“একটু ফাইলটা দেখে দিবেন”? নিজের ডেস্কে বসে মাথাটা নিচু করে খুব মনোযোগ সহকারে অফিসের কাজ করছি। ঠিক তখনি কারো কন্ঠে উপরের কথাটি শুনলাম। কন্ঠটা শুনে কেমন জানি লাগল। যদিও কন্ঠটা পরিচিত। আমি আমার কাজেই ব্যাস্ত। কেননা এই সুরেলা কন্ঠটা কখনো আমার টেবিলে এসে কথা বলে না। হয়ত মনের ভুল। চুপচাপ মাথাটা নিচু করে এসব ভাবছি। তখনি শুনতে পেলাম আবার..
– এই যে শুনছেন? ফাইলটা একটু দেখবেন প্লিজ? আমি ভুল শুনছি না তো? তাকিয়েই অবাক হলাম। যে নীলাভা আমার টেবিলে কখনো কোন ফাইল নিয়ে আসে না। পিয়নকে দিয়েই ফাইল আমার টেবিলে পাঠায়। সেই নীলাভা মেয়েটা আমার টেবিলের সামনে। কিছুক্ষণ অবাকের ন্যায় তাকিয়ে থেকে বললাম..
– একি দাড়িয়ে আছেন কেন বসুন?
– না ঠিক আছে। আপনি জলদি ফাইলটা দেখে দিন। (নীলাভা)
কথাটা খুব ইতস্ত করে বললো। তবে কথাটায় একটু ছটফটের ঘ্রান পেলাম। ফাইলটা টেবিলে রেখে হাতের আঙুল গুলা ফুটাচ্ছে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। আশ্চর্য ব্যাপার এখন তো ঘামার কথা না। অফিসে তো এসি চলছে। তাছাড়া ও এমন করছে কেন? ওর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে খুব অস্বস্থি হচ্ছে ওর। কিন্তু কেনো?
– আপনি বসেন আর তা না হলে আমি ফাইল দেখবো না। (আমি) কথাটা কাজে লেগেছে। যেই বললাম অমনি আস্তে করে চেয়ারটায় বসলো। অফিসের কোন ফাইল কমপ্লিট করে আমার কাছে আনা হয়। আমি সাক্ষর করে দিলে ফাইল স্যারের দরজায় পৌছাবে এর আগে নয়। তাই অফিসের সবাই কোনো ফাইলে সই করাতে হলে হয় নিজে আসবে না হয় পিওনকে দিয়ে পাঠাবে। ফাইলটা দেখতে লাগলাম। একটু অবাক হলাম। অবাক হওয়ারি কথা ফাইলটায় গতকালকেই সাক্ষর করে পিয়নকে দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। নীলাভা কি আমার সাক্ষরটা দেখি নি? নাকি সব কিছু দেখেও….
– আবির সাহেব এক গ্লাস পানি হবে?
– পানি?
আমি কিছুক্ষন চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ওর বিশাল হ্যান্ডব্যাগে তো একটা পানির বোতল সব সময় থাকে। আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না। নীলাভা কি আমার কাছে পানি খাওয়ার জন্য আসছে? ফাইলটা কি একটা অজুহাত?নাকি অন্য কোনো কারন থাকতে পারে? মাথাটা কেমন ভো ভো করছে। আমি এক গ্লাস পানি দিলাম। নীলাভা ঢগ ঢগ করে তাড়াহুড়ো ভাবে পানি খেয়ে নিল। আমি খালি তাকিয়েই আছি ওর দিকে। এমন রুপ আমি আজই প্রথম দেখছি।
– কোন সমস্যা? আপনি এই ভাবে ঘামছেন কেন? (আমি)
– না কিছু হয় নি।
– আমি ফাইলটায় গতকালকেই সাক্ষর করে দিয়েছি।
– কোথায় দেখি দেখি। আরে হ্যাঁ তাই তো।
নীলাভার চেহারায় একটু লজ্জা মিশ্রিত আভা দেখলাম। সাধারণত মেয়েরা লজ্জা পেলে যা করে নীলাভাও সেটা করল। মাথা নিচু করে ঠোটের মধ্যে কামড় দিল। আর বামহাতে চুল গুলো কানে গুজতে লাগল। তারপর আস্তে করে ফাইলটা হাতে নিয়ে নীলাভা চলে গেল।
আমিও আর কিছু বললাম না। তবে মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন বার বার নক করতে লাগল নীলাভা কি কোন ঝামেলায় পড়েছে? সাধারণত মেয়েরা ঝামেলায় পড়লে এই রকম আচরণ করে। আমি আবার কাজে মনোযোগ দিলাম। কিন্তু কেন যেন মনে কৌতহলী জাগতে লাগল আমি কি কিছু জিজ্ঞেস করব? না থাক কিছু জিজ্ঞেস করার দরকার নেই যা ভাব এই মেয়ের। যেদিন নীলাভা অফিসে জয়েন করল সেদিনই এই মেয়েটাকে দেখে এক অদ্ভুত ভাল লাগা কাজ শুরু করে মনের ভিতর। অফিসের সবার চোখ ওর দিকে ছিল। আমারো ব্যাতিক্রম হলো না। ভাবলাম মেয়েটার সাথে পরিচয় হই। সাথে একটা ফুল নিয়ে গেলে মন্দ হয় না। যেই ভাবা সেই কাজ..
– নতুন জয়েন করার জন্য অভিনন্দন। এই ফুলটা আপনার জন্য। আমি আবির, আপনি? ও কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। কি যেন ভাবল তারপর বলল “আমি পারমিতা আহসান নীলাভা” তবে আমার ফুলটা নিল না। বরং বলল…
– ফুল আমার পছন্দ না। মানে ফুলটা গাছ থেকে ছিড়াটাটা পছন্দ না। তারপরও আমার জন্য ফুল এনেছেন আমি খুশি। স্যরি ফুলটা নিতে পারলাম না। আরে এই মেয়ে বলে কি? মেয়েরা ফুলকে কত পছন্দ করে আর এই মেয়ে বলে ফুলকে পছন্দ করে না। কেন ফুল কি তোমার শত্রু? আমি একটু আহত হলাম। আহত হলাম মানে মনে ব্যাথা পেলাম। আমার ফুলটা গ্রহন করল না। আরে ফাজিল মেয়ে ফুলকে পছন্দ করো না সেটা তোমার ব্যাপার একটা মানুষ ফুল দিয়েছে সেটা অন্তত গ্রহন করতে পারতা। এই ভাবে আচরণ করার মানে হয়? তাও আবার অফিসের সবার সামনে। কেমন লজ্বা লাগছে নিজের কাছে। লজ্বাটাকে কাটিয়ে নিজের কাছে যতটা সম্ভব স্বাভাবিকতা এনে একটা হাসি দিয়ে বললাম…
– ফুলকে পছন্দ করেন না হা হা হা। মজা করছেন আমার সাথে তাই না? আসলে ফুলটা আপনার জন্য আনি নি। ফুলটা ঈশিতার জন্য এনেছি। ভাবলাম আপনি নতুন আসছেন আপনাকে ফুলটা দেই। যাই হোক যার জন্য এনেছি তাকেই ফুলটা দিয়ে দেই। আপনাকে শুধু শুধু কেনো ফুল দিতে যাবো আমি? হুমমম নীলাভার পাশের টেবিলেই ঈশিতার টেবিল। ওর টেবিলের সামনে গিয়ে বললাম…
– ঈশিতা, এটা তোমার জন্য।
– আমার জন্য?
– হ্যাঁ তোমার জন্য। বিশ্বাস হচ্ছে না?
– আপনি তো কখনো আমায় ফুল দেন নি।
– কখনো দেই নি তো কি হয়েছে।
এবার রোজ ফুল দিব তোমায়। কোন সমস্যা? নাকি তোমারো ফুল পছন্দ নয়।
একটু জোরেই কথাটা বললাম। যাতে নীলাভা ভালো করেই শুনতে পাই। কথাটা বলেই আড়চোখে নীলাভার দিকে তাকালাম। দেখলাম মেয়েটা চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে তাকিয়ে আমাদের দেখছে। মনে মনে হেসে উঠলাম। ঈশিতা তখনি বললো..
– না কি বলেন? ফুল পছন্দ করব না কেন? অবশ্যই ফুল পছন্দ করি। আমি খুব খুশি হয়েছি আপনি আমার জন্য ফুল এনেছেন।
– আসলে জানো ফুল হলো একটা পবিত্র জিনিসের মত। এটা সৌন্দর্যের প্রতীক। যারা ফুলকে পছন্দ করে না। তাদের মন কখনো সুন্দর হয় না। শুধু সুন্দর চেহারা হলে তাকে সুন্দর বলে না, একটা সুন্দর মন থাকা দরকার।
– আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝি নি।
-কিছুই বুঝতে হবে না তুমি কাজ করো। এই বলে চলে আসার সময় নীলাভার দিকে আবার তাকালাম। দেখলাম রাগ রাগ ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে আমাকে কাচাঁ খেয়ে ফেলবে।
– ঈশিতা, এত অবাক হওয়ার কিছু নেই। এইভাবে তাকিয়ে থেকো না। কাজে মনোযোগী হও। আসলে কথাটা নীলাভাকে বলেছি ঈশিতার দিকে তাকিয়ে শুনিয়ে শুনিয়ে। মনে মনে বললাম, “মেয়ে তুমি যে স্কুলে পড়তে ওই স্কুলের হ্যাড মাষ্টার আমি”। পাশ থেকে রাফি ভাই আস্তে করে বলল “ছক্কা তো মারলেন পুরাই গ্যালারির বাহিরে। কথাটি শুনে হি হি করে হাসতে হাসতে নিজের টেবিলে চলে আসি। এই মেয়ে ঝামেলায় পড়ুক আমার কি? আমি কিছু জিজ্ঞেস করব না। ঠিক কিছুক্ষন পর নীলাভা আবার আমার টেবিলের সামনে আসল। আমি আবারো অবাক হলাম। সামনে মুখ তুলে তাকিয়ে থেকে বললাম..
– কিছু বলবেন?
– না মানে বলতে চেয়েছিলাম আমি আজ কথাটা ও পুরো পুরি শেষ করল না। আমি কথাটির শেষটা ধরে বললাম..
– আপনি আজ কি?
– আমি আজ নিজ হাতে রান্না করে এনেছি। আজ দুপুরে আমার সাথে লাঞ্চ করবেন। আমি তো পুরো হা করে তাকিয়ে থাকলাম। এই মেয়ের এত পরিবর্তন কিভাবে হলো? এমনটাতো হওয়ার কথা না। কি হচ্ছে আজ বুঝতেই পারছি না। হালকা হাসির রেখা টেনে বললাম..
– দুঃখিত আমি তো আজ ঈশিতার সাথে লাঞ্চ করব। আমি ঈশিতাকে কথা দিয়ে দিয়েছি। নীলাভার গাল মুখ রাগে গড়গড় করছে বুঝতে পারলাম। না জানি কি বলে এখন। যদিও কথাটা মিথ্যে ঈশিতার সাথে লাঞ্চের বিষয় নিয়ে কোন কথা হয় নি। সত্যি কথা কি, ভাব ওয়ালি মেয়েদের সাথে ভাব নিতে হয়। তাই একটু….
– আমার সাথে লাঞ্চ করবেন কেন ? করবেন তো ঈশিতার সঙ্গে। কি পেয়েছেন আপনি হু? আপনি আমার সাথে এমন আচরণ করেন কেন? নেক্সট টাইম থেকে যদি ঈশিতার সাথে কথা বলতে দেখি খবর আছে আপনার। আর আমিও দেখে নিব কি করে আজকে ঈশিতার সাথে লাঞ্চ করেন। কথাগুলো শুনে আমিই এবার চোখ বড় বড় করে তাকালাম। আরে এই মেয়ে কি বলে এইসব? আমি কার সাথে কথা বলব, কারসাথে চলব, কার সাথে খাব সেটা আমার ব্যাপার তোমার এত গা জ্বলে কেন? একদিন অফিস শেষে দেখলাম নীলাভা দাড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য। আমি অনেক কষ্টে একটা রিক্সা ঠিক করলাম। ওরে বললাম..
– আপনার যদি আপত্তি না থাকে আমার সাথে করে আসতে পারেন। আমি পৌছে দিব।
– আমি অপরিচিত কারো সাথে রিক্সায় চড়ি না।
– আমরা একই অফিসে চাকরি করি অপরিচিত কেন বললেন?
কথাটা শোনে একটু খারাপ লাগল। এই মেয়ের দেমাগ বেশি। রিক্সাওয়ালাকে বললাম মামা তুমি যাও আমিও কোন অপরিচিত মেয়েকে রিক্সায় উঠায় না। সেদিনের পর থেকে নীলাভার সাথে নিজ থেকে কথা বলি না। এই মেয়ে নিজেকে ভাবে কি? আমি ঈশিতার সাথে ফাইজলামি করতাম। ঈশিতাও দেখতে তেমন একটা মন্দ না। তবে, নীলভাকে হিট লাগিয়ে ঈশিতাকে বলতাম..
– ওয়াও ঈশিতা তোমাকে হেব্বি লাগছে। তার চেয়ে সুন্দর লাগছে তোমার চোখের কাজল।
– তাই বুঝি? আপনি একটু বেশি বাড়িয়ে বলছেন।
– আহা আমি মিথ্যে কথা বলব কেন? ঈশিতা তুমি শাড়ি পড়তে পারো না? তুমি জানো তুমি শাড়ি পড়লে তোমাকে একদম পরীর মত লাগবে। আশেপাশের কেউ পাত্তা পাবে না। ঈশিতাকে মাঝে মাঝে অফিস শেষে রিক্সায় করে বাসায় পৌছে দিতাম। ঈশিতাকে বললাম..
– ঈশিতা তোমার সাথে এই পাচঁ ছয় মাস হঠাত্ এই রকম আচরণ করছি তুমি কিছু মনে করো নাতো?
– এতে আবার কি মনে করব? আমি জানি আপনি এই রকম কেন করেন।
– তুমি জানো?
– শুধু আমি না অফিসের প্রায় অনেকেই জানে।
নীলাভাকে হিট লাগানোর জন্য এই গুলা করছেন। আপনি পারেন ও বটে। মাঝে মাঝে আমার হাসি পায়। হি হি হি। সত্যি কথা কি দুজন মেয়ে যখন একসাথে হাটবে দুজনের মধ্যে কেউ না কেউ একটু বেশি সুন্দর হবে। আপনি যখন সুন্দরী মেয়েটাকে পাত্তা না দিয়ে অপর মেয়েটাকে গুরুত্ব দিবেন। তখন ঠিকি সুন্দরী মেয়েটার গা জ্বলবে। খুব হিংসে হবে। যা নীলাভা অনুভব করছে। নীলাভা বহুবার আমার সাথে কথা বলতে চেয়েছিল। আমি গুরুত্ব দেই নি। আমার কাজ আছে আমি এখন ব্যাস্ত। এই বলে ওকে এড়িয়ে চলতাম। কয়েকবার চুলে বেলি ফুল গেথে আর শাড়ি পড়ে আসছিল। খুব সুন্দর লাগছিল। সুন্দর মানে ভয়ংকর সুন্দর। আমি দেখেও না দেখার ভান করতাম। আচ্ছা ও তো বলেছে ফুল ওর পছন্দ না, তাহলে কি এই তো সেদিন অফিস শেষে বাসায় যাওয়ার জন্য রিক্সায় উঠলাম কোথা থেকে চট করে এসে নীলাভা আমার পাশে এসে বসল। আমি বেশ অবাক হলাম। তবে তখনি বললাম..
– কি ব্যাপার এটা কোন ধরনের আচরণ? নামুন বলছি। কে আপনি?
– আমি কে চিনেন না? আজকে আমাকে বাসায় পৌছিয়ে দিবেন।
– আমি অপরিচিত কারো সাথে রিক্সায় চড়ি না।
– প্রতিশোধ নিচ্ছেন? এখন যদি ঈশিতা হতো ঢং ঢং করে হাসতে হাসতে ওর সাথে যেতেন।
আমি আর কিছু না বলে রিক্সা থেকে নেমে পড়লাম। এইভাবে পাচঁ ছয় মাস কেটে গেল। সত্যি বলতে কি এই মেয়েটার সাথে এই রকম করতে করতে ওর প্রতি একটা ভাল লাগা কাজ শুরু করল। গতকাল ঈশিতাকে বলেছিলাম…
– ঈশিতা তোমার হাতের রান্না খাব। আমি অনুমান করে বলতে পারি তোমার হাতের রান্না সেই হবে সেই। আশেপাশের কেউ চান্সই পাবে না।
– কে বলছে আপনাকে? কচু রান্না করতে পারি আমি। হঠাত্ নীলাভা সামনে এসে সিংহীর মত গর্জন দিয়ে বলল…
– কি পেয়েছেন আপনি? আশেপাশের কেউ পাত্তা পাবে না কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন মনে করেছেন আমি কিছু বুঝি না? আর এই যে ঈশিতা কিসের এতো ভাব ওনার সাথে তোমার? কিসের এতো হাসাহাসি? আমি রান্না করতে পারি নাকি পারি না আগামীকাল দেখবেন বুঝছেন মিঃ আবির? (নীলাভা) অফিসের সবাই তাকিয়ে থাকল আমাদের দিকে। নীলাভা এতটা রাগ করবে হিংসে চোখ মুখ লাল করে ফেলবে আমি ভাবতে পারি নি। সত্যি এটা ভাবি নি। কেমন ভয় হতে লাগল।
– আমি আপনার নাম উল্লেখ্য করি নি। আপনি যদি নিজেকে মনে করেন সেটা তো আমার দোষ না। (আমি) গত কালকের ঘটনার পর আজ নীলাভা নিজ হাতে আমার জন্য রান্না করে নিয়ে আসছে সেটা কল্পনার বাহিরে। আমি এই সবের কিছুই করতাম না। যেদিন ও আমার দেওয়া ফুলটা নেয় নি সেদিনই মনে স্হির করেছিলাম মেয়ে তোমাকে আমি ছাড়ছি না। তুমি কার সাথে ভাব নিয়েছো সেটা এখনো জানো না। তখনি একটা কাজ করে বসলাম।
ওর টেবিলে গেলাম। চেয়ারটায় বসলাম। নীলাভা চোখ মুখ লাল করে বসে আছে। চোখের কোনে পানি জমতে শুরু করেছে। কাদঁতে চেষ্টা করছে। নির্ঘাত কিছু বললে কেঁদে দিবে। একটা কাগজ নিয়ে সেটাতে কিছু লিখে ওর সামনে দিলাম।
– এটা কিসের কাগজ?
– লাভ লেটার।
– মানে?
– পড়ে দেখেন।
নীলাভা কাগজটি হাতে নিয়ে পড়তে লাগল… **তোমার হাতের রান্না রোজ খেতে চাই নীলাভা চোখের পানি আটকাতে পারল না। উহু উহু করতে করতে বলল..
– আপনি একটা ফাজিল উহু, আপনি একটা বদমাইশ উহু, আমাকে রাগাতে আপনার ভাল লাগে? উহু, আপনি এমন কেন? উহু, উহু, ওর চোখের পানি মুছে দিলাম। তারপর ফাইজলামি করতে করতে বললাম…
– তুমি কান্না করলে আমারো কষ্ট হয় উহু, অনেক ক্ষিদে লাগছে উহু, লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে। নিজ হাতে খাইয়ে দিবে উহু
– এই আপনি উহু করছেন কেনো? আমি কিছু বললাম না। একটু চুপ করে তাকিয়ে থেকে বললাম, তবে যে কথাটা বলেছি সেটার জন্য নীলাভা একদম প্রশ্তুত ছিল না। আমি হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে একটু জোর গলায় বললাম…
– আমার জীবনের একটা অংশ হওয়ার জন্য তুমি কি প্রস্তুত? আমার প্রিয়তমেষু হওয়ার জন্য তুমি কি রাজি? mনীলাভা চুপ করে তাকিয়েই আছে আমার দিকে। আমি ওর হাতটা ধরে বসে আছি। ওর চোখের ভাষা বলে দিচ্ছে “হুম সেও প্রস্তুত”