ছাত্র হিসেবে খারাপ ছিলাম, তাই দেশে কোথাও চান্স না পেয়ে ২০০১ সালের ঠিক জাতীয় নির্বাচন এর আগের দিন ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। কলকাতা পর্যন্ত সদ্য চালু হওয়া শ্যামলী বাসে ডিরেক্ট কলকাতা গেলাম সেখান থেকে ট্রেনে যাবো ব্যাঙ্গালুরু। ওখানে ভর্তি হয়ে আবার চলে এসে জানুয়ারি তে গিয়ে ক্লাস শুরু করবো। ওখানে যাওয়ার গল্প আরেকদিন। তিন তারিখ গিয়ে পৌঁছুলাম পরবর্তী এক সপ্তাহ খুব ধকল গেলো ভর্তি হওয়ার পর রেসিডেন্ট পারমিট নেওয়ার জন্যে এইডস (HIV) এর টেস্ট ও পুলিশ কমিশনার অফিসে এক গাদা কাগজপত্র জমা দিয়ে রেসিডেন্ট পারমিট নিলাম পাশাপাশি যে এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছি ওই এলাকার পুলিশ স্টেশনেও নিজের নাম ও বাসার ঠিকানা এন্ট্রি করে ফেললাম। আমার এক ভাই ছিল সেই গাইড করছিল যাক অবশেষে ফেরার পালা যেহেতু ক্লাস শুরু হবে জানুয়ারি থেকে টিকেট করতে গেলাম ব্যাঙ্গালুরু স্টেশনে ওখানে পুজোর কারণে আগামী দেড় মাসের কোন সিট নেই।
তাই অগত্যা ওয়াইটিং টিকেট কেটে ফেললাম আগের দিন চেন্নাই মেইল এ চেন্নাই গিয়ে রাতে থেকে পরদিন সকালে হাওড়া র উদ্দেশ্যে করোমন্ডল এক্সপ্রেস ধরবো এভাবেই প্ল্যান করলাম, চেন্নাই থেকে করোমন্ডল এক্সপ্রেসের আমার ওয়াই টিং নাম্বার ছিল ৩১৮। যাক তখন ইন্ডিয়ান রেলওয়ের ওয়াইটিং লিস্ট প্রতিদিন ইন্টারনেট এর মাধ্যমে দেখতাম কত পর্যন্ত রিজার্ভেশন এলো। এভাবে করতে করতে আমার যাত্রার দিন এসে গেলো এদিকে ব্যাঙ্গালুরু টু চেন্নাই এর রিজার্ভেশন পেয়ে গেছি কিন্তু চেন্নাই টু হাওরা র টা এখনো কনফার্ম হয় নী। আমার ওই ভাই অভয় দিল আরে চেন্নাই গিয়ে ঠিকই পেয়ে যাবে পরদিন, রিজার্ভেশন না হলে অন্তত RAC হলেও পাবে। আমি নতুন তখনও ১৮ বছর এর পারফেক্ট যুবক হইনি এত কিছু মাথা খাটালাম না। যাত্রার দিন চেন্নাই মেইল ধরতে ব্যাঙ্গালুরু স্টেশন গেলাম অবাক করার মত যদিও আসার সময় এসেছি। স্টেশন কত গুছানো সুন্দর বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর বিজ্ঞাপন এর বিলবোর্ড গুলি সুন্দরভাবে লাগানো। সিটে বসে পরলাম ট্রেন ছাড়লো দুই টায় ৪ ঘণ্টার যাত্রা প্রকৃতি ও পাহাড় দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম চেন্নাই।
চেন্নাই নেমে স্টেশনেই গোসল সেরে স্টেশনের বাইরে চিকেন বিরিয়ানি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম ইন্টারনেট ব্রাউজিং ও ঘুরাঘুরি করে কাটিয়ে দিব সারা রাত পরদিন সকাল নটায় করোমন্ডল এ উঠবো। ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর সুবিধা স্টেশনের ভিতরেই নাম ছিল, যাই হোক ইন্ডিয়ান রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে প্রথমেই আমার টিকেট এর স্ট্যাটাস চেক করে নিলাম মনটা খারাপ হল আর মাত্র দশ ঘণ্টা বাকি কিন্তু ২০০ এর মত রিজার্ভেশন এলো। ঘণ্টায় ২০ রুপি দিয়ে তিন ঘণ্টা ব্রাউজিং করলাম বাকি সময় ইয়াহু মেসেঞ্জারের বিভিন্ন দেশের চ্যাট রুমে এ ঢুকে হাই হেলো করতে করতেই সময় পার করে দিলাম ফাঁক দিয়ে আমার চাচাতো ভাই কে ইমেইল করে জানিয়ে দিলাম আসছি দেশে ট্রেনে উঠব সকালে চেন্নাই থেকে।
ঘুম নেই সারারাত এত এত যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যের দেখে মাথা চক্কর দিচ্ছিল শেষ রাতের দিকে একটু নিরব হয়ে এলো। অল্প কিছুক্ষণের জন্যে স্টেশনের চেয়ার এ ব্যাগ এর উপর মাথা রেখে হালকা ঘুম দিলাম। সাত টার দিকে ঘুম ভাঙলো ফ্রেশ হয়ে স্টেশন চত্বরে টাচ স্ক্রিন এ টিকেট চেক করলাম দেখি তখনও আসছে না যাও আসছে সব RAC আল্লাহ্ আল্লাহ্ করছি আমার টাও যেন আসে। অবশেষে ঠিক এক ঘন্টা আগে দেখি ৩১৭ ও ৩১৯ নাম্বার RAC এসেছে মাঝখানে আমার ৩১৮ আসে নাই। স্টেশনে দাড়িয়ে থাকা রেলওয়ের একজন কে জিজ্ঞেস করলাম এই বেপারে উনি বললেন করার কিছুই নেই তোমাকে জেনারেল কোচে করে যেতে হবে এক্ষুনি দৌড়ে গিয়ে জেনারেল কোচে আসন নিয়ে নাও নইলে পাবে না বসতে। অগত্যা দৌড় দিলাম মনোকষ্ট নিয়ে। কোনরকমে গাদাগাদি করে একটা সিটে বসলাম।
পাশেই কলকাতার দুই জন কে পেলাম যাক অন্তত বাংলায় কথা বলতে বলতে যাওয়া যাবে। হলোও তাই ঘন্টাখানেক পর আমাদের ট্রেন অজ পাড়ার এক স্টেশনে থামলো কিছুই বুঝতে পারলাম না ডাবল লাইন ক্রসিং হবার ও কথা নয় কিছুক্ষণ পর জানতে পারি সামনে কোথাও বন্যার কারণে কোন ট্রেন যাচ্ছে না। যাক সিট ছেড়ে নামলাম না। কথা বলতে বলতে দুপুর গড়ালো ট্রেন তো নড়ে না।
এদিকে ট্রেনের টয়লেট এর পানিও শেষ সাথে থাকা বিসলেরি পানির বোতল ও খালি হইলো। কি করা কলকাতার দাদা কে নিয়ে নেমে আশে পাশে টিউবওয়েল খুঁজতে লাগলাম স্টেশনের বাইরেই পেয়ে গেলাম চাপ কল। পানি ভরে নিলাম নীচে তাকিয়ে দেখি পাহাড়ের ঢালুতে স্টেশন বানানো যদিও বেশি উচু না। পানি নিয়ে খাবারের অর্ডার করলাম। বেয়াড়া এসে খাবার দিয়ে গেলো। খেয়ে দেয়ে একটু বিশ্রাম নিবো তার ও জোগাড় নেই সিটে ই হেলান দিলাম ব্যাগ টা সিট এর নিচে শিকল এর সাথে তালা আগেই মেরে রেখেছিলাম। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হল এদিকে ট্রেন এর নড়াচড়ার কোন হদিস নেই। সন্ধ্যা শেষে রাত হল নিরাপত্তা রক্ষীরা জানালো ট্রেন আজ রাত এখানেই থাকবে।
মনের ভিতর ভয় কাজ করলো আবার এত লোকজন দেখে কিছুটা সাহস ও পেলাম। এদিকে ট্রেনের খাবার ও শেষ কোনমতে আমি ও দাদা মিলে দুই তিনটে ব্রিটানিয়া বিস্কুট এর প্যাকেট ম্যানেজ করলাম। বিস্কুট খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পরলাম গাদাগাদি করে। সকালে উঠে দেখি আমার উপর একজনের পা আবার আমিও হেলান দিয়ে আছি দাদার কাধে। সকালে উঠে বাথরুম এ যাওয়ার জোগাড় নেই ট্রেনের পানি গতকাল দুপুরে শেষ হবার পর যতজন ই গিয়েছে পুরো দুর্গন্ধময় করে এসেছে। পানির পুরাই হাহাকার এদিকে চাপকল এও প্রচণ্ড ভিড়। কোন মতে বিসলেরির বোতল টা ভরে ব্রাশ করে নিলাম আর পাশের জঙ্গলে এক নাম্বার সারলাম। পেটে ক্ষুদা কোন খাবার নেই বিস্কুট ও শেষ। আল্লাহকে ডাকা ছাড়া গতি নেই।
সকাল এগারোটার দিকে লোকো রিভার্স করে ট্রেন আবার চেন্নাই এর দিকে যাত্রা শুরু করলো। বারোটার দিকে গিয়ে পৌঁছলাম। নেমেই ওয়াশরুমে দৌড় আমি আর দুই দাদা। যাক পালাক্রমে তিনজন ফ্রেশ হয়ে স্টেশনের বাইরে গিয়ে উদর পূর্তি করে নিলাম। উদরপূর্তি করে স্টেশনের দিকে ছুটলাম তখনও জানতাম না ভাগ্যে কি আছে। দাদা আছেন ছোট ভাইয়ের মতোই সাথে রাখছেন। তো স্টেশনে ঢুকেই দেখি অনেক লোকের জটলা, সবাই কলকাতা, আসাম, পাটনা গুয়াহাটির বিভিন্ন ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী। কিছুক্ষণ পর স্টেশন মাস্টার আসলেন উনি ঘোষণা দিলেন কেউ টিকেট ফেরৎ দিয়ে টাকা নিতে চাইলে নিতে পারবে নতুবা এখন থেকে যার যা গন্তব্যে সে ওই দিকের যেকোন ট্রেনে চেপে এই টিকেট দিয়েই যেতে পারবে মানে টিকেট থাকলেই হবে আরকি।
আমরা প্রহর গুনছি আর দাদার সাথে পরামর্শে শামিল হচ্ছি কিভাবে কোন ট্রেনে যাওয়া যায়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবে তখনই এনাউন্স হল চেন্নাই পাটনা ভায়া হাওড়ার ট্রেন ছাড়বে ৫ টায়। আমরা তড়িঘড়ি করে ট্রেনে উঠে পরলাম ভুল যেটা করলাম তা হল আবারো আমরা জেনারেল কোচেই উঠলাম ইচ্ছে করলে স্লিপার কোচেও উঠতে পারতাম কিন্তু কি জানি হয়ত দাদাদের জেনারেল কোচের ই টিকেট ছিল বিধায় আমারও তাদের সাথেই উঠতে হল আমি যেহেতু নতুন। যাক আবারো কষ্টের যাত্রা এবার আগের থেকে লোকে লোকারণ্য। আমরা যে ভুলটা করেছিলাম সেটা হল প্রথম ওই ট্রেনে না উঠে পরের কোন ট্রেনে উঠলে ফাঁকা পেতাম আরামে শুয়ে বসে যেতে পারতাম। যাক ভাগ্যে ছিল না।
এভাবেই গাদাগাদি করতে করতে রাত পার করে দুপুরের একটু আগে বিশাখা পাটনাম গিয়ে পৌঁছুলাম। ওখানে ট্রেনের লোকো রিভার্স হবে ট্রেন উত্তরের দিকে যেতে থাকবে শুধু। ট্রেন থেকে নেমে পাতার পাত্রে লুচি ও সবজি দিয়ে ইচ্ছেমত খেয়ে নিলাম এমনিতেই ভিড় আবার জেনারেল কোচ অন্য কোচের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার কারণে বেঁয়ারা আসতে পারে না খাবারের অর্ডার নিতে। নিজেকে থার্ড ক্লাস যাত্রী মনে হচ্ছিল। যাইহোক ট্রেন আবার চলতে শুরু করলো এদিকে কিছু হিজরা ও উঠে পরলো সুযোগ বুঝে এই রুটে শুনেছি বহরমপুর থেকে বিশাখা পাটনাম পর্যন্তই এরা চাঁদা কালেকশন করে টারগেট আমার মত বা যুবক দের প্রতি। কি করবো ১০ রুপির নোট বের করতেই ছো মেরে নিয়ে নিল কিছু বুঝে উঠার আগেই।
অবাক হলাম না আসার পথে ও দিয়েছি। এদিকে শরীর ও মন দুটোই প্রায় বিধ্বস্ত। রাতের বেলায় কটাক এসে ট্রেন থামার পর একদল উড়িশ্বার বাউল দল এসে উঠলো আমাদের কোচে ভিড় আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিল অবশ্য উড়িয়া ভাষায় ওরা গান ও করছিল কেনো জানি বিরক্ত হচ্ছিলাম না। যাক ঘণ্টা দুয়েক যেতেই ওরা নেমে গেলো। ততক্ষণে ক্লান্তি যেন পেয়ে বসেছে। পরদিন সকালে গিয়ে নামলাম হাওরা স্টেশনে। নেমেই তিনজন একসাথে ফ্রেশ হলাম এদিকে এক কাপড়ে থাকতে থাকতে নিজের প্রতিই নিজের ঘেন্না হচ্ছিল করার ও কিছু ছিল না দেশে যাওয়ার নেশায় পাগল হয়েছিলাম।
দাদা আমাকে শিয়ালদহ স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে গেলো বললো বনগাও এর টিকেট করে স্টেশনের বিলবোর্ড দেখে ট্রেনে উঠে পড়তে। দাদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে টিকেট কেটে বনগা লোকাল এ উঠে পড়লাম ভোরবেলা তখনও ট্রেনে ভিড় বাড়েনি। পরে জেনেছি শিয়ালদহ ব্যস্ততম স্টেশন গুলির একটা ভারতে। যাই হোক জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখার ও ইচ্ছে করছে না মনে হচ্ছে ঘুমাই কিন্তু যে তালের সিট কোনমতে পিঠ লাগানো যায় আয়েশ করে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমানোর কায়দা নেই। আমার পাশেই শাড়ি পরে এক আপু এসে বসলেন বয়েষ ২৮-৩০ হবে লম্বা চিকন গায়ের রং সাদা। ভোর বেলা উঠে এসেছেন তো তাই মনে হয় চোখ লেগে আসছিল আপুর উনি নিশ্চিন্তে আমার কাঁধে ঘুমিয়ে পড়লেন আমিও বিরক্ত হলাম না। চার পাঁচ স্টেশন পর নেমে গেলেন আমিও প্রায় চলে এসেছি। অবশেষে ট্রেন থেকে নামলাম বেলা তখন ৯ টা প্রায়।
ওখান থেকে ভ্যান এ চেপে চলে গেলাম পেট্রোপোল বর্ডার ওপারেই বাংলাদেশ। ইমিগ্রেশন ছেড়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়লাম। ওখানেও চেকিং হল পাসপোর্টে এরাইভাল সিল মেরে এগিয়ে গেলাম আবার ও ভ্যান এ উঠতে হবে ঢাকার বাসের কাউন্টারে চলে গেলাম। যদিও যাওয়ার সময় ১২০০ টাকা দিয়ে (ট্রাভেল tax বাদে) ঢাকা টু কলকাতার আপ ডাউন বাসের টিকেট করা ছিল, কিন্তু নীয়ম না জানার কারণে অগত্যা বর্ডার পার হয়ে আসতে হল। আবারো শ্যামলী কাউন্টার এ গেলাম গিয়ে ওই বিষয়টি বললাম উনারা বললো এটা এখান থেকে কিছু করতে পারবেন না আপনাকে কলকাতা অফিস থেকে কনফার্ম হয়ে আসতে হবে সেটা যে সময়ই আসেন মানে আপনার ভিসার মেয়াদ যতদিন থাকবে কনফার্ম করে আসতে পারবেন।
কাউন্টারে ৫০০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে খাবার খেয়ে বাসের অপেক্ষায় থাকলাম। ওই সময় টাতে লোকজন কম আসা যাওয়া করতো বিধায় বাস ও বিকেলের দিকে ছেড়ে এসে ভোর বেলায় ঢাকায় নামিয়ে দিত। আমার বাস ছাড়লো রাত ৮ টায়। ততক্ষণে ক্লান্ত এই শরীর যেন ঘুমাবে এমন কিন্তু বাস জার্নিতে কেনো জানি ঘুম হত না আগে থেকেই কিন্তু ওইদিন আর বাধা মানলো না। তন্দ্রা আসবে এমন সময় বাস থেমে গেলো তখন ঠাণ্ডা আবহাওয়া শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে কুয়াশার চাদর বিছিয়ে দিয়েছে।
সামনে দেখি আর্মির সদস্যরা সবাইকে চেক করছে বিএনপি সরকার নতুন ক্ষমতায় এসেই অপারেশন ক্লিন হার্ট চালু করে তার বদৌলতে আমাদের ও চেকিং এ পড়তে হল। আমাকে দেখেই মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলো কোথায় গিয়েছিলে কেনো কি ইত্যাদি। আমার সরল উত্তর দেখে কিছু বললেন না। বাস ছেড়ে দিল আমিও ঘুমে মাঝখানে যশোর পার হয়ে আসার পর ছোট একটা পানির বোতল ও খাবার দিয়ে গেলো সুপারভাইজার। ফেরি তে এসে খাবার খেয়ে আবার ঘুম। ভোর হতেই আরামবাগ নামিয়ে দিল বাস।
কমলাপুর স্টেশনে চলে গেলাম সকালের তিস্তা ধরবো বলে। স্টেশনে গিয়ে সিট সহ টিকেট কেটে নেই সম্ভবত ৪৫ টাকা নিয়েছিল ঢাকা টু গফরগাঁও। ট্রেন ঠিক ৭ টায় সম্ববত ছেড়ে দিল। তখনও ক্লান্তি যেন ভর করছিল। কিন্তু সিটে বসে আর ঘুম হল না। পৌনে দশটার দিকে গফরগাঁও পৌঁছে যাই। স্টেশনে নেমেই সোজা বাড়ির পথে রওনা হই। তখন গফরগাঁও থেকে বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা কাচা ছিল। রিকশায় ভেংগে ভেংগে গিয়ে অবশেষে পৌঁছুলাম বাড়ি। ধোয়াশা লাগছিল সব কিছু। মফস্বলের ছেলে হয়ে কিভাবে পারলাম এত কষ্ট এত ক্লান্তি সহ্য করে নিজের কাছেই নিজেকে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। স্মৃতির পাতায় সারা জীবনের জন্যে এই যাত্রার অভিজ্ঞতা লিখে রাখা হয়ে গেলো।