লাভ রিয়েক্ট অতঃপর ব্রেকাপ

লাভ রিয়েক্ট অতঃপর ব্রেকাপ

আমার এক্স গালফ্রেন্ড রিয়াকে বাঁশ দেওয়ার দুইমাস পর, দেখি রিয়া ফেসবুকে খুব সুন্দর একটা পিক আপলোড দিয়েছে। পিকটা দেখে আমার ভাল লাগলো তাই ওর পিকে একটা লাভ রিয়েক্ট দিলাম। রিয়ার পিকে লাভ রিয়েক্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পর, একটা ছেলে আইডি থেকে টেক্সট আসলো,

“” হ্যালো ভাইয়া? আমি তখন টেক্সটা দেখে রিপলাই দিলাম, তাছাড়া আমাকে যদি কেউ টেক্সট করে তাহলে যত কষ্টই হোক আমি রিপলাই দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি বললাম,

“” হ্যালো তখন ওই আইডি থেকে টেক্সট আসলো?
“” ভাইয়া কিছু মনে না করলে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি। আমি তখন বললাম,
“” হ্যাঁ ভাই করতে পারেন।
“” আচ্ছা ভাইয়া একটু আগে আপনি যে মেয়েটার পিকে লাভ রিয়েক্ট দিলেন তাকে কি আপনি চিনেন। আমি তখন টেক্সট টা দেখে বললাম,
“” কেন বলুন তো?
“” না ভাইয়া আপনি চিনেন কি না সেটা বলেন না।
“” আপনি কি কারণে জানতে চাচ্ছেন সেটা তো আমাকে জানতে হবে না কি। তখন ছেলেটা কয়টা রাগী ইমোজি দিয়ে বলল,

“” ভাই এতো কথা আমার ভাল লাগে না, যেটা জিজ্ঞেস করছি সেটার উত্তর দেন। আমি তখন ছেলেটার ওমন রিয়েক্ট দেখে অবাক হলাম। আমি একটা মেয়ের প্রোফাইল পিকে লাভ রিয়েক্ট দিয়েছি সেটা আমার নিজস্ব ব্যাপার। এই ছেলে কে আমাকে জিজ্ঞেস করার। আমি তখন রিপলাই দিলাম,

“” হ্যাঁ চিনি তো কি হইছে। তখন ছেলেটা বলল,
“” খুব কাছের আপনার? আমি ছেলেটার টেক্সট দেখে অবাক হচ্ছিলাম, রীতিমতো সে আমাকে জেরা করছে।
“” হ্যাঁ খুব কাছের , অনেক বেশি কাছের।
“” কেমন কাছের ? আমি তখন বললাম,
“” শুনতে চান কেমন কাছের।
“” হুম শুনতে চাই। আমি তখন বললাম,
“” মেয়েটা, মেয়েটা আমার বউ হয়। আর আমি আমার বউ এর পিকে লাভ রিয়েক্ট দিছি তাতে আপনার কি।
ছেলেটা আমার টেক্সটে রাগী রিয়েক্ট দিল। আর সাথে সাথে কয়েকটা রাগী ইমোজি সেন্ড করলো। তার পর বলল,

“” ভাই মজা করতেছেন আমার সাথে, আমি তো জানি রিয়া অবিবাহিতা। আমি তখন বললাম,
“” আপনি কেমনে জানেন ভাই, আমার বউ বিবাহিতা না কি অবিবাহিতা সেটা আপনি কেমনে জানেন, আগে সেটা বলেন। ছেলেটা তখন রিপলাই দিল,

“” দেখুন আমি জানি আপনি আমার সাথে ফাইজলামি করছেন।
“” ফাইজলামি কেন করবো ভাই। আর আপনি আপনার পরিচয় দেন তো। আর আমার বউকে আপনি কিভাবে চেনেন। ছেলেটা তখন কয়েকটা রাগী ইমোজি দিয়ে বলল,

“” ওই মিয়া বউ মানে কিসের বউ, রিয়া আপনার বউ হতেই পারে না। আমার তখন ছেলেটার ওমন অবস্থা দেখে খুব হাসি পাচ্ছিল। আমিও তখন কয়েকটা রাগী ইমোজি দিয়ে বললাম,

“” ঔ মিয়া আওয়াজ নিচে। রিয়া আমার বউ, দশ লক্ষ টাকা কাবিন ধার্য করে রিয়ারে বিয়ে করছি।আর আপনি বলছেন রিয়া আমার বউ হতে পারে না আজিব। ছেলেটা তখন বলল,

“” ভাই আপনি যা বলছেন তা কি আসলেই সত্যি? আমি তখন বললাম,
“” হুম ভাই একদম ফর্মালিন মুক্ত সত্যি। ছেলেটা তখন অনেকগুলো স্যাড ইমোজি দিয়ে বলল,
“” রিয়া আমার সাথে এটা করতে পারলো। আমি তখন বললাম,
“”কি করেছে রিয়া আপনার সাথে ভাই? ছেলেটা তখন বলল,
“” ভাই রিয়ার সাথে আজ আমার দুই মাসের রিলেশন। অথচ আমি জানতামই না যে ও বিবাহিতা। যথচ রিলেশন এর শুরুতে ও আমাকে বলেছিল ও নাকি খাঁটি সিঙ্গেল। আমি তখন বললাম,

“” কিহহহ রিয়া আপনার সাথে এমনটা করছে, ভাই আপনার মাথা ঠিক আছে তো।
“” হুম ভাই আমার মাথা সম্পূর্ণ ঠিক আছে। কিন্তু আজকের পড় থেকে আর ঠিক থাকবে না। খুব ভালোবেসেছিলাম রিয়াকে। কিন্তু রিয়া আমাকে ধোকা দিল, ওকে আমি কোন দিন ক্ষমা করবো না। আমি তখন বললাম,

“” ভাই আপনার সাথে রিয়া যেটা করছে সেটা একদমই ঠিক করে নাই। ওর হয়ে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আর আপনি কষ্ট পাবেন না। যা হওয়ার হয়ে গেছে আপনি সবকিছু ভুলে নতুন করে শুরু করেন।

“” হুম ভাই সেটাই, আচ্ছা আমাকে সত্যিটা জানানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। এই বলে ছেলেটা অফলাইনে চলে যায়। আমি তখন ফিক করে হেসে দিয়ে ভাবি, আমার কাজ হয়ে গেছে। এখন বাকিটা ছেলেটাই করবে। আমিও তখন অফলাইনে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর দেখি রিয়া টেক্সট দিয়েছে।

“” তুমি আবার কেন এমনটা করলে, আমার রিলেশন নষ্ট করে তোমার কি লাভ হচ্ছে বলতো । আমি তখন রিপলাই দিলাম,
“” আমি আবার তোমার রিলেশন নষ্ট করলাম কোথায়। রিয়া দেখি তখন রাগী ইমোজি দিয়ে বলল,

“” তাহলে তুই আবিরকে আমাকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কেন বলেছিস। তুই ওকে কেন বলেছিস যে আমি তোর বউ।
আমি তখন বললাম,
“” দেখ আমি উল্টা পাল্টা কিছু বলতে চাইনি, আবির আমাকে অযথা জেরা করছিল তাই রাগের মাথায় বলে ফেলেছি। রিয়া তখন বলল,

“” আমার জীবনটাকে তুই কেন এভাবে নরক বানিয়ে তুলছিস। আমি তখন বললাম,
“” দেখ আমি যাই বলি না কেন আবিরকে, সেটা যে বিশ্বাস করতেই হবে এমন তো কোন কথা নাই।
“” এমন কথা আছে, তোর ওইসব উল্টা পাল্টা কথার জন্যেই আবির আজ আমাকে ভুল বুঝলো। শুধু ভুলই বোঝে নাই আমার সাথে ব্রেকাপ করে আমাকে ব্লক দিছে। কথাটা বলেই রিয়া কয়েকটা স্যাড ইমোজি দিল। আমি তখন বললাম,

“” দেখ আবির তোমাকে মন থেকে ভালোবাসেনাই। যদি বাসতো তাহলে ও তোমাকে ভুল বুঝতে পারতো না।
রিয়া তখন বললো,

“” আবির আমাকে ভালোবাসে কি বাসেনা, সেটা তোর কাছ থেকে আমায় জানতে হবে না। তুই আবার আমার রিলেশন নষ্ট করে দিলি। আমি তোকে অভিশাপ দিলাম, তোর কাপালে যেন কোন দিন সত্যি কারের ভালোবাসা না জোটে। বিয়ের রাতে যেন তোর বউ মরে যায়। আরো অনেক অনেক অভিশাপ দিল।
আমি তখন হাসির ইমোজি দিয়ে বললাম,

“” শকুন এর দোয়ায় কখনো গরু মরে না। টেক্সটটা সেন্ট হওয়ার সাথে সাথেই দেখি রিয়া আমাকে ব্লক করে দিয়েছে। আমি তখন খিক খিক করে হেসে উঠি। সামান্য একটা লাভ রিয়েক্ট দেওয়া নিয়ে কতো কিছু ঘটে গেল। আমি আবারও ওর আরেকটা রিলেশন ব্রেকাপ করিয়ে দিলাম। আহা কি মজা, এখন আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। এই আনন্দে এখন আমার কি করা উচিত, ও হ্যাঁ ঝালমুড়ি , এখন আমি করিম চাচার ঝালমুড়ির দোকানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মনের আনন্দে ঝালমুড়ি খাবো।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত