আম্মু ওকে বিরানি দিয়ো না, ওর নাকি পেট খারাপ করছে! অনেক দিন পরে শশুর বাড়িতে বেড়াতে আসছি। আমি সাধারণত শশুর বাড়িতে খুব একটা আসি না। শশুর বাড়ি দূরে হলে যা হয় আরকি! শাশুড়ি আম্মা খুব ভালো করেই জানেন আমি বিরানি অনেক পছন্দ করি, তাই সে আজ বিরানি রান্না করছেন। এটা সোনার পর আমার মনে আর তর সইছিলো না। আমি শুধু অপেক্ষায় ছিলাম শাশুড়ি আম্মা কখন খায়ার জন্ন্যে ডাক দেন। বহু অপেক্ষার পর শাশুড়ি আম্মা খায়ার জন্নে দাক দিলেন। আমি এক প্রকার খুব তারাতাড়ি খায়ার জন্নে খাবার টেবিলে উপস্থিত হলাম।
শাশুড়ি আম্মা জেই না আমার প্লেটে বিরানি উঠিয়ে দিবেন, ঠিক সেই সময় পাস থেকে রিয়া উপরের কথাটি বল্লো! আমি যেনো এক প্রকার আহত হলাম, আমি অসহায় দৃষ্টিতে রিয়ার দিকে তাকালাম। মেয়েটা দেখি মিট মিটিয়ে হাসছে! রিয়া কেনো এভাবে বল্লো আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। আমার সামনে বিরানি রাখা অথচ আমি খেতে পারবো না এটা কিছুতেই মেনে নেয়ার মতো না। পাস থেক রিয়া আমার কানের কাছে এসে আস্তে করে বল্লো আমার কথা না শুনলে এমোনি হবে। রিয়ার কথার কোনো মানেই খুজে পেলাম না। তাই মনের মধ্যে বউ প্রতি একপ্রকার রাগ নিয়ে খাবার টেবিল থেকে চলে আসলাম।
রুমে এসে ভাবতেছি বউ এটা আমার সাথে করতে পারলো। আমার সাধের বিরানিটা আমায় খেতে দিলো না! তার পর ভাবতে লাগলাম আজ সারাদিনে বউ এর কোন কথা টা আমি শুনলাম না। অনেক ভেবেও কোন হিসাব মিলাতে পারলাম না। একে তো লাগছে খুধা তার উপর বউ এভাবে খেতেও দিলো না। রাগে দুঃখে ঘুমানোর জন্ন্যে শুয়ে পরলাম। এক্টু পর বউ আসলো ঘুমাতে, আমাকে বিছানায় দেখে বউ রাগান্বিত কণ্ঠে চেচিয়ে উঠে বল্লো, এই খবরদার তুমি আজ আমার পাসে শুবা না। তোমায় কতোবার করে নিসেধ করেছি সিগারেট পান করবা না। তার পরেও তুমি আমার কথা শুনলে না।
আমার কথা না শুনলে এমোনি হবে জাও তুমি আজকে ফ্লোরে ঘুমাবা এটাই তোমার শাস্থি। আমি আবাড়ো বউ এর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম, রিয়াকে বল্লাম বিশ্বাস করো বউ আমি সিগারেট পান করি না! সিগারেট পান করা তো অনেক আগেই ছেরে দিয়েছি! কিন্তু কোন কাজ হলো না। রিয়া বল্লো তুমি আমায় কি ছোটো বাচ্চা পাইছো হুম, ছোটো বাচ্চা রে বুঝ দিচ্ছো তুমি। সবুজ ভাই তোমার আর তার ছবি পোস্ট দিয়েছে, সেখানে তোমার ছবির পাসে সিগারেটের পেকেট রাখা। আর সবুজ ভাই সেই ছবিতে কেপশোনে লিখেছে অনেক দিন পর বন্ধুর সাথে বসে সিগারেট পান করা, আহা কি আনন্দ টাই ছিলো! বলো এগুলা কি মিথ্যা তুমি আমাকে মিথ্যা বলছো সামিউল। বউ এর চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে সে এখন অনেক রেগে আছে তাই আর কথা না বাড়িয়ে ফ্লোরে বিছানা পেতে শুয়ে পরলাম।
একে তো ঠন্ডা তার উপর খুদায় আমার কঠিন অবস্থা, এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে সবুজরে যদি সামনে পেতাম তাহলে ওর হার গুলো সব চিবিয়ে খাইতাম। সালা আমায় এভাবে ফাসিয়ে দিলো। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি সেই খেয়ালি নেই। হঠাৎ অনুভব করলাম আমার সরিলের উপর ভারি ভারি লাগছে সাথে ফোফানোর আওয়াজ আসছে। ঘুম ভাংলে দেখি বউ আমার উপর শুয়ে আছে আর কান্না করছে। আমি রিয়ার মাথায় হাত রেখে বল্লাম কি হয়েছে রিয়া তুমি কান্না করছো কেন?
বউ এবার আমায় জরিয়ে ধরে বল্লো আমার ভুল হয়ে গেছে প্লিজ মাফ করে দাও। তুমি ঘুমানোর পর সবুজ ভাই তোমার ফোনে মেসেজ দিয়েছে! সেখানে লেখা বউ এর আদর আর কতো খাবি এবার এক্টু শাস্থি উপভোগ কর, এই শিতে বউ ছারা একা একা ঘুমাতে কেমন লাগছে বন্ধু। রিয়া আবারো বল্লো প্লিজ মাফ করে দাও সবুজ ভাই মেসেজ না দিলে আমি সত্যিটা জানতামি না। আমি বল্লাম মাফ করতে পারি এক শর্তে, রিয়া বল্লো কি বলো। এখন যদি তুমি আমায় নিজ হাতে বিরানি খাইয়ে দাও তো! মেয়েটা এবার মুচকি হেসে বল্লো আমি জানতাম তুমি এটাই বলবে তাই আগেই বিরানি নিয়ে এসেছিলাম। রিয়া আমায় বিরানি খাইয়ে দিচ্ছে আর ভাবছি সবুজ এর কথা শালা আমায় এভাবে ফাসিয়ে দিলো।