গার্লফ্রেন্ডের প্যারা

গার্লফ্রেন্ডের প্যারা

বাবু কলা গাছে উঠে একটা পিক পাঠাও না প্লিজ!’ গার্লফ্রেন্ডের এমন আব্দার শুনে মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। এমনিতেই মন মেজাজ খারাপ তার উপর এমন কথা। খাচ্চুন্নি পায়ছে কি হু! মশকরা মারাও। ধমক দিয়ে বললাম….

–সকাল সকাল ভুতে কাতুকুতু দেয় নাকি?
-কিউ?
–এমন কথা কেউ বলে?
-প্লিজ বাবু একটা পিকই তো দাওনা?
–হপ! কিসব বলো। মাথা ঠিক আছে?
-আমি অত কিছু জানিনা, বুঝিনা আমার জাস্ট পিক চাই।
–সবসময় ফাজলামো ভালো লাগেনা মারিয়া।
-প্লিজ আমার বাবু লুপ্পেলটা এমন করেনা দাও একটা পিক।
–চরি আমার গুল্তুতি মালিয়া তুনাটা।
-হারামজাদা পিক দে বলছি।

আচমকা গার্লফ্রেন্ডের উল্টা ধমক খেয়ে বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো। বুকে থুথু দিয়ে ফু’দিলাম। দেক্সোনি খাচ্চুন্নির কারবার! আস্তে ধমক দিতে পারেনা। ভয় পায়ছি বাল। বললাম….

–ধমকাও কেন?
-তুই পিক দিবি কিনা?
–একটু আদর করে বলো। চ্যাতো কেন?
-তোকে ভালো করে বলার পর দেসনা কেন!?
–একটু জোড় করো, নইলে মানবনা।
-কুত্তা, ব্রেকাপ তোর লাগে।
–বাবু বাবু বাবু শোনো!
-কথা নাই…’
–ওয়েট পিক দিচ্ছি খাঁড়াও।

দীর্ঘ ৩ মাস ভুলিয়ে ভালিয়ে ক্রাশ মারিয়াকে পটিয়েছি। দু’বার নিয়ম করে ডেটিংএ গিয়ে পিঠে আলতো করে কিলিয়েছি। দু’জন একসাথে বৃষ্টিতে ভিজেছি ঠাডা পরে মরে প্রেমের ইতিহাস গড়ব বলে। আর এই মেয়ের সাথে ব্রেকাপ? অসম্ভব। ব্রেকাপ হলে মরে যাব। আমি অগত্যা বাসা থেকে বের হলাম। বাড়ির পাশেই কলা বাগান ছিলো। আমি কলা বাগানে গেলাম। বহুত কষ্টে ছাই টাই মেখে ২০ বারের মাথায় কলা গাছে উঠতে সফল হলাম। কলার ছরি ধরে কয়েকটা পিক তুলে গার্লফ্রেন্ডকে পাঠিয়ে ডাটা অফ করে দিলাম।

কলা গাছ থেকে নামতে ইচ্ছে করছেনা ভালোই লাগছে৷ খেয়াল করে দেখলাম ছরির উপরের কলা কয়েকটা পাকা। আমি কলা গাছে বসেই কলা খেলাম। জোস লাগেরে তালোই। লাইভে যাওয়ার জন্য ডাটা অন করতেই পা ফসকে দুম্মুত করে পরে গেলাম। পরে গিয়েই মাগোওও… বলে চিৎকার দিলাম। পাছায় প্রসুর ব্যথা পেয়েছি। উঠে দাঁড়াতেই কোমড় টনটন করে উঠলো। ভাগ্যিস কোথায় ভাঙ্গেনি। অমনি মারিয়ার ফোন। মেজাজ আরো খারাপ হয়ে, রিসিভ করেই বললাম….

–আবার ফোন দিছো কেন?
-কি হয়েছে বাবুতার? এমন করো কেন?
–বাবু পাছায় ব্যাথা পেয়েছেগো খচ্চোর।
-ষিঃ বাবু, এভাবে বলতে নেই।
–ফোন রাখো, মাথা গরম আছে।
-আসো তোমার ওখানে ফুঁ দেই, ব্যথা সেরে যাবে।
–আলগা পিড়িতি বাদ দাও, ফোন রাখো।
-ইরুইউউ বাবুটা রাগেনা, আসো ফুঁ দেই।
–এককাজ করো, আমার ছোট ভাইয়ের নুনুতে ফুঁ দাও যাতে ওর সুন্নতে খৎনা টা তোমার ফুতেই হয়ে যায়।
-টুটটুট….

কিছুক্ষণ ওয়াজ করে ফোন কেঁটে দিলো। ওয়াজগুলো মাথার উপর দিয়ে গেলো। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে বাসায় আসলাম। এদিকে কোমড়েও ব্যথা। সব দোস ঐ মারিয়ার। কিছু বলতেও পারিনা, একটা মাত্র গার্লফ্রেন্ড। রুমে শুয়ে আছি, কিছুক্ষণ পরই ঝাড়ু হাতে রুমে আম্মা। প্রবেশ করলো। মা তার ফোন আমার দিকে ধরেই বলল….

–এসব কি?
-কোনসব?
–তুই কলা চুরি করতে যাস? এত নিচে নেমেছে তোর চরিত্র?
-আম্মা কি সব কও। মাইন্ড ইউর ভাষা আম্মা, আমি চোরনা।
–ওরে বাপুরে বাপু! কলা চুরি করে আবার ইংলিশ মারাও।
-দেখো উল্টাপাল্টা বলবানা।
–তাহলে তুই নিজচোখে দেখ এসব কি!

আমি আম্মার মোবাইল হাতে দিলাম। যা দেখলাম তা দেখে শিহরিত। জাস্ট অজ্ঞান হতে ইচ্ছে করতেছে। কোন হারামজাদা জানি লুকিয়ে লুকিয়ে আমার কলা খাওয়ার দৃশ্যের ছবি তুলেছে, এবং সেটা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ক্যাপশন দিয়েছে ‘কলাগাছে উঠে কলা খাওয়া চোর এই প্রথম দেখলাম। তবে মানুষের আগের প্রজন্ম যে বানর ছিল এই ছবিটাই তার দৃষ্টান্তমূলক প্রমাণ।’ পোস্ট দেখে মাতাল হয়ে গেলাম। মারিয়ার এই প্যারাময় ভালোবাসাই আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিলো। আম্মার দিকে তাকিয়ে দেখি রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি অসহায় দৃষ্টিতে আম্মার দিকে তাকালাম। তারপর আস্তে করে অজ্ঞান হওয়ার ভং ধরে বিছানায় শুয়ে পরলাম। আর উঠবনা।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত