রাত তিনটায় বাসার গেইটে নক করলাম চার পাঁচ বার।দাঁড়োয়ান তারও পাঁচ মিনিট পর গেইট খুলে দিল।ব্যাটা দাঁড়োয়ান ঘুমো ঘুমো চোখে সামনে এসে মৃদু হেঁসে বলল, “মামা আপনি প্রতিদিন এতো রাত করে বাসায় ফেরেন,কেউ কিছু বলে না?” আমিও হাল্কা মৃদু হাঁসি দাঁড়োয়ান এর কথায়!তারপর তাঁর হাতে পাঁচশত টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিলে চলে আসি।কারণ তাঁর এই কথার প্রত্যুত্তর আমি টাকাই দিই।সোজাসাপ্টা টাকা চাওয়ার সাহস নেই তার। রুমে ঢুকেই লাইটা জ্বেলে দেই।তারপর আবার বন্ধ করি।এতো উজ্জ্বল আলো কেমন জানি বিরক্ত লাগে আমার।বন্ধ রাখি আলোগুলো,টেবিলের ওপরের নিয়ন লাইটটা জ্বালিয়ে দেই পুনোরায়। হাতটা বেয়ে রক্ত পরছে না আর।কিন্তু জমাট বাধা রক্তের ভেতর থেকে যন্ত্রণা বাড়ছে ক্রমশো।
চেয়ারে বসলাম,টেবিলের সোজা ওপরের ক্লিপযুক্ত সাত রঙের লাইটগুলো জ্বালিয়ে দিলাম।চিরকুট গুলোও জ্বেলে উঠলো,সাতটা রঙে।সাত রঙে সাতটা ভালো লাগা জমাট বাধা সাত রঙে চিরকুট।ডাইরীটা এক সাঁরি বইয়ের নিচ থেকে বের করলাম!শার্টটা খুলে বিছানায় ছুড়ে দিলাম।কলমদানি থেকে কলমটা নিলেও নিচে পড়ে গেলো হাতের যন্ত্রণায়।হাতের আঙুলগুলো এক মুঠো করতে পারছি না,যেন অবশ হয়ে আছে।কলমটা নিচ থেকে তুলে নিলাম।ডাইরীটার পঁচানব্বই পেজটা আজ ভরাট হবে।কলমটা শক্ত করে ধরাতে রক্তগুলো বেয়ে পড়তে শুরু করল ডাইরীর পেজে।তারপরও লিখতে শুরু করলাম,ঝরতে দিলাম। পুরো শরীর কাঁপছে!তারপরও লিখছি,আজানা এক হাড়ানোর কথা!মিথ্যে গল্প। তিথির কথা খুব মনে পড়ছে!জানতাম বেইমানগুলোর কথাই ভাববে মন অসময়ে।তিথির কথা ভাবতে ভাবতে কপাল ঘেমে এক ফোটা ডাইরীতে পড়ল,উঠে গিয়ে ফ্যানটা ছেড়ে দিলাম। আর কয়েক লাইন লিখলেই শেষ।
রক্তটা আর পড়ছে না,জমাট বেধে থমকে আছে আগের মতোই।হাতটাও সাঁজিয়ে,গুছিয়ে নিয়েছে মুটো ভরা কলমটার সাথে। হাতটা যেন পুরোপুরি অবশ,শুধু কলমটার লেখার ক্ষমতাটুকু আছে। তখন রাত চারটা ত্রিশ ছুঁই ছুঁই।দুপুরের পর থেকে কিছু খাইনি,খিদেতে যেন পেট মোচরাচ্ছে।ঘরেও খাবার নেই।এক প্রকার বুঝতে পারছি দাঁড়ালে বিপদ হবে এই অবস্থায়।বাম হাতটা কপালে নিতেই বুঝলাম জ্বরে পরিপূর্ণ শরীরটা।তার সাথে যুক্ত অসহ্য মাথা ব্যাথা।তখনই হঠাৎ মনে পড়ল ডক্টর ব্রেন টিউমার কর্নফাম করার পর যেন পাগলামিটা বেশেই করছি।
রাতের ঘুমটা ভাঙ্গল বিছানায়!চোখটাকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো আমি বিছানায়।হাল্কা শব্দও ভেষে আসছিলো কিচেন থেকে।হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ব্যান্ডিজ করা।বুঝলাম ডাক্টারী চলেছে কিছুটা আমার ওপর।বাম হাতটা ভর করে বিছানা থেকে উঠে বসলাম।মৃদু ঘারটা ব্যাথা করছে,হাতের ব্যাথাটা অনুভব হচ্ছে স্বাভাবিক পরিমাণে। সব থেকে বড় কথা আচর্য লাগছে নিজেকেই নিজে। স্বপ্ন দেখছি নাতো?চোখটা কচলিয়ে নিলাম একবার!নাহ্,স্বাভাবিক সব কিছুই। উঠে কিচেন এর দিকে রওনা দিলাম। ভেবেছিলাম বুয়া খালা হবে হয়ত।কিন্তু তাকে যে পরিমাণে হুমকি দিয়েছি!তাতে আমার রুমে ঢুকার সাহস দ্বিতীয় বার করার কথা না।কিচেন এর দিকে যাচ্ছি আর ভাবছি এসব। কিচেনে গিয়ে উপস্থাপন করলাম পায়েল কে।আমি ধমকে দাঁড়িয়ে গেলাম!পায়েল আমার উপস্থিতি টের পেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল,
-“গাঁজা খেয়েছিলেন রাতে নিশ্চই?নয়ত মদ!”
-“কোনটাই না,একটা মেয়ের শরীর খেয়ে আসছি।”
-“হাত কাটলেন তাহলে কি করে?নাকি জোর করে কারো দেহের ওপর নির্যাতন করেছেন?তা করতে গিয়ে”
-“চার নম্বর প্রেমিকা ছিল!”
আমার এমন কথায় মেয়েটা চুপ থাকে।চোখমুখ গুলো কেমন লাগচে ভাব আসে পায়েল এর। কিছুক্ষণ দুজন চুপ থাকি,একটা নিরবতা আপেক্ষিক আবেশ তৈরি হয়।আমি এই ফাকে পায়েল এর বিষাদময় মুখটা খেয়াল করি।হাল্কা হাল্কা করে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে মেয়েটা।অন্যদিকে রান্না করার ব্যাপারটা নিয়ে আমি অবাক।কারণ আন্টির কাছে থেকে যতটা সম্ভব জেনেছি পায়েল আগুন এর আচেঁ কখন যায় না।আর সেই মেয়ে আমার জন্য রান্না করছে। এই ভেবে কিছুটা শীতলতা ছুঁয়ে দেয় ভেতরে।কেউ ভাবে আমায়।
-“রান্নাটা কেমন হইছে জানাবেন!আর এভাবে রুমটার দরজা খোলা রাখবেন না”
এই বলে আবার চুপ রইল পায়েল।আমি প্রত্যুত্তর দিলাম না পয়েল এর কথায়।কারণ ওপর তলার মানুষ।বড় কথা বাসার মালিক।কিচেনে বেশিক্ষণ থাকতে মন চাইছিলো না।খিদেতে দাঁড়িয়ে থাকাটা অসম্ভব হয়ে পড়ছিলো। পায়েলকে না বলে চুপটি করে চলে এলাম কিচেন থেকে। বিছানায় এসেই ফোনটা খুঁজছিলাম!কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। বিছানায়ই রেখেছিলাম রাতে এটা বেশ মনে আছে।তারপর ভাবলাম পায়েল কে বলি!কারণ আমাকে টেবিলের ওপর থেকে সে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছে। কিচেনে গিয়ে পায়েল কে জিজ্ঞেস করলাম,
-“আমার ফোন কই?”
-“ভেঙ্গে ফেলছি তারপর বাইরে ফেলে দিয়েছি।”
-“হেঁয়ালিপনা আমার পছন্দ না!বলেন এবার কোথায়?”
পাশেই একটা পানির বোল রাখা দেখলাম!সেখান থেকে আমার ফোনটা বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দিল।বুঝলাম প্ল্যান এটা করেছে,যেন ভাঙ্গা ছাড়াই ফোনটা নষ্ট করে দিতে পারে। ফোনটা হাতে পাওয়া মাত্র মুছে নিলাম শার্ট এর সঙ্গে।পাওয়ার বাটনে চাপ দিলাম একবার।দেখলাম ফোনে কোন রেসপন্স নেই।আমার কান্ড দেখে পায়েল একটা মৃদু মুচকি হাঁসল। ফোনটা পকেটে গুঁজে পায়েলকে কড়া গলায় বললাম,
-“পানিতে চুবিয়ে কি পেলেন?”
-“শান্তি!আহা,কতোই না শান্তি।”
-“কারণ ছাড়াই কি এমন উদ্ভট কাজ কর্ম করে বেড়ান?”
-“রাতে যে কু কর্মটা করে আসছেন একটা মেয়ের সাথে,তার প্রমাণও নিয়ে আসছেন মোবাইল ফোনে!দেখে অসহ্য লাগছিলো!অস্বস্তিকর বুঝেন?”
-“হু,অনেকটা…
-“ঘেন্না হচ্ছিলো ফোনটার ওপর!তাই না ভেঙ্গে চুবিয়ে রেখেছি।”
-“বুঝলাম ফোনের ওপর ঘৃণা,মানুষটার ওপর?”
পায়েল আমার কথায় চুপ হয়ে যায়!কোন প্রত্যুত্তর দেয় না।মুখটা ভারি হয়,মলিন হয়ে কালো হয়।তারপর হাল্কা মৃদু করে বলে উঠে পায়েল,
-“জানেন আপনাকে যতোটা ঘৃণা করি,ঠিক ততোটাই আপনার ওপর মায়ায় আবদ্ধ।বুঝিনা কেন,আবার বুঝতেও পারি না।”
-“গ্যালারিতে থাকা সব ছবি দেখেছেন নিশ্চই?”
-“ডিলিটও করে দিয়েছি,ইচ্ছে করছিলো ফোনটা ভেঙ্গে ফেলি;তারপর কেন জানি ভাঙ্গতে ইচ্ছে করলো না।”
ফোনটা পকেট থেকে বের করে পাওয়ার বাটন চেপে ধরলাম!ফোনটা অন করে পায়েল এর কাছে দিয়ে বললাম,
-“নিন,এবার ভেঙ্গে ফেলুন।” ফোনটা অন অবস্থায় হাতে পেয়ে পায়েল চমকে গেল।কারণ তার জানা মতে ফোনটা এতোক্ষণে নষ্ট হয়ে যাবার কথা পানিতে রাখার কারণে।কিন্তু হয়নি।
-“আইফোন নাকি পানিতে নষ্ট হয় না,এখন এটাও?” আমি একটা পৈশাচিক হাঁসি দিয়ে বলি,
-“এটা গুগল পিক্সেল টু এক্স এল।আইফোন এর মতোই।”
মেয়েটা আতঙ্কিত ভাবে হুট করে চলে যায় ফোনটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে।বুঝিনা কেন এমন করে এই মেয়েটা।আর কি সব মায়ার কথা বলে মেয়েটা বুঝিনা আমি!কেন জানি বুঝতেও চাইনা।কতো মেয়ের জীবন নিয়ে খেললাম!আর পায়েল এসব খুব ভালো করেই জানে। তারপরও এমন অভিমান মাখানো আবদারগুলো নিয়ে আসে;ভালোবাসতে চায় আমাকে।চাইলেইতো পারি আর গুলো মেয়ের মতো পায়েল কে দেহের খেলায় শেষ করে দিতে।কিন্তু পারি না।ওইযে ঘৃণার পরও মায়াটা আসক্ত হয়ে আছে নিজের মনটাও।
পর দিন রাতে হঠাৎ ঘুমটা ভেঙ্গে গেল!হাজার চেষ্টায় আর ঘুম আসলো না।অনেক চেষ্টার পরও ঘুম আসছিলো না।
ডাইরী নিয়ে বসলাম,ডেট দিতে গিয়ে মনে পড়ল আমার সময়ের কথা।ডক্টর এর দেওয়া ডেট দু’দিন আগেই শেষ।তাই ডাইরীটা শেষ বারের মতো কিছু লিখতে বসলাম। শরীরটা আগুনের মতো গরম!গা কাঁপছে জ্বরে।মাথাটা অসহ্যকর যন্ত্রণায় মেতে আছে।এর মধ্যেই ডাইরীটা লিখে ছাদে গেলাম।মায়ের চাদরটা গায়ে জরিয়ে উঠলাম ছাদে।হাল্কা চাঁদের আলোয় ছেয়ে আছে পুরো শহর,পৃথিবী,নিশ্চুপতা। হুট করে পায়েল এর কথা মনে পড়ল,এইতো সকালেই বলছিলো!
-“আপনার মা কেমন আছেন?আচ্ছা সে আপনাকে কোন দিন দেখতে আসে না কেন?” আমি পায়েল এর কথার প্রত্যুত্তরটা ঠিক পাঁচ মিনিট পর দিয়েছিলাম।
-“আসবে কি করে?সে শহর ভয় পায়।”
তারপর আরো প্রশ্ন করলেও উওর দেইনি পায়েলকে। সিগারেট আমি সচারাচর খাই না।তাই মন খারাপের দেয়ালগুলোতে গান শুনি।ছাদে উঠে ইয়ারফোনটা কানে গুঁজে গান ছেড়ে দিলাম।তারপর ছাদের কংক্রিট মাখানো মেঝেতে বসলাম। আজকাল চুপ থাকাটা অভ্যাস হয়ে গেছে,কেউ কিছু বললে কেমন জানি এরিয়ে যাই।ইচ্ছে থাকলেও কথা বলি না।পায়েল এতে বেশ কষ্ট পায়।কিন্তু আমি যে আপেক্ষিক।তাইতো মায়া বাড়াই না। জ্বর ধিরে ধিরে বাড়ছে,মাথা ব্যাথাটা ক্রমশো গ্রাস করে নিচ্ছে মাথার সব কিছু। রাত তখন চারটা পঁচিশ।হঠাৎ কারো উপস্থিত টের পেলাম!পেছনে তাকিয়ে দেখি পায়েল।
-“তুমি এতো রাতে?জ্বর না তোমার?”
-“ছিল,মায়ের জল পট্টিতে পালিয়েছে।”
পায়েল আমার পাশে এসে বসল কথাটি বলেই।ছাদের মেঝেতে হাল্কা চাদের আলোয় দুজন এই নিশ্চুপ শহরে একা,সঙ্গি চাঁদ। পায়েল চুপ থাকে না;কিছু না কিছু বলে কথা বের করেই ছাড়বে আমার মুখ থেকে।কিন্তু এই নিশ্চুপতার মাঝে নিজেকে মানিয়ে পায়েল চুপ।অদ্ভুত এক অনূভুতি এই মেয়েটাকে ঘিরে আমার।
-“আপনার মা নেই তাই না?”
-“মনে হয় না আর,সেই ছোট্ট বেলায় হাঁড়িয়েছি তো।”
-“সত্যিটা লুকিয়ে হাঁসেন তাহলে?”
-“কই লুকাই,তুমি ঠিক তো ধরে ফেলো।”
-“বড় হয়েছো,কিন্তু হাঁসতে জানোনা,শেখোনি।সবাই এটা বোঝে না?”
-“মিথ্যে হাঁসি ধরার ক্ষমা সবার মাঝে দেয় না আল্লাহ্!তুমি পেয়েছো,আর কেউ পাবে না হয়ত।”
পায়েল চুপ থাকে;আমার মাথা ব্যাথাটা ক্রমশো বাড়তে থাকে।অসহ্য এই যন্ত্রণা থেকে আমার মুক্তি হয়ত আজই।
-“খাওনি রাতে?জ্বরে শরীরটা পুরছে তারপরও মেডিসিন নাও নি।”
-“পাশে বসে আছো তাই ধরে ফেললে।নয়ত এটাও লুকিয়ে নিতাম তাই না?”
-“ডাইরী লিখোনি আজ?”
-“হুম লিখেছি,তবে শেষ বারের মতো।”
-“চোখটা ভিজাচ্ছ কেন?তুমি না কাঁদতে জানো না,ভালোবাসতে জানো না।”
-“তোমাকে ভালোবাসি এটা তুমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারো!বলার প্রয়োজন মনে করি না।বলে দিলে হয়ত অনেকটা কাছে আসতে চাইবে,ভালোবাসবে কাছে এসে।আমি অভিমান মাখানো ভালোবাসাটা চাই।”
পায়েল চুপ থাকে কেন জানি।আমি মাথাটা আলতো করে পায়েলের কোলে রাখি।
-“তিথিকে খুঁজে বেড়াও না আর?”
-“চাইনা,তবে প্রিয় কারো কথা মন বেহায়ার মতো মনে করিয়ে দেয়।”
পায়েল আবারো চুপ থাকে!সবটা অতিত জেনে মানুষটা আমাকে চায়,বুঝিনা কেন। মেয়েটা দীর্ঘশ্বাস ফেলছে বার বার।পায়েল এর দীর্ঘশ্বাসগুলো যেন আমার ভেতরে একটা শীতলতা তৈরি করছে,বিষন্নতার শীতলতা। পায়েল তারপরও কিছু বলে না,চুপ থাকে। মাথা ব্যাথাটা আরো বাড়ে,গা হাত সব অবশ হয়ে আসে মুহূর্তেই।কথার বলার শক্তিটা হাঁড়িয়ে ফেলছি ধিরে ধিরে।মিনিটের পর মিনিট চলে নিশ্চুপতা।
অতঃপর ঘন্টায় শেষ হবার পথে গল্পটা।আমি পুরো শক্তি দিয়ে হাতটা পায়েল এর হাতের ওপর রাখি!একটা অবশ হওয়া হাত তুলতে এতটা কষ্ট বুঝিনি কখনও।তারপর ইচ্ছে করছিলো প্রিয় মানুষটার হাত ছুয়ে নেবার।চোখটা ধিরে ধিরে অসহ্য যন্ত্রণায় বন্ধ হচ্ছে ধিরে ধিরে।হঠাৎ পায়েল এর এক ফোটা অশ্রু আমার চোখের কণায় পড়ে।বুঝতে পারি মেয়েটা আমার অচেতন হওয়ায় হাউমাউ করে কাঁদছে,আর বলছে তোরিও একবার চোখটা মিলে তাকা।কিন্তু আমার চোখটা আর খুলবে না ওই ভালোবাসা মাখানো কান্নাটা দেখার জন্য……