সকাল সাড়ে সাতটা, অনেক্ষন ধরে ছোট বোনের রুমের দরজা ধাক্কা দিচ্ছি কিন্তু খোলার কোন নাম গন্ধ নেই।ওদিকে ওর কলেজের সময় হয়ে যাচ্ছে। একপর্যায় ঢুলতে ঢুলতে দরজা খুললো স্বর্না। দরজা খুলেই চিল্লিয়ে বলল কি সমস্যা দরজা ধাক্কাচ্ছিস কেন??আমি বললাম তোর কলেজের সময় হইছে না??কলেজে যেতে হবেনা??স্বর্না অবাক হয়ে আমার কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বর আসছে কিনা, তারপর তাপমাত্রা স্বাভাবিক পেয়ে চিক্কর পেরে আম্মাকে ডাকাডাকা শুরু করলো।আম্মা দেখে যাও তোমার গুনধর পোলার কাজ। শুক্রবারে আসছে আমারে কলেজে নিয়ে যেতে, ঐ তুই কি পানি খাইয়া মাতাল হইছোস নাকি মাতাল হওয়ার পর পানি খাইছোস??আম্মাও হাজির ওর ডাকাডাকিতে।ছোট বোনের সামনে এরকম বেইজ্জতি হয়ে নিজের গালে নিজেই থাপড়াইতে ইচ্ছা করছিলো।
তবে সেই ইচ্ছাটা দমিয়ে রেখে আপাতত আরেকবার ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম নিজের রুমে এসে তখনি ছোট বোন এসে হাজির।আমি বললাম কিছু বলবি??বল্ল ভাইয়া তোর লক্ষ্মন কিন্তু ভালো লাগছে না কাহিনী কি বলতো আমায়?? আমার কোন বান্ধবীরে ভালো লেগেছে বুঝি??এবার আমি নিজেই অবাক হয়ে গেলাম হারামীটা বুঝলো কেমনে??আর বুঝাটাও খুব একটা অস্বাভাবিক কাজ নয় কারন আমরা দুজন পিঠাপিঠি সেই ছোটবেলা থেকেই ওর প্যারা খেয়ে আসছি।বোনের মুখে এতো ভালো কথা শুনে আবেগে চোখে পানি চলে আসছিলো প্রায় তারপরও আবেগ কন্ট্রোল করে বোনটার হাতে একটা ১০০টাকার নোট দিয়ে বললাম আচ্ছা স্বর্না তোর বান্ধবী ফারিয়া মেয়েটা কেমন রে??
ভাবী হিসেবে তোর সাথে মানাবে তো??স্বর্না চোখ মুখ খিচিয়ে বলল তোর ভাবীর কাথায় আগুন,খবরটার ফারিয়ার দিকে তুই নজর দিবিনা, তোর মত একটা আবুল পোলার সাথে কিছুতেই আমার প্রিয় বান্ধবীর প্রেম করিয়ে দিয়ে ওর জীবন কয়লা করতে পারবোনা।নেক্সট টাইম ফারিয়ার নাম তোর মুখে শুনলে তোর মুখ সেলাই করে দিবো বলেই ১০০টাকার নোটটা দুমড়িয়ে মুচরিয়ে আমার মুখ বরাবর ছুড়ে মেরে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।মেজাজটা এতোটাই খারাপ হলো ওর উপর নিজের ভাইকে কেউ এইভাবে অপমান করে, আমার কেন জানি মনে হতে লাগলো এই পাজিটারে নিশ্চয় আব্বু ড্রেনে কুড়িয়ে পেয়েছে নাহলে আমার মত মাসুম বাচ্ছার বোন এতো খাটাশ হয় কেমনে??তবে এখন ওকে চটালে হবেনা কৌশলে ওর মাধ্যমে ফারিয়ার সাথে বন্ধুত্বটা করতে হবে।
ওহ পরিচয়টাই দেয়া হলোনা আমি পরাগ, ভার্সিটি লাইফ শেষ করে এখন বাড়িতে বসে বসে আব্বুর হোটেলে খাই, স্বর্না হলো আমার এই সাজানো রাজ্যে একমাত্র কাটা আমার ছোট বোন আর ফারিয়া হলো স্বর্নার একমাত্র প্রিয় বান্ধবী, দুজনেই ঢাকা সিটি কলেজে পড়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে।আমি ভেবে পাইনা মাঝে মাঝে একটা মেয়ে এতো সুন্দর হয় কিভাবে আর আচার আচরন ও যথেষ্ট পারফেক্ট আর দাতের কথা আর কি বলবো ওর আকাবাকা দাতের হাসিতে ইচ্ছা হয় হারিয়ে যাই ওরে নিয়ে দূরে কোথাও। আমাদের বাসায় আসার সুবাদে দুই একবার হাই হ্যালো টাইপের কথা হয়েছে কিন্তু ওর কথা বার্তায় আমি হতাশ আমাকে ভাইয়া বলে ডাকে?? এটা কোন বিচার হলো ওর।
তবে স্বর্নাও কেমন জানি ভদ্র মেয়ে হয়ে গেছে। আমার সাথেই স্কুলে যায় আবার আমার সাথেই।ফারিয়ার সাথেও কথা বার্তা হচ্ছে তবে কাবাবের হাড্ডি হয়ে আছে বোনটা,ও কিছুতেই রাজি নয় এসবের মধ্যে। ইদানিং ফারিয়ার ও আমাদের বাড়িতে আসা বেড়ে গেছে আগের তুলনায় তাহলে ব্যাপার টা কি পজিটিভ সিগন্যাল এর দিকেই যাচ্ছে??এবার ধরলাম স্বর্নাকে তুই না আমার একমাত্র কলিজার ছোট বোন দেখনা একটু কিছু করা যায় কিনা।ও রাজি হলো এক শর্তে আমি বাড়ি থেকে যে পকেট মানি পাই তার অর্ধেক ওর।
রাজি হলাম উপায় ছিলনা সিংহ কাদায় পড়লে ভেড়াও লাথি মারে কথাটার সত্যটা বুঝতে পারছি খুব ভালোভাবে।দুইজনে অনেক যুক্তিবুদ্ধি করে শেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে স্বর্না ওকে নিয়ে পাশের একটা পার্কে যাবে আমি সেখানে গিয়ে প্রোপোজ করবো ফারিয়াকে।
কথামত নির্দিষ্ট দিনে স্বর্না ফারিয়াকে নিয়ে আসলো পার্কে আমিও তেমন প্রস্তুতি নিয়েই গেছি পার্কে কিন্তু পার্কে গিয়ে সবকিছু গুলিয়ে ফেলছি বারবার।তার অতসব ফর্মালিটি পালন না করে সরাসরি বলেই ফেললাম ফারিয়া ভালোবাসি তোমাকে, আমার বউ হবা??ফারিয়া ঘটনার আকস্মিকতায় অবাক হয়ে একবার বোনের দিকে তাকালো একবার আমার দিকে তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে ঠান্ডা গলায় বলল আপনার পড়াশোনা শেষ হয়েছে কবে???আমি উত্তর দিলাম বছর খানেক আগে।
আমার উত্তর শুনেই ফারিয়া যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো আর বলল বেকার ছেলে ঘুরাঘুরি আর বাপের হোটেলে খাওয়া ছাড়া কিছু পারেন আপনি??আপনার মান সম্মান নাই নিজের বোনের বান্ধবীকে প্রোপোজ করেন আপনি??আমার আর আপনার গায়ের রঙ দেখছেন আপনি??আপনার সাথে যায় আমার???আপনার চেয়ে অনেক ভালো ছেলে আমি ডিসার্ভ করি আর স্বর্না শোন তুই আর কখনো আমার সাথে কথা বলতে আসবি না যেমন ভাই তার তেমনি বোন বলে ফারিয়া উঠে চলে গেল।এতোটাই অপমান বোধ করছিলাম যে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো। বোনের দিকে তাকিয়ে দেখি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো কাদছে কাদুক আর সেই পানি মুছে দেয়ার ক্ষমতা তো আমার নেই।বিকেলবেলা দুই ভাইবোন বাসায় চলে আসলাম এর মাঝে রাস্তায় একটা কথাও হয়নি আমাদের মাঝে।
আমার জন্য ছোট বোনটাকে ফারিয়ার কাছে অপমান হতে হলো!!আমি এমনটা আশা করিনি না বলার থাকলে ভালো ভাবে বলে বিদায় করতে পারতো তাই বলে এইভাবে অপমান করবে??বাসায় এসে সরাসরি আমার রুমে গিয়ে দরজা লক করে শুয়ে পড়লাম।নিজে নিজেকেই ডোষ দিচ্ছি কেন যে বেহায়ার মত গেলাম ওর কাছে। আসলেই তো আমার কোন যোগ্যতা নেই পড়ালেখার পাট চুকিয়ে গেছে বছর খানেক আগে আমারো যে একটা চাকুরি করা দরকার সেদিক কখনো চিন্তাও করিনি।বাবার রিটায়ার্ডমেন্টের সময় হয়ে আসছে ছোট বোনটাকেও পরের ঘরে পাঠাতে হবে। আর সবচেয়ে বেশি যে কথাটা গায়ে লাগছে গায়ের রঙ আচ্ছা ফর্সা হলেই কি সবকিছু কালোরা মানুষ না??সিদ্ধান্ত নিলাম একটা কিছু করা দরকার এভাবে কতদিন পরিবারের হালটা এবার নিজে টানা দরকার।
সন্ধ্যাবেলা পড়ার টেবিলটাতে বসলাম।অনেকদিন বসা হয়না যদিও আম্মা প্রতিদিন টেবিল ঝাড়ু দিয়ে যায় তারপরো বইগুলোর মাঝে মাঝে ময়লা জমে গেছে। সেটা পরিষ্কার করে দুই একটা বই খুলতেই মাথা হ্যাং হয়ে যেতে লাগলো। আসলে অনেকদিন হলো বই খোলা হয়না তবুও জেদের বসে সাধারন জ্ঞান বইটার বেশ কয়েকটা পাতা পড়ার চেস্টা করলাম।এরমধ্যেই আম্মা খাবার জন্য ডাকাডাকি শুরু করলো তাই বই ছেড়ে খাবার টেবিলে গেলাম।খাবার টেবিলে এমন একটা ভাব ধরলাম যেন কিছুই হয়নি অন্যদিকে ছোটবোন ও মাথা নিচু করে খেয়ে উঠে গেল।
পরেরদিন থেকে শুরু হলো আমাকে ফিরে পাবার নতুন মিশন।বই খুললেই মাথা ঘুরতো কিন্তু দাতে দাত চেপে ঘন্টার পর ঘন্টা বই পড়তাম। পত্রিকায় ভালো কোন চাকুরির বিজ্ঞাপন দেখলেই সাথে সাথেই সিভি পাঠাতাম সেখানে কোথাও কোথাও ভাইভার জন্য ডাকতোনা পর্যন্ত। এর মধ্যেই আরেকটা বিষয় খেয়াল করলাম ফারিয়া আবার আমাদের বাসায় আসা শুরু করেছে স্বর্নার সাথেও এসে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিচ্ছে। আমি যতদূর জানি স্বর্না খুব জেদি মেয়ে এতো সহজে এই অপমান ভুলার মেয়ে ও নয়। নিজেকে বোঝালাম এসব নিয়ে ভেবে লাভ নাই আমার একটা জব দরকার পরিবারের পাশে দাঁড়ানো দরকার।একে একে ২৩টা ভাইভা দিয়েছিলাম আফসোস পরে জানাতে চেয়ে আর জানায়নি কেউই।২৪তম ভাইভাটা দিয়ে এসেছি গতকাল ভাইভাটা খুব ভালো হয়েছিল মনে হচ্ছিলো এবার জবটা হয়ে যাবে আমার।
ভাইভা দেয়ার পর ৭দিন হয়ে গেছে কোন কল বা মেসেজ আসেনি অফিস থেকে তারমানে ধরে নিয়েছি এই জবটাও হবেনা নতুন উদ্দ্যমে পড়া শুরু করলাম আবার।সন্ধ্যাবেলা একটা চিঠি এলো আমার নামে আমি তখনো বইয়ের মধ্যে মুখ গুজে দিয়ে আছি।আব্বু ডেকে বললেন চিঠিটা দেখতে।চিঠিটা খুলে দেখি সেই প্রত্যাশিত চিঠিটা এসেছে সেই অফিস থেকে যার জন্য এতো কস্ট। চিঠিটা হাতে নিয়ে গন্ধ নেয়ার চেস্টা করলাম। আচ্ছা এই চিঠিটাই কি জীবনের সাফল্য, ব্যর্থতার মাপকাঠি??
বাড়িতে যেন ঈদ লেগে গেছে কিন্তু সমস্যা হলো পোস্টিং ঢাকার বাহিরে আম্মার দিকে মুখ কালো করে বললাম আম্মা এই চাকুরি করবোনা আমি, ঢাকার বাহিরে থাকতে হবে আমি পারবোনা তোমাদের ছেড়ে থাকতে।আব্বু ধমক দিলেন গাধা কোথাকার রাজশাহী কি বাংলাদেশের বাহিরে??? এই তথ্য প্রযুক্তির যুগেও এসব হ্যাংলামি কেউ করে??এক মাস পরে জয়েন তবে কেমন জানি নিজেকে নির্ভার নির্ভার লাগছে।পরেরদিন সকালে স্বর্নার ডাকাডাকিতে ঘুম ভাংলো আমার।স্বর্না বল্ল ওঠ আমাকে কলেজে দিয়ে আসবি যতদিন তুই ঢাকায় আছিস।ফ্রেশ হয়ে স্বর্নাকে কলেজে নিয়ে গেলাম, কলেজ গেটেই ফারিয়ার সাথে দেখা আমি দেখেও না দেখার ভান করে চলে আসলাম। স্পষ্ট খেয়াল করেছি ফারিয়ে তাকিয়ে ছিল আমার দিকে।
দুপুরবেলা পরে পরে ঘুমাচ্ছিলাম এই সময়েই স্বর্নার ফোন ওই তুই কই তাড়াতাড়ি পাশের পার্কটায় আয়।আমি ভাবছি কোন সমস্যা হয়েছে হয়তো তাই টিশার্ট, ট্রাউজার আর স্লিপার্স পড়েই গেলাম ঘুমঘুম চোখে পার্কে।গিয়ে দেখি স্বর্না আর ফারিয়া বসে আছে পাশাপাশি।আমি গিয়ে বললাম কি সমস্যা ডাকলি কেন সেটা বল।বোন ঝাড়ি দিয়ে বলল এতো বেশি বুঝিস কেন??
যা আমাদের দুজনের জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে আয় আগে। আমি বললাম দেখছিস না কিভাবে আসছি তোর ফোন পেয়ে এই আইস্ক্রিম কিনে খাওয়ানোর জন্য??থাপড়াইতে থাপড়াইতে তোরে সোজা করবো।বোন বুঝতে পেরেছে আমার মেজাজ খুব একটা সুবিধার নয় এখন তাই টপিক চেঞ্জ করে বলল এই বস আগে এখানে।আমি ওর কথামতো বসে পড়লাম তারপর বলল এখন যেটা বলবো আগে প্রমিস কর আমাকে কিছু করতে পারবিনা???আমি আচ্ছা বলার পর একটা চিঠি হাতে ধরে দিয়ে বল্ল আমি পার্ক থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর পড়বি নে।আমার হাতে চিঠিটা ধরিয়ে নিয়ে ও দ্রুত বিদায় হলো।চিঠিটা পরে আগে ফারিয়ার দিকে তাকিয়েই দেখি ভয়ে আর টেনশনে মুখটা শুকিয়ে এইটুকু হয়ে আছে।
চিঠিটা ছিলো এইরকম প্রিয় ভাইয়া আমার, আমি কোনদিনি চাইনি তোর ভবিষ্যৎ অন্ধকার হোক কিন্তু তোর চালচলন ধীরে ধীরে বখাটেদের মতো হচ্ছিলো।যেদিন বললি ফারিয়ার কথা সেদিনি তোকে ঠিক করার এই রাস্তাটা পেতেছিলাম আমি। ফারিয়া কিন্তু শুরু থেকেই তোকে পছন্দ করতো। মূলত আমার জোড়াজুড়ি আর তোর নিজের ভালোর জন্য সেদিন তোর সাথে এতো খারাপ ব্যবহার করেছিল।বিশ্বাস কর আমার বান্ধবী বলে বলছি না ফারিয়া অনেক ভালো মেয়ে তোকে আগলে রাখতে পারবে।আর ফারিয়াকে রেখে গেলাম দুজনের ঝামেলাগুলো মিটমাট করে নিবি আর তোর যা হিসাব নিকাশ আমার সাথে খবরদার ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করবিনা। ইতি-তোর ছোট বোন।
চিঠিটা পড়ে ফারিয়ার দিকে তাকাতেই ফারিয়া করুন সুরে বলল বিশ্বাস করুন আমি এসব বলতে চাইনি স্বর্নার বুদ্ধিতে এসব করেছি আপনার ভালোর জন্য।এবার ফারিয়ার দিকে ভালোভাবে খেয়াল করলাম মেয়েটার চোখ মুখে একটা অজানা ভয় হয়তো পছন্দের মানুষ টা যদি না উত্তর দেয় তাহলে কি হবে এটা চিন্তা করেই।আমি ফারিয়াকে বললাম ৪০টাকা হবে??ফারিয়া অবাক হয়ে চোখ গুলো ছোট ছোট করে তাকালো আমার দিকে তারপর ব্যাগ থেকে বের করে দিলো।
আমি দুইটা ইগলু কাপ আইস্ক্রিম নিয়ে এসে বললাম খাও গলা শুকিয়ে গেছে তোমার।ফারিয়া হয়তো এমনটা আশা করেনি তবুও ধাক্কা সামলিয়ে নিয়ে পালটা প্রশ্ন করলো আপনি খাবেন না??আমি বললাম না একটা তুমি খাও আরেকটা স্বর্নার জন্য নিয়ে যেতে হবে।মেয়েটা কাপ খুলেই প্রথম চামচ আইস্ক্রিমটা আমার মুখের সামনেই ধরলো। আমি এটা আশা করিনি আর এই মেয়েও যে এইকাজ করবে কেউই ভাববে না। খেয়ে নিলাম তারপর ফারিয়া আইস্ক্রিম শেষ করে বলল এবার তাহলে যাওয়া যাক।এই প্রথম দুজনে রিক্সায় উঠেছি আমার খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো ফারিয়ার হাতে হাত রাখতে কিন্তু লুচু ভাববে বলে সাহস পাচ্ছিলাম না হঠাত ফারিয়াই আমার হাত ধরে কাধে মাথা রাখলো বিশ্বাস করুন আপনারা সেই অনুভুতি টা যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত তাহলে এর চেয়ে সুখকর কিছু থাকতোনা। ফারিয়ার বাসার সামনে ফারিয়াকে বললাম রিক্সা ভাড়া দাও।
লক্ষ্মী মেয়ের মত ভাড়া দিয়ে দিলো।যাওয়ার আগে বললাম লিখে রেখো মেয়ে এই ১০০টাকা বাসর ঘরে ফেরত দিবো সুদে আসলে।ফারিয়া উল্টোদিকে ঘুরে বলল জ্বী না টাকাতে হবেনা এই ১০০টাকার বিনিময়ে আমাকে ১০০বছর ভালোবাসতে হবে, আগলে রাখতে হবে আপনার বুকের মধ্যে বলেই দৌড় দিলো ওদের বাড়ির দিকে।আমি রিক্সাওয়ালা মামাকে বললাম মামা সামনে চলো। রিক্সা চলছে আপন মনে আজকে কেন জানি দুনিয়ার সুখি মানুষগুলোর একজন মনে হচ্ছে। সত্যি দুনিয়ার সব মানুষগুলোই যদি এভাবে ভালোবাসার মানুষগুলোকে কাছে পেত, খুব বেশি কি ক্ষতি হতো?