‘ মাইরেন না। দয়া কইরা মাইরেন না। মইরা যাইবো। পোলাডা আমার মইরা যাইবো। আল্লাহর দোহাই। ‘ কুলসুম এর আকুতির আর্তচিৎকার শুনেও মারা থামানো হলোনা। বরং আরও নিখুঁত ভাবে মারতে শুরু করলো। কুলসুম এবার দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপড়ে উঠতে নিচ্ছিলো। একেকটা সিঁড়ি তে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকগুলো পথ আটকে দিলো। যার কাছে যাওয়ার যেতে না পারায় সিঁড়িতেই মাথা ঠুকতে লাগলো। কপালে হালকা রক্ত নিয়ে তাকালো উপড়ে রাজকীয় চেয়ারে বসে থাকা ব্যাক্তির দিক। কান্নাভেজা অনুরোধ করতে লাগলো, ‘ বড় সাহেব। পোলাডারে মাইরা ফালাইতেছে। আর মাইরেন না। আপনি কইলে থামবো। থামান বড় সাহেব।’
চেয়ারে বসে থাকা আদিমরয় মজুমদার এবার কুলসুমের দিক নজর দিলেন। এতক্ষণ সে নিচে প্রশান্তিতে মারামারির খেলা দেখছিলেন। তাঁর-ই লোকজন কঠোর ভাবে মারছেন কুলসুমের ছেলে আলমকে। আদিমের শান্ত গলার শোর শোনা যাচ্ছে, ‘ কি করেছে আপনার ছেলে তা তো অজানা নয় কুলসুম। এ-ই গ্রামে প্রেমের নামে ফষ্টিনষ্টি মানে মৃত্যুদন্ড। আর সেটাই করা হচ্ছে। ‘গ্রামের হাজারো মানুষ পুরো যায়গা ঘিরে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করছে। মাটিতে পরে থাকা রক্তাক্ত আলমের দিক তাকাতেই অনেকে কাঁদছেও। তাতে আলমকে মারা থামানো গেলোনা। ঠিক কিছুক্ষণের মাঝে কারো ভয়ানক চিৎকারে গ্রামের মানুষ প্রায় চেপে যায়গা করে দিলো।
আমিনা-র দৌড়ের গতি খুবই প্রখর। আলমকে চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন আমিনাকে থামাতে সক্ষম হলেন না। আমিনা দ্রুত আলমকে প্রখর ভাবে জড়িয়ে ধরলেন। কাঁপাকাঁপা গলা তাঁর, ‘ ভাই। এ-ই ভাই। ‘ বলতে বলতে সে নিজের ওড়না দিয়ে মুখের রক্ত গুলো মুছতে লাগলো। চুলগুলো ভালোভাবে কপাল থেকে সরিয়ে দিতে লাগলো। আলম ‘ ভাই ‘ শুনতেই চোখ খুলে ফেলল। অজ্ঞান হওয়ার আগে তাঁর বলা কথা ছিলো, তোমায় গ্রামে আনা তো গেলো। ছয় বছর পর তোমায় দেখা তো গেলো। লোকজন গুলো আমিনাকে ধরতে আসলে, আমিনা চিৎকার দিয়ে উঠলো, ‘ খবরদার। মুর্খ আপনাদের স্পর্শ আমার জন্য ঘৃন্যময়। এবং আমার ভাইর জন্যও। ‘
আমিনা নিজের শরীরের ওড়না দিয়ে আলমকে ঢেকে দিলো। মুখ ঢেকে রাখা ছোট কাপড়টা খুলে আলমের কপাল বেঁধে দিলো। এবং সে উঠে দাঁড়ালো। গ্রামের মানুষ মুখে হাত চেপে দাঁড়িয়ে। তারা কোনো নারীকে বাহিরে পর্দা ছাড়া দেখেনি। মাথায় কাপড় ছাড়া এ-ই গ্রামে কোনো নারী বাহিরে বের হয় না। তাতে যা-তে যাই হোক না কেনো। তারপর আমিনার ক্রোধের চিৎকার শোনা গেলো, এটা জঘন্য রকমের অন্যায়। একজন নাবালক ছেলেকে অকারণে মারা নির্বোধের কাজ। এবং অল্প বিদ্যা যে ভয়ানক। তার প্রমান আপনি সয়ং নিজে জমিদার। ‘
চোখে লাল আভা নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো আদিম। তাঁর সাথে উচ্চকণ্ঠে কথা সয়ং তার পিতামাতাও করেননি। শান্ত আওয়াজে ক্রোধ স্পষ্ট, ‘ সীমানায় থেকো বালিকা। নাহলে তার পরিনতি খুবই ভয়াবহ হবে। ‘ কুলসুম মেয়ের কথার জন্য আবারও মাফ চাইতে শুরু করলো। মেয়ের কিছু হবে এবার আধমরা হয়ে যাচ্ছে কুলসুম। মেয়েকে চুপ থাকার জন্য চেঁচাতে লাগলেন। আমিনা কঠিন গলায় বলতে লাগলো, ‘ ভুল মার্জনা করবেন। এ-ই গ্রামের জমিদার আপনি। সকলের নেতা আপনি। তাই সকলকে ন্যায় দেয়া আপনার কর্তব্য। ক্ষমতাশালী কারও বক্তব্যে কে অপরাধী তার নির্বাচন করতে পারেন না আপনি। আপনার উচিৎ ছিলো দু’তর্ফা পরিবারের বক্তব্য শোনা। আপনার উচিৎ ছিলো সয়ং দুই ছেলেমেয়েকে এনে জিজ্ঞেস করা। নাকি আমার ভাইকে অকারণে মারা।
আমার ভাই এখনও অবুঝ আর তার সাথে প্রেম খেলায় জড়ানো মেয়েটি আমারও বড়। অথচ শাস্তি আমার ভাইকে দেওয়া হচ্ছে। আমি ন্যায় চাই জমিদার। আমার ভাইয়ের জন্য ন্যায় । ও-ই পরিবারের মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হোক। আমি সয়ং তাকে প্রশ্ন করতে চাই। ‘ গ্রামের সকলের সমর্থন দেখে আদিম বাধ্য হলো বন্ধুর মেয়েকে বিচার সভায় আনাতে। এবং আমিনার প্রশ্নে মেয়েটি মাথা নিচু করে উত্তর দিয়েছিল, ‘ আমি ভালবাসি আলমকে। আমি জানি আমাদের বয়সের ব্যবধান। কিন্তু তাও ভালবাসি। আমার ভালবাসায় নোংরামি ছিলো না। ‘ মেয়েটির বক্তব্যে সব সমাধান। আমিনা আর কারও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করল না। বরং নিজেই ভাইকে নিয়ে চলে যাচ্ছে। কুলসুম আরেক দফা ক্ষমা প্রার্থনা চেয়ে মেয়ের পিছু ছুটলেন।
সন্ধ্যার সময় খেতে বসে আমিনার রাগী আওয়াজ, ‘ শান্তি হলো আপনার। আমার জন্মস্থান, জন্মস্থান বলা ঘুচেছে? বড় সাহেব মহান বলা ঘুচেছে? আমি আর বাবা কতবার বলেছি, চলে আসুন আমাদের সাথে। কিন্তু আপনি গ্রাম ত্যাগ করেননি। আপনার জিদের কারণে আজ আলমের এ-ই ভয়ানক অবস্থা। এটা গ্রাম না নেহাতি পাগলখানা। আসুন আমাদের সাথে গ্রামের বাহিরে। দেখুন পৃথীবি কতটা সুন্দর। ‘
খাবারে পানি ঢেলে নিজের রুমে চলে গেলো। পরদিন দুপুর দিকে জমিদার বাড়ি থেকে লোকজন আসে প্রস্তাব নিয়ে। কুলসুমের থেকে সব শুনে শরীরের রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায় আমিনার। দাঁত খিটমিট করে তাঁর সোজা জবাব,
‘ আপনার জমিদার। আপনি তার কাছে কৃতজ্ঞ আমি না। আর আমি এ-ই গ্রামে থাকিনা। তাই বিয়ের প্রস্তাব মেনে নেওয়ার প্রশ্ন-ই আসে। দুটো বউ যার আছে তাকে কিভাবে বিয়ে করার কথা ভাবেন? আমার আর তার বয়সের পার্থক্য তো বাদ ই দিলাম। ‘
কুলসুম অনেক ভেবে ছেলেকে আর মেয়েকে গ্রাম থেকে লুকিয়ে বের করে দেওয়ার কথা ভাবলেন। কিন্তু গ্রামের বর্ডার ততক্ষণে জমিদারের অনুমতিতে আটকে দেওয়া হয়েছে। পথ খোলা না পেয়ে কুলসুম জমিদার বাড়ি দরজায় পৌঁছালেন। অনুমতি পেয়ে ঢুকলেন আলিসান বাড়ির মাঝে। জমিদার সামনেই মাটিতে মাথা নিচু করে বসে পরলেন, ‘ বড় সাহেব। মাইয়াডা অবুঝ। শহরে পড়াশোনা করে।
গ্রামের রীতি জানে না। আপনি দয়া কইরা মাফ কইরা দেন। আমি খুবই লজ্জিত। মাইডা ছোড এখনো। ওয় বিয়া করতে চায়না। ‘ আদিমের শান্ত জবাব, ‘ বিয়া না হলে আপনার ছোট ছেলের মৃত্যু। যেটা আপনি চান। ‘ কুলসুমের আকুতিভরা আওয়াজে কোনো কাজ হলো না। সে-ই রাত্রে-ই আমিনাকে তুলে আনা হয় জমিদার বাড়ি। খবর পেয়ে আমিনার বাবা রাকিব পাগলের মতো জমিদার বাড়ি দরজায় চিৎকার করতে থাকে। একসময় আমিনার বাড়ির সকলের সামনে তার বিয়ে হয় জমিদারের সাথে। এবং বিয়ের পর আমিনার পরিবারকে বাড়ি পাঠিয়ে, আমিনাকে আঁটকে দেওয়া হয়।
বসার সভায় আমিনা কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে। মারাত্মক রকমের গালি দিতে ইচ্ছে করছে তাঁর। তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আদিমের দুই বউ, তিন ভাবি, দুই বোন, মা এবং বাড়ির তিন-চার কাজের লোক। কেউ চুল ধরে দেখছে তো কেউ মুখ। কিছুটা দূরে চেয়ারে বসে আদিম। তার সাথে তার ভাইরা এবং আরও নানান চেনাজানা বসে। সে বেশ আরামসে পায়ের উপর পা তুলে বসে। তার নজর আপাতত কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আমিনার দিক। শুধু আদিমের না। উপস্থিত সকলের নজর আপাতত আমিনার দিক। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমিনা শান্ত আওয়াজে মুখে মিষ্টি হাসি এনে বলল, ‘ মার্জনা করবেন। আপনারা কি আপনাদের হাত নিজ যায়গায় রাখতে পারবেন? আমার স্পর্শ পছন্দ না। ধন্যবাদ। ‘
থমকে রইলো যে যার যায়গায়। কিছুক্ষণের মাঝেই থাপ্পড়ের আওয়াজ ভেসে আসলো। আমিনা থাপ্পড়ের প্রভাবে নিজের যায়গা থেকে সরে গেলো। আদিম আবার মারতে নিবে তার মাঝেই আমিনার আওয়াজ, ‘ আপনার থেকে এ-র বেশি কিছু আশা আমি করিওনা জমিদার। নারীদের গায়ে হাত তোলাকে পুরুষত্ব বোঝায় না। বরং কাপুরুষতা বোঝায়। আর আপনি সেটাই। নির্বোধ কাপুরুষ। এখান থেকে আমি আজ বা কাল বা বছর পর হলেও পালাব। এবং নিজের পছন্দ মতো বিয়েও কর রাগে থরথর করে কাঁপছে আদিম। আমিনার কথার মাঝেই হাত টেনে নিয়ে যেতে লাগলো মাত্র গোছানো কামরার দিক। ‘ঠাস ‘ আওয়াজে লাগিয়ে ফেলল কামরার দরজা। অদ্ভুত ভাবে আমিনা ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো শান্ত দৃষ্টিতে। শাস্তি দিতে গিয়ে আদিম মগ্ন হয়ে গেলো আমিনার যৌবনে। কিন্তু আমিনা না বাঁধা দিয়েছে আর নাইবা আদিমকে ধরেছে। সে শুধু চোখের জল আঁটকে রাখার চেষ্টায় অন্যপাশে তাকিয়ে সারারাত।
সকাল সকাল আদিমের কঠিন চাহনি উপেক্ষা করে অন্যপাশ ফিরে শুয়ে আমিনা। আদিম যেতেই সে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো। তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনে আদিম কিছুক্ষণ থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো। ছোট বউ হবার সুবাধে আমিনাকে বাড়ির নিয়ম জানিয়ে দিলেন আদিমের আম্মিজান। এবং তার সকল কাজও বুঝিয়ে দিলেন। নতুন বউ সুবাধে আমিনাকে রান্নার ব্যাপারটা চাপিয়ে দেওয়া হলো। দুপুরে খাবারের টেবিলে সবাই বসে। আদিমের দুই পাশে তার দুই বউ দাঁড়িয়ে। সবাইকে খাবার বেরে আমিনা ঠিক আদিমের মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে। খাবার খেয়ে সবাই আঁড়চোখে আমিনার দিক তাকালো। এবং তার ভাবীরা প্রশংসাও করলো রান্নার। আমিনা তাদের দিক তাকিয়ে মাথা নাড়ালো।
সকলের চিন্তাভাবনা ছিলো কিছুদিনের মাঝে আমিনা পরিবারের সাথে মিলে যাবে। এবং আদিম নিজেও সেটাই ভেবে রেখেছে। কিন্তু মাস চলে যাচ্ছে আমিনার পরিবর্তন হয়নি। সে চুপচাপ নিজের কাজ করতে থাকে। না কারও দিক তাকাচ্ছে আর নাইবা কথা বলছে। আদিম দাঁতে দাঁত চেপে আমিনার কামরায় প্রবেশ করে। কিছু একটা লিখছিল আমিনা। আদিমকে প্রবেশ করতে দেখে সে শুধু দাঁড়িয়ে রইলো চুপচাপ। আমিনার সারাশব্দ না পেয়ে আদিমের রাগ বেড়ে গেলো। সে বেশ শক্ত করে আমিনাকে কিছুক্ষণ চুমু খেলো। নানান যায়গায় স্পর্শ করতে লাগলো। আমিনার ইংগিত না পেয়ে এক পর্যায়ে কামরার সবকিছু লাথি মেরে ভাঙতে লাগলো। এবং রাগ কমতেই আমিনার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে গেলো।
হঠাৎ একদিন আদিমের আব্বাজানের অবস্থা বেশ সাংঘাতিক হয়ে উঠলো। ডাক্তার আসার অপেক্ষা করতে গিয়ে আব্বাজানের অবস্থা খারাপ হতে লাগলো। আমিনা মেডিক্যাল স্টুডেন্ট হওয়ায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো। পরপর ঠিক সময় ডাক্তার আসায় আব্বাজানের অবস্থা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা গেলো। আদিম পরদিনই আমিনার পরিবারকে ডেকে পাঠায়। আদিমেরর ধারণা পরিবার দেখতে পেলে আমিনার মন-মানুষিকতার কিছুটা পরিবর্তন আসবে। আমিনার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য আদিম আমিনার কামরার আড়ালে দাঁড়িয়ে রইলো। পরিবারকে হঠাৎ দেখে আমিনার অদ্ভুত সুন্দর হাসি বেরিয়ে আসলো। যেটা দেখতেই আদিম বুকে হাত চেপে রাখল। পরিবারের সামনে আমিনার নিজ যৌবনের ব্যাবহার এবং খোলামেলা আলাপ দেখে তার প্রত্যাশা বেরে গেলো। সে এ-ই ব্যাবহার এ-ই আমিনা নিজের জন্যও চায়। কিন্তু সেই ব্যাবহার না পেয়ে আদিম আবারও রেগে যাচ্ছে। চিন্তায় অস্বস্তিতে দিন কাটতে লাগলো তার।
হঠাৎ একদিন শোনা গেলো আমিনার পালানোর খবর। আদিম দ্রুত লোকজন মেলে দেয়। তাও পাওয়া যায় না। রাগ, অভিমান নিয়ে আদিম নিজে খুঁজতে নামে পরেরদিন। এবং ঠিক বর্ডারেরে অনেক দূরে পেয়েও যায়। কামরায় নিয়ে আমিনার গালে দু-তিনটে থাপ্পড় ও মারে। এবং মেরে নিজেই গালে কিছুক্ষণ চুমু খায়। এ-ই প্রথম নরম কন্ঠে আদিম বলে, ‘ আমার জান নিয়ে শান্তি পাবি? কেন এমন করছিস? আমিনা আমাকে মাফ করে একটু ভালবাসতে পারবি না? আমার চোখে তাকা…তুই কি এখানে তোর জন্য আকুতি দেখিস না? আমি ভুল করেছি। মানছি তো। মাফ চাচ্ছি তো। মাফ করে দে না। ‘ আমিনর জবাব, ‘ আমার মৃত্যু হবে আপনাকে মাফ ক..’ আমিনার ঠোঁট কামড়ে ধরে আদিম। ঠোঁটে ঠোঁট রেখেই বলতে থাকে, ‘ মাফ করতে হবেনা। কিচ্ছু করতে হবেনা। শুধু আমার সাথে থাকবি। আর তোকে থাকতেই হবে। ‘
আমিনার সেই হাসি দেখার জন্য আদিম আমিনার পরিবারকে এ-ই বাড়িতে যখন ইচ্ছে আসার অনুমতি দিয়ে দিলেন। কয়েক মাসের মাঝেই খবর আসলো আমিনার প্রেগন্যান্সির। আদিম প্রায় ছুটে চলল আমিনার কামরায়। কামরার সামনে আসতেই সে দেখল আমিনা পেট ধরে নরম কন্ঠে কথা বলছে,’ আপনি কিন্তু ভাগ্যবান। আপনার তিনটে আম্মু। তিন ধরনের ভালবাসা পাবেন। সবার পাগল হবেন কিন্তু আপনার বাবার পাগল হলে চলবে না। একদম চলবে না। সে খুবই পঁচা। আপনাকে পঁচা করে দেবে। কিন্তু আমি জানি আপনি তারই পাগল হবেন। ‘ কথাগুলো শুনে আদিম প্রায় কেঁপে উঠলো। কাঁপতে কাঁপতে সে আমিনাকে জড়িয়ে ধরলেন। ‘ আমি এ-ই আমিনা চাই। খুব করে চাই। ‘