বিষাদ

বিষাদ
বাড়ির সামনের ক্লিনিকের ডাক্তার ঊর্মিলা জাহানের বয়স সাঁইত্রিশ, বিয়ে করলেন চব্বিশ বয়সী এক যুবককে! সেই যুবকটি আর কেউ না। আমার বড় ভাই তারিক! এই ঘটনা পাড়ায় এক অন্যরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করলো! চারদিকে কানাঘুঁষা আর কৌতূহল! কাজটা হলো কীভাবে? চৌধুরী বাড়ির ছেলে এই কাজটা করতে পারলো? এরকম অনেক প্রশ্ন সবার মনে। ছেলের চেয়ে মেয়ে তেরো বছরের বড়! যারা যারা এই বিয়ের রহস্যটা জানতে চায়। আমি তাঁদের একজন। ডাক্তার ঊর্মিলা জাহানের সাথে আমার পরিচয়টা যেভাবে হয়েছিলো। আয়নার কান্নার কারণে ভোর রাত্তিরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আয়না আমার ভাগ্নী। ছোট্ট মেয়েটা নানু বাড়িতে এলে আমার সাথে নাহয় তারিকের সাথেই ঘুমায়। আধঘুমন্ত অবস্থায় আমি জিজ্ঞেস করলাম, “ মামা কান্না করছো কেনো? ”
সে উত্তর দিলো, “ মামা, আমাকে কে যেন ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দিচ্ছে! আয়নার কথা শুনে বুঝলাম মেয়েটা মনে হয় কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখেছে। মায়ের কাছে হস্তান্তর করে দিলাম। সন্তান ভয় পেলে, মায়ের কাছে গেলে অর্ধেক ভয় কেটে যায়। কিন্তু না। কিছুক্ষণ পর জারা আপু রুমে ঢুকলো বেশ অস্থির হয়ে! বিনয়, আয়না তো মনে হয় ভয় পেয়েছে। ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যা তো! আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে চোখমুখ বড় করে কীসব অস্পষ্ট শব্দ করছে! তাড়াহুড়ো করে আমি আয়নাকে নিয়ে বের হলাম। জারা আপুর পেটে বাচ্চা। বেশি নড়াচড়া করতে পারে না। আমাদের পারিবারিক ডাক্তার গেছেন সপরিবারে বেড়াতে কক্সবাজার।
গেটের কাছ থেকে রিকশা নিলাম। রিকশাওয়ালাকে বললাম কোনো ক্লিনিকের সামনে নামিয়ে দিতে। সে একটু দূর এসে দুতলা একটা ক্লিনিকের সামনে এনে নামিয়ে দিলো। আয়না তখন আমার গলায় শক্ত করে ধরে আছে।
ক্লিনিকের ভেতরে মানুষ তেমন নেই। ডাক্তারকে চিন্তিত মনে হলো। মহিলা ডাক্তার। আমি অনুমতি ছাড়াই তাঁর কক্ষে ঢুকে পড়লাম। ভাগ্নী আমার একটাই। ডাক্তারদের চেম্বারে কেউ অনুমতি ছাড়া ঢুকলে তাঁরা বুঝে যান, ইমারজেন্সি কেস! চোখে চশমা দেয়া, গোলমুখ। মুখে মমতার ছাপ স্পষ্ট। বললেন, “ কী হয়েছে মেয়েটার?
“ ভোর রাতে স্বপ্ন দেখেছে কে যেন ওকে নদীতে ফেলে দিচ্ছে! তারপর থেকে চোখমুখ উল্টে অস্পষ্ট শব্দ করছে! “
মহিলা দুহাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি আয়নাকে তাঁর কোলে দিয়ে দিলাম। আয়নার কপালে একটা চুমু খেয়ে তিনি বললেন, “ মামনি, তুমি কি চকলেট খাও? মহিলার এক চুমুতেই যেন আয়নার সব ভয় পালিয়েছে! চোখমুখ শীতল ও স্বাভাবিক হয়ে গেলো! মাথা নাড়িয়ে সে বললো, “ বড় চকলেট খাই না! “ ওহ তাই? কোনো সমস্যা নেই। আমার কাছে ছোট চকলেট আছে। এই বলে টেবিলের ড্রয়ার থেকে তিনি কয়েকটা ছোট ছোট চকলেটের প্যাকেট বের করে আয়নার হাতে দিলেন। মাঝেমধ্যে চকলেট ঔষধের কাজ করে এটা বুঝলাম আমি।
আয়নাকে তারপর আমার কোলে দিয়ে তিনি রোগী দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আমার কাছে মনে হলো। আপু যদি আয়নার কপালে চুমু খেয়ে চকলেট হাতে ধরিয়ে দিতো। তাহলেই আয়নার ভয় কেটে যেতো। ডাক্তার মহিলা তো এরচেয়ে বেশি কিছু করলেন না! এরপরে আরো কয়েকবার আয়না এমন স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে অস্পষ্ট শব্দ করে! চোখ উল্টে দেয়! আয়নার কপালে চুমু দিয়ে চকলেটের ব্যাগ হাতে ধরিয়ে দিতাম। কোনো কাজ হতো না। সেই ঊর্মিলা জাহান নামের ডাক্তারের কাছে গেলেই সে শান্ত হয়ে যায়। কোনো ঔষধ লাগে না!
ভাগ্নীকে নিয়ে কয়েকবার উনার শরণাপন্ন হতে হয়েছে। পরবর্তীতে উনার ক্লিনিকটা আমাদের বাড়ির ঠিক সামনেই নিয়ে এসেছিলো। পুরনো জায়গায় একটা ঝামেলা হয়েছিলো এমন শুনেছিলাম। ঊর্মিলা জাহান যে অবিবাহিতা। তা আমি জানতাম না। সাঁইত্রিশ বয়সের কোনো মেয়ে অবিবাহিত থাকে না। সিনেমার নায়িকাদের হিসাব আলাদা। পঞ্চাশ হলেও মনে করে তাঁদের বয়স মাত্র পঁচিশ। বিয়েটা যে পারিবারিক অসম্মতিতে হয়েছে এমন না। বাবা, মা, জারা আপু সবাই রাজি ছিলো। এবং অনুষ্ঠান করেই বিয়ে হয়েছে। চব্বিশ বছরের কোনো ছেলেকে বাবা বিয়ে দিতে চায়? তাও আবার বয়সে তেরো বছরের বড় কোনো মেয়ের সাথে!
আর যদি দিতেই চায়। তার পিছনে একটা কাহিনী অবশ্যই আছে। সেই কাহিনীটা আমি জানি না। বাবা বলছে না। মাও না। কাল বিয়ে হয়েছে। সকালে তারিকের চোখমুখ দেখে মনে হলো সারা রাত কান্না করেছে! চোখ ফুলে আছে। কালো কালো দাগ মুখে! আমি যতটুকু জানি তারিকই বাবাকে ঊর্মিলা জাহানের কথা বলেছিলো। বাবা তারিকের কথা রাখলো। একটু পর মেঘ কালো মুখ করে ঊর্মিলা জাহান যিনি কালকে আমার ভাবী হয়েছেন, তিনি বের হলেন! উনার চোখমুখ দেখেও বুঝা যাচ্ছে সারারাত কান্না করেই কেটেছে! আমি আরো ভাবছিলাম রহস্যটা কী তা ভাবীকে জিজ্ঞেস করবো। পরিবেশ হাসিখুশি থাকলে এমন কথা জিজ্ঞেস করা যায়।
কিন্তু এখন বাড়িতে মনে হলো নীরবতা পালন করছে সবাই! দুজনের মানসিক অবস্থা যে খুব ভালো পর্যায়ে নেই তা স্পষ্ট। মায়েরও দেখি মন খারাপ! সাথে বাবারও! এই বিষয়টা আমার পছন্দ হলো না! তারিক তো লুকিয়ে বিয়ে করেনি! তাঁরা নিজেরাই বয়সে তেরো বছরের মেয়েকে বিয়ে করিয়েছে। এখন কেনো এতো মন খারাপ? সারা বাড়িতে একমাত্র সুখী মানুষ মনে হলো আয়নাকে। সে বধূ সেজেছে কাল, আজও শাড়ি চুড়ি খুলছে না। এই মেয়েটার সাথেই কিছুক্ষণ আলাপ করা যায়। প্রায় হাজারটা ছবি তুললাম ওর। বিভিন্ন ভাব ভঙ্গিমায়। কখনো এক চোখ বন্ধ করে। কখনো সে খুবই চিন্তিত।
সন্ধ্যায় মনে হলো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। সবার মুখেই হাসি। এখন প্রশ্নটা করা যায়। তারিকের অবস্থা বলার মতো না। লজ্জায় যেন সে প্লেটের দিকে তাকাতে পারছে না! নতুন ভাবী আজকে রান্না করেছে। সাধারণত ডাক্তার মেয়েরা পড়ালেখার ব্যস্ততার কারণে রান্না ঘরে সময় দিতে পারে না। কিন্তু ভাবীর রান্নার প্রসংশা সবাই করলো। তারিক তো এখনো ছাত্র। পড়ালেখা করছে। সে সকাল আটটার দিকে বেরিয়ে যায়। বাবা অফিসের উদ্দেশে রওনা হয় সকাল ছয়টারও আগে। মা এই বয়সে টিভির সামনে বসে থাকে। হো হো করে হাসে। আয়নাকে স্কুলে ভর্তি করানো দরকার। এই বিষয়ে ওর সাথে আমার আলাপ হচ্ছে। এর মাঝেই ভাবীর আগমন। আমার মনে হয় না আয়না ভাবীকে ছেড়ে আপুর সাথে দাদু বাড়িতে যাবে। তাঁদের এমনই ভাব।
ভাবী বললো, “ বিনয়। ”
“ হুঁ। ”
“ আমি বিয়ের পরদিন থেকেই খেয়াল করছি তুমি আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছো। বলছো না কেনো? “
“ আপনি ঠিকই ধরেছেন। আমার আসলে একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো। ”
“ কী কথা? ”
একটু থেমে আবার তিনি বললেন, “ আয়না, তোমার আম্মু তোমাকে ডাকছে। দেখে আসো তো তো একটু। ”
আয়না বেরিয়ে গেলো।
“ এবার বলো, কী কথা? ”
“ তার আগে আপনাকে বলে রাখি। আমি কিন্তু আপনাকে খুব পছন্দ করি। একজন ডাক্তার হিসেবে এবং আয়নার ভালো বন্ধু হিসেবে। “
“ সেটা আমি জানি। তোমার প্রশ্নটা কী? ”
“ জানি না প্রশ্নটা করা ঠিক হচ্ছে কিনা। তাও করছি।
আমি আসলে আপনাদের বিয়ের রহস্যটা জানতে চাচ্ছি! রহস্য বলতে কী এমন হলো যে আপনি তেরো বছরের ছোট কাউকে বিয়ে করতে রাজি হলেন? ভাবী দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, “ রহস্যটা শুনলে তোমার মন খারাপ হবে। আমি সেটা চাই না। তোমার হাসিমুখটা সারা বাড়ির মানুষের হাসির খোরাক। ভাবীর এই কথাটা আমার কৌতূহল আরো বাড়িয়ে দিলো। কী এমন কথা যে আমার মন খারাপ হবে? বললাম, “ মন খারাপ হলে হবে। কিছুক্ষণ পর আবার ঠিকও হয়ে যাবে। আপনি বলেন। আমি শুনতে চাই। ভাবী বললেন, “ আমার বাবা ছিলেন একজন সরকারি দারোয়ান। অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়ালেখা করিয়েছেন। আমার কোনো ভাই বোন নেই। আমি একাই। আমি ছোট থেকেই হাসিখুশি একটা মেয়ে।
দুঃখ বেদনা আমাকে ছুঁতে পারেনি। প্রেম ভালোবাসা করতে যে আমার মন চায়নি এমন না। কিন্তু আমার বাবা যখন বাড়িতে ফিরতেন। কতো স্বপ্ন নিয়ে আমাকে বলতেন। একদিন তোর চেম্বারে গিয়ে আমি অপেক্ষা করবো। তুই ব্যস্ত থাকবি খুব। এই কথাগুলো আমাকে শুধু বইয়ের দিকেই মনোযোগ দিতে বাধ্য করতো। দেখতে দেখতে আমি বড় হয়ে গেলাম। ডাক্তারি পাশ করলাম। এবার বাবা বললেন বিয়ের ব্যাপারে ভাবতে। একদিন হঠাৎ আমার মন খারাপ। কারণটা আমি জানি না। রাত বারোটায় আমার স্যার ফোন করেছেন। তিনি অনেক বড় ডাক্তার। প্রায়ই উনার সাথে আমার কথা হয়। কখনো আমতাআমতা করতেন না। সেদিন আমতাআমতা করে বললেন, ঊর্মিলা, তুমি এখন আপাতত বিয়ের কথা চিন্তা করো না কেমন?
এই কথার মানে কী আমি জানি। আমিও একজন বিজ্ঞানের ছাত্রী। এরপরে আমি আর বিয়ের কথা চিন্তা করিনি। বাবা আমাকে একের পর এক পাত্র দেখাতে শুরু করলেন। আমি সবকটা পাত্রকে পছন্দ হয়নি বলে মানা করে দিতে লাগলাম। একদিন বাবা মারা গেলেন! তারপরে আর আমাকে বিয়ের জন্য কেউই চাপ দেয় না। মা বুঝতে পারলো বিয়েতে কেনো আমার অনীহা। বিয়ে, বর, ঘরসংসার এসব ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করতে লাগলাম। একটা মেয়ের কাছে ব্যাপারটা এতো সহজ নয়। আমাদের সমাজে বয়স পঁচিশের বেশি হলেই পাড়াপড়শিদের ঘুম নষ্ট হয়ে যায়! মেয়েটার বিয়ে হচ্ছে না কেনো? নিশ্চয় কোনো কাহিনী আছে!
গত বছর তুমি আয়নাকে নিয়ে আমার কাছে গেলে। মেয়েটাকে দেখেই এতো আপন মনে হলো না! জানি না কেনো।
আয়নার স্বপ্ন দেখে চোখমুখ উল্টে অস্পষ্ট শব্দ করার কারণে এরপরে কয়েকবার তোমার বড় ভাইও ওকে নিয়ে আমার কাছে এসেছিলো। তুমি জানো। আমাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়। যেমনটা ডাক্তার আর রোগীর অবিভাবকদের মাঝে হয়। একদিন দুপুরে তোমার ভাই গেলো আমার কাছে। বাইরে ঝড় হচ্ছে তখন। আমাকে বললো, “ আপনাকে স্থায়ীভাবে আয়নার কাছে রেখে দিতে চাই!
আমি চমকে উঠলাম কথাটা শুনে। ততদিনে তোমার পরিবার আর আয়নার দাদুর বাড়ির সম্পর্কে আমি টুকটাক জানি। দুবাড়ির মধ্যে বিয়ে উপযুক্ত ছেলে কেউই ছিলো না! জিজ্ঞেস করলাম, “ কীভাবে? তোমার ভাই উত্তর দিলো, “ আমার স্ত্রী হয়ে! আমি হাসলাম কিছুক্ষণ। ভাবছিলাম সে বোধহয় নেশা করে এসেছে! কিন্তু আমার হাসি দেখে সে কিছু কাগজপত্র টেবিলের উপরে রাখলো! কাগজপত্রগুলো দেখে আমি থ হয়ে গেলাম! কী বলে তাঁকে শান্তনা দিবো আমি বুঝতে পারলাম না। শুধু বলেছিলাম, “ ঠিক আছে, আমার আপত্তি নেই! এটুকু বলে ভাবী থেমে গেলেন! অস্থির হয়ে আমি বললাম, “ মানে কাগজে কী দেখলেন যে বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন? “
ভাবী দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন, “ তোমার ভাই বিয়ে করে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চায়নি। আমিও বিয়ে করে কারো জীবন নষ্ট করতে চাইনি। মাঝখান থেকে আয়না যেন আমার জীবনে উপহার হিসেবে এলো! কথাগুলো আমি একদমই বুঝতে পারলাম না। ভাবী আবারো বললো, “ বুঝতে পারছো না? ডাক্তারি ভাষায় বললে বুঝতে পারবে। তোমার ভাই আর আমার একই রোগ। আমরা কেউই বাবা মা হতে পারবো না! ” কেউ একজন মনে হলো আমার কলিজায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে! ভাবীর চোখের দিকে আমি তাকাতেই তিনি চোখ নামিয়ে নিলেন! এর মাঝেই আয়না এসে পড়েছে।
“ আন্টি, আম্মু তো আমাকে ডাকেনি। মিথ্যে বললে কেনো? ” কথাটা বলার পর আয়না খেয়াল করলো ভাবীর চোখে পানি!
“ কী ব্যাপার আন্টি? তোমার চোখে পানি কেনো? “
“ চোখে পোকা পড়েছে মামনি। কী যেন বলছিলো তোমার মামা একটু আগে? তোমাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবে? তুমি একা একু স্কুলে যেতে পারবে তো? ”
এসব বলতে বলতে আয়নাকে নিয়ে আমার রুম থেকে বের হয়ে গেলেন ভাবী! আমি দরজা জানালা বন্ধ করে রুমের মধ্যে বসে রইলাম। কিছুই ভালো লাগছে না। চিৎকার দিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কান্নাটাও আসছে না। বুকে চাপা পড়ে গেছে! উপলব্ধি করতে পারলাম যে কিছু রহস্য, রহস্যই থেকে যাওয়া ভালো! সব রহস্য উন্মোচন রোমাঞ্চকর নয়, বিষাদেরও হয়! আমি যদি কোনোদিনো এই ব্যাপারটা না জানতাম। কতো ভালোই না হতো!
গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত