হোম কোয়ারান্টাইনের দিনগুলো

হোম কোয়ারান্টাইনের দিনগুলো

মাইডেতে বহুত আগের সিগারেট খাওয়ার একটা পিক দিলাম। পিকটায় মোটামুটি এংরি, স্যাড রিয়েক্ট আসলো৷ সবার আড়ালে কুদ্দুস চাচা আমার পিকে ওয়াও রিয়াক্ট দিয়েছে। সাথে সাথে কুদ্দুস চাচা মেসেজ দিলো…

–রুবেল কই তুই?

-বাসায় চাচা, কেন?

–খাঁড়া আমি আইতাছি…

বলেই কুদ্দুস চাচা অফলাইনে গেলেন। কিছুই বুঝলাম না। একটু পরই বাসায় কুদ্দুস চাচা হাজির। উৎসাহিত হয়ে বলল…

–দে বাপ একটা সিগারেট দে অনেকদিন খাইনা..!

-মানে কি? আমি সিগারেট পামু কই?

–কেন তুই না একটু আগেই সিগারেট খাওয়ার পিক মাইডেতে দিলি।

-আরে ওটাতো আগের।

–আমি জানি ওটা আগের না। তোর কাছে থাকলে একটা দে…বহুত প্রেসানিতে আছি ক’দিন যাবত সিগারেট খেতে না পেরে।

-কেন?

–আরে দোকান সব বন্ধ, সেনাবাহিনীর ভয়ে কেউ দোকান খোলেনি। দে বাপ একটা সিগারেট।

বিরাট ঝামেলায় পরলাম তো। কি করব বুঝলাম না। হুট করে মাথায় শয়তানি বুদ্ধি আসলো। চাচাকে সেনাবাহিনীর নাম্বার দিলাম। চাচা বলল…

–এটা কার নাম্বার?

-আরে সেই সিগারেট ওয়ালার, যে সিগারেট দেয়।

–দেয় কেমতে?

-তারসাথে সেনাবাহিনীর পরিচয় আছে তাই কিছু বলেনা।

চাচা অতি আবেগে আমাকে বুকে জড়িয়ে নিলো। আমি বললাম কথা বলার সময় যাতে লাউডস্পিকার দেয়৷ তারপর চাচা সেই নাম্বারে কল দিয়েই বলল…

–কিরে কই তুই?

-সরিইই! কে বলছেন?

–আরে হারামজাদা আমি তোর কাস্টমার।

-আপনি কার সাথে কথা বলছেন জানেন?

–জানতাম না ক্যারে, তুই সিগারেট বিক্রি করস না? আমার ঠিকানায় তিন পেকেট সিগারেট পাঠা এখনি। বিশ টাকা বেশি দিবনি।

–হোয়াট? সাথেসাথে ড্রাইভার মোখলেস হাজির, আমার দিকে অবাক চোখে তাকালো। আমি ফিসফিসিয়ে বললাম…

-‘সিগারেট ওয়ালার সাথে কথা বলছে বাট সিগারেট দিবেনা বলল..।

মোখলেসও কয়েকদিন ধরে উপস সিগারেটের কারণে, ওর রাগ উঠে গেলো। কুদ্দুস চাচার থেকে ফোন নিয়েই বলল…

–এই বাই**ত টাকা যতলাগে দিব তুই সিগারেট আন।

-মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ।

–এই ল, চাচার সাথে কথা বল আমি টাকা নিয়ে আসি। মোখলেস টাকা আনতে গেলো। চাচা হ্যালো বলতেই বলল…

-আমি একজন সেনাবাহিনী আপনি আমার সাথে ফাজলামো করছেন?

সেনাবাহিনীর কথা শুনে চাচা আমার দিকে তাকালো, আমি বললাম.. ‘আরে তোমার সাথে ফাঁপর লইতেছে পরীক্ষা করছে একটু তোমাকে ভয় দেখানোর।’ চাচা হাসতে হাসতে সেনাবাহিনীকে বলল…

–আরে গাধা এসব বলিসনা, তুই সিগারেট নিয়ে আয়।

-আপনার ঠিকানা টা বলুন…!

–মোরের দোকানের পাশের বড় বাড়িটার পিছেই আমার বাসা, এখনি আয়…!

-আচ্ছা…!

–আর শোন, সাথে একটা লাইটার আনিস।

তারপর কুদ্দুস চাচা ফোন কেঁটে দিলো। খাইছে কুদ্দুস চাচারে। আমি টুপ করে বাসায় চলে আসলাম। অনেক্ষন পর ঠাস ঠাস শব্দের আওয়াজ পেলাম। দৌড়ে গেলাম কুদ্দুস চাচার বাসায়। ঘরের ভিতর থেকে আওয়াজ হচ্ছে, কুদ্দুস চাচার শব্দ পাচ্ছিনা। মনে হচ্ছে মুখ বেধে পাছা লাল করতেছে। তখনই মোখলেস টাকা নিয়ে হাজির , বলল….

-ভিতরে কে কারে মারে?

–আরে সিগারেট ওয়ালা এসেছে শালায় নাকি সিগারেট বেচবেনা।

-শালারে আজকে খাইছি…

–টাকা আমায় দিয়ে যা।

-নাও…

বলেই মোখলেস দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে গেলো৷ আমি সাথেসাথে দরজা আটকালাম। বললাম..’পিডা শালারে…’ মোখলেস উড়াধুরা পিডানো শুরু করলো। কিছুক্ষণ পরই মোখলেস চিৎকার শুরু করলো…

–স্যার মাফ করেন আমি আর সিগারেট খাবোনা। উরুইইই স্যার, উরুইইই তালোই…

আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কুদ্দুস চাচার বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম। মোখলেসের দেওয়া পাঁচশ টাকার নোট টা বালিশের কভারে রেখে দিলাম। এখন ঘুমোতে হবে, একটু ঘুমিয়ে নেই। ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত