তরাস

তরাস

ডানদিক ফিরে শুয়েছিলাম। হঠাৎ কঠিন কন্ঠে ফিসফিসিয়ে কে যেন বলে উঠলো -খবরদার বামে তাকাবি না।
এমনিতেই আমার স্বভাব হচ্ছে কেউ কিছু করতে নিষেধ করলে সেটা আরও আগ্রহ নিয়ে করা। তাছাড়া এখন রাত প্রায় দুটো বাজার কথা ।

এ সময়ে সায়র ছাড়া কে আর এমন ফাজলামি করবে। সায়র আমার ছোট ভাই ভাবলাম ও নিজের রুমে একা থাকতে ভয় পাচ্ছে তাই হয়তো আমার পাশে এসে শুয়েছে। বামপাশ ফিরে ভাল করে চেহারার দিকে না তাকিয়েই একটা থাপ্পর দিয়ে বললাম- ফাজিল নিজে ভয় পাচ্ছিস তো আমাকেও ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করছিস! ভেংচি কেটে বললাম খবরদার বামে তাকাবি না… তোর এ কথায় কেউ ভয় পাবে! পাগল ছেলে। থাপ্পর খেয়ে সায়র অনেকটা গরগর মতো শব্দ করলো। অনেকটা রাগান্বিত বিড়ালের মত। বাথরুমের লাইট জ্বালানো ছিল। যদিও দরজা বন্ধ তারপরও হালকা আলোয় আমার রুম আলো-আঁধারি হয়ে আছে। এমন আজব শব্দে কিছুটা বিস্মিত হয়ে সায়রের দিকে ভাল করে তাকালাম।

বুকের ভেতর হৃদপিন্ডটা ধক করে লাফিয়ে উঠলো — একি এ তো সায়র না! অগ্নিদৃষ্টি নিয়ে যেন আমিই আমার দিকে তাকিয়ে আছি। এ যে হুবহু আমার মতো দেখতে! ঠোঁটে তার তীব্র ঘৃণা মিশ্রিত ক্রূর হাসি। আমি উঠে বসার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। শীত-গরম বারমাস কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমানো আমার অভ্যাস। কাঁথা ছাড়া আমার ঘুম আসে না। কিন্তু এ মুহূর্তে কাঁথাটাকে দড়ি মনে হচ্ছে যা আমার হাত-পা শক্ত করে বেঁধে রেখেছে। আমি কোনো মতেই নড়তে পারছি না মুখ দিয়েও ভাল করে কোনো শব্দ বের করতে পারছি না। ভীত কন্ঠে প্রশ্ন করলাম : কে্কক এ …? হঠাৎ তখন আমার প্রতিচ্ছবি ছোট হওয়া শুরু করলো।

চেহারা আমার, মাথাটা আগের সাইজ কিন্তু শরীরটা ছোট হতে হতে তিন-চার বছরের বাচ্চার সমান হওয়ার পর মাথা দোলাতে দোলাতে হামাগুড়ি দিয়ে খাট থেকে নেমে গেল। অত ছোট শরীরে এতবড় মাথা মনে হচ্ছিল যেকোনো সময় ছিঁড়ে শরীর থেকে আলাদা হয়ে যাবে। ঘামে ভিজে গেছি, কপাল থেকে টপটপ করে কয়েক ফোঁটা ঘাম ঝরে পড়লো বালিশে। কোনো নড়াচড়া নেই আমি স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি জিনিসটা ঠিক যেখানে গিয়ে অদৃশ্য হয়েছে সে কোণে। হঠাৎ গায়ে কেউ হাত রাখলো চমকে উঠে চিৎকার দিতে যাবো তখনই মা কথা বলল– কিরে ঘুমাস নি? ঘুম আসছে না তোর? স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে উঠে বসে বললাম– না, তুমি ঘুমাওনি যে? আমারও ঘুম আসছে না। তোরও যখন ঘুম আসছে না তো চল বারান্দায় গিয়ে কিছুক্ষণ বসি। ঘটনাটা মাকে বলবো কিনা ভাবছি, না থাক এখন না, সকালে বলা যাবে। মাকে বললাম -চল, দাঁড়াও গলা শুকিয়ে আছে একটু পানি খেয়ে নিই।

মা বলল : তুই বস,আমি পানি নিয়ে আসতেছি। মা পানি এনে দিল এক ঢোক খেতেই কেন জানি গা গুলিয়ে উঠলো। বেসিনে গিয়ে গড়গড় করে বমি করে ফেললাম। হাতমুখ,মাথা ধুয়ে নিলাম। দেখলাম মা বারান্দার দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গিয়ে বললাম চল বারান্দায় বসি।

মা বেলী ফুলের টবটার পাশে চুপচাপ দাঁড়ালো। বমি করে ক্লান্ত লাগছে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি নেই বলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলাম। মায়ের দিকে তাকাতাম, মা জ্বলজ্বল চোখে বাসার সামনের আমগাছটার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ মা হিসহিস করে বলল কেমন লেগেছে বিড়ালের স্যুপ? চোখে সেই ঘৃণার দৃষ্টি আর ঠোঁটে সেই একি রকম ক্রূর হাসি।
ভয় আর বিস্ময় এক হয়ে যে দৃষ্টি সৃষ্টি হয় সে দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকালাম বুঝতে বাকি রইলো না যে এ আমার মা না। তড়াক করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। কিরে একা একা এতরাতে তুই বারান্দায় বসে আছিস ক্যান? বাকরুদ্ধ আমি। আমার ডানপাশে বারান্দার দরজায় মা দাঁড়িয়ে আছে। চট করে বামে তাকালাম বেলী ফুলের টবটার পাশদিয়ে একটা সাপ গ্রীল বেয়ে নেমে গেল।

কলা গাছের মত সোজা হয়ে দাঁড়াই আছিস কেন! যা ভিতরে যা। রাতেরবেলা বারান্দায় যাবি না আর। সেহরির সময় হইছে,তরকারি গরম করে নে তুই। আমি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে নিই। মাকে কিছু বললাম না। শুকনো মুখে রান্না ঘরের দিকে গেলাম। শুনেছি এসব নাকি আগুনকে ভয় পায়! তরকারি গরম করতে করতে ভাবতেছি — এসব আমার সাথে কি হচ্ছে! কিছুই বুঝতে পারছি না। ঠিক বিশ্বাসও করতে পারছি না আবার অবিশ্বাসও করতে পারছিনা। এমনিতে সবাইকে বলে বেড়াই আমি এসব ভূত-জিনে ভয় পাইনা। এমন কিছু তো আর আগে ঘটেনি তাই এসবে ভয়টয় ও কাজ করতো না। মাকে বললে মা সবাইকে বলে বেড়াবে আর সবাই আমাকে ক্ষেপাবে। বলবে কি ব্যাপার সাহসী বিভা ভীতু হয়ে গেল নাকি!

মা-বাবা,ভাইয়ের সাথে সেহেরি করতে বসছি।মা ভাত দিচ্ছিল প্লেটে, কানে বেজে উঠলো ঐ কথাটি – কেমন লেগেছে বিড়ালের স্যুপ? গা গুলিয়ে উঠল চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালাম। মা জিজ্ঞেস করলো কিরে উঠে পড়লি যে! ভাত খাবি না? না মা, বমিভাব লাগছে। দু’গ্লাস পানি খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে শুয়ে পড়লাম। পরীক্ষার কারণে গত দু’রাত ও ভাল করে ঘুমোতে পারিনি।আজই পরীক্ষা শেষ হয়েছে আর আজও সারারাত ঘুমাতে পারিনি তাই শোয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘন্টা খানেক ঘুমানোর পর হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল। খাটটা মৃদু কাঁপছে।

বুঝলাম রেলগাড়ি যাচ্ছে,বাসাটা রেললাইনের পাশে তাই রেলগাড়ি যাওয়ার সময় বিল্ডিংটা মৃদু কম্পিত হয়। খাট থেকে নেমে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। আকাশে ছোট ছোট কালো মেঘের টুকরো ধীরে ধীরে হেঁটে বেড়াচ্ছে,পাখি ডাকছে।পাশের বিল্ডিং এর ছাদে একটা কাক চুপচাপ বসে আছে,মৃদু হাওয়ায় বৈদ্যুতিক তারগুলি দুলছে। জানালায় দাঁড়িয়ে বামদিকে তাকালে রেললাইন দেখা যায়। রেললাইনের দিকেই তাকিয়ে আছি। সাদা লুঙ্গি পরা একটা লোক রেললাইনের উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।

হঠাৎ লক্ষ্য করলাম লোকটার শরীরে উপরের অংশ নেই,লুঙ্গিটা যেখানে বাঁধা শুধু ঐ পর্যন্ত বাকী অংশ দেখা যাচ্ছে না। চোখ বন্ধ করে আবার তাকালাম কিন্তু সে একি রকম দেখছি,সাদা লুঙ্গি পরা অর্ধ শরীর হেঁটে হেঁটে দৃষ্টি সীমার বাইরে চলে গেল। ঠিক না ভুল দেখলাম বুঝতে পারছিনা কিছু, দূরের জিনিস আমি ঝাপসা দেখি। এ মুহূর্তে চোখে চশমা নেই তাই ভুল দেখলেও দেখতে পারি। কিন্তু কথা হচ্ছে লুঙ্গি আর পা দেখলাম যখন হাত,মাথা, শরীরের বাকি অংশ দেখতে পাবো না কেন! বিছানায় ফিরে এলাম, মনে মনে বললাম নিশ্চয় সব কল্পনা আমার।ভূতের গল্প আমার খুব পছন্দ,রাতে শোয়ার আগে ভূতের গল্প পড়েছিলাম এখন তাই হয়তো উল্টাপাল্টা কল্পনা করছি। দিনের আলোয় রাতের ভয়ংকরতা কে হাস্যকর লাগে।

বাসাটাতে উঠেছি যে আজ ছয় মাস। এ ছয়মাসে এমন কোনোরূপ সমস্যা হয়নি। এ বাসায় উঠার একমাস পর থেকেই পাশের ফ্ল্যাটের ক্লাস ফাইভের একটা ছেলে আর পাশের বিল্ডিং এর ক্লাস সিক্স এর একটা ছেলেকে পড়াতাম। একজনের নাম শিশির অপর জনের নাম অয়ন। একদিন শিশির পড়ার মাঝখানে হঠাৎ পকেট থেকে একটুকরো পত্রিকা বের করে আমার হাতে দিল। জিজ্ঞেস করলাম এটা কেন? ও বলল পড়ে দেখেন ম্যাডাম। শিরোনামে লেখা ভূতের বাড়ি, ভেতরের সংবাদ এই যে একটি ভৌতিক বাড়িতে দু’বোনের মৃত্যু।আজকাল পত্রিকায় ও কি সব আজগুবি খবর ছাপায়! শিশির আমাকে জিজ্ঞেস করে ম্যাম আপনি ভূত বিশ্বাস করেন? আমি বললাম দেখ শিশির ভূতটুত বলে কিছু নাই,এ শুধু আমাদের মনের ভয়।

শিশির : একটা কথা বলি ম্যাম?

-হুম। কাউকে বলবেন না কিন্তু।
-আচ্ছা।

আমি শুনেছি আপনাদের ফ্ল্যাটটাতে ভূত আছে। আমি হেসে বললাম থাকলে থাকুক তুমি পড়া শেষ কর। আরেকদিন অয়ন বলেছিল এ বাসায় আমাদের আগের ভাড়াটিয়ার ছেলের বউ নাকি পাগল ছিল। মধ্যরাত হলেই নাকি জানালার পাশে বসে জোরে জোরে কান্না করতো।অয়নরাও তিনতলায় থাকতো পাশের বিল্ডিংয়ের তাই জানালা দিয়ে আসা কান্নার শব্দে ওদের ঘুম ভেঙে যেত নাকি। শিশিরের মায়ের কাছে শুনেছি আগের ভাড়াটিয়েরা নাকি কারো সাথে তেমন মিশতো না। আর এ বাসায় আসলেই নাকি কেমন বিশ্রী গন্ধ লাগতো তখন তাই শিশিরের মাও তেমন আসতেন না।হাবিজিবি এসব ভাবতে ভাবতে আবার ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম।

ঈদ পেরিয়ে গেল, ঐদিনের পর এ সতেরদিনে এমন কেনোকিছুর সম্মুখীন হইনি।আমি মোটামুটি নিজেকে বুঝিয়ে নিয়েছি যে ঐ দিন ভূতের গল্প পড়ে উল্টাপাল্টা কল্পনা করছি।আমার এক ফুফু অসুস্হ, মা-বাবা তাকে দেখতে যাচ্ছে। আমার সাথে সায়রকেও বাসায় রেখে যেতে চাইলো কিন্তু পাজি ছেলেটা মায়ের পিছু ছাড়লো না।বাসায় আমি একা, সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে মায়েরা আসতে দেরী হবে। ভাবলাম মায়ের ঈদের শাড়িটা একটু পরে দেখি কেমন লাগে।মাঝে মাঝে এমন করি শাড়িটাড়ি পরে সেজেগুজে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নাচি,গাই,অভিনয় করি।কেন জানি নিজের এমন পাগলামিতে নিজেরই মজা লাগে! আজও শাড়ি পড়ে সেজেগুজে একবার সোজাসুজি,আরেকবার ডানপাশ ফিরে,বামপাশ ফিরে আয়নায় নিজেকে দেখছিলাম।

বাহ্ শাড়িটাতে আমাকে খুব সুন্দর লাগছেতো, বামপাশ ফিরে আয়নার দিকে তাকিয়ে হাসলাম।কিন্তু আয়নায় আমার প্রতিচ্ছবি ভীত দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আমার দিকে।এটা দেখে যেই আমি সত্যিই ভীত দৃষ্টিতে তাকালাম, তখন আয়নায় আমার প্রতিচ্ছবি ঘৃণার দৃষ্টি নিয়ে সেই ক্রূর হাসি হাসলো।দ্রুত আয়নার সামনে থেকে সরে দাঁড়ালাম। এখন রাত বারটা,বাবা-মা,সায়র নয়টার দিকেই বাসায় এসে পৌছে গেছে। কারেন্ট নেই,বৃষ্টি আসবে মনে হয় বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।জানালাটা বন্ধ করতে গেলাম,তখনই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো। বৃষ্টি দেখলেই ছোঁয়ার লোভ জাগে। জানালার ফাঁক গলে হাত বাড়িয়ে দিলাম বৃষ্টি ছুঁতে।আমার হাতে বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা পড়ছে,চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির শীতল স্পর্শ অনুভব করছিলাম।হঠাৎ হাত ধরে হেঁচকা টান দিল কে যেন।ভয় ও ব্যথায় কোঁকিয়ে উঠলাম।মা বোধ হয় জানালা বন্ধ আছে কিনা সেটা দেখার জন্যই উঠেছিল।জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে রে..?

-ব্যথা পেয়েছি মা,মনে হল কেউ আমার হাত ধরে টান দিল।
-তিনতলার উপর জানালা দিয়ে কে তোর হাত টান দিবে! যা আরও ভূতের গল্প পড়ে পড়ে উল্টাপাল্টা চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুর। এজন্য মাকে কিছু বলতে চাইনি,শুনে উল্টো বকে। চলে যেতে গিয়ে মা আবার পিছু ফিরে জিজ্ঞেস করলো তুই কি ভয় পাচ্ছিস? আমি কি তোর সাথে থাকবো আজ?

-না মা ভয় পাচ্ছি না,অন্যদিন হলে ভাব নিয়ে বলতাম বিভা ভয় পায় না।মা চলে গেল। জানালা বন্ধ করে দিয়ে আমি শুয়ে পড়লাম। হঠাৎ মাথার নিচের বালিশে আমার মাথা ডুবে যেতে শুরু করলো,ডুবে যাচ্ছি ডুবে যাচ্ছি.. নাকে মুখে তুলো ঢুকতে শুরু করলো।দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো,ধীরে ধীরে একসময় আমার শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে গেল। আমাদের বাড়ির আঙিনায় আমার লাশ রাখা,আমার লাশের পাশে বসে আমার মা-বাবা, ভাই, আত্মীয়স্বজন কাঁদছে।আমি সিঁড়িতে বসে আমার লাশ দেখছি আর আপনজনের দিকে তাকিয়ে ক্রূর হাসি হাসছি!

প্রায় দু’ঘন্টা পর দুঃস্বপ্নটা দেখে ঘুম ভেঙে গেল। বৃষ্টি হচ্ছিল বলে ফ্যান বন্ধ করে কাঁথা মুড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম।এখন দেখি ঘামে ভিজে গেছি একদম।বৃষ্টি থেমে গেছে, কেমন যেন ভ্যাপসা গরম।উঠে গিয়ে ফ্যানের সুইস অন করে আবার বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম।ফ্যান চলতেছে না,ব্যাপার কি! কারেন্ট তো আছে। চোখ তুলে তাকালাম ফ্যানের দিকে এবং চমকে উঠলাম। ফ্যানের ডানায় বসে আছে তিন বা চার বছরের একটি বাচ্চা।আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।ভাবছি উঠে মায়ের রুমের দিকে দৌড় দিব, তখনই এক লাফে এসে আমার বুকের উপর বসলো।ভয়ে আমি পাথর হয়ে গেলাম।হৃদপিন্ডটা যেন ঢোল বাজাচ্ছে এত জোরে ধকধক করছে। ভীত চোখে চেয়ে আছি বাচ্চাটা হাসছে,দাঁতে রক্তলেগে আছে।

ধীরে ধীরে বাচ্চাটার মুখ আমার মুখের কাছে আসছে…, ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বুড়ো কন্ঠে বাচ্চাটা কি যেন বলল, তারপর চিঁ চিঁ স্বরে হাসতে লাগলো। মুখ থেকে বেরিয়ে আসা তীব্র পচা গন্ধে পেট গুলিয়ে উঠলো।চোখের পাতা ভারি হতে লাগলো,আমার ঘুম পাচ্ছে ভীষণ ঘুম পাচ্ছে একদিন পর আমার জ্ঞান ফিরলো।সব জানার পর মা সিদ্ধান্ত নিল বাসাটায় আর থাকবে না। সাপ্তাহ – দশ দিনের মধ্যেই বাসাটা পরিবর্তন করবে।আর এ কিছুদিনের জন্য আমাকে ফুফির বাসায় পাঠিয়ে দিবেন। চোখ ছোট করে মায়ের দিকে তাকালাম।

— এভাবে তাকিয়ে আছিস ক্যান?
–ফুফুর বাসায় পাঠিয়ে দিবে! জিনিসটা যদি আমার সাথে চলে যায় তবে ? মায়ের চোখে তরাস(ভয়/শঙ্কা)। আর আমার মুখে সেই ক্রূর হাসি।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত