পরকীয়া

পরকীয়া

-পরকীয়া করছিস তুইই!??? লাবন্য কথাটা বেশ উচ্চস্বরেই বলল যার কারণে রেস্টুরেন্টের প্রায় সবাই আমাদের দিকে ঘুরে তাকালো।আমি ওদের উদ্দেশ্যে হেসে হেসে বল্লাম “হেহে মজা করেছে ও” সবাই আমার দিকে অদ্ভুত একটা লুক দিয়ে নিজের কাজে মন দিল।আমি লাবন্যের মাথায় মেরে বললাম,

-আস্তে কথা বলতে পারিস না??আর এইগুলা কি বলছিস? মাথা ঠিক আছে?
-তোর মাথা ঠিক আছে?তুই একটা বিবাহিত ছেলের প্রেমে পড়েছিস বৃষ্টি।
-তো আমি কি আগে জানতাম নাকি যে ও বিবাহিত!? আর তাছাড়া আমি কি ওর সাথে প্রেম করতে যাচ্ছি নাকি যে তুই পরকীয়া বলছিস?
-জানতি না কেন?আজব!! নিল তোর অফিসের বস আর তুই জানতি না?৫ মাস হল জব করছিস।আর মানুষ প্রেমে কেন পড়ে?প্রেম করার জন্যেই তো?

-হ্যা কিন্তু সে বিবাহিত তো করবো না প্রেম।আর সে আমাকে কখনোই বলে নি যে সে বিবাহিত।
-তোকে না বলেই তোর সাথে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খেয়ে দেয়ে বেরিয়েছে। তার মানে বুঝসিস? নিলও তোকে লাইক করে!!

-উফফ, না রে বাবা।আমরা অফিসের কাজে যেতাম।
-অফিসের কাজে!!!?অফিস ছুটির পর?
-তোকে এই কথা বলাই ভুল হইছে।

আমি আর লাবন্যের কথা না শুনে উঠে চলে আসলাম।।ট্যাক্সিতে উঠে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। লাবণ্য যা বলছে তা সম্পুর্ণ ভুল ও না!!নিল চাইলেই আমাকে বলতে পারতো যে সে বিবাহিত কিন্তু বলে নি। নিল আমার সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে কাজের কথা না এইদিক ওইদিকের কথাই বলতো। কিন্তু কখনো সে বলে নি যে সে বিবাহিত!! কেন?? ৩ দিন আগে যদি কলিগরা নিলের anniversary জন্য সারপ্রাইজ প্লান না করতো তাহলে তো জানতামই না আমি!। আচ্ছা আমাকে না বলার কারণ কি?সেও কি আমাকে পিছন করে? ওর বউ তো সুন্দর দেখতে তবে কেন ও আমাকে পছন্দ করবে? তবে সে কি বিবাহিত জিবনে হ্যাপি না?? নাহ!! এইটার উত্তর যদি হ্যাও হয় তাহলেও এইটা ভুল। কিন্তু নিজের মনকে কি বুঝাবো? এইসব ভাবতে ভাবতেই অফিসে পৌছাইলাম ট্যাক্সি থেকে নেমে অফিসে ডুকতেই নিল সামনে পরলো আমি ওকে এড়িয়ে চলে যেতে লাগবো তখনই ও ডাকলো আমি ওর দিকে না ঘুরেই বলাম,

-বলুন?
-লাঞ্চ ব্রেক শেষ অনেকক্ষন আগে এতো লেট হল যে আসতে?
-এতো লেট কোথায়?মাত্র ১০ মিনিট লেট
-হুম তাও!!?
-এই ১০ মিনিটে কি অনেক কাজ পিছায় গেছে আপনার?(ওর দিকে ঘুরে বল্লাম)
-নাহ সেটা না।
-আচ্ছা(বলেই চলে আসছিলাম)
-শোনো…..
-হুম??(থেমে বল্লাম)
-কার সাথে ছিলে?বফ??(তার এই কথা টা শুনে প্রচুর অবাক হলাম)
-কেন?
-না আগে তো আমার সাথে যেতে এখন আর যেতে চাও না…..
-বউকে নিয়ে যান। আর আমার পারসোনাল ব্যাপার আপনার না জানলেও চলবে।

এই লোকটা কি চায় আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারি না।।উনি কি নিজের ভুল গুলা বুঝে না?নাকি বুঝেও না বুঝার ভান করে?? ওইদিন উনার বউয়ের সাথে আমাকে এমন করে পরিচয় করাই দিছিল যেন উনি আমাকে সারাদিন উনার বউয়ের কথা বলে!! পরেরদিন আবার এসে বলছিল “বৃষ্টি লাঞ্চে যাবা??”আজ আবার এগুলা বলছে?মানে কেমন লোক এটা??আমার প্রতি তার অনুভূতি টা কি সেটাই তো বুঝতে পারি না আমি।সে কি চায়? সে কি আমাকে চাই?চাইলে এখনো বউয়ের সাথে কেন আছে?নাহ এইসব ঠিক এইসব মাথা থেকে সরাতে হবে। যত জলদি সরাতে পারবো ততই ভালো।।।

বেশ কয়দিন ভালোই চলছে, সে আমার সাথে কাজ ছাড়া কথা বলতে আসে না আর আমিও কথা বলতে যাই না।।কথা বলতে আসে না বললে ভুল হবে। সে চাই কথা বলতে সেই আগের মতো আগের মতো লাঞ্চ কফি খেতে যেতে কিন্তু আমিই তাকে এরিয়ে যাই।কাজে থাকলে এইসব মনে থাকে না কিন্তু এই শুক্রবারটা যখন ফ্রি বসে থাকি তখন খুব করে মনে হয় ওর কথা! বিকালে যখন কফি খাই তখন মনে হয় ও যদি পাশে থাকতো!আগে এই শুক্রবারের দিন আমরা কফি খেতে বিভিন্ন কফি হাউজে যেতাম।

প্রায় ঢাকার সব কফি হাউজেই আমাদের যাওয়া হয়ে গেছে। আবার পরক্ষনেই মনে হয় ও আমার না অন্য কারও!! যখনই মনে হয় সে অন্য কারও তখনই বুকের মধ্যে কেমন যেন করে উঠে।আচ্ছা তাহলে এতো দিন আমার সাথে কি ছিল তার!? এতো গুলা দিন যে আমার সাথে সময় কাটাইছে তো ওর বউ কই ছিল?ওর বউ একবারও কলও দেয় নি আমার সাথে থাকাকালীন।। ও সবসময় বলতো ” তোমাকে হারানোর ভয় হয় অনেক”আমি হেসে বলতাম “আরে পাগল বন্ধু কখনো হারাই না” ও ওই কথা দ্বারা কি মিন করতে চাইতো ওইটা আজও অজানা।কোনোদিন জানতে পারবো বলে মনেও হয় না।সত্যি বলতে এখন জানতে চাইও না।আম্মুর ডাক পেয়ে ঘুরে তাকালাম আম্মু পাশে এসে বসে বলল,

-কি ভাবছিস?
-কিছু না।।(হেসে বললাম)
-একটা কথা ছিল
-কি কথা জানি
-কি বলতো!!?(বেশ অবাক চোখে তাকাইয়ে)
-তোমরা আমার জন্য একটা ছেলে দেখেছো।
-কিভাবে জানিস তুই?

-কাল তুমি আর আব্বু কথা বলছিলা তো শুনেছি আমি।(হেসে বললাম)
-তুই একটা বেয়াদব হইছিস। কারও কথা কান পেতে শুনতে নাই জানিস না?
-আমার কথাই তো হচ্ছিল।আচ্ছা যাই হোক আমি রাজি
-কিহ?
-আমি ছেলেটার সাথে দেখা করতে রাজি।
-তোর কি শরীর খারাপ নাকি বৃষ্টি!?!
-নাহ!আজব!
-তো এতো সহজে রাজি হয়ে গেলি যে?
-বিয়ের বয়স হইছে তো তাই।
-থানক্স মা।।(বলেই মা আমাকে জরাই ধরলো)যাই তোর বাবাকে বলে আসি।

বলেই আম্মু চলে গেল।।আসলে এই কয়দিন আমি অনেক ভেবে দেখলাম যে একটা বিবাহিত ছেলেকে ভালোবেসে এইভাবে দেবদাস হয়ে থেকে লাভ নাই। এমনিতে তো নিলকে ভুলতে পারছি না।জব ছাড়ার কথাও ভেবেছি কিন্তু যেকয়টাই apply করেছি একটা থেকেও কোনো সাড়া পাই নি, তো অন্য কেউ আসলে হয়তো ভুলে যাবো।।

পরেরদিন আম্মু সব ঠিকঠাক করে ওই ছেলেটার সাথে দেখা করার তারিখ ঠিক করলো।যেদিন তারিখ দিল ওইদিন আমার অফিস তাই আম্মুকে বল্লাম ওই ছেলেকে আমার অফিসে আসতে বলতে কয়েক মিনিটের জন্য কি একদিন অফ নিয়া যাই?তাই অফিসে আসতে বলাম।ছেলেটাও রাজি হয়ে গেল!!আমি ছেলেটার নাম না শুনে তার পিক না দেখেই দেখা করবো ঠিক করলাম।এইটা কেন করলাম নিজেও জানি না।

লাঞ্চব্রেকে রেস্টুরেন্টে এসে বসলাম।ছেলেটার আসার কথা ছিল ২ টাই এখন ২.২০ বাজে! এখনো আসে নি।লেট লটিফদের আমার একটুও পছন্দ না।আমি মেয়ে হয়ে ওয়েট করছি আর উনি লেট!! নাহ এই ছেলেকে বিয়ে করলে তো সারাজীবন ওয়েট করে করে কাটাতে হবে।। নাম্বারটাও নিয়ে রাখি নি যে কল করবো।রাগ লাগছে খুব এখন।। চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালাম চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তখনই সামনে একটা ছেলে নীল শার্ট আর নীল জিন্স হাতে ঘড়ি পড়ে আমার সামনে এসে দাড়াইয়ে বলল,

-বৃষ্টি!?
-হ্যা।আপনি?(দেখতে ভালোই)
-আমি আকাশ।সরি লেট হয়ে গেছে।আসলে চিনতে একটু প্রব্লেম হচ্ছিল।
-কি চিনতে?আমাকে না যায়গাটা?
-যায়গাটা তোমাকে এক নজরেই চিনে ফেলেছি।(বলেই মুচকি হাসি দিল)

-বসুন।
-আপনি নিশ্চয়ই রেগে চলে যাচ্ছিলেন।(বসতে বসতে বললো)
-ইয়ে মানে ওই আর কি.(চুল কানের পাশে গুজতে গুজতে বল্লাম।)
-হুমম।আপনার রাগ বেশি বুঝলাম।বিয়ের পর সামলায় থাকতে হবে আমাকে।
-বিয়ের জন্য হ্যা বলি নি এখনো!
-বলবা জানি।(আবার মুচকি হাসলো।ছেলেটার হাসি সুন্দর বলতে হবে । আপনি থেকে তুমিতে চলে আসছে এতো জলদি!!)

-কি করেন আপনি?
-ডাক্তার।
-কিহহ??!?(পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলাম।এতো young doctor?? মনে হয় পড়াশোনা শেষ হয় নি।)
-কেন হতে পারি না?
-না মানে আপনার তো বয়স বেশি মনে হচ্ছে না তাই সরি।
-আরে সরি বলছো কেন?আমি তো মজা করছিলাম।(বলেই হাসতে শুরু করলো)
-তো আপনি ডাক্তার না?
-নাহ।ব্যবসা করি।
-তো মিথ্যা বলেন যে?ভাবছিলেন ডাক্তার শুনে হ্যা বলে দিবো?
-সত্যি বলতে হ্যা।(রাগি চোখে তাকালাম দিকে)আরে আরে এভাবে তাকাইও না ভয় লাগে।।
-কিভাবে তাকালাম?

-যেন খেয়ে ফেলবা আমাকে।(উনার কথা শুনে এইবার আমিও হাসলাম)
-আমি মিথ্যার জালে অনেক সহজেই ফেসে যাই।
-সরি, আমি আসলেই মজা করছিলাম। এতো সিরিয়াসলি নিবা ভাবি নি।(বেশ অস্থির হয়ে বললো)
-আরে না এমনিতেই বললাম আর কি।তো আপনার পছন্দ অপছন্দ বলেন।বিয়ে করলে এইগুলা জেনে রাখা উচিত।
-তারমানে আমাকেই বিয়ে করবা??(বেশ excited হয়ে জানতে চাইলো)
-হয়তো!! ভেবে বলবো।আগে আপনার সম্পর্কে জানি তারপর। (অন্যদিকে তাকাইয়ে হেসে বললাম)

তার পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে জানতে গিয়ে খাওয়াটা আর হয়ে উঠলো না।শুধু কফি খেয়েই উঠতে হল কারণ আমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছিল।তবে তার সাথে কথা বলে এইটা বুঝলাম যে আমার আর তার মধ্যে কোনো মিল নাই।সম্পূর্ণ উল্টো আমরা।আমার কফি পছন্দ তার চা।আমার ঝাল পছন্দ তার মিষ্টি।আমার আর নিলের মধ্যে অনেক মিল। যেমন কফি!!এই জন্যেই ঘুরে ঘুরে কফি খেতাম। কিন্তু এতো অমিল থাকার পরেও আকাশের সাথে কথা বলতে আমার ভালোই লাগছিল।এইসব ভাবতে ভাবতেই আমি আমার কেবিনে এসে বসতেই নিল আমার সামনে এসে দাড়াইয়ে রাগি চোখে তাকালো আমি ওর দিকে তাকাইয়ে বললাম,

-সরি লেট হয়ে গেছে আজ অনেক।
– ওই ছেলেটা কে ছিল?
-কোন ছেলে?(ওর দিকে তাকাইয়ে বল্লাম)
-যার সাথে এতোক্ষন ছিলে।গল্পে এতোই মজে ছিলে যে খেতেই ভুলে গেছো?(বেশ রাগান্বিত স্বরে বলল কথাটা।এমন ভাব যেন আমার তার গফ, তাকে না বলে কোন পোলার সাথে দেখে করতে গেছিলাম।এর চেয়েও বড় কথা সে ক্যামনে জানলো আমি না খেয়ে চলে আসছি?)

-এক মিনিট আপনি কিভাবে জানেন যে আমি না খেয়ে চলে আসছি?? follow করছিলেন নাকি আমাকে?
-জ্বী না।তুমি হয়তো ভুলে গেছো ওই রেস্টুরেন্টে আমিও যাই খেতে।একসময় তুমিও যাইতা আমার সাথে।আর এখন…..

– আর এখন আমি জেনে গেছি যে আপনি বিবাহিত।।এখন আমি জেনে গেছি যে আপনি আমার থেকে এইটা লুকাইয়ে আমার সাথে সময় কাটাতেন।
-বৃষ্টি!! দেখো….
-এইটা অফিস,অফিসে আমি সিনক্রিয়েট করতে চাচ্ছি না। তাই প্লিজ যান।আর হ্যা ওই ছেলেটা আমার হবু জামাই। কয়দিন পর বিয়ে আমাদের।আপনার মতো লুকাবো এইসব ব্যাপার।

উনি কিছু বলতে যাবে তখনই আমাদের এক কলিগ আমার কেবিনে ডুকলো। তাই নিল ও কিছু না বলে মাথা নিচু করে চলে গেল। আচ্ছা আমি কার সাথে কথা বলি না বলি এইটাতে কি ওর কিছু আসে যায়?ও কি আমাকে অন্য কারও সাথে দেখে jealous!? তাহলে কি ওরও কি আমার প্রতি….

-এইই বৃষ্টি!?! (কলিগের ডাকে ঘোর কাটলো)
-হ্যা সরি বলেন?(আবার ওইসব উল্টা পাল্টা চিন্তা আসছে মাথায় না এই জব না ছাড়লে আর হচ্ছে না)
-এই ফাইলটা দেখো তো……
-হুম দিন।।

অফিস ছুটির পর বের হয়ে উবার ডাকালাম। আসতে একটু সময় লাগবে।তাই ওয়েট করতে লাগলাম। তখনই পাশে এসে নিল দাড়ালো আমি ওকে দেখে একটু দূরে সরে গেলাম।ও আবারও আমার পাশে দাড়ালো।একটা দীর্ঘনিশ্বাস নিয়ে বলল,

-এতো ঘৃণা করো এখন যে পাশে দাড়াতেও প্রব্লেম হয়??

তার প্রশ্নটা শুনে আমি কি উত্তর দিবো ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না তাই চুপ থাকলাম।। ঘৃণা!?! না হয়তো ঘৃণা না ওই ঘৃনার আশেপাশে আর কি কারণ আমি এখান ঠিক জানি না সে আমার সাথে সময় কাটাতো ঠিক কোন উদ্দেশ্যে। তবে হ্যা তাকে এখন আমি এতোই অপছন্দ করি যে তার আশেপাশে থাকতেও আমার কেমন যেন লাগে।কিন্তু এই কথাটা তার না জানলেও চলবে।আমাকে চুপ থাকতে দেখে ও আমার দিকে ঘুরে বলল,

-বৃষ্টি! কিছু কথা ছিল।একটু কি বসবা আমার সাথে?
-নাহ।
-প্লিজ্জজ।(এই লোকটা চাই কি আমার থেকে আমি বুঝি না)
-নাহ।আপনার বউ ওয়েট করছে বাসাই। আপনি যান।

উবার এসে সামনে দাড়ালো ততক্ষণে। আমি গাড়িতে উঠতে যাবো তখনই ফোনে একটা mail আসলো, দেখে যা বুঝলাম তা হল আমাকে একটা কোম্পানি জবে রাখতে চায়।।আমাকে দাড়াই থাকতে দেখে সে এসে আমার হাত ধরে বললো,

-প্লিজ,আমার কথাগুলো শুনো শুধু একবার!?
-কি বলবেন?
-কোথাও বসি?
-নাহ!!

-বৃষ্টি প্লিজ!(কাল তো এই জব ছেড়ে দিব আমি তাই যা বলার আজই বলে দিয়ে যাবো আমি)
-অনেক ঘুরেছি রেস্টুরেন্টে আপনার সাথে তখনই যখন বলতে পারেন নি যে বিবাহিত তো আজ কি এমন বলবেন?যা বলার এখানেই বলেন দোয়া করে

-আসলে আমি সরি।আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি তোমাকে বলার কিন্তু বলে উঠতে পারি নি যে আমি বিবাহিত!! (নিচের দিকে তাকাইয়ে বলল)

-কেন?
-প্রথম যেদিন তোমাকে দেখি,,,আমার ভালো লেগে যায়।আর তোমার সাথে সময় কাটানোর পর আমি তোমার প্রতি আরও….
-লজ্জা করে না আপনার?
-আমি বুঝতাম যে তোমারও আমার প্রতি কিছু ফিলিং কাজ করে তাই…
-তাই ভাবলেন এইভাবেই চলতে থাকুক।মেয়েটা যখন অনেক বেশি দূর্বল হয়ে যাবে আমার উপর তখন সরে যাবো।তাই না?

-নাহ আমি আমার বউকে ডির্ভোস দিয়ে দিতাম যদি তুমি বলতা! এমনকি যদি এখন বল এখনই দিয়ে দিবো ডির্ভোস।তোমাকে অন্য কারও সাথে দেখে আমি সহ্য করতে পারছি না।(আমি সত্যি বিলিভ করতে পারছি না মানুষ এতো নির্লজ্জ হয় কিভাবে!?)

-আপনার আসলেই লজ্জা করে না?আপনার বউ যখন আপনার জন্য বাসাই ওয়েট করতো তখন আপনি আমার সাথে ঘুরতে যেতেন!? একবারও মনে হয় নি এইগুলা ভুল?আবার আজ এসে বলছেন আমি বললে ডিভোর্স দিবেন।আমি যদি জানতাম আপনি বিবাহিত তাহলে আপনার সাথে এতো সময় কাটাতাম না।

-নাহ মনে হয় নি ভুল কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি আর সহ্য করতে না পেরে একটা চড় মেরে দিলাম ওর গালে। চড় খেয়ে রাগি রাগি চোখে আমার দিকে তাকাইয়ে কিছু বলতে যাবে তখনই তাকে থামাই দিয়ে আমি বলাম,

-এখন না আমার নিজের প্রতি ঘৃণা হচ্ছে। এটা ভেবে যে আমি আপনার মতো কারও জন্য কিছু ফিল করতাম।।আপনার বউয়ের জন্যে আমার আসলেই অনেক কষ্ট লাগছে কারণ বেচারি ভাবে আপনি তাকে কতই না ভালোবাসেন কিন্তু আপনি অফিসে এইসব করে বেরান।আপনার এই নোংরা কাজে আমাকেও জরাইছেন।ছি

-বৃষ্টি??
-আপনার আমাকে অন্য কারও সাথে দেখতে কষ্ট হয় না?হবে না আর কষ্ট কাল থেকে কারণ আমি এই জব ছেড়ে দিচ্ছি

আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে ড্রাইভারকে যেতে বললাম। আসলেই নিজের প্রতি ঘৃনা হচ্ছে এখন।এই অফিসে আমি আর জব করতে পারবো না এখান থেকে যেতে হবে আমাকে।। আর আকাশকে সব জানাতে হবে আমার।তার সাথে যখন বিয়ে করবো তখন এইসব কিছু লুকাইয়ে বিয়ে করতে চাই না আমি।।কিন্তু আকাশের নাম্বার তো নাই আমার কাছে! আম্মুকে কল করি,

-হ্যালো মা?
-হ্যা বল
-মা আকাশকে কল করে বাসাই আসতে বল তো।কিছু কথা আছে
-বিয়ে ক্যানসিল করবি?
-আরে না।ওকে ডাকো তো। তোমাকে পরে বলবো।
-আচ্ছা।

বাসাই গিয়ে দেখি আকাশ সোফাই বসে আছে। আমি ওর দিকে তাকাইয়ে বললাম “কিছু কথা আছে, চল ছাদে যাই!?” সে হ্যা সুচক মাথা নেড়ে আমার সাথে হাটা দিল ছাদে এসে সে ।ছাদের রেলিং ধরে দাড়ালো আমি তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নিলের ব্যাপারে সব বলে গেলাম এক লাগারে বলা শেষে ওর দিকে তাকাইয়ে বললাম,

-এবার যা বলার বলতে পারো।আমি শুনবো শুধু।
-তো তুমি কি এখনো তোমার ওই নিলের প্রেমে আছো?
-নাহ!
-এতো সিউর কিভাবে!?!?
-সিউর আমি
-সিউর না তুমি। বের হয়ে গেলে বিয়ে করবো।
-মানে?
-মানে তার প্রেমে থেকে বের হয়ে গেলে তারপর না হয় বিয়ে করা যাবে।কারও প্রেমে থেকে কারও সাথে সংসার করা যায় না।

-তো তুমি আমাকে বিয়ে করবে না?(,অবাক হয়ে জানতে চাইলাম)
-করবো।আগে নিজেদের চিনি জানি তারপর।(মুচকি হাসলো সে কিন্তু কেন জানি আমার রাগ লাগতে শুরু করল)
-এই শুনো বহু বছর সিংগেল থেকেছি আর না।বিয়ে করতে হলে কর না হলে ফুটু। দেশে ছেলের অভাব নাই।
-তা নাই কিন্তু আমার মতো ছেলের অভাব আছে।
-আসছে আমার মহাপুরুষ।
-হাহাহাহা

-হেসো না।বিয়ে করবা নাকি করবা না বল?
-উম্মম্মম…….(গালে হাত দিয়ে চিন্তায় মগ্ন হওয়ার ভান করে)ভেবে বলবো
-হ্যা নাকি না??(ওর কলার ধরে কাছে আনে বলাম)
– বাবা রে বাবা এখনই এই অবস্থা!! বিয়ের পর কি হবে?
-হ্যা নাকি না?(আরও শক্ত করে ধরে বললাম)
-হ্যা হ্যা।।
-জানতাম বলেই একে অপরকে জরাই ধরলাম।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত