হঠাৎই চড় মারার শব্দ শুনে সবাই পেছন ফিরে তাকালো। শ্রাবণও তাদের থেকে ব্যতিক্রম নয়। সেও তাকালো। দেখলো, একটি ছেলে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটি মেয়ে ছেলেটিকে উচ্চস্বরে বকাবকি করছে। শ্রাবণ একজনের থেকে এর কারণ জানতে চাইলে সে জানালো, ছেলেটি নাকি মেয়েটিকে প্রপোজ করেছিলো। আর এই জন্যই ছেলেটির এই অবস্থা।
এসব শুনে শ্রাবণ মেয়েটির দিকে তাকালো। সাদা বসনে মেয়েটিকে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। মেয়েটি তখনো ছেলেটিকে উচ্চস্বরে শাসিয়ে যাচ্ছে। শ্রাবণ মেয়েটির হাত নাড়িয়ে কথা বলা মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখছে।
সে এবার অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে। আজকেই তার কলেজের প্রথম দিন। আর প্রথম দিনেই সে এমন কিছু দেখবে, সেটা সে কল্পনাতেও ভাবেনি। ধীরে ধীরে সে জানতে পারলো, মেয়েটির নাম সোমা। সোমা দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে, ডিপার্টমেন্ট মার্কেটিং। আর যে ছেলেটি তাকে প্রপোজ করেছিলো, সে তৃতীয় বর্ষে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছে।
শ্রাবণ সোমাকে প্রথম দিন দেখেই তাকে নিয়ে মনের খাতাতে কল্পনা আঁকতে শুরু করে। যদিও সোমা তার সিনিয়র। আর আরেকটা বিষয় হলো, সোমা অসম্ভব রাগী একটা মেয়ে। কলেজের সবাই তাকে ভয় পায়। শ্রাবণও পায়, তবে অন্যদের থেকে কম। সোমা বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। তাছাড়া তার বাবা একজন প্রভাবশালী লোকও বটে।
যাই হোক, কে যেন বলেছিলো “যে মেয়ের রাগ যত বেশি, সে মেয়ে ভালবাসতেও পারে তত বেশি।” তাদের ভালবাসায় কোনো খাদ থাকে না।
শ্রাবণ সোমাকে ফলো করা শুরু করলো। কলেজ, ক্যাস্পাস, বাসা, সব জায়গাতেই তাকে ফলো করতে লাগলো। যে করেই হোক এই রাগী মেয়েটাকে তার চাই।
এভাবে প্রায় তিনটা মাস কেটে গেল। এর মধ্যে সে তার ফোন নাম্বারটাও জোগাড় করে ফেলেছে। কিন্তু সাহসের অভাবে তার আর কল করা হয়ে ওঠে না। নাম্বারে ডায়াল করে রিং হওয়ার আগেই সে কেটে দেয়। সে ভাবে, আচ্ছা একটা মেয়েকে নাকি একটা ছেলে ফলো করলে মেয়েটি নাকি দুই কিলোমিটার দূর থেকেও তা বুঝতে পারে। তাহলে সোমা কেন বুঝে না? নাকি সে বুঝেও না বুঝার ভান করে থাকে।
শ্রাবণ পরদিন কলেজে গিয়ে একদম চমকে যায়। কেননা সে এর আগে এমন বেশে সোমাকে কখনো দেখেনি। সে ভাবে, একটা মেয়ে এতো সুন্দর হয় কী করে? নীল শাড়িতে মেয়েটাকে একদম নীল পরীর মতো লাগছে। যদিও সে জানে না, পরী দেখতে কেমন হয়! তবুও সে জোর দিয়ে বলতে পারে, পরী দেখতে যেমনই হোক না কেন। সোমার থেকে আর বেশি সুন্দরী হবে না।
সে অপলক চেয়ে আছে সোমার পানে। শুধু সে নয়, ক্যাস্পাসের প্রায় সবাই তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সে মনে মনে ভাবছে, আজই সে সোমাকে গিয়ে তার মনের কথাগুলো বলে দেবে। আবার ভাবছে, সে যদি রাজি না হয়! আর ঐ দিনের ছেলেটির মতো যদি তার অবস্থা হয়! তাহলে কী হবে? সে এই-সেই ভেবে নিজে শান্ত করলো। আর বললো, নাহ! আজ কিছু করা যাবে না।
প্রতিদিনের মতো আজও সে সোমাকে ফলো করছে। সোমা কলেজ থেকে বের হয়ে একটা রিকশা নিলো। আর শ্রাবণ তার বাইকটা ঘুরিয়ে রিকশার পিছু পিছু যেতে লাগলো। সোমার বাসায় যাবার দু’টো পথ রয়েছে। যেদিন সে গাড়িতে করে আসে, সেদিন সে সোজা পথেই বাসায় যায়। আর যেদিন রিকশা করে আসে, সেদিন সে এই বিকল্প পথ ধরে বাসায় যায়।
রিকশা থেকে নেমে সে পাশের একটা সরু গলি দিয়ে বাসায় দিকে রওনা দিলো। শ্রাবণ তখনো তাকে ফলো করছে। খানিকটা পথ এগোতেই কিছু ছেলে সোমার পথ আটকে দাঁড়ালো। শ্রাবণ দেখলো, ছেলেগুলো তাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে। সে তখন বাইক থেকে নেমে সোমাকে সেভ করতে ছেলেগুলোর সামনে দাঁড়ালো। তারা দলে ভারি হওয়ায় শ্রাবণের পক্ষে তাদের সাথে পেরে ওঠা কষ্টসাধ্য। তবুও সে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।
হাতাহাতি, মারামারির এক পর্যায়ে একটা ছেলে শ্রাবণকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করলো। ভাগ্যেস ছুড়িটা তার বাহুতে লাগলো। তার হাত থেকে রক্ত ঝরতে দেখে ছেলেগুলো পালিয়ে গেল। শ্রাবণ তার বাহুতে হাত চেপে ধরে বসে পড়লো। রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তবুও তার কষ্ট হচ্ছে না। কেননা সে তার মনের মানুষটিকে রক্ষা করতে পেরেছে।
শ্রাবণের হাত থেকে রক্ত ঝরতে দেখে সোমা তার দিকে এগিয়ে গেল এবং বললো, নাটক তো ভালোই করতে পারিস।
শ্রাবণ বিস্ময় চোখে চেয়ে বললো, মানে?
– তুই আমাকে কলেজ থেকে বাসা পর্যন্ত ফলো করিস, সেটা যখন আমি বুঝেও না বুঝার ভান করলাম। তখন তুই ভাবলি যে, আমি সেটা আসলেও বুঝতে পারি না। আর আজ সেজন্য সুযোগ বুঝে গুণ্ডা ভাড়া করে এই নাটকটা করলি। যাতে আমি তোকে ভালবাসি। তাইনা?
শ্রাবণ সোমার কথা শুনে কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না। সে চুপচাপ এক দৃষ্টিতে সোমার দিকে চেয়ে আছে। সোমা আবার বলতে শুরু করলো, তোদের মতো ছেলেদের খুব ভাল করে চেনা আছে। আর আগামীবার যাতে এই ভুল না হয়, তার ব্যবস্থা আমি করছি।
সে তার ব্যাগ থেকে ফোন বের করে পুলিশকে ইনফর্ম করলো। কিছুক্ষণ পর কিছু পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞেস করলো, কী হয়েছে ম্যাডাম? কোনো সমস্যা?
সে বললো, এই ছেলেটা আমাকে……
কথাটি সে পুরোপুরি না বলে থেমে গেল। পুলিশ অফিসার বললো, ও বুঝতে পেরেছি। অতঃপর তারা শ্রাবণকে নিয়ে চলে গেল।
অন্যদিকে সোমা ঠিক আগের মতোই কলেজে আসছে, যাচ্ছে, ক্লাস করছে। সে যদিও রাগী মেয়ে, তবুও তার কিছু বন্ধু-বান্ধব আছে। শ্রাবণ যে তাকে ফলো করতো, সেটা তার বান্ধবী ঠিকই বুঝতে পারতো। সম্প্রতি ছোয়া অর্থ্যাৎ সোমার বান্ধবী শ্রাবণকে কলেজে না দেখতে পেয়ে সোমাকে বললো, “কিরে, শ্রাবণকে তো আজ কয়েকদিন হলো কলেজে দেখছি না।”
সোমা বললো, শ্রাবণ কে?
– কেন? তুই ওকে চিনিস না?
– না তো!
– ঐযে যে ছেলেটা তোকে প্রতিদিন ফলো করতো। মনে হয় সে তোকে ভালবাসতো।
– ও, ঐ ছেলেটা। যে আমার সামনে ভাল সাজার জন্য গুণ্ডা ভাড়া করে তাদেরকে মেরে আমাকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করেছিলো?
– কী বলিস এসব? শ্রাবণ ঐরকম ছেলেই না। ওকে আমি খুব ভাল করে চিনি। তুই খোঁজ নিয়ে দেখ, রাজীব গুণ্ডা ভাড়া করে তাদেরকে তোর পিছে লেলিয়ে দিয়েছিল।
– তুই শিওর?
– শিওর না, তবে অনুমান করতে পারি। কেননা সেদিন তুই তাকে ভরা ক্যাস্পাসে চড় মেরেছিলি।
– আয় আমার সাথে।
সোমা ছোয়াকে সঙ্গে নিয়ে রাজীবদের আড্ডার জায়গাতে গেল। রাজীব তখন একটা মেয়ের সাথে কথা বলছিলো। সোমা বললো, রাজীব শোন।
রাজীব সোমার এমন ডাকে কিছুটা অপ্রুস্তুত হয়ে বললো, কী.. কী… কী হয়েছে?
– তোর সাহস কী করে হয় গুণ্ডা ভাড়া করে আমাকে টর্চার করার?
রাজীব তখন হঠাৎ করেই সোমার হাত ধরে বললো, আমি.. আমি… আমি আসলে সরি। সেদিন তুমি আমাকে সকলের সামনে চড় মেরেছিলে, তাই রেগে গিয়ে আমি……
সোমা তাকে পুরো কথাটা শেষ করতে না দিয়ে আরেকটা চড় বসিয়ে দিলো। আর বললো, পরবর্তীতে এমন ভুল করলে একদম এলাকা ছাড়া করে দেবো। মনে থাকে যেন।
সোমা বাসায় গিয়ে ভাবতে লাগলো, সে অনেক বড় অপরাধ করে ফেলেছে। ছেলেটা বোধ হয় তাকে সত্যই ভালবাসতো। আর এজন্যই হয়তো তাকে ফলো করতো। সেদিন ছেলেটা তাকে গুণ্ডাদের হাত থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে আহত হলো। আর সে কিনা তাকে ধন্যবাদের বদলে পুলিশে দিলো! নাহ, অনেক বড় অপরাধ করে ফেলেছে সে। ছেলেটার কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।
সে বাসা থেকে বের হয়ে সোজা থানায় চলে গেল। সেখানে গিয়ে সে সেদিনের সেই পুলিশ অফিসারকে শ্রাবণের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, সেদিন উনাকে ধরে আনার পর উনার হাত থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত ঝরছিলো। পরে উনাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর ওখান থেকেই উনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সোমা বললো, সে এখন কোথায় আছে বলতে পারেন?
পুলিশ অফিসার বললেন, না। তা বলতে পারি না।
সোমা থানা থেকে ফিরে এলো। সে ছোয়াকে কল করে বললো, তুই কি শ্রাবণের বাসা চিনিস?
– কেন? কী হয়েছে?
– আমি থানায় গিয়ে শ্রাবণকে পাইনি। তাকে নাকি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
– আচ্ছা, তুই কাল কলেজে আয়। আমি তোকে শ্রাবণের বাসায় নিয়ে যাবো।
পরদিন তারা শ্রাবণের বাসায় গেল। গিয়ে দেখলো শ্রাবণদের বাড়ির গেটে তালা ঝুলানো। বাড়ির কেয়ারটেকারকে শ্রাবণের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, উনারা মাস খানেকের জন্য বাইরে গিয়েছেন।
– বাইরে বলতে কোথায়?
– গ্রামে গিয়েছেন।
– ও, তারা আসলে একটু আমাদের জানাবেন প্লিজ।
– জ্বী।
সোমা কেয়ারটেকারকে তার ফোন নাম্বার দিয়ে বাসার দিকে রওনা দিল। সে নিজেকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছে না। তার শুধু সেই দিনটার কথা বারবার মনে হচ্ছে। তাকে সেদিন ধন্যবাদের বদলে কী খারাপ ব্যবহারটাই না করেছে সে।
এখন সোমার মধ্যে আর কোনো চাঞ্চল্যতা নেই। যে মেয়েটা একসময় পুরো কলেজ-ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখতো, যে মেয়েটার রাগের কারণে সবাই তাকে ভয় পেতো। আজ সেই মেয়েটার মাঝে নেই কোনো রাগ, নেই হাসি উল্লাস। সে প্রতিদিন কলেজে গিয়ে শ্রাবণকে খোঁজে। কিন্তু পায় না। তার এখন কোনো কিছুতেই মন বসে না। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে না। সবসময় একা একা বসে থাকে। আর কান্না করে।
আসলে সেও শ্রাবণকে ভালবেসে ফেলেছে। তাকে অতিরিক্ত মিস করার ফলে তার মনের মধ্যে শ্রাবণের জন্য একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। সে জায়গাটা পূরণ করতে শ্রাবণকে তার খুব খুব প্রয়োজন।
না খেতে খেতে সে দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। তার এই পরিবর্তন তার বাবা মা’র চোখ এড়ালো না। মেয়ের এমন অবস্থা দেখে বাবা মায়েরও খুব কষ্ট হচ্ছে। একদিন তার বাবা তাকে কাছে বসিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কী হয়েছে মা তোর?
তখন সে শ্রাবণের বিষয়ে তার বাবাকে সবকিছু খুলে বললো। আর এও বললো যে, সে শ্রাবণকে ছাড়া অন্যকাউকে বিয়ে করতে পারবে না।
তার বাবা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললো, আচ্ছা ঠিক আছে। শ্রাবণ আগে ফিরে আসুক। তারপর না হয় একটা ব্যবস্থা করা যাবে।
এভাবে কেটে গেল প্রায় দেঁড়টি মাস। সোমা শ্রাবণের কথা ভেবে ভেবে একদম শুকিয়ে গেছে। তার মধ্যে থেকে রাগী ভাবটা উঠে গিয়ে সেখানে স্থান করে নিয়েছে ভালবাসা। সে এখন আর বাসা থেকে বের হয় না। শুধু একা একা রুমে বসে কান্না করে।
হঠাৎ করেই একদিন ছোয়া তাকে কল করে বললো, কিরে কোথায় তুই? তোকে কল করলে ফোনে পাওয়া যায় না। তোর কোনো খোঁজ খবরও নেই। আর কলেজে আসিস না কেন?
সোমা কিছু না বলে চুপ করে রইলো। তাকে চুপ থাকতে দেখে ছোয়া বললো, আজকে তোকে কলেজে আসতেই হবে। তোর শ্রাবণকে দেখলাম, আজ কলেজে এসেছে।
সোমা উৎফুল্ল হয়ে বললো, সত্যি? সত্যিই শ্রাবণ কলেজে এসেছে?
– হ্যাঁ।
– ওকে, তুই দাঁড়া। আমি এখনই আসছি।
সে সেজেগুজে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে গেল। কলেজে পৌঁছে দেখলো, শ্রাবণ বড় আম গাছটার নিচে বসে আছে। সে কোনো কিছু না ভেবে এক দৌঁড়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তারপর হাঁপাতে হাঁপাতে তার সামনে বসে পড়লো। শ্রাবণ কিছুটা অবাক হলো। অবাক হওয়ারই কথা।
– আমাকে মাফ করে দাও শ্রাবণ। আমি আসলে বুঝতে পারিনা। সেদিন ভেবেছিলাম….
– আমি গুণ্ডা ভাড়া করে তোমাকে আক্রমণ করে, আবার আমিই তোমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করে তোমার মনে জায়গা করে নিতে চেয়েছিলাম। তাইতো?
সোমা ‘হ্যাঁ’ সূচক মাথা নাড়লো।
– এই, এই তুমি কাঁদছো কেন? এদিকে তাকাও, আমার চোখের দিকে তাকাও।
তবুও সে মাথা নিচু করে আছে। তাকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখে শ্রাবণ বললো, আমার দিকে না তাকালে তোমাকে মাফ করা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।
সোমা মাথা তুলে শ্রাবণের দিকে তাকালো। অতিরিক্ত কান্নার ফলে তার চোখ দু’টো ফুলে আছে। শ্রাবণ তার এই অবস্থা দেখে ভাবছে, তার এ কী হাল হয়েছে! শরীরের এই অবস্থা কেন তার?
– কী হয়েছে তোমার? সোমা, এদিকে তাকাও। কী হয়েছে তোমার? শরীরের এই অবস্থা কেন?
– শ্রাবণ, আমি তোমাকে ভালবাসি।
– কি? হঠাৎ আমাকে ভালবাসো, কেন?
– শ্রাবণ, তোমার অবর্তমানে তোমাকে অনেক মিস করেছি। আর তুমি যে আমাকে ফলো করতে সেটা আমি বুঝতাম। তোমাকে এই দেঁড়টা মাস আমি খুব মিস করেছি। মিস করেছি তোমার আমাকে ফলো করাটা। আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি শ্রাবণ।
সোমা কান্না করছে। শ্রাবণ তার চোখ দু’টো মুছে দিয়ে বললো, কিন্তু আমি তো তোমার জুনিয়র। এটা কিভাবে সম্ভব?
– ভালবাসায় কোনো জুনিয়র সিনিয়র থাকে না। আর এতে অসম্ভবের কিছু নেই। আমি আমার বাবাকে বলেছি তোমার কথা।
– তিনি কী বলেছেন?
– তিনি মত দিয়েছেন।
– আমাকে দেঁড়টি মাস না দেখেই আমার প্রেমে পড়ে গেলেন ম্যাডাম? তাহলে তো এখন থেকে আমি মাঝে মাঝেই উধাও হয়ে যাবো। যাতে আমার প্রতি আপনার ভালবাসাটা বৃদ্ধি পায়।
সোমা আবারও কান্না করছে। শ্রাবণ তাকে তার বাহুডোরে আবদ্ধ করে বললো, শুনবে না গত দেঁড়টা মাস আমি কোথায় ছিলাম?
সোমা মাথা নেড়ে মৃদুস্বরে ‘হ্যাঁ’ বললে শ্রাবণ বললো, আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম। পরে ইচ্ছাকৃতভাবেই মাস খানেক থেকে গেলাম সেখানে। আর তারপর এইতো, এখানে।