মেয়েরা কি চায়?

মেয়েরা কি চায়?

মেয়েরা কি চায়? একটা মেয়ে একটা ছেলের কাছ থেকে আসলে কি আশা করে? মেয়েদের মন কি সত্যিই বোঝা সম্ভব??? এবিষয়ে কবি বলেছেন- “সখা, নারীদের মন সে যে সহস্র বর্ষ সাধনার অমূল্য রতন।” অর্থাৎ, একহাজার বছর মেয়েদের মন নিয়ে গবেষণা করার পরও মেয়েদের মন সাময়িক বুঝতে পারা যাবে কিনা সন্দেহ!!! অতবেশি আয়ুকালও যেহেতু পুরুষের নেই সেহেতু বলা যায় মেয়েদের মন বোঝা অসম্ভব। মেয়েদের মনের ছোট্ট কোনাতেই যে প্যাঁচ থাকে সেটুকুও আফ্রিকার গভীন বনের গভীরতার থেকেও অনেক বেশী গভীর ।

নিশাত বোরখা ছাড়া বাসার বাইরে বের হয়না। হেজাবের আড়ালে মুখটা ঢাকা থাকলেও ওর অনিন্দ্য সুন্দর চোখই যথেষ্ট যে কোনও ছেলের মন কেড়ে নিতে। এই চোখ দেখেই পাগল হয়েছিলো তূর্য। আজ নিজের ডাগর ডাগর চোখেতে কাজল দিয়েছে নিশাত। ঠোঁটে লাল টুকটুকে লিপস্টিক আর নাকে ছোট্ট একটা নাকফুল। আয়নার সামনে দাড়িয়ে মনে মনে হেসে উঠলো নিশাত। আজ তূর্য নিশাতের এইরূপ দেখলে নিশ্চিত হা করে তাকিয়ে থাকবে। হিহিহিহি।।।

খুব সাধারণ সাজ তবুও নিশাতকে আজ সুন্দর লাগছে। বোরকাটা পড়ে নেয়া দরকার। হেজাবে মুখ বাঁধতে বাঁধতে ঘড়ির দিকে তাকায় নিশাত। সকাল সাতটা বাজে। আর এক ঘন্টা হাতে আছে নিশাতের, লেকপার্কে তূর্যর সাথে দেখা করতে যেতে হবে। তূর্য নিশাতের বয়ফ্রেন্ড। প্রায় দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ওদের। তূর্য খেতে খুব ভালোবাসে। নিশাত তাই প্রায়ই এটা ওটা রান্না করে আম্মু আর ভাইয়ার চোখ এড়িয়ে নিয়ে যায় তূর্যর কাছে। আর তূর্যটাও না,,, নিশাত যাই রান্না করুক না কেনো তূর্য খুব আগ্রহ নিয়ে খায়। তূর্যর খাওয়া দেখে আনন্দে ভরে যায় নিশাতের মন। ইসস ভাইয়া আর আব্বু শুধু শুধুই নিশাতের রান্নার বদনাম করে। তরকারীতে লবনের পরিমানটাই যা একটু গড়মিল হয় নিশাতের।

কখনো সামান্য বেশি কখনো সামান্য কম। আর মাঝে মাঝে তরকারীতে হলুদ অথবা, ঝাল দিতে ভুলে যায় এই যা। এগুলো আহামরি কোনও বড় ভুলও নয়। ইসস সবাই যদি তূর্যর মতো হতো কতো ভালোই না হতো। তূর্য কখনোই নিশাতের ভুল ধরেনা। তূর্য যখন বলে বাহ্হ আমার হবুবউটার হাতের রান্না এতো টেস্টি হয় কিভাবে? কিভাবে রান্না করো এতো টেস্টি টেস্টি খাবার, শুনে খুশিতে ধেইধেই করে নাচতে ইচ্ছে করে নিশাতের কিন্তু, সবার সামনে কি আর নাচা যায়। বাসায় ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে ধিনকা চিকা ড্যান্স করে নিশাত। এটা নিশাতের টপ সিক্রেট। নিশাত অনেক বেশি খুশি হলেই শুধু এমনটা করে। এই গোপন কথাটা কেউ জানে না এমন কি তূর্যও না। নিশাতের টপ সিক্রেটের স্বাহ্মী হয়ে থাকে শুধুমাত্র ওর রুমের আয়নাটা।

সকাল আটটা। তূর্য লেকপার্কে বসে আছে। চোখ থেকে এখনো ঘুমের রেশ কাটেনি। রাতে নিশাত ফোনে বলে দিয়েছে, সকাল আটটার ভিতরে লেকপার্কে উপস্হিত হতে। তা নাহলে কপালে খারাবি আছে। নিশাতকে হ্মেপাতে সাহস হয়না তূর্যর। সকালে এলার্মের শব্দে ঘুম থেকে উঠে প্রচন্ড কষ্টে প্রিয় লেপের উষ্ণতা ত্যাগ করে চলে এসেছে পার্কে। মনে মনে গালি দিয়ে নিশাতের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে ফেলেছে তূর্য। এই হাড়কাঁপা শীতে এতো সকালে উঠবে কোন শালা? তূর্যর ধারণা যে নিতান্তই ভুল তার প্রমাণ ইতিমধ্যে পেয়ে গেছে তূর্য।

দলে দলে পার্কের এমাথা থেকে ওমাথা ছুটে বেড়াচ্ছে জগিং স্যুট পরা বহু মানুষ। তবে খেয়াল করলে দেখা যায় এদের ভিতরে বেশিরভাগই পৌঢ় অথবা বৃদ্ধ। হাসিখুশি আর সুখী সুখী মার্কা চেহারা হলেও খবর নিলে দেখা যাবে এদের ভিতরে কারও আছে ডায়াবেটিকস, কারও হার্ট প্রবলেম, কারও অতি ওজন এমনই অনেক বার্ধক্যজনিত সমস্যা। ডাক্তারের নির্দেশে তাই সকালে দৌড়ানো ইনাদের ফরজ হয়ে গেছে। কেউ কেউ আছেন রিটায়ার্ড অফিসার। জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কাটিয়েছেন সার্ভিসে। অবসর চলে আসায় কাজ ছাড়াই পেনশন পাচ্ছেন কিন্তু, বসে বসে খাওয়া কি সহ্য হয়? তাই সকাল হতেই চলে আসেন মর্নিং ওয়াকে। হায়রে আজব দুনিয়া! সকাল হলেই সবাই দৌড়াচ্ছে এই দুনিয়ায়। কেউ দৌড়াচ্ছে ভোগ ও বিলাসীতার মাঝে রাতের খাওয়া গুরুপাক হজম করতে আবার কেউ কেউ দৌড়াচ্ছে কঠিন পরিশ্রমের বদলে নিজের পরিবারের মুখে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দিতে।

পার্কের ভিতরে শুধু পুরুষ কেনো, মহিলাদের সংখ্যাও কম নয়। থ্রি পিসের উপরে সোয়েটার চাপিয়েও এসেছেন অনেকে। কেউ কেউ তো আবার বোরখা পরেই চলে এসেছেন। এদের বেশিরভাগই হাউজ ওয়াইফ। স্বামী আর বাচ্চা স্কুলে চলে গেলে সারাদিন বাসায় একা একাই কাটে ইনাদের। এদের ভিতরে কেউ আসেন একাকিত্ব কাটাতে আবার কেউ কেউ আসেন কূটবিষ আর রসালো গুজব ছড়াতে। তারা একত্রে গবেষণা করে বের করেন এলাকায় কার কি দোষ আছে। যেমন মিসেস নাজমার ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেটার রুগ্ন হওয়ার কারণ নিজেরাই ধারনা করে বের করেছেন ছেলেটি অতিমাত্রায় গাঁজা সেবন করে। মিস্টার হাফিজের এসএসসি ফেল করা মেয়েটার গলায় দড়ি দেয়ার পেছনের কারণ যে পরীহ্মায় ফেল করা নয় বরং অবৈধ সম্পর্কের ফলে পেটে থাকা পাপের ফসল তাও তারা পার্কে বসে বসেই আবিষ্কার করে ফেলেছেন।

ভারী বয়সের মানুষ প্রচুর পরিমানে চোখে পড়লেও তূর্যর চোখে ইয়ং কাউকেই চোখে পড়ছে না। ইয়ং জেনারেশনের কি আর সকালে ওঠার সময় আছে? সারারাত জেগে ফেসবুকে চ্যাটিং আর ফ্রি ফায়ার পাবজি টাইপের গেম খেলার পর দুপুর পর্যন্ত নাক ডাকিয়ে ঘুমায় আজকালকার ছেলেমেয়েরা। অন্যের কথা বাদ দেয়া যাক তূর্য নিজেও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতিদিন সকাল এগারোটায় ঘুম থেকে ওঠে তূর্য তাও মায়ের মুখে গালি শুনে। লাটসাহেবের বাচ্চা সারারাত কামাই করে এসেছে। দেখো কিভাবে মোষের মতো বেলা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছে!!! লাটসাহেবের বাচ্চা তূর্যর কাছে গালি কারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তূর্যর। মোষ শব্দটা অতোটাও গায়ে লাগেনা যতোটা লাটসাহেব শব্দটা গায়ে লাগে। তূ্র্যর অনার্স শেষ বর্ষ চলছে। মায়ের কাছে হাতখরচ চাইলে টাকা কম গালি বেশি শুনতে হয়। খালি পকেট আর হাজারটা টেনশন তূর্যকে প্রতিদিন যেনো কুঁড়েকুঁড়ে খায়।

বয়স বেড়ে যাচ্ছে কিছু করতে হবে। সংসারের চাপ তূর্যকেই নিতে হবে। পুরো পৃথিবীই যখন তূর্যর কাছে দিনদিন অসহ্যকর হয়ে পড়ছে নিশাত তখন তূর্যর কাছে একটুকরো ভালোলাগা। তবে বড্ড রাগী মেয়েটা। রাগ যেনো সবসময় নাকের ডগাতেই বসে থাকে নিশাতের। আরে ঐতো,,,, ঐতো দেখা যাচ্ছে পার্কের গেট ছাড়িয়ে নিশাত পার্কের ভিতরে ঢুকছে। ম্যাডামের কথা ভাবতে না ভাবতেই ম্যাডাম হাজির। বাহ্হ।।। নিশাত হনহন করে হেটে এসে তূর্যর পাশে এসে বসলো। ব্যাগ থেকে টিফিন ক্যারিয়ার আর একটা কাঁটা চামচ বের করে তূর্যর হাতে দিয়ে বললো নাও খেয়ে নাও। খেয়ে আমাকে উদ্ধার করো।

-কি এটা?
-আহহ নিজেই খুলে দেখো তো।
-ওয়াও রসে ভিজানো পিঠা।
-হুমম কদিন শুধু বলেই যাচ্ছিলা তোমার পিঠা খেতে ইচ্ছা করছে তাই নিয়ে এলাম।
-কে বানিয়েছে?
-আমার নানী।
-তোমার নানীকে বলে দিও তার হাতের পিঠা খুবই ভালো হয়েছে খেতে।
-আচ্ছা বলে দেবো। এ তুই ঐ মোটাভাবীর দিকে তাকাইলি ক্যান?

তূর্য আর নিশাত যেখানে বসে আছে তার সামনে কিছুদূরেই এক পাহাড়সমান মোটা মহিলা কখন যেনো এসে নিজের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে ব্যায়াম করছে। পিঠা খেতে খেতে তূর্য খেয়ালই করে নাই। কখনো হাত মাথার উপরে উঠিয়ে কখনো পা বেঁকিয়ে কখনো নিজের ড্রামের মতো পেট দুলিয়ে এক্সারসাইজ করছে মহিলা। মহিলাকে দেখে একটা কথাই বের হলো তূর্যর মুখ থেকে

-ওহ্ গড!!! হলি শিট!!!
-এ তূর্যর বাচ্চা কি বললি? কি বললি তুই?
-বাবুনি কিছু বলি নাই তো। অনেক শীত লাগতেছে আমার তাই বলেছি ও মাই গড কত্তো শীত!!! আজ অনেক শীত পড়েছে তাই না বাবুনি?
-কুত্তার বাচ্চা তুই আমার সাথে কথা বলবি না।
-বাবুনি রাগ করোনা। বিশ্বাস করো আমি ঐ মোটাভাবির দিকে ফিরেও তাকাই নাই। ঝগড়া বাদ দাও তার থেকে চলো আমরা বরং পিঠা খাই। মুখের উপর থেকে হেজাবের পর্দাটা সরাও। আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি।

-চুপ শালা। গার্লফ্রেন্ড থাকতে অন্য মহিলাদের দিকে তাকাস লজ্জা করে না? তোর হাত থেকে কিছুই খাবোনা আমি। হেজাবও খুলবো না। তুই থাক আমি গেলাম।

রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে যাচ্ছে নিশাত। খুব কান্না পাচ্ছে ওর। তূর্যর উপর খুব অভিমান হচ্ছে। পিছন ফিরে একবার তাকিয়ে দেখলো তূর্য খুব আনন্দ নিয়ে পিঠার বাটি থেকে পিঠা তুলে তুলে খাচ্ছে। কুত্তাটার কাছে নিশাতের থেকে পিঠা বেশী দামী হয়ে গেছে। একটু তো পিছন থেকে এসে নিশাতের হাতটা ধরে মাফ চেয়ে নিশাতের রাগটা ভাঙাতে পারতো। কতো কষ্ট করে পিঠাগুলো বানিয়ে এনেছে নিশাত তার মূল্যই যেনো নেই। তূর্যর সাথে দেখা করবে তাই আজ সকালের বায়োলজি ব্যাচটাও ফাঁকি দিয়েছে নিশাত। তূর্যকে গালি দিতে মন চাচ্ছে নিশাতের। উরাধুরা মার দিতেও ইচ্ছা করছে ছেলেটাকে।

শালা রাহ্মস। বাপের জন্মে মনে হয় পিঠা খায় নাই। বেয়াদব ছেলে একটা। একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লো নিশাত। বাসায় চলে যাবে এখন। মনে মনে প্রতিজ্ঞাও করে ফেললো নিশাত। লজ্জা থাকলে তূর্যর মুখও আর কোনদিন দেখতে চাইবে না। এমন অলুহ্মুণে ছেলেটার প্রেমে কেনো যে পড়তে গিয়েছিলো উফ্ফ। আজকের দিনটা যে স্পেশাল সেটাও ভুলে গেছে বেয়াদপটা। রিকশা চলতে শুরু করলেই কান্না চলে এলো নিশাতের। চোখের কাজল লেপ্টে গেলো চোখের চারপাশে। হঠাৎ বেজে উঠলো নিশাতের ফোন। হুম তূর্যই ফোন দিয়েছে। এখন আবার কি করতে ফোন দিছে কুত্তাটা। ফোন রিসিভ করেই চেঁচিয়ে উঠলো নিশাতঃ

-এ তুই ফোন দিছিস ক্যান?
-পিঠা খাওয়া শেষ। বাটি আর চামচটা কি করবো?
-যা খুশি কর। হিক।। ঐ মোটাভাবীকে গিফট কর যা। ফোন রাখ কুত্তার বাচ্চা। হিক।।। কান্না চেপে রাখায় হিচকি উঠে যাচ্ছে নিশাতের।

-আমার আরও কিছু বলার ছিলো।
-তোর কোনও কথা শোনারই ইচ্ছা নাই আমার।
– ফাঁসির আসামীকেও নিজের কথা বলার জন্য একটা শেষ সুযোগ দেয়া হয়। আমাকেও না হয় আমার কথা বলার একটা সুযোগ দাও।

-আচ্ছা বল।
-আমি বলবো কিন্তু তোমাকেও চুপটি করে শুনতে হবে আমার কথাগুলো। আমি কথাগুলো বলার সময় কোনও কথা বলা যাবেনা। আমার কথা শেষ হলে যা খুশি বলো।
-অাচ্ছা ঠিকাছে।

তূর্য ধীরে ধীরে বিড়বিড় করে কিন্তু, স্পষ্ট কন্ঠে বলতে লাগলো নিশাতের জন্য সারারাত জেগে লেখা কথাগুলোঃ প্রিয়তমা আজ তোমার জন্মদিন। কেউ কি শুনছো??? আজকের দিনটি বড়ই সুন্দর। সকালের মিষ্টি রোদ হয়তো এতোহ্মণে, ছুঁয়ে ফেলেছে তোমার মুখ। তুমি বলবে, শুভসকাল অমনি হবে কর্মব্যস্ত দিনের সূচনা। রঙিন প্যাকেটে মুড়ে দামী উপহারে,,, ভরে যাবে তোমার ছোট্ট আলমারি। আজ এই দিনটাই তোমার তোমায় করতে খুশি ব্যস্ত হবে পুরো পৃথিবী।

প্রিয়তমা আজ তোমার জন্মদিন। সাজো তুমি অপরূপ সাজে, তোমার ছাদের আঙিনায় মাটির টবে রাখা গাছগুলো ভরে উঠুক ফুলে ফুলে। শুধু ঐ কাঁটাভরা ক্যাকটাসটাই বড্ড নির্লজ্জ, কাঁটা ব্যতীত তোমায় দেয়ার মতো কিছুই নেই ওর। ঠিক যেনো আমার মতো তোমায় দিতে মন তো চায় কতকিছুই খালি পকেট আর বেকারত্বটাই কেড়ে নিয়েছে সামর্থ্য। অর্থের অংকে পরিমাপযোগ্য তোমার কাছের শুভাকাঙ্খীদের মতো দামী উপহার পারবো না হয়তো দিতে। দিতে পারি শুধু রাস্তার পাশ থেকে তোলা অযত্নে ফুটে ওঠা বুনো ঘাসফুলটা আর আমার কবিতার খাতা। যে খাতার পৃষ্ঠার ভাঁজে ভাঁজে প্রতিটা কবিতা প্রতিটা ছন্দই তোমায় নিয়ে লেখা।

-কুত্তার বাচ্চা তোর মনে ছিলো আজ আমার জন্মদিন?
-হুম ছিলো তো।
-কবিতাটা কে লিখেছে?
-আমার নানা।
-ফাইজলামি করস?
-ফাজলামি কেনো করবো? তোমার নানী যদি পিঠা বানাতে পারে তাহলে আমার নানা কেনো কবিতা লিখতে পারবে না?

-তুই দাঁড়া আমি এখনি আসছি আবার লেকপার্কে। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।
-আচ্ছা আসো।
-হুম আসছি। মামা রিকশা ঘুরান তো। লেকপার্কে নিয়ে চলেন জলদি।

নিশাত ফিরে এসেই তূর্যর বুকে এলোপাথাড়ি ঘুষি মেরে কাঁদতে শুরু করলো। তারপর তূর্যকে জড়িয়ে ধরে তূর্যর বুকে মুখ লুকালো।

-এই নিশাত এই কি করছো? চারপাশে কতো লোকজন দেখেছো? সবাই দেখছে তো।
-দেখলে দেখুক। আমি আমার হবু বরের বুকে মাথা দিছি কার বাপের কি!!!

তূর্যও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিশাতকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকে। হঠাৎ তূর্য বুঝে ফেললো মেয়েরা আসলেই কি চায়? মেয়েরা চায় তার প্রেমিকের উপর কারণে অকারণে ছোটখাটো ব্যাপারে রাগ করতে। আর চায় তার প্রেমিকও হবে এমন কোনও পুরুষ যে সারাজীবন খুব যত্নে নিজের প্রেমিকার রাগ আর অভিমান ভাঙাবে। তারপর টেনে নেবে নিজের বুকে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত