জব্বার মিয়া রিকশায় বসে চিন্তিতভঙ্গিতে ঝিমুচ্ছে। সকাল থেকে এ পর্যন্ত কোন ভালো খ্যাপ পাওয়া যায়নি। যে কয়জনই যেতে চেয়েছে, সবার গন্তব্যই বেশ দূরে। বুড়ো শরীরে এতো দূর-দূরান্তে এই রিকশা টেনে নিয়ে যাওয়ার শক্তি জব্বার মিয়ার নেই! আবার বুড়ো মানুষের রিকশায় চড়ে যাওয়ার মতো ভরসা অনেকেই পায় না। যা আয় হয়, তার অর্ধেক মালিকের পকেটেই চলে যায়। বাকি টাকা দিয়ে সংসার কোনমতে টেনেটুনে চলে।
ভোরবেলায় ঠান্ডা পান্তা ভাত খাওয়ার পরিণাম এখন টের পাচ্ছে সে। ক্ষণে ক্ষণে ঝিমুনি এসে যাচ্ছে। ঘরে প্রাপ্তবয়স্কা এক মেয়ে আর অসুস্থ স্ত্রী ছাড়া আর কেউ জব্বার মিয়ার। স্ত্রী সেঁতারা খাতুনের মাথায় টিউমার। সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে কোঁকাতে থাকে। অন্যদিকে মেয়ে মনি হচ্ছে উড়নচণ্ডী মেয়ে। অসুস্থ মায়ের সেবা করবে, সংসারের কোন কাজ করবে সেদিকে তার কোন লক্ষ্য নেই। সারাক্ষণ উড়ু উড়ু মনে ঘুড়ে বেড়ায়। অবশ্য এমনটা হওয়ারই কথা। মেয়ে তার বিবাহযোগ্যা হয়েছে। মনে ভবিষ্যৎ নিয়ে কতো রঙিন স্বপ্ন এঁকে বেড়ায়। জব্বার মিয়ার নিজের কোনো সঞ্চয় নেই। কি দিয়ে মনিকে বিয়ে দিবে, কি দিয়েই বা সেঁতারার চিকিৎসা করাবে! মনির বয়স যখন চার বছর, তখন একটা ফুটফুটে ছেলে হয়েছিল জব্বার মিয়ার। আশা ছিল এই ছেলেটাই বড় হয়ে তার হাতের লাঠি হবে। কিন্তু ভাগ্য যখন মুখ ফিরিয়ে নেয়, তখন আর কি করার থাকে! দুইবছর বয়সে নিউমোনিয়া হয়ে মারা গেল ছেলেটা। কত কষ্ট করে সেই শোক বুকে চাপা দিয়ে রেখেছে সে।
ঘুমটা ধরে এসেছিল ঠিক এমন সময় কেউ যেন বলে উঠল, “চাচামিয়া, পল্টন হাসপাতালে যাবেন?” চমকে উঠে জব্বার মিয়া চোখ খুলে দেখে ৩০-৩৫ বছরের এক ভদ্রলোক; গায়ের পোশাকে আভিজাত্যের ছাপ, হাতে ছোট্ট একটা ব্যাগ। সুন্দর একটা চেহারা অথচ চোখের নিচে কালি, চুলগুলো উদ্ভ্রান্তের মতো এলোমেলো। জব্বারকে চুপ থাকতে দেখে ভদ্রলোক আবার তাগাদা দিয়ে বললেন, “কি চাচা? যাবেন? আপনার ভাড়া ডাবল করে দিবো।” বলেই সে ঝুপ করে রিকশায় উঠে বসল। জব্বার মিয়া দ্রুত রিকশা টানা শুরু করলো। আজ অনেক ভাগ্য করে এই খ্যাপ পাওয়া গেছে। চুপচাপ বসে থেকে হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলার কোন মানে হয় না। রিকশা টানতে টানতে জব্বার মিয়া জিজ্ঞেস করলো, “বাবা, আপনের নাম কি?”
– ইশতিয়াক আহমেদ।
– হাসপাতালে যাইতাছেন… রুগী আপনের কি অয়?
– আমার মা হাসপাতালে। অপারেশন হবে একটু পরেই। আমি টাকা নিয়ে যাচ্ছি অপারেশনের জন্য। যত দ্রুত যাবো, তত দ্রুতই কাজ হবে। আপনি একটু তাড়াতাড়ি চালান চাচা।
– বুড়া মানু, জলদি জলদি তো টানতে পারি না বাবা।
এটুকু বলেই জব্বার মিয়া সাধ্যমতো চেষ্টা চালালো রিকশা জোরে টানার। ইশতিয়াক আর কিছু বলল না। চিন্তিতমুখে রিকশায় বসে রইল। পল্টন হাসপাতালের সামনে এসে জব্বার মিয়া রিকশা থামালো। ইশতিয়াক চটজলদি নেমে রিকশা ভাড়া মিটিয়ে প্রাণপণে দৌড়ে চলে গেল হাসপাতালের ভেতরে। সেখানে তার মা গুরুতর অবস্থায় শুয়ে আছে, কীভাবেই বা মন মানে? জব্বার মিয়া তার হাত খুলে দেখে, ভদ্রলোক তাকে একশো টাকা দিয়েছে। যে রাস্তাটুকু এসে মাত্র চল্লিশ টাকা পাওয়া যেতো, সেখানে সে আজ একশো টাকা পেয়েছে। খুশিতে মন ভরে গেল জব্বার মিয়ার। পিছন ঘুরে রিকশা নিয়ে সে ফিরতি পথে যাবে, এমন সময় নজর পড়লো রিকশার সিটের উপর। ইশতিয়াক তাড়াহুড়োয় তার হাতের ব্যাগটা ফেলে রেখে গেছে। জব্বার ব্যাগটা হাতে নিয়ে ভাবলো, এটাতে কি গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে? যদি থেকেই থাকে তবে কি ভদ্রলোক এমন অন্যমনস্ক হয়ে এটা ফেলে রেখে যেতে পারতেন? জব্বার মিয়ার কৌতুহল জাগে মনে। আস্তে করে ব্যাগের চেইন খুলে ব্যাগের ভিতর উঁকি দেয় সে।
টাকা! আর টাকা! ব্যাগভর্তি টাকা! এতো টাকা একসাথে জীবনে আগে কখনও দেখেনি জব্বার। মাথাটা যেন ঘুরে উঠলো তার। সাঁই করে ব্যাগের চেইন আঁটকে এদিক ওদিক তাকালো। কেউ দেখলো না তো? আল্লাহ কি তাহলে আজ তার ভাগ্য খুলে দিয়েছে? ব্যাগের ভেতর এতো টাকা যে জব্বার মিয়া আন্দাজ করতে পারছে না। এই টাকাগুলো দিয়ে তার স্ত্রীর চিকিৎসা তো হবেই, মেয়েটারও ভালো জায়গায় বিয়ে হয়ে যাবে। যদি কিছু টাকা বেঁচেও যায়, তা দিয়ে বুড়ো-বুড়ির দিন ভালোভাবেই কেটে যাবে। এই সুবর্ণ সুযোগ হাতে পেয়েও কি হাতছাড়া করা ঠিক? না ঠিক না। মনস্থির করে ফেলে সে। ব্যাগটা সিটের নিচে লুকিয়ে দ্রুত রিকশায় চড়ে জব্বার মিয়া ফিরতি পথে রওনা দিল।
কিছুদূর যেতেই ভদ্রলোকের চেহারা ভেসে উঠলো তার মনে। মায়ের চিকিৎসা করার জন্য ছেলে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যাচ্ছে হাসপাতালে। এই টাকাগুলো না পেলে হয়তো তার মায়ের চিকিৎসা হবে না। হয়তো বা চিকিৎসা হবে। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যাবে। তার লোভের জন্য চলে যাবে একটি প্রাণ, ছেলে হারাবে তার মাকে। আল্লাহ কেমন করে সইবে এই অন্যায়?
না, এই অন্যায় জব্বার মিয়া কিছুতেই করতে পারে না। সাথে সাথে রিকশা ঘুরিয়ে হাসপাতালের সামনে এসে রিকশা দাঁড় করালো সে। জব্বার ভাবে হাসপাতালের ভেতরে কি যাবে? এতো বড় হাসপাতালে সে কীভাবে খুঁজে পাবে ভদ্রলোককে? ব্যাগ হাতে নিয়ে গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে সে ইতস্তত করতে লাগলো। ঠিক এমন সময় ভেতর থেকে আসতে দেখা গেল ইশতিয়াক আহমেদকে। যতোটা হুড়োহুড়ি করে সে ছুটে গিয়েছিল হাসপাতালে, তার চেয়েও দ্বিগুণ হুড়োহুড়ি করে সে দৌড়ে আসছে জব্বার মিয়ার দিকে। তাকে দেখে যেন ইশতিয়াক দেহে প্রাণ ফিরে পেল। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, “আপনি আছেন? আমার বড় উপকার করলেন!”
– এইডা আর এমন কি? ট্যাকা না পাইলে আপনের আম্মার চিকিৎসা হইবো না। লন, লয়া যান।
– আপনার অনেক শুকরিয়া।
ইশতিয়াক আহমেদকে বিদায় দিয়ে রিকশা টেনে চলে এলো জব্বার মিয়া। বুকটা তার ভীষণ হালকা লাগছে। মনে হচ্ছে, আল্লাহ আজ সত্যিই তার ভাগ্যে ভালো কিছুই রেখেছেন। তাই তো সে কতো বড় অপরাধের হাতছানি থেকে বেঁচে গেল।
সন্ধ্যাবেলা বাসায় ফিরে জব্বার মিয়া দেখে সেঁতারা বিছানায় শুয়ে আছে। স্ত্রীর কপালে হাত রেখেই জব্বার বুঝতে পারলো, তার শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। জব্বার মিয়া তার মেয়েকে ডাক দিলেন, “ও মণি, বাপরে এক গেলাস পানি দিয়া যা মা।” মণি কাঁথা সেলাই করছিল, বাবার ডাক শুনে সাথে সাথে এক গ্লাস পানি এনে দিল। এক নিশ্বাসে পানিটুকু খেয়ে, জব্বার মিয়া গলার গামছা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলল, “আজকা একটা তাজ্জব ঘটনা ঘটছে মনির মা।”
– কী কন? কী হইছে তাই?
– এক সাব তার মায়ের চিকিৎসা করাইতে ম্যালা ট্যাকা নিয়া হাসপাতালে যাইতেছিল।
যাওয়ার সময় ভুলে হাতের ব্যাগ রিকশায় ফালায় রাইখা গেল। আমি ব্যাগ খুইলা দেহি ট্যাকা আর ট্যাকা! একথা শুনে সেঁতারা বেগমের জ্বর যেন মুহূর্তেই উবে গেল! ঝট করে বসে সে জব্বার মিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, “ট্যাকাগুলা আনছো? কই দেহি? জীবনে ম্যালা ট্যাকা দেহি নাই।” মনিও আগ্রহ করে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি ট্যাকাগুলা কই রাখছো বাজান?” জব্বার মিয়া শান্তকণ্ঠে বলল, “ট্যাকাগুলা আমি বাসায় আনার জন্য রওনা দিছিলাম। তহন মনে হইলো, এই ট্যাকা না পাইলে একটা মানুষের চিকিৎসা হইবো না। মইরা যাইবো। একটা মাইনষেরে খুন কইরা আমি ক্যামনে ভালা থাকুম? ট্যাকাগুলা ব্যাডারে ফিরায় দিয়া আইছি।”
সেঁতারা বেগম আহত কণ্ঠে চেঁচিয়ে উঠল, “তুমি ট্যাকাগুলা ফিরায় দিলা?” মনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, “খুব ভালা করছো বাজান। ট্যাকার আমগোর দরকার নাই। আমরা যেরম আছি, হেরমই ভালা।” জব্বার মিয়া ভাবে, টাকাগুলো নিলে আজ হয়তো তাদের জীবনে সুখের দিন আসতো, কিন্তু এই অপরাধের গ্লানি তাদের বয়ে যেতে হতো আজীবন। সকালবেলা জব্বার মিয়ার ঘুম ভাঙলো মনির চেঁচামেচিতে। মনি ওর বাবাকে ধাক্কা দিয়ে বলল, “বাজান, বাজান দেহো। প্যাপারে তোমার ছবি ছাপাইছে।” জব্বার চোখ কচলে পত্রিকায় তাকিয়ে দেখলো, মেয়ের কথা সত্যি। পত্রিকায় তার ছবি ছাপা হয়েছে। অবাক কণ্ঠে বলল, “আমার ছবি প্যাপারে ক্যান? কি লিখছে পড় তো?”
বস্তির পাশে মন্টুর একটা চায়ের দোকান আছে। সেখানে চা খেতে বসলে খদ্দেররা খবরের কাগজ পড়তে চায়। তাই দোকানে প্রতিদিন খবরের কাগজ রাখে মন্টু। ঘটনাটা সর্বপ্রথম মন্টুরই চোখে পড়েছে। সেই থেকে বস্তিবাসীর মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে এই অবাক করা কাহিনী। মনির কানে পৌঁছাতেও বাকি থাকেনি। দৌড়ে গিয়ে মন্টুর দোকান থেকে পত্রিকা নিয়ে আসে সে। নিজের চোখে যেন বিশ্বাস হয় না! সত্যি সত্যিই তার বাবার ছবি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়! মনি ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়েছে। মোটামুটি ভালোই বাংলা পড়তে পারে।খবরটুকু পড়ে সে তার বাবাকে শোনালো। গতকাল, জব্বার মিয়া যেই টাকাগুলো ফেরত দিয়ে সততার পরিচয় দিয়েছে সেই ঘটনাটাই ছাপা হয়েছে। ভদ্রলোক ইশতিয়াক আহমেদ একজন সাংবাদিক। গতকালের ঘটনাটা সে পত্রিকায় লিখে সবাইকে জানিয়েছে। সাথে জব্বারের ছবি। জব্বার বুঝতে পারলো, রিকশা নিয়ে ফিরে আসার সময়ই ইশতিয়াক আহমেদ মোবাইলে তার ছবি তুলে নিয়েছে।
বিকেলবেলা ইশতিয়াক আহমেদ জব্বার মিয়ার ঘরে এসে হাজির! সাথে আরেকটি লোক, তার হাতে মাইক, কাঁধে বিশাল ক্যামেরা। জব্বার সবাইকে দেখে হকচকিয়ে গেল। বলল, “আপনেরা? আপনেরা আমার ঘর চিনলেন ক্যামনে?” ইশতিয়াক হেসে বলল, “চাচা, আপনি এখন খুবই জনপ্রিয়। শুধু আমি না, সবাই আপনাকে চেনে। আপনার ঘর খুঁজে বের করা কোন কঠিন ব্যাপার না।”
“জনপ্রিয়” মানে কী, জব্বার মিয়া তার মানে বুঝলো না, তবে এটা বুঝলো নিশ্চয়ই এর মানে ভালো কিছু! আজ রিকশা চালানোর সময় একদল ছেলে তার সাথে ছবি তুলল। বলল, পত্রিকার ঘটনাটি নাকি তারা পড়েছে।
ইশতিয়াক আহমেদ জব্বার মিয়ার একটি সাক্ষাৎকার নিল। সাথে তার পরিবার, ভাঙাচোরা বস্তি সবকিছুই তার সহকারী ক্যামেরাম্যান ধারণ করে নিলেন ক্যামেরায়। ইশতিয়াক আহমেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়। সাক্ষাৎকারটি তিনি প্রকাশ করলেন ইন্টারনেট ওয়েবসাইটে। মূহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ল সেটি, হাজার হাজার দর্শক সাক্ষী হয়ে রইল এই সুন্দর গল্পটির। অজস্র মানুষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানালো জব্বার মিয়ার প্রতি। তার সততার প্রতি মুগ্ধ হয়ে অনেকেই অর্থ দিয়ে পুরষ্কৃত করলো, তার দারিদ্র নিবারণে সহায়তা করতে এগিয়ে আসলো।
ইশতিয়াক আহমেদ ভাবেননি, এই দরিদ্র কিন্তু সৎ মানুষটির প্রতি মানুষ এতো ভালোবাসা জানাবে। আজ এই মানুষটির সততার জন্যই তার মায়ের চিকিৎসা হয়েছে। নয়তো সেদিন কি হয়ে যেতো তা শুধুমাত্র আল্লাহ জানে!
ইশতিয়াক আহমেদ তার একাউন্ট থেকে জব্বার মিয়ার টাকা তুলে তাদের বাড়ি আসলো। জব্বার মিয়া সবেমাত্র রিকশা নিয়ে বাসায় ফিরেছে। দুয়ারে বসে গামছা দিয়ে কপালের ঘাম মুছছে। আচমকা ভদ্রলোককে আসতে দেখে সে চট করে উঠে দাঁড়ালো। ঘর থেকে পিঁড়ি এনে বসতে দিল তাকে। ইশতিয়াক আহমেদ জব্বার মিয়ার হাতে টাকার ব্যাগ দিয়ে বলল, “আপনার সততায় মুগ্ধ হয়ে জনগণ আপনার পাশে দাঁড়িয়েছে। আপনি দরিদ্র হয়েও লোভের পথে পা বাড়াননি। বরং ঠিক সময়ে টাকাগুলো ফিরিয়ে দিয়ে আমার উপকার করেছেন। তাইতো আজ আমার মায়ের কোলে আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছি।” জব্বার মিয়া অবাক কণ্ঠে বলল, “এসব কি কন? আমি তো এসব কিছুই করি নাই। ট্যাকা লাগবো না।”
– এগুলো শুধু টাকা নয় চাচামিয়া। এগুলো আপনার প্রাপ্য। আপনার সততার পুরষ্কার! হাত বাড়িয়ে টাকার ব্যাগটা নিলো জব্বার মিয়া। সবকিছু এতো দ্রুত হয়ে গেল তার বুঝে আসে না। শুধু এটুকু বুঝলো, সেদিন লোভের পথে পা না বাড়িয়ে সৎভাবে সে টাকাটা ফিরিয়ে দিয়েছিল বলেই আজ তাদের ভাগ্যের চাকাও ঘুরে গেছে। আজ আল্লাহ মুখ তুলে চেয়েছে। সেঁতারা বেগমের চিকিৎসা হবে, মনির ভালো জায়গায় বিয়ে হবে। সুন্দর সোনালী হয়ে উঠবে তার সংসার। টাকাগুলো মুঠোয় শক্ত করে ধরে কান্না চাপার চেষ্টা করলো জব্বার মিয়া। তার চোখ ছলছল করছে। ইশতিয়াক আহমেদ সেই চোখের দিকে তাকাতে পারল না। অন্যদিকে চোখ সরিয়ে নিল। জব্বার মিয়া ভাবে, কে বলেছে তার ছেলে নেই? ইশতিয়াকের মাঝে তো সে তার ছেলের ছায়াই খুঁজে পাচ্ছে!