স্বপ্নঘর

স্বপ্নঘর

লুবনা আামার দিকে তাকিয়ে বললো “আমাকে কি এখন তোর ভাল্লাগেনা?” এই কথার প্রত্যুত্তরে কি বলবো আমি জানি না। সে আমার এক বছরের সিনিয়র। তার চেয়ে বড় কথা সে আমার বিয়ে করা বউ। সন্ধ্যে বেলার অস্ত যাওয়া লালচে সূর্যের আলোকচ্ছটা আমার বাসার জানালা দিয়ে ঢুকে একটা লাল রঙ্গা অনুভূতি ছড়িযে দেয়।মাঝে মাঝে এই জানালার পাশে বসে ডুবে যাওয়া সূর্যটার দিকে তাকিয়ে থেকে সে কি যেন অনুভব করে। লুবনা আজও জানালার পাশে বসে আছে।

বিয়ের আগে সে আমাকে তুই করেই সম্মেধন করতো কিন্তু ওর জীবনের সাথে গভীর ভাবে আচ্ছন্ন হওয়ার পর তুমি করেই ডাকে। তবে মাঝে মাঝে যখন ওর ভিতরটা বিষন্নতায় তলিযে যায় কিংবা দুষ্টামি আভাটা প্রকাশ পায় তখন তুই করে ডাকে।অফিসের সাপ্তাহিক ছুটিতে বাসায় যখন থাকি তখন ওর দুষ্টামি গুলা আমার প্রশান্ত কল্পনায় একটা অনুভূতি তৈরি করে দেয়।একদিন গোসল দেওয়ার পর আমার কাছে এসে বলে “আমার পিচ্চি জামাইটা, আমার চুল মুছে দে নইলে রাতে ভালোবাসা পাবি না।” আমি ওর কথায় ছাগল মার্কা হাসি দেই।যেই হাসির কোন অর্থ নেই। সেই ভেজা চুল আমি মুছে দিয়ে ভালোবাসার মায়ায় আবদ্ধ হয়ে চুল শুকি।এমন অনুভূতিতে আবদ্ধ হলে আশপাশের জগতটাকে রাতের রুপালি চাঁদের আলোর মত মনে হয়।মনে হয় এই অনুভুতিটা স্বর্গ থেকে পাওয়া।ওর কথা শুনে আমি এখনও চুপ করে আছি। ওর প্রায় কথায় ইদানিং আমি চুপ করে থাকি। চুপ করে থাকা মানে আমি যে কিছু বলতে পারি না এমনটা না।আমার চুপ থাকা দেখে সে ইতস্তত হয়ে আবার বললো “চুপ করে আছিস যে? চুপ করে থাকা মানে বুঝিস?

আমি কি ধরে নিব তোর কাব্যে আমাকে মিশাতে এখন মন সায় দেয় না?” আমি তারপরও কিছু বলি না।কোন জবাব না দিয়েই জানালার পাশে তার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে অস্ত যাওয়া সূর্যটার দিকে একবার তাকিয়ে ওর চোখে তাকাই।আমার তাকানো দেখে লুবনা বললো “আমার মত অলক্ষী একটা মেয়েকে কেন ভালোবাসিস? এমন চমৎকার ভালোবাসা কি আমার জন্য মানায়?এমন ভালোবাসার অধিকার কি আমার আছে?” আমি হ্যাঁ সূচক ইশারা দিয়ে বললাম “তোমার মনে কি রকম হাওয়া খেলে যায় আমি জানি না।তবে যে হাওয়াই বয়ে যাক আমার শূণ্য পথে তোমার ছায়াই থাকবে।বিশাল আকাশের রোদ্দুর আলোর তাপটা যখন আমাকে তলিয়ে দিতে চাইবে আমি তোমার ছায়ায় জায়গা করে নিব। আমাকে জায়গা দিবে না?” লুবনা চুপ করে তাকিয়ে থাকে।আমি যেই ভিতরের রুমে যাব ওমনি ও আমার হাত ধরে বললো “আমাকে কোলে নিবি একটু? আমি দু হাতে তোর গলায় আলতো করে ধরে রাখবো।” আমি একটা হাসি দিয়ে ভালোবাসার অনুভূতিকে জড়িয়ে নেই।লুবনা আমাকে আরও একটু শক্ত করে ধরে বলে “আজকে আমি খুব চাই বৃষ্টি নামুক।

এই বৃষ্টিমাখা শহরে চুল ছেড়ে দিয়ে দুহাত মেলে আমি যখন বৃষ্টির মাঝে নিজেকে মেলে ধরবো তুই পিছন থেকে আমার কোমড়ে হাত রেখে জড়িয়ে ধরে তোর মাঝে মিশিয়ে নিয়ে আমার ভেজা শরীরের গন্ধ নিস।তখন আমি বৃষ্টিমাখা ভালোবাসায় কেঁপে উঠবো।” আমি চুপ করে ওর মায়াবতি চেহারার মাঝে তাকিয়ে থাকি।আমি বুঝতে পারছি ওর মনটা এখন বিষন্নতায় ছুয়ে গেছে।এই বিষন্নতাটা যখন ওকে ঘিরে ধরে তখন সে উল্টা পাল্টা বকে যায়।আমার তাকানো দেখে সে আবার বললো “একটা কথা বলি?” আমি হুম সূচক ইশারা দেই। সে বলতে থাকে “তোর অফিস ব্যাগে আমি একটা পাঞ্চ ক্লিপ পেয়েছি। এমন পাঞ্চ ক্লিপ তো আমি পড়িনা। আর আমার জন্য এনে থাকলেও তুই তো আমাকে দেসনি।” আমি কি বলবো বুঝতে পারি না।

আমাদের বিয়ে হয়েছে চার বছর।এই চার বছরে কোন সন্তান হয়নি আমাদের।এই সন্তান না হওয়ার পিছনে রিপোর্ট এ প্রবলেমটা ওর দেখায়।ও চাচ্ছে আমি যেন ওকে ছেড়ে দেই।সে কারনে ও একের পর এক গল্প সাঁজিয়ে আমার থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু আমি কিচ্ছু বলি না।যাকে এতো এতো ভালোবাসি, যাকে নিয়ে ভালোবাসার ভয়ংকর স্বপ্নগুলো আলপনা দিয়ে আঁকি, যে ভালোবাসায় আমি বন্দি হযে আছি সে ভালোবাসাকে ছেড়ে আমি কি করে আলাদা হই? এমন ভালোবাসার সাথে অভিমান করা কি মানায়? যে ভালোবাসার সাথে আলাদা হয়ে যন্ত্রনা অনুভব করতে হবে এমন অনুভূতির সাথে আমার পরিচয় হতে ইচ্ছে করে না। আমি লুবনার কথার কোন জবাব না দিয়ে ওকে আমার কোল থেকে নামিয়ে ভিতরে চলে যাই।

অফিস থেকে বাসায় ফিরার পথে প্রায় সময় আমি হেটে চলে আসি।আমার শরীরের ভিতরে যখন অলস ছায়াটা ঘিরে ধরে তখন আমি এই শহরের ধুলোমাখা রাস্তায় একা হেটে শরীরকে জাগ্রত করার চেষ্টা করি।এই নগরীর যন্ত্রগুলোর শব্দকে অনুভব করি।হাটতে হাটতে যখন বিশাল আকাশটার দিকে চোখ যায় তখন আমার মায়ের কথা মনে পড়ে।এই বিশাল আকাশটার মাঝে অনেককাল ধরে আমার মা আশ্রয় নিয়েছে।মায়ের কথা মনে পড়লেই আমার ভিতরটা ধক করে ওঠে।আমি আমার মায়ের জারজ সন্তান।

একটা বাসায় আমি আর মা একা থাকতাম। আমার বাবা, দাদা, দাদি, নানা, নানি কারা কাউকে চিনতাম না, এমনকি মা কখনও আমাকে কোথাও নিয়ে যায়নি।তখন আমি একটু একটু বুঝতে শিখি। চিনতে শিখি।মা একটা চাকরি করতো। কোথায় করতো আমি জানাতাম না। যখন মায়ের মনটা বিষন্নতায় ছুয়ে যেত তখন দেখতাম মা কবিতা পড়তো।মানুষের মন খারাপ থাকলে আমি এখন জানি সে একা থাকার চেষ্টা করে কিন্তু আমার মা কবিতা পড়তো।কবিতা পড়া মানুষগুলোর মন বা ভিতরটা বুঝা যায় না।তাদের ভিতরটা এই জরাজীর্ন শহরের মত হয়।মা আমার সাথে তেমন কথা বলতো না।তখন আমি ফোরে পড়ি।একদিন আমি আমার মায়ের কাছে এসে নিচের দিকে তাকিয়ে বলি “সবার বাবা আছে। আমার বাবা কই?”

মা এই কথার কোন উত্তর দেয়নি।শুধু আমার গালে একটা চড় মেরে বলেছিল “আমি খাওয়াচ্ছি, পড়াচ্ছি তারপরও বাবার কথা মুখে আসে কেন? খবরদার এরপর থেকে বাবা শব্দটা মুখে আনবি না।” ঐদিন মা আমাকে রাতের খাবার দেয়নি।আমি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।মাঝ রাতে মা আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে জড়িয়ে ধরে অনেক কেঁদেছিল। মায়ের কান্না দেখে আমিও কেঁদে দিয়েছিলাম।মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল “ব্যথা পাইছিস?” আমি কাঁদতে কাঁদতে মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম “মানুষ ব্যথা পেলে কান্না করে? আমি কম ব্যথা পেয়ে অল্প কেঁদেছি। আমাকে মেরে তুমি তো তোমার হাতে আমার থেকে বেশি ব্যথা পেয়েছো তাই বেশি কাঁদতেছো” মা আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।তার ঠিক সাতদিন পর আমার মা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মারা যায়। আমি তখন একটা বাচ্চা ছেলে।কি করবো কিছু বুঝতে পারিনি।

হাউমাউ করে কেঁদেছি।শুধু ছোট্ট একটা কাগজে মা লিখে গিয়েছিল ”তুই যত বড় হচ্ছিস আমার ভিতরের ভয়টা তত বেড়ে চলছে। আজকাল তোর সামনে আসতেও ভয় লাগে যদি ঐ লোকটার সম্পর্কে জানতে চাস।তুই যখন আামর পেটে ছিলি অনেক বার ভেবেছিলাম তোকে মেরে ফেলতে।কিন্তু আমি পারিনি জানিস।এই সাহস আামর ছিল না।আমাকে ক্ষমা করিস আমার বাচ্চাটা” আমি কাঁদতাম সারাদিন কাঁদতাম।মায়ের চিঠিটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছি।চিঠিটা যখন পড়ি তখনও কাঁদি।যে বাড়িতে থাকতাম সে বাড়ির দাঁড়োয়ান আলমগীর চাচা আমাকে তার কাছে নিয়ে যায়।পরে তার কাছে থেকেই বড় হয়েছি।এস.এস.সি দেওয়ার পর চাচাও মারা গেলেন।আমার জীবনটা কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল আমি এর উপলব্দি করে কিছুই বুঝতে পারিনি।তবে আমি এখন বুঝি আামার মায়ের ব্যথাটা সেদিন কোথায় ছিল।যে স্কুল থেকে এস.এস.সি পাস করলাম।সে স্কুলের জাফর স্যার আমার ভালো রেজাল্ট দেখে তার কাছে নিয়ে গিয়েছিল।

কলেজ অধ্যায়টা উনার কাছে থেকেই শেষ করেছি। জাফর স্যারের বাসায় থাকাকালীন সময় আমি রোজ কথা শুনতাম উনার বউ এর। আমাকে দেখতে পারতেন না।একদিন আমাকে বললেন “আর কত আমাদের ঘাড়ে বসে খাবি? একটা পাপ ঘরে জায়গা দিয়েছে।” আমি কিছু বলি না।ঐদিন রাতে কাঁদতে কাঁদতে আকাশের দিকে তাকিয়ে মাকে বলেছিলাম “আমার জীবনটা এমন কেন? তোমার গর্ভে থাকতেই আমাকে মেরে ফেলতে।এই সমাজে আমি যে এখন প্রতিনিয়ত মৃত্যু বরণ করছি এটা কি তুমি জানো? কেন মারলে না আমায়?” ঐরাতে আমি একটুও ঘুমাইনি।কলেজে পড়ার সময় টিউশনি করতাম কয়েকটা।যাা টাকা পেতাম জমিয়ে রাখতাম।কলেজ পাস করার পর জাফর স্যার আমার হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে বললেন “অন্যকোথাও চলে যা বাবা। বড় হয়েছিস এবার নিজের পথ নিজে চিনতে শিখ।দোয়া করি মানুষ হ।” এটা বলেই স্যার আমায় খুব শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিল।

আমি শুধু চুপ করে বিষন্ন মনে চোখ দিয়ে পানি ঝড়িয়েছিলাম। ঢাকায় আসার পর এ পথ থেকে ও পথ ঘুরতে ঘুরতে একটা দোকানে কাজ নিয়েছিলাম।সারাদিন কাজ করতাম আর রাত্রে পড়তাম ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য।উপরে যে একজন আছেন তিনি সব দেখেন।আমার কষ্টটা মাটি হতে দেয়নি।ভার্সিটিতে ভর্তি হই। ভর্তি হওয়ার ঠিক একমাস পর আমি লুবনাকে দেখি। সে আমার সাথেই পড়তো।বয়সে আমার থেকে এক বছরের সিনিয়র।এই শুভ্র মাখানো মেয়েটাকে আমি শুধু দুর থেকে দেখতাম।কখনও নিজে থেকে পরিচয় হতে যায়নি। কথা বললেই নিজের সম্পর্কে জানতে চাইবে।এই জগৎটা অনেক নিষ্ঠুর যেটা আমি একটু একটু বুঝেছি।এরপর অনেকটা দিন কেটে যায়।একটা সময় খেয়াল করলাম ওর দিকে যখন আমার চোখ পড়ে বা ওকে যখন দেখতাম আমার ভিতরে ভয়ংকর একটা মোহ কাজ করতো।আমি শুধু ভাবতাম কেন এমনটা হয়? তবে কথা বলতাম না।

কারো সাথেই বলতাম না।শুধু ভদ্রতার খাতিরে টুকটাক কথা হতো কেউ জিজ্ঞেস করলে।একদিন লুবনা এমন ভাবে আমার কাছে এসে বললো “ঐ আজকে আমার একটা কাজ আছেরে।পরের ক্লাসটা করবো না।তুই নোট গুলা তুলে রাখিস।পরে তোর থেকে আমি নিয়ে নিব।” আমি ডানে বামে ভালো করে তাকিয়ে বলি “আমাকে বলেছেন?” সে একটা হাসি দিয়ে বলে “তুই না আসলে একটা গাধা। সব সময় এতো চুপচাপ থাকিস ক্যান? তোকেই বলছি।অন্যজন একটা নোটও ঠিক মত তুলবে না আমি জানি।তাই তোরে বলছি।আমি যাই কেমন? কালকে নোট গুলা নিব।” আমি শুধু অবাক হয়ে ঝিম মেরে তাকিয়ে ছিলাম যেন ওর সাথে কত আগের পরিচয় আমার।এই তাকিয়ে থাকার পরই সে আবার ফিরে এসে বললো “এইভাবে কি দেখস? বান্ধবীকে আপনি করে বলতে নাই।এটাই বলতে আসছি।গেলাম।” আমি জানি না আমার তখন কেমন অনুভূতি হয়েছিল।এই অনুভূতিটা আমি আগে কখনও পাইনি।

হাটতে হাটতেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় এসেই যখন ফেনের নিচে বসলাম তখন লুবনা এসে দাঁড়িয়ে থাকলো।দাঁড়িয়ে থাকার কিছুটা সময় পর ইতস্তত হয়ে বললো “আমি কি তোমাকে কম ভালোবাসা দেই?” আমি ওর দিকে তাকিয়ে বলি “তুমি আজকাল আমার সাথে কেমন করে যেন কথা বলো। আমাকে সন্দেহ করো।” সে কিছুক্ষন আবার চুপ করে থেকে মুখ গম্ভীর করে বললো “তুমি আজকে তোমার এন্ড্রোয়েট সেটটা অফিসে নাও নি।ফোনটা দেখে অবাক হয়েছি বটে।কারন এই রকম ভুল তুমি করো না।নেট অন ছিল ফোনের।মেসেঞ্জারে কত আলাপ তোমাদের।” আমি কি বলবো বুঝতে পারি না।কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি।মেসেঞ্জারে অন্যকারো সাথে কথা বলা মানে যে তার সাথে আমার গভীর কিছু চলছে এমন তো না।আমার এমন তাকানো দেখে সে আবার বললো “তুমি কি আমার জীবন থেকে সরে যেতে চাচ্ছো? একা হতে চাচ্ছো?” আমি চুপ করে থাকি।এই কথার কোন প্রত্যুত্তর দেওয়ার প্রয়োজানবোধ করিনা।

সারারাত বৃষ্টির ফলে আজকের সকালটা কেমন যেন শ্যাত শ্যাতে হয়ে আছে।এই রকম একটা সকাল বেলা আমি শফিকুর রহমানের এই ছিমছাম বাংলোতে শান্ত পরিবেশটা উপভোগ করতে পারবো ভাবিনি।অবশ্য তাকে খুঁজে পেতে আমার কম কষ্ট হয়নি।এই বাংলোতে তিনি মাঝে মাঝে আসেন।পারিবারিক ঝামেলা নিয়ে উনার স্ত্রী আর সন্তান উনার থেকে আলাদা হয়ে গেছেন।জীবনে কারো অভিশাপের ছায়া লাগলে সে জীবনটা আর যাই হোক ভালো ভাবে টিকে না। এখানে আসার পনেরো বিশ দিন আগে আমি যখন রাহেলা বেগমের বাসায় গেলাম উনি আমাকে দেখে চিনতে পারেনি।না চিনারি কথা।দরজার আড়ালে থেকে আমাকে বললেন “কাকে চাই?” আমি একটু চুপ করে থেকে বললাম “জ্বি আমি আয়েশার ছেলে।”

উনি কিছুক্ষন কি যেন ভাবলেন দরজার আড়ালে থেকে। তারপর দরজাটা পুরোটা খুলে চুপ করে আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন।তারপর উনার ছলোছলো চোখে আমাকে ভিতরে আসার ইঙ্গিত দিলেন।আমি ভিতরে ঢুকে রুমের চারপাশটায় ভাল করে তাকালাম।দক্ষিন দিকের দেয়ালের মাঝখানে টাঙ্গানো ছবিটার দিকে আমার নজর গেল। আমি আস্তে আস্তে হেটে ছবিটার কাছে গিয়ে ভালো করে তাকাই।আমার সমস্ত দেহ জুড়ে যেন ঝিম মেরে গিয়েছিল।উনি আমাকে বললেন “কলেজ থেকে আসার পরেই এই ছবিটা তুলেছিল আয়েশা।” আমি শুধু “ও আচ্ছা” নামক শব্দ উচ্চারন করলাম।তারপর উনার দিকে ফিরে বললাম “আমি আপনাদের বিরক্ত করতে আসিনি।মায়ের আত্মহত্যার পর যার কাছে বড় হয়েছি উনি কিছু কাগজপত্র, ডায়েরী, ছবি রেখে দিয়েছিলেন।

একদিন এই গুলা ঘাটতে ঘাটতেই মায়ের সার্টিফিকেটের একটা কপি পেয়েছিলাম।এতো বছর খুব যত্ন করেই নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম।সার্টিফিকেটের রোল নাম্বার, রেজিস্টার নাম্বার এর মাধ্যমেই সব কিছু খুঁজে পেয়েছি।মায়ের স্কুল, কলেজে গিয়েই আমার সব কিছু জানা হয়ে গিয়েছে।এও জানি আপনার স্বামী মানে আমার মায়ের বাবা বেঁচে নেই। গত বছরের শীতের মাঝামাঝিতে গত হয়েছেন।এখানে আসার কারণ, মা বেঁচে থাকা অবস্থায় আপনার কাছে প্রতিনিয়ত চিঠি লিখে গিয়েছে।আপনি কখনও চিঠির প্রত্যুত্তর দেওয়ার ইচ্ছা করেন নি।করছেন কিনা আমি জানি না।এই যে এই ডায়েরীটার মাঝে আপনাকে নিয়ে অনেক কিছু লিখে গেছে।সব কিছু এখানে উল্লেখ্য আছে। কিছু কিছু পাতা আমি ছিড়ে আমার কাছে রেখে দিয়েছি যেগুলো আমাকে নিয়ে লিখা।”

উনি হতভম্ব হয়ে শুনছিল।উনার চোখে জল গড়িয়ে পড়ে।আমি আর কিছু না বলে যেই বের হযে যাচ্ছিলাম তখন মনে হলো একটা কথা জিজ্ঞেস করি।আমি উনার দিকে ফিরে বললাম “আমার মা কি খুব জগন্য একটা মানুষ ছিল?” উনি কিছু না বলে ডায়েরীটা ধরে কান্না করতে লাগলেন।আমার বুকটা হঠাৎ ধড়ফড় করে উঠৈছিল। সেই মুহুর্তে ভেজা চোখ নিয়ে আমি চলে আসি। আর আজকে চট্টগ্রামে আসছি শফিকুর রহমানের সাথে দেখা করতে। আজকে আসছি বললে ভুল হবে। আসছি গতকাল রাত।নিচ তলায় কেয়ার টেকারকে বেধে রেখেছি। রাতেই যখন জনাব শফিকুর রহমানের সামনে এসে দাঁড়ালাম উনি চেচিয়ে বললেন “কে তুমি? কি চাই? এই বেড রুমে ঢুকেছো কেন?” যেই আমি কিছু বলতে যাবো তার আগে আবার চেচিয়ে উঠলো।এদিক ওদিক তাকিয়ে টেবিলে ওয়াইনের বোতল দেখে ওটা নিয়ে মাথায় সজরে আঘাত করতেই তৎক্ষনাত উনি লুটিয়ে পড়ে।আর রাতটা কিভাবে যেন কেটে গেছে।

শফিকুর রহমানের হুঁশ ফিরলেই উনি আমার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে থাকলো আর নিজেকে ছাড়ানেরা কয়েকবার চেষ্টা করলো।আমি উনাকে চেয়ারে বেধে রেখেছি।উনার মুখের টেপ খুলে দিয়ে বললাম “শুভ সকাল জনাব।ঘুম ভাল হয়েছে? চিৎকার করার চেষ্টা না করাই ভালো। চিৎকারে কোন কাজ হবে না।আমার কিছু কথা বলার আছে।এই গুলা বলেই চলে যাব। ঠিকঠাক উত্তর দিবেন।” উনি আমাকে বললেন “আমি তো তোমাকে চিনি না।আমার কাছ থেকে কি জানতে চাও?” আমি একটা হাসি দিলাম।ধীর পায়ে হেটে জানালার কাছে গিয়ে ভারী একটা চার ফুটের মত কাঠ হাতে নিয়ে পর্দাটা সরাতেই এই শ্যাত শ্যাতে সকালের আলোটা জানালা দিযে প্রবেশ করে একটা স্নিগ্ধ অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়।

এই স্নিগ্ধ অনুভূতিটা আমি জোরে নিশ্বাস নিয়ে গ্রহন করে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম “আয়েশার কথা মনে আছে আপনার।” উনি হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষন পর বললেন “কোন আয়েশা?” আমি একটু জোরেই বললাম “শুয়রের বাচ্চা আয়েশাকে চিনস নাই? আমি আয়েশার ছেলে।” এইটা বলেই হাতের কাঠটা দিয়ে পায়ে বাড়ি মেরে আবার বললাম “বান্দীর বাচ্চা মনে পড়ছে এখন?” উনি ব্যথায় কুকড়িয়ে কুকড়িয়ে মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক ইশারা দিল।আমি চুল গুলা হাতের মুঠোয় ধরে বললাম “ভালোবাসলি, ভয়ংকর ভালোবাসার লোভ দেখালি, এমন ভয়ংকর ভালোবাসাটাকে নোংরা করে ছুড়ে ফেলে দিলি কেন কুত্তার বাচ্চা?” উনি আমার থেকে মাফ চাইতে লাগলেন।আমার ভিতরে এতো বছরের জমানো রাগ নিয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম “আমাকে নষ্ট করে দিতে চেয়েছিলি নাহ? আজকে দেখ সেই আমি তোর কলিজা নিয়ে টান দিয়েছি।” এটা বলেই আমার ভিতরের সব অভিমান নিয়ে উনার পায়ে আঘাত করে পা টা ভেঙ্গে ফেলি।

বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছে।লুবনা আমাকে বললো “না বলে কোথায় গিয়েছিলে।” আমি কিছু বলি না। আমার পুরো শরীরটায় ক্লান্তি ভর করেছে।বিছানায় শরীর তলিয়ে দিতেই শফিকুর রহমানের কথা মনে পড়ে। লোকটাকে আমি একেবারে মারিনি। জীবনের বাকি সময়টা উনার ভাগ্যর উপর ছেড়ে দিয়েছি। তবে যতদিন বাঁচবে কষ্টটা যেন অনুভব করতে পারে তিলে তিলে যেন শেষ হতে পারে সে ব্যবস্থা করে এসেছি। এদিকে লুবনা আমার পায়ের মৌজা খুলতে খুলতে বললো “কি হয়েছে বলবে? গতকাল রাতে আমি একটুও ঘুমাইনি।ফোন দিলাম ধরলে না। তারপর সুইচ অফ।” আমি তারপরও চুপ করে রইলাম। মাঝে মাঝে লুবনার দিকে তাকালে আমার পুরো শরীরটা কেপে উঠে।আমাকে বিয়ে করার পর মেযেটা কেমন যেন শান্ত হয়ে গিয়েছে।অনার্সে পড়ার সময় লুবনা আমাকে কয়েকটা টিউশনি ঠিক করে দিয়েছিল। ভার্সিটিতে ওর চোখে যখন আমার চোখ পড়তো ও দুষ্টুমি মাখা হাসি দিত।আমি নিজেকে সামলিয়ে মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ও বলতো “এই তাকা। তাকা বলছি।আমার চোখের প্রেমে পড়তে চাস? খুন হয়ে যাবি কিন্তু।”

আমি লজ্জায় পড়ে যেতাম।মাথা নেড়ে বুঝাতাম “না”। ও আবার হাসতো। এই শুভ্র মাখানো হাসিটা আমার ভিতরে একটা মোহ কাজ করতো।এরপর কয়েকটা বছর কেটে গেছে। ওর সাথে যত চলেছি ততই ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করতো আর ঠিক ততবার নিজেকে তুচ্ছ মনে করে এসব কিছু মাথা থেকে সরাতে চেষ্টা করাতাম। কিন্তু আমি পারতাম না। একদিন ক্যাম্পাসে ওর পাশে হাটতে হাটতে বোকার মত বলেছিলাম “হাতটা ছুই?” সে উদ্ভেগপূর্ণের সহিত তাকিয়ে বললো “চড় খাবি?” আমি আর কিছু বলিনি। নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছিল।আমি অনুধাবন করলাম আমার মত একটা ছেলের এই রকম চাওয়াটা খুব অন্যায়। এই রকম চাওয়াটা মানায় না। এই চাওয়ার অধিকার আমি রাখি না। এরপর ঠিকি পারলাম আর কখনও ওকে সাহস করে কোন কিছু বলিনি।অনার্স শেষ করার পর ওর সাথে আমি আর যোগাযোগ রাখলাম না।আমি অন্য কোথাও চলে গেলাম।

অন্য কোথাও মাষ্টার্সের এডমিশন নিলাম। মাষ্টার্স তখন প্রায় শেষের দিকে।একদিন হুট করে আমার বাসায় এসে হাজির। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম এই যে আমার ঠিকানা যোগাড় করেছে কিভাবে।আমাকে বললো “না বলে এভাবে পালালি কেন বেয়াদব। অনেক একা থাকা শিখে গেছিস তাই নাহ।” আমি চুপ করে ছিলাম। আমার কি বলা উচিৎ আমি বুঝতে পারছিলাম না। ও আবার বললো “হাতটা ধরতে চেয়েছিলি, কখনও সাহস করে ধরিস নাই কেন হাত? আমার মনের ভাষা নাই বা বুঝতে পারলি কিন্তু চোখের ভাষা বুঝতে পারিস নাই? আমি তোকে কত খুঁজেছি।” ঐদিন আমি খুব কেঁদেছি।সেদিনই যে আমি ওর হাতটা ধরেছিলাম এরপর থেকে আর কখনও হাতটা ছাড়িনি।আমি ছাড়িনি বললে মনে হয় ভুল হবে।লুবনা ছাড়েনি।আমার সাথে জীবন গড়ার পর ওকে নিয়ে ওর পরিবারে অনেক ঝামেলাই হয়েছিল।তারপরও আমাকে একা করেনি।

আমার পায়ের মৌজা খুলে দিয়ে ও আমার মাথার পাশে বসে আমার মাথাটা ওর কোলে নিয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো “একটা কথা বলি?” আমি খুব শান্ত ভাবেই বললাম “ভাল্লাগছে না। পরে শুনি?” সে কিছু না বলে মাথায় হাত বুলাতে লাগল।ওর হাতের স্পর্শে আমার চোখে ঘুম চলে আসে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে একটা স্নিগ্ধ গন্ধের অনুভব করলাম।ও ভেজা চুল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুছছে।বুঝলাম গোসল দিয়েছে। আমার জেগে উঠার শব্দ পেয়ে ও আমার দিকে তাকিয়ে ভেজা চুল গুলা কানে গুজে বলে “উঠে গেছো? ওয়েট রসুন নিয়ে আসি”।আমি চুপ করে থাকি।

এই রসুন কেন আমাকে প্রত্যেহ সকালে খাওয়ায় আমি জানি।ও মনে করেছে বিষয়টা আমার কাছে অজানা থাকবে। আমি অনুধাবন করি লুবনা আর কত অভিনয় করবে? আসলে যে রিপোর্ট টা ডাক্তার দিয়েছিল এটা একটা মিথ্যে বানানো রিপোর্ট ছিল।আমি জানতমই না।একমাস পর যখন বিষয়টা আমি আঁচ করতে পারলাম তখন আমি পুনরায় রিপোর্ট টা নেওয়ার জন্য ডাক্তার এর কাছে গেলে ডাক্তার আমাকে সব কিছু বলে দেয়।দোষ টা লুবনার না, দোষটা আমার।এই সমস্যায় অনেক কারণ থাকে। তবে আমার শুধু হরমোনের সমস্যা ছিল। আমাদের পুরুষের দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন হলো “টেস্টোস্টেরন” এই হরমোনের ওপরই নির্ভর করে পুরুষের শারীরিক উর্বরতা।এই হরমোন জনিত সমস্যায় ভোগলে এই প্রবলেমটা হয়।তবে স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই সমস্যা দুর করা যায়।

বিশেষ করে রসুনে অনেক গুন আছে। রসুন ফোড়া ভালো করে, ঋতুস্রাব চালু করে, পেশাব জারী/স্বাভাবিক করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে, বীর্য বৃদ্ধি করে, পাকস্থলী ও গ্রন্থর ব্যাথার উপকার সাধন, এ্যাজমা এবং কাঁপুনি রোগেও উপকার সাধন করে।আর এসব কিছুই ডাক্তার লুবনাকে বলে দিয়েছিল।আমি যে পুনরায় রিপোর্ট নিয়েছিলাম লুবনা জানে না।আর আমি এতো মাস ধরে শুধু দেখছি প্রবলেমটা তার কাধে নিয়ে কি নিখুত অভিনয় করে যাচ্ছে আমার সাথে। আমার নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়।সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই দুনিয়া থেকে একেবারেই হারিয়ে যাব মায়ের মত, যে শহরে আমার মত ছেলের জন্য কোন ভালোবাসা নেই। আর যে ভালোবাসাটা পেয়েছি তার মাঝেও অন্ধকারটা আমাকে ঘিরে ধরেছে।কিন্তু আমি পারছিলাম না লুবনার চমৎকার ভালোবাসার জন্য। সে জন্যই লুবনার সাথে আমি কয়েকটা চাল খেলেছি।ফেইক আইডি খুলে নিজেই নিজের সাথে চ্যাট করেছি।অফিস ব্যাগে নিজেই পাঞ্চ ক্লিপ রেখেছি।সে যেন আমাকে সন্দেহ করে।

এই সন্দেহটা যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে ভেবেছি সে নিজেই আমাকে একা করে দিবে। কিন্তু কিছুই হয়না। লুবনা রসুন এনে আমাকে বললো “খেয়ে নাও তো” আমি চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার চুপ থাকা দেখে সে আবার বললো “কই ধরো” আমি অনুধাবন করি বেঁচে থাকার মানে কি? আমার চোখে জল চলে আসে। আমি তাকে ইতস্তত করে বললাম “এভাবে আর কতদিন অভিনয় চলবে? তারচেয়ে আলাদা হওয়াটা ভালো না?” সে একটু অবাক হয়ে আমার কথার অর্থ বুঝতে চাইলো। আমি যখন রিপোর্ট দুইটা নিয়ে দেখালাম সে চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।

এই তাকানোর মাঝে আমি ভয়ংকর একটা কষ্ট অনুভব করলাম। সে খুব গভীর হয়ে বললো “অভিনয় তো তুমিও ভালো পারো, ফেইক আইডি খুলে নিজেই নিজের সাথে চ্যাট করো, ব্যাগে পাঞ্চ ক্লিপ রাখো। আমি কি এসব বুঝি না? কি ভেবেছো তুমি? আমি তোমাকে একা ছেড়ে দিব? যে ছোট ছোট ভালোবাসা দিয়ে আমার ছোট্ট বাসাটা ভালোবাসাময় করে তুলেছি তা ভেঙ্গে ফেলবো? এমনটা আমি হতে দিব না। এই ভালোবাসাটা আমার গড়া।” আমি কি প্রত্যুত্তর দিব বুঝতে পারি না। লুবনা কাছে এসে আমার হাতটা ধরে কান্নামাখা কন্ঠে বললো “তুমি কি একাই নিরব হয়ে কষ্ট অনুভব করতে পারো? আমি পারি না? আমি চাইনি এই সময়টা কষ্ট পাও, ভেঙ্গে পড়ো। গতকাল রাতে তোমার মাতায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার সময় একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম মনে আছে? আমার গড়ে তুলা এই ছোট্ট ভালোবাসাটা বৃদ্ধি করার জন্য আরেকজন আসছে। কিন্তু তুমি তো শুনতে চাওনি।” আমি চুপ করে এই কথাটা অনুভব করলাম।

যে অনুভবটা আমার ভিতরের নিহত স্বপ্নটাকে পথ দেখায়। কথাটা শোনার পর একটা প্রচন্ড ভালো লাগার অনুভুতি হঠাৎ করে আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেললো। আমার কি বলা উচিৎ আমি জানি না। নিজের ভিতর প্রচন্ড ঘৃনা জন্মায়। আমি অনুধাবন করলাম দেয়ালের এপাশ থেকে অপর পাশের অনুভুতিটা বুঝা যায় না। আমার ভিতর যে ভয়ংকর ভালো লাগা অনুভূতিটা তৈরি হয়েছে সেটা লুবনার গড়া ছোট্ট ভালোবাসাময়তে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে পড়া অনুভুতিটা লুবনা আঁচ করতে পারছে কিনা জানি না। আমি শুধু এই টুকু জানি এই মেয়েটাকে আমার জড়িয়ে নেওয়া দরকার, খুব দরকার…

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত