ভয়ংকর কিড

ভয়ংকর কিড

রাকিব নামের ৪র্থ শ্রেণীর একটা ছেলেকে টিউশনি করাই ৷ খুবই কিউট আর খুবই দুষ্টু একটা ছেলে ৷ আজ হালকা সবুজ রঙের শাড়ি পড়ে টিউশনি করাতে এসেছি ৷ রাকিব শুরু থেকে আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে ৷ তাকে একটা অঙ্ক কষতে দিলাম ৷ হঠাৎ, অঙ্ক কষা বাদ দিয়ে মুখটা বেজার করে বিষাদময় কন্ঠে বলল,

—-আপু, আমি আর লেখাপড়া করবোনা! হকচকিয়ে উঠলাম ৷ ভ্রুজুগল উঁচু করে তাকিয়ে রইলাম রাকিবের দিকে ৷ অতঃপর কৌতূহলের বশে তাকে জিজ্ঞেসা করলাম,

—-কেন? লেখাপড়া করবেনা কেন? কি সমস্যা?
—-লেখাপড়া করে কি লাভ বলুন তো টিচার আপু?
—-লেখাপড়া করে কি লাভ সেটা এখন বুঝবেনা, লেখাপড়া শেষ করলে বুঝবে! রাকিব ঈষৎ রাগ দেখিয়ে তাচ্ছিল্যভরা কন্ঠে বলল,

—-উহ! শেষ করলে বুঝবো ৷ এতদিন ধরে লেখাপড়া করছি অথচ একটা গার্লফ্রেন্ড জুটাতে পারলাম না, এই লেখাপড়া দিয়ে আমি কি করবো; বলেন? রাকিবের কথা শুনে যেন সাত আসমানের একদম উপর থেকে সর্বোচ্চ গতিতে ধপাস করে এঁটেল মাটিতে পড়লাম ৷ ভাগ্যিস মরিনি,তবে জ্ঞান হারানোর মত অবস্থা হয়েছে ৷ ভ্যাঁবাচেকা খেয়ে পিচ্চিটার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম ৷ অতঃপর কপাল কুঞ্চিয়ে বললাম,

—-ও এই ব্যাপার ৷ দুষ্টুমি বাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি অঙ্কটা শেষ করো ৷ রাকিব অগ্নিঝরা কন্ঠে বলল,

—-না, আমি অঙ্ক করবোনা ৷ আগে আপনার সাথে অনেকগুলো কথা বলবো ৷
—-না না বাবা, এখন কথা বলা যাবেনা ৷ দরকারী কাজ আছে ৷ তোমার অঙ্ক কয়টা শেষ হলেই চলে যাবো!

আচমকা রাকিবের চোখ, মুখ লাল হয়ে গেল ৷ যেন চোখ দিয়ে অগ্নি ঝরছে ৷ ব্যাপার বুঝলাম না ৷ এরকম রুপধারণ করলো কেন? সে রাগের চরমে পৌঁছে উত্তেজিত কন্ঠে বলল,

—-বাবা বললেন কাকে, হুহ? আমি আপনার আম্মাকে কবে বিয়ে করলাম যে বাবা বললেন? খবরদার! আমাকে কখনো বাবা বলে ডাকবেন না ৷ আমার সুন্দর একটা নাম আছে, সেই নাম ধরে ডাকবেন! থেমে গেল রাকিব ৷ বাব্বাহ! কি রাগ ছেলেটার! সে কথাগুলো বলে নিজের রাগটা দমন করার চেষ্টা করলো ৷ এরপর লম্বাভাবে দম নিয়ে ফের বলল,

—-যাইয়েন দরকারী কাজে, নিষেধ তো করি নাই ৷ তার আগে বলেন, আপনি কি প্রেম করছেন?” মৃদ্যুভাবে বিষম খেলাম ৷ পিচ্চির এতসব পাকনাপাকনা প্রশ্ন শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিনা ৷ এতটুকুন একটা ছেলে এতসব কথা কেমনে জানে? পিচ্চিকে মিথ্যা বলতে হবে ৷ সত্যটা বললে সে আমাকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করতে পারে ৷ তাই সহজ গলায় বললাম,

—-আরে অঙ্ক করো তো ৷ আমি ওসব প্রেম ট্রেম করিনা ৷ আর শোনো, ভুলেও আর এমন উলটপালট প্রশ্ন করবেনা ৷ নইলে তোমার আম্মুর কাছে নালিশ দিবো! রাকিব চেয়ার থেকে উঠেই দৌঁড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ তার ব্যাপার কিছু বুঝতে পারলাম না ৷ তার আম্মুকে কিংবা চাচ্চুকে ডাকতে গেল নাকি়? তার চাচ্চু এলে সমস্যা নেই ৷ যদি আম্মুকে সঙ্গে নিয়ে আসে তাহলে ঝামেলায় পড়তে হবে ৷ গভীর চিন্তায় পড়ে গেলাম ৷ গম্ভীর ভাব নিয়ে গালে হাত দিয়ে চিন্তামাখা মন নিয়ে বসে রইলাম ৷ অকস্মাৎ, রাকিব রুমের ভেতর ঢুকলো ৷ তবে তার ডান হাতটা পিছনে রাখা ৷ পিছনে কেন রাখলো হাতটা কে জানে? রাকিব অনুরোধের স্বরে বলল,

—-আপু, প্লিজ চেয়ার থেকে একটু উঠুন না ৷

অনিচ্ছা সত্বেও বিরক্তবোধ নিয়ে চেয়ার থেকে উঠলাম ৷ রাকিবের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম ৷ আমাকে চমকে দিয়ে রাকিব হাঁটুগেড়ে দাঁড়ালো ৷ অতঃপর সে যা করলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না ৷ ভাবনাতেও ছিলনা যে পিচ্চিটা এমন কাজ করবে ৷ রাকিব একগুচ্ছ গোলাপ আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে হাস্যজ্জ্বল মুখে নরম মোলায়েম কন্ঠে বলল,

—-আই লাভ ইউ সাদিয়া! এটা শুনে হতভম্ব আমি ৷ মূর্তির মত নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম ৷ মনে হচ্ছিল আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলবো ৷ পরক্ষণে আমার খুব হাসির উদয় হলো ৷ কিন্তু অনেক কষ্টে হাসি থামালাম ৷ তবে মুখ চেপে চাপা হাসি হাসতেই হলো ৷ কিছু মুহূর্ত পর রাকিবকে রাগান্বিত স্বরে বললাম,

—-বেয়াদবী বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু! এক্ষণই তোমার আম্মুকে বলে দিবো, বুঝলে? রাকিব অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থেকে বিস্ময়ভরা কন্ঠে বলল,

—-এটা কি হলো সাদিয়া? আমি তোমাকে প্রোপজ করলাম আর তুমি কিনা আমাকে আম্মুর ভয় দেখাচ্ছ? যাও, আম্মুকে ডাকো ৷ আমিও আম্মুকে বলবো, তুমি আমাকে কিস করেছিলে!”
—-কিহ? ফাজিল ছেলে ৷ যাও, তোমাকে আজ পড়াবোই না ৷

রাকিবের চাচ্চুর নাম রাফাত ৷ তার সাথে আমার ২ বছরের সম্পর্ক ৷ রাফাতের জন্যই রাকিবকে টিউশনি করাচ্ছি ৷ কিন্তু পিচ্চিটা এত পাঁজির পাঁজি যে পড়ানো দায় হয়ে যাচ্ছে ৷ রাফাতের সঙ্গে বিকেলে দেখা করলাম রেস্টুরেন্টে ৷ রাকিবের সমস্ত কথা খুলে বললে রাফাত বললো, “পিচ্চি একটা ছেলে তার কথায় কান দিও না ৷” আমিও সেটা ভেবে নিজেকে আশ্বস্ত করলাম ৷ কিন্তু বাসায় পৌঁছেই রাকিবের আম্মুর নম্বর থেকে কল এলো ৷ রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো পিচ্চিটার কন্ঠ ৷ আপনাআপনি খিলখিলিয়ে হাসি বের হয়ে এলো আমার ৷ তাকে হাসতে হাসতে বললাম,

—-কিসের জন্য ফোন দিলে? রাকিব নিচু স্বরে বলল,
—-আমাকে হ্যাঁ, না কোনো উত্তরই তো দিলে না? এত রোমান্টিক ভাবে আই লাভ ইউ বললাম তোমাকে, অথচ তুমি কিছুই বললেনা?
—-শোনো, তোমার সাথে পরে কথা বলবো ৷ আমাকে কেউ একজন ফোন দিয়েছে ৷
—-কে ফোন দিয়েছে?
—-তোমার চাচ্চু!
—-চাচ্চু কেন ফোন দিবে? চাচ্চুর সাথে তোমার কি?
—-কই, কিছুনা তো? এমনি ফোন দেয় মাঝেমধ্যে ৷
—-এমনি তাইনা? সব বুঝি আমি!

রাকিব কথাগুলো কাঁদতে কাঁদতে বলছিল ৷ একপর্যায়ে কান্নার আওয়াজ বাড়িয়ে ফোনটা কেটে দিলো! জীবনে বহু পিচ্চি দেখেছি, এরকম পিচ্চিকে দেখিনি ৷ ভাবতেছি রাফাতের সাথে কি না কি শুরু করে দেয়! রাফাতকে ফোন দিলাম ৷ রিসিভ করলেই তোরজোর কন্ঠে বললাম,

—-সর্বনাশ হয়ে গেছে, রাকিব ফোন দিয়েছিল ৷ তাকে শুধু বলেছি তোমার চাচ্চু আমাকে ফোন দিচ্ছে ৷ এটা শুনে সে রাগে অভিমানে কাঁদতে কাঁদতে বলল, “চাচ্চু কেন ফোন দিবে? আমি বুঝিনা তোমাদের মধ্যে কি চলছে?” কথাটা বলেই সে ফোনটা কেটে দিলো ৷ দেখো, তোমার সাথে সে রাগারাগি করে কিনা? আমার তো মনে হয় আজ থেকে সে তোমাকে শত্রুর চোখে দেখবে ৷ আমার না খারাপ লাগছে! রাফাত তীক্ষ্ণকন্ঠে বলল,

—-আরে এজন্য চিন্তা করছো কেন? এতটুকু বাচ্চা ছেলে সে! পরেরদিন শুক্রবার বিধায় টিউশনি নাই ৷ রাফাতের সাথে বিকেলে দেখা করলাম ৷ সে বলল,

—-রাকিব তো আসলেই পাগল হয়ে গেছে ৷ ভাই, ভাবীকে সে আমাদের সম্পর্কের কথা বলে দিয়েছে ৷ এমনকি সে তোমাকে পছন্দ করে এটাও বলেছে!

এটা শুনে সত্যিই খুশি হলাম ৷ কতদিন হলো রাফাতকে বলছি যে সে যেন তার বাবা, মাকে আমাদের সম্পর্কের কথা বলে ৷ তার পরিবারের লোকজন জেনে গেলে আমাদের ব্যাপারটা নিয়ে ভাববে তারা ৷ কিন্তু রাফাত ভয়েই তার মা,বাবাকে আমাদের সম্পর্কের কথা বলতে পারেনা ৷ সেই কঠিন কাজটির সমাধান রাফাতের ভাতিজা করে দিলো ৷ রাকিব যেহেতু তার বাবা, মাকে ব্যাপারটা বলে দিয়েছে নিশ্চয় তারা রাফাতের বাবা, মাকে ব্যপারটা জানিয়ে দিবে! খুশিতে আমার চোখ চকচক করছিল আর চেহারা করছিল জ্বলজ্বল ৷ পুলকিত হয়ে তীক্ষ্ণকন্ঠে রাফাতকে বললাম,

—-দেখছো, তোমার ভাতিজা আমাদের কতবড় একটা উপকার করলো? রাফাত বোকার মত ভাব নিয়ে নরম কন্ঠে বলল,
—-মানে? কেমনে?
—-বোকা,

তোমাকে কতদিন বলেছি তোমার বাবা, মাকে আমাদের সম্পর্কের কথা খুলে বলো ৷ বিয়ের ব্যাপারে কথা বলো ৷ কিন্তু তুমি কি কখনো বলেছো? বলতে পারোনি, কারণ তুমি একটা ভীতুর ডিম ৷ সেই কাজটা রাকিব করে দিলো ৷ নিশ্চয় এবার তোমার বাবা, মা আমাদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলবে! তারা আমার বাবা, মায়ের নিকট বিয়ের প্রস্তাবও পাঠাতে পারে! রাফাতের মাথায় বোধহয় এই ব্যাপারে হুশ ফিরলো ৷ তার চোখে মুখে খুশির ছাঁপ লক্ষ্য করলাম ৷ খুশিতে সে আমাকে জড়িয়ে নিলো বুকে পরদিন ৩টার দিকে একটা গোলাপী রঙের শাড়ি পড়ে রাফাতের বাড়ি গেলাম রাকিব কে পড়াতে ৷ কিন্তু বাড়িতে প্রবেশ করতেই রাকিব আমাকে জড়িয়ে ধরে আন্দলিত কন্ঠে বলল,

—-সাদিয়া, আজকে তোমাকে বলতেই হবে তুমি আমাকে ভালবাসো কি না? যদি না বলো, তাহলে আমি পড়াশোনা বাদ দিবো ৷ মদ, গাজা খাবো ৷ টোকাইগিরি করবো ৷ এবার বলো তুমি আমাকে ভালবাসবে কিনা? রাকিবের মা তাকে আমার শরীর থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল ৷ এবং ভাবী আমাকে শক্তকন্ঠে বলল,

—-সাদিয়া, তুমি বাড়ি চলে যাও ৷ রাকিবকে আর পড়াতে এসোনা ৷

মনটা বেজার হয়ে গেল ৷ মলিন চেহারা নিয়ে বাড়িতে চলে গেলাম! পরেরদিন দুপুরে রাফাতের বাবা, মা ও রাফাতের ভাবী আমাদের বাসায় এলো ৷ আমার ও রাফাতের বিয়ে নিয়ে আলোচনা করতেই তাদের আগমণ ৷ অবশেষে, রাফাতের সঙ্গে আমার বিয়ের দিন ধার্য্য হলো! খুশিতে আমার নাচতে মন চাচ্ছিল ৷ এত সহজে বিয়ের দিন ঠিকঠাক হবে কিছুতেই কল্পনা করিনি!

বিয়ের রাতঃ বাসর ঘরে বসে আছি ৷ পরনের শাড়িটা খুলে থ্রি-পিস পরে আছি ৷ রাফাতের আবদার ছিল এটা ৷ রাকিব সেই সকাল থেকে কান্না করেই যাচ্ছে ৷ যখন রাফাত আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে এলো, তখন সঙ্গে রাকিবও এলো ৷ এছাড়া ওর কান্না থামানো সম্ভব ছিলনা ৷ কবুল বলার সময় তো সবচেয়ে বড় ঝামেলাটা রাকিবই করছিল ৷ কাজী যখন আমাকে বলছিল বলো মা কবুল ৷ তখন রাকিব বলছিল খবরদার সাদিয়া তুমি এটা করবেনা ৷ নাহলে আমি হারপিক খেয়ে মরে যাব ৷ তার কথা শুনে দেরি না করে আরো তাড়াতাড়ি কবুল বলেছিলাম ৷ কবুল বলার ফলে রাকিবের কান্না কিছু সময়ের জন্য থেমে গিয়েছিল ৷ আবারো শুরু হয়েছিল তার কান্না, এখনো চলমান আছে! সে এখন আমার রুমে ৷ হালকা শব্দ করে কাঁদছে সে ৷ সেই যে আমি রুমে ঢুকেছি তখন থেকে সে আমার পাশে ৷ কান্নাটা থামছিলনা তার! রাফাত যখন রুমের ভেতর এলো ৷ তখন রাকিব হিংস্র বাঘের মত হিংস্র রুপ নিয়ে, অগ্নিঝরা কন্ঠে বলল,

—খবরদার চাচ্চু! তুমি এই রুমে আসবেনা ৷ সাদিয়াকে তুমি বিয়ে করলে কি হবে, সে আমার ৷ তাকে বলে দেখো, সে তোমাকে নয় আমাকেই ভালবাসে ৷ আমি ফিক করে হেসে রাকিবের লাল টুকটুকে গালটা টিপে দিয়ে দুষ্টুমির স্বরে বললাম,

—-ঠিক বলছো রাকিব! আমি রাফাতকে নয়, তোমাকে ভালবাসি ৷ আসো, তুমি আমার বুকে আসো! তখন রাফাত কান্নার অভিনয় করতে লাগলো ৷ গলা ছেড়ে হাউমাউ করে যেভাবে কাঁদে সবাই, রাফাতও সেভাবে কাঁদছিল ৷ রাকিব তার চাচ্চুর কান্না দেখে, বাস্তব কান্না মনে করলো ৷ সে ভয় পেয়ে গেল বলে মনে হলো ৷ তার চোখে, মুখে অপরাধবোধ ও চিন্তার ছাঁপ খুঁজে পেলাম ৷ ওদিকে রাফাতের কান্নার শব্দ শুনে আমার শ্বশুর, শ্বাশুরী ও ননদ চলে এলো ৷ দরজায় কড়া নেড়ে আমার ননদ বলতে লাগলো

—কি হলো ভাইয়া কাঁদছো কেন? বাসর ঘরে কেউ এভাবে কাঁদে ৷ পাগল হয়ে গেলে নাকি?

আমি দরজাটা খুলে দিলাম ৷ ওদিকে রাকিব এবার হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো ৷ কাঁদতে কাঁদতে তার চাচ্চুকে জড়িয়ে ধরে বলল,

—-চাচ্চু কেঁদোনা ৷ আমি এতদিন অভিনয় করেছি ৷ তোমরা তো জানো আমি খুব ছোট ৷ আমার কি প্রেম করার বয়স হয়েছে? আমি তো চেয়েছিলাম সাদিয়া আন্টির সাথে তোমার যেন বিয়ে হয় ৷ ভাবছো এটা কবে থেকে চাইতে শুরু করি? যেদিন জানতে পারলাম তোমরা একে অপরকে ভালবাসো ৷ আজ থেকে ৯দিন আগে সাদিয়া আন্টি আমাদের বাসায় আমাকে পড়াতে এসেছিল ৷ ঐদিন আমি কিছুটা অসুস্থ্য ছিলাম তাই পড়তে চাইনি ৷ তখন আন্টি ছাদে গিয়েছিল ৷ রাফাত আঙ্কেলও সেখানে ছিল ৷ আমি কি মনে করে যেন ছাদে গিয়েছিলাম ৷ ছাদে যাওয়ামাত্র দেখতে পেয়েছিলাম আন্টিকে আঙ্কেল জড়িয়ে ধরে আছে ৷ তারপর আন্টি বলছিল, “আচ্ছা রাফাত, তুমি আমাদের ব্যাপারটা তোমার বাবা, মাকে কবে বলে দিবে? আমাকে তো যখন তখন যার তার সাথে বাবা,মা বিয়ে দিতে পারে ৷ তখন কি হবে বলোতো? তুমি যেভাবে পারো তোমার বাবা, মাকে আমার কথাটা বলো ৷ তারা নিশ্চয় তোমার বিয়ে নিয়ে ভাববে ৷ তুমি তো বেকার নও ৷ ভাল একটা জব করছো!”

একথা শুনে বুঝতে পারি তাদের মধ্যে প্রেম আছে ৷ আন্টি চাচ্ছে আঙ্কেলকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে কিন্তু আঙ্কেল তার বাবা, মাকে ব্যাপারটা বলতে পারছেনা ৷ এজন্য আমি এমন প্ল্যান করলাম যাতে আমি আমার আব্বু, আম্মুর নিকট আঙ্কেল, আন্টির সম্পর্কের কথা বলে দিতে পারি ৷ এবং আমি এমনভাবে আন্টির সাথে দুষ্টুমি করি যাতে আব্বু, আম্মু আমার দাদা, দাদীকে তাদের বিয়ের জন্য চাপ দেয়! আর সেটাই হলো ৷

প্লিজ আঙ্কেল তুমি আর কেঁদোনা, প্লিজ! রাকিবের মুথ থেকে এসমস্ত কথা শুনে রাফাতের নাটকীয় কান্না তো শেষ, সেইসাথে সে বেহুশ ৷ শুধু সে ই নয় আমার শ্বশুর, শ্বাশুরি, ননদও বেহুশ ৷ আর আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম বেহুশ হবো কি হবোনা!

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত