দামী। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও পেত্নী। (জড়িয়ে কান্না করে দিলাম)
আইরিন:-এইতো আমার দুষ্টু ভূত আবার কান্না করছে।এই পিচ্চি পাগল আমি জানতাম তুমি ভুলটা বুঝবে।আর তুমি কখনও ওরকম ভাবতেও পারবেনা।
আমি:-আমি আর কখনও তোমাকে কষ্ট দিবোনা ক্ষমা করে দাও আমাকে।
আইরিন:-তা আমার পিচ্চি পাগলটার মাথায় এতো বুদ্ধি কিভাবে আসলো।
আমি:-এই পিচ্চি ছেলেটার জন্যে।(পিচ্চিটাকে দেখিয়ে)
আইরিন:-তোর নাম কি রে পিচ্চি আজ তোর জন্যে আমার সব ঠিক হলো।
পিচ্চি:-জ্বি আমার নাম ইকরামুল হক শিমুল।
আইরিন:-ওয়াও খুব সুন্দর নাম তো।
আমি:-খুব সুন্দর নাম।চল আজ থেকে তুই আমার বাসায় থাকবি তোকে আমি পড়ালেখা করাবো।
পিচ্চি:-কি কন স্যার?
আমি:-চুপ স্যার না ভাইয়া বলবি।
পিচ্চি:-আচ্ছা স্যার।
আমি:-আবার যে বল ভাইয়া।
পিচ্চি:-আচ্ছা ভাইয়া।
আমি:-আইরিন চলো ওকে নিয়ে আব্বুর কাছে।
আইরিন:-চলো।
বাসার দিকে যাচ্ছি আইরিন আর ওই পিচ্চিটাকে নিয়ে।ভাবছি আজ জীবনের একটা বড় পাপ থেকে মুক্তি পেলাম।বুঝতে পারলাম যে লজ্জা নারীর ভুষন।আর একটি মেয়ের ইজ্জত তার বড় সম্পদ।তাও একটা পিচ্চি রাস্তার ছেলের কাছ থেকে শিখলাম।না এই ছেলেটার পরিচয়টা আমি পাল্টে দিবো তৈরি করবো এক নতুন রূপে।বাসায় চলে আসলাম।ভেতরে ঢুকে আব্বুর পা চেপে ধরলাম….
আমি:-আব্বু আমাকে ক্ষমা করে দাও।(কান্না করতে করতে)
আব্বু:-কি রে পাগল কি হয়ছে এমন করছিস কেন?(আমাকে তুলে বুকে জড়িয়ে).
আমি:-আব্বু জীবনে অনেক খারাপ কাজ করেছি অনেক মিথ্যা বলেছি তোমাদের। তোমার টাকা মিথ্যা বলে নিয়ে কতো নেশা করেছি বন্ধুদের নিয়ে পার্টি করেছি। আসলে তুমি ঠিকই বলতে কেও না দেখলেও চুরি করাটা উপরওয়ালা ঠিকই দেখছেন।তিনি সৃষ্টি কর্তা।তিনি সব জানেন দেখেন ও অন্যায়ের শাস্তি দেবেন।আব্বু আমি অনেক বড় পাপি।আব্বু বাবা মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।আমাকে ক্ষমা করে তোমাদের পায়ের কাছে একটু ঠায় দাও।আমি ওই পায়ের ওপর আমার মাথা ঠেকিয়ে সারাজীবন থাকতে পারবো। শুনেছি বাবা মায়ের দোআ কবুল হয় সন্তানের জন্যে। তোমরা আমাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দাও।আমার বিশ্বাস আমার গুনাহেরর বোঝাটা হালকা হবে আব্বু।(কান্না করতে করতে)
আব্বু:-রাজ বাবা আজ তোর মাফ আমি আর তোর মা নই ওই উপরওয়ালা করবে। সুখি হতে চাইলে আর পরকালে জান্নাত চাইলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ো বাবা। তাহলে তুমি পরকালে বেহেশত এর চাবিটা পাইবা।
আমি:-আব্বু আজ থেকে আমি তাই করবো আর কোনো বাজে কাজ করবোনা।আর তোমাদের ও সাহায্য করবো আব্বু।
আম্মু:-আজ মনে হচ্ছে তুই আমার ছেলে।আজ আমার নিজেরি গর্ব হচ্ছে তোর মতো একটা ছেলেকে পেটে ধরে।
আমি:-আমাকে ক্ষমা করে দাও আম্মু।(কান্না করতে করতে)
আব্বু:-তা এরা কারা,?(আইরিন আর শিমুলকে দেখিয়ে)
আমি:-আব্বু এই মেয়েটিকে আমি অনেক ভালোবাসি।আর এই ছেলেটির জন্যে আমি আজ ভুল বুঝেছি।আব্বু আমার তো কেও নাই।রাণি আপুর বিয়ে হওয়ার পর বাসাটা ফাকা আর আমিও একা।আমার তো কোনো ভাই নাই এই ছেলেটাকে আমি মানুষ করবো।আমার ভাই বানিয়ে রাখবো। প্লিজ আব্বু না করোনা প্লিজ।
আব্বু:-তুমি কি করো বাবা তোমার বাবা মায়ের নাম কি?
পিচ্চি:-আমার কেউ নাই আমি অনাথ।
আব্বু:-কে বলেছে তোমার কেও নাই আমি তোমার বাবা আর ইনি তোমার মা। (আম্মুকে দেখিয়ে)
আমি:-আব্বু ওকে আমি পড়ালেখা করিয়ে অনেক বড় করতে চাই।
আব্বু:-হুম ঠিক আছে। তার আগে এই মিষ্টি পরীটাকে আমার ঘরে বউ করে তুলে নিতে হবে।দেখি মামনি তোমার বাবা মায়ের নাম্বার দাও।(আইরিনকে বললো)
আইরিন:-জ্বি আমার বাবা নাই।নিন আম্মুর নাম্বার ০১৭২৮৩৬…. ।
আব্বু:-ওকে আমি কল দিচ্ছি। আর আমি তোমার বাবা নই নাকি মা।
আইরিন:-জ্বি আপনিও আমার বাবা। কল দিলো আব্বু আইরিনের আম্মুকে তারপর বললো…..
আব্বু:-আসসালামু আলাইকুম আপা।
আইরিনের আম্মু:-ওয়ালাইকুমুস সালাম।
আব্বু:-আপা আমি খাদিজা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্টিজ এর চেয়ারম্যান আসাদ চৌধুরি বলছিলাম।
আইরিনের আম্মু:-ওহ জ্বি ভাই সাহেব বলুন।
আব্বু:-আসলে আপনার মেয়ে আইরিন আর আমার ছেলে রাজ দুজন দুজনকে ভালোবাসে।হয়তো আপনার আমার ছেলেকে কেমন লাগবে জানিনা তবে আমার মনে হয় আমার ছেলের আপনার মেয়েকে ভালোবাসার আর বিবাহ করার মতো যোগ্যতা আছে।আপনি যদি অনুমতি দেন আর একটু আসেন তাহলে আজই আমি ওদের চার হাত এক করে দিবো।
আইরিনের আম্মু:-আরে ভাই সাহেব আমি রাজি হবোনা কেন।আর আমার কাছে টাকা পয়সা নয় আমার মেয়ের চাওয়াটাই বড়ো।
আব্বু:-তাহলে প্লিজ আপনি এখনি চলে আসুন আজই এদের এক করে দিবো।
আইরিনের আম্মু:-জ্বি ভাই সাহেব আসতেছি আমি।
কল কেটে আব্বু বিয়ের ব্যবস্থা করতে লাগলো।ইমন আর মেহেদীকে কল দিয়ে ক্ষমা চাইলাম।আর ওদের আসতে বললাম। ওরা এসে কাজ করলো সব কিছুর।আইরিন এর আম্মু আসার পর আমাদের বিবাহ হয়ে গেলো।শিমুলকে আমার ভাই বানিয়ে রেখেছি।ওকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি।অনেক মেধাবী ছাত্র শিমুল।আমার বাসায় শিমুল আমি আইরিন আর আব্বু আম্মু সবাই থাকি আর আনন্দ করি।রানি আপুও আসে মাঝে মাঝে।খুব সুখি আমরা।
১২ বছর পর…..
নূর:-আব্বু আব্বু ওঠো না।
আমি:-কি হয়ছে মামনি আরেকটু ঘুমাইনা।(ঘুম জড়ানো কন্ঠে)
নূর:-আব্বু আজ শিমুল কাকু আর দাদুভাই আসবে তারাতারি চলো।
আমি:-কিহ্ আগে বলবানা চলো।(উঠলাম তারাতারি)
রেডি হয়ে নিচে গেলাম।আইরিনকে সাহায্য করলাম রান্নার কাজে।টেবিলে খাবার সাজিয়ে বসে আছি। ২০ মিনিট পর দরজায় কলিংবেল এর শব্দে আমি এগিয়ে গিয়ে দরজা খুললাম।খোলার সাথে সাথে…..
শিমুল:-ভাইয়া ভাইয়া ভাইয়া আমি এইসএসসিতে কলেজে ফাস্ট হয়ছি।
আমি:-হয়ছে ভালো আগে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে।আব্বু আম্মু কেমন আছো?
আব্বু:-এই শিমুল থাকতে আর কিভাবে খারাপ থাকি বল বাবা?
আম্মু:-আমি আমার দিদুনকে ছাড়া ভালো থাকতে পারিনা।(নূরকে কোলে নিয়ে)
নূর:-উম্মাহ দিদুন।
আমি:-আব্বু আর বাইরে যাবানা আমরা একসাথে থাকবো আর শিমুল ও কুষ্টিয়াতে ভর্তি হবে আর অফিসে যাবে।চলো খেয়ে নিই।
নূর:-নাহ আগে আমার ঘুস চাই।
শিমুল:-এই নাও মামনি তোমার চকলেট আর আইসক্রিম।
তারপর খেতে বসলাম।নূরকে খাইয়ে দিলাম।আইরিন সবাইকে খাবার দিচ্ছে। আমি ওর হাত ধরে আমার পাশে বসিয়ে দিলাম আর খেতে বললাম।খুব ভালোই চলছে আমাদের সোনার সংসার।
এই পৃথিবীতে অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা জড়িয়ে পরছে রুমডেট নামক এই জঘন্য কাজে।তারা এটা বুঝেনা যে ভালোবাসা মন থেকে হয় শরীর থেকে নয়।তবুও তারা এই জঘন্য কাজটা করে আর যখন বুঝে যে সেই মেয়েটি ভুল করেছে তাহলে হয় আত্মহত্যা করছে নইতোবা এবরশন করছে।আবার কিছু মানুষ জন্ম দিচ্ছে শিমুলের মতো অসংখ শিমুলকে। তৈরি করছে বেজন্মা সন্তান যার বাবা কে মা কে তা সেই সন্তান নিজেই জানেনা। জন্মের পর পরে থাকে মায়ের কোলের বদলে ডাস্টবিনে।সমাজ আজ খুব ভয়াবহতার দিকে চলে গেছে।নষ্ট হয়ে গেছে সমাজ।বাড়ছে বেকার আর টোকাই।
তোমরা ছেলে মেয়েরা ভালোবাসায় জড়িয়ে যে রুমডেট করো তা কি কেও দেখেনা?কেও না দেখলেও একজন সব দেখতে পান তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা তিনি আমাদের পালন কর্তা।তুমি যতো বড় জঘণ্য কাজই গোপনে করোনা কেন তা কেও না দেখলেও উপরওয়ালা ঠিকই দেখছেন। কেও যদি গোপন জায়গায় বা মাটির লক্ষ কোটি হাত নিচ থেকেও বাজে কাজ করে তবুও তা আল্লাহ দেখেন। তাই সবাই সব কিছুতে বিবেচনা করে চলাফেরা করা উত্তম।বোঝা উচিৎ মৃত্যুর পরও একটা জীবন আছে। দুনিয়াতে ভালো কাজ করলে সেই জীবনে পাবে শান্তি আর খারাপ কাজ করলে পাবে শাস্তি।তাই সবার উচিৎ আল্লাহকে ভয় পাওয়া আর তার আদেশ নিশেধ মেনে চলা।
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত