রাজ আর স্নেহা সেই ছোটো থেকে এক সাথে বড়ো হয়েছে ৷ রাজদের পাশে স্নেহাদের বাড়ি, রাজ আর স্নেহা এক সাথে খেলে, স্কুল জায় আসে ৷ ওর দুজন প্রায় সুময় এক সাথেই থাকে ৷ ওদের মধ্যে ঝগড়া মারামারি লেগেই থাকতো কিন্তু সেই ঝগরা বেশি ক্ষন স্থায়ী থাকতো না সকালে ঝগরা হলে দুপুরে ভাব হয়ে যেতো ৷
এভাবেই মারা মারি ঝগড়ার মধ্যে ওদের স্কুল জীবনটা পার হয়ে জায় এর পর কলেজে পা দেয় স্নেহা রাজের পাশে কোনো মেয়েকে দেখতে পারতো না ৷ একদিন রাজ অনিতার (ক্লাসমেট) সাথে একটু হেষে কথা বলেছে আর সেটা স্নেহা দেখে ফেলে ছিল এর পর যা হয় আর কি বাড়ি এসেই বাড়িয়ে বাড়িয়ে সব কাকিমার (রাজের মা) কানে তুলে দেয় ৷ রাজ কলেজ থেকে বাড়ি ফিরার পর রাজের মা বকতে লাগে, আর রাজ টেরই পাইনা কি হচ্ছে আর সাথে , তার পর সব বুঝতে পারে এ সব স্নেহার কাজ তাই স্নেহাদের বাড়ি চলে জায় সাথে সাথে আর আর ঘরে ডুকে ওকে জিজ্ঞাসা করে
—কী সমস্যা কী তোর,??
– আমার কোনো সমস্যা নেয় ?
— তাহলে ?
-তাহলে কী ?
— কিছু বুঝতে পারছিস না, কচি খুকি কিছু বোঝেনা
– আরে কী হয়েছে সেটা বলবি তো নাকি?
— তুই মা কে কী বলেছিস সুনি?
– কী বলেছি?
— আমি নাকি আনিতার সাথে প্রেম করছি
– যা সত্যি তাই বলেছি, যে ভাবে হেসে হেসে কথা বলছিলি
— তোর জন্য কী আমি কারো সাথে কথা বলতে পাবোনা ?
– না পাবি না?
—কেনো তুই কে আমায় যে তোর কথা শুনতে হবে?
– আমি তোর জম?
— ধুর যতসব ফালতু মেয়ে আজকের পর তুই আমার সাথে কথা বলবি না
এই বলে রাজ বাড়ি ফিরে এসে বিছানায় সুয়ে পরে আর মনে মনে বলে মেয়েটা খুব বেড় গেছে ওকে একটু শিক্ষা দিতে হবে এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে জায় ঘুম ভাঙ্গে বিকেলের দিকে ঘুম থেকে উঠে মুবাইলটা হাতে নিয় দেখে কোনো ফোন এসেছে নাকি না কোনো ফোন, এসএমএস আসানিয় মেয়েটি হয়তো একটু রেগে গেছে তাই ফোন দেয়নি রাগ কমলে দেবে এই ভেবে রাজ খেলতে চলে জায় , সন্ধে বাড়ি ফেরে, রাত্রি জায় সকাল জায় স্নেহা ফোন দেয় না রাজ ভাবে তবে কি আমি বেশি কিছু বলে ফেলেছি এসব ভাবতে ভাবতে কলেজে চলে আসে কলেজে এসে রাজ সব জায়গায় দেখে স্নেহাকে কোথাও দেখতে পায় না ৷
রাজের খুব খারাপ লাগে তাই ক্লাস না করে বাড়ি ফিরে আসে বাড়ি ফিরে স্নেহাদের বাড়ি যায় ওদের বাড়ি গিয়ে দেখে দরজায় তালা দেওয়া রয়েছে, রাজের মনে হাজার চিন্তা চলে আসে কী হলো এদের হঠাৎ করে এরা আবার কোথায় গেলো বাড়ি এসে মাকে জিঞ্জাসা করতেই বলে ওরা নাকি গ্রামে ওর দাদুর বাড়ি গেছে কবে ফিরবে ঠিক নেয় রাজ আর কিছু না বলে ঘরে ফিরে আসে আর স্নেহার নম্বরে ফোন দিতে ওপাশ থেকে বলে সরি এই সুময় যোগাযোগ করা সম্ভব হচেছ না ৷ গ্রামে বাড়িতে নেটওয়ার্ক প্রব্লেম থায় স্নেহার মুবাইলে ফোন ঢুকছে না ৷
রাজ আর কিছু ভাবতে পারছেনা স্নেহাকে ছাড়া কিছু ভালো লাগছেনা সব ফাঁকা লাগছে রাতে ঘুম হয় না প্রতিটি ক্ষন স্নেহাকে মিশ করে ওর জন্য চোখে কোন দিয় আপনি জল চলে আসে আর রাজ ভাবে স্নেহাকে ছাড়া ওর জীবন চলবে না তাই রাজ ডিশিসন নেয় যে স্নেহাকে ওর মনের কথা সব খুলে বলবে ৷ রাজের রাতে ঘুম না হওয়া চোখের নীচে কালি পরে জায় রাজের মা দেখে স্নেহারা গ্রামের বড়ি যাওয়ার পর থেকে রাজের এরকম আবস্থা তাই মা বলে বাবা বৌমাকে এত ভালোবাসো যে দুই দিন বাড়িতে নায় তাই কেঁদে কেঁদে চোখ লাল করে ফেলেছ?
— কে বৌমা থাক থাক আর লজ্জা পেতে হবে না আমি সব বুঝি আর স্নেহা খুব ভালো মেয়ে আর এত কষ্ট পেতে হবে না আজ কালের মধ্যেই ওরা চলে আসবে
— যাওতো কে ওকে বিয়ে করতে জাচ্ছে আচ্ছা ঠিক আছে এরকম গুমরা মুখ করে ঘরের ভিতরে বশে না থেকে বাইরে দিয়ে ঘুরে আয় একটু মনটা ফিরি হয়ে যাবে এই বলে মা চলে জায় ৷ রাজ মা এর কথামত বাইরে ঘুরে সন্ধ্যে বাড়ি ফিরে আসে বাড়ি ফির মা হাসছে দেখে রাজ বলে কী ব্যাপার হাসছো কেন?
– একটা খুশির খবর আছে ?
—কী খবর বলবেতো ?
– এতো উতালা হচ্ছ কেনো বাছা আস্তে আস্তে ?
— আরে নেকামো বাদ দিয় বলবেতো?
– তুমি নিজে ছাদে গিয়ে দেখেনাও খুশির খবরটা কী?
— ছাদে আবার কী খুশির খবর আছে
– বলামতো নিজে দেখতে রাজ ভাবতে থাকে ছাদে কি খুশির জিনিস থাকতে পারে ভাবতে ভাবতে ছাদে গিয়ে দেখে অবাক হয়ে জায় কারন ছাদে স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে রাজ স্নেহার দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে দেখে স্নেহা বলে কী দেখছিস এমন করে?
— তোকে দেখছি ?
– কেনো আগে কখনো দেখিস নায়?
— আজ তোকে খুব সুন্দর লাগছে তাই দেখছি
-থাক আর পাম মারতে হবে না, কেমন আছিস?
— এই কটা দিন খারাপ ছিলাম এখন ভালো আছি ,তুই কেমন আছিস?
– তোর মতোই, আমাকে তোর মনে পরতো না?
— এমন কোনো সুমায় নেয় যে তোকে মনে পরেনি, আমাকে ফোন দিলি না কেনো একবারও?
– তুইতো ফোন দিতে বারন করেছিলি তাই দিয়নি
— আমি ফোন দিতে বারন করলাম আর ফোন দিলি না?
– হুম
— জানিস তোকে ভেবে আমি একটা রাত্রি ঘুমাতে পারিনি?
– কেনো আমি তোর কে হয় তাই আমাকে ভেবে ঘুমাতে পারিসনি?
— তুই আমার সব কিছু, তুই আমার পৃথিবী ,তুই আমার নিশ্বাস তোকে ছাড়া আমি বাঁচি না, আমি ভালোবািষ খুব ভালোবাসি তোকে ছাড়া বাঁচবো না I love you স্নেহা I love you এটা বলার সাথে রাজের গালে দুটো চর বশে যায় রাজ বুঝতে পারে না কী হলো তাই বলে
—কী হলো এটা?
– গাধা এই কথাটা বলতে তোর এতো সুময় লাগলো আমি কতোদিন ধরে এই কথাটা শুনার অপেক্ষায় আছি , আমি দাদুর বাড়ি না গেলে হয়তো তুই আজো বলতিস না ৷ এই বলে রাজকে ঝরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকে, আর স্নেহার কান্না দেখে রাজও স্নেহাকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকে ৷ এটা কোনো দুঃখের কান্না নয় এটা সুখের কান্না কাঁদুক না ওরা কেঁদে যদি দুঃখ কষ্ট গুলি মুছে যাক ৷ আর এভাবেই সুরু হয় একটা নতুন জীবন