আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো

আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো

শ্রাবণীর সাথে পিয়াসের বিয়ে হয়েছে ১ বছর ৩ মাস হতে চললো। এই এতদিন সংসার করার পরেও পিয়াস কখনো শ্রাবণীকে হাসতে দেখে নি। তার চেয়েও আবাক করা বিষয় হলো এত দিন সংসার করার পরেও পিয়াস শ্রাবণীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ খুঁজে পায় নি। এমন কি কখনো এমন হয় নি যে পিয়াসের অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু শ্রাবণী এখনো টেবিলে নাস্তা দিচ্ছে না। ঠিক সকাল ৮ টার সময় পিয়াসের জন্য নাস্তাটা টেবিলে সাজিয়ে রাখা হতো। মাঝে মাঝে পিয়াসের মনে হয় পিয়াস কি আসলেই কোন মেয়ের সাথে সংসার করছে না কি কোন রোবটের সাথে।

বেশ কিছুদিন ধরে পিয়াস লক্ষ্য করছে শ্রাবণী অন্য রুমে গিয়ে ঘুমাই। রাতের খাবার শেষ করার পর শ্রাবণী পিয়াসকে বলে, আজ রাতে কি আমাকে তোমার প্রয়োজন? পিয়াস যদি বলে হুম তাহলে সে রুমে থাকে আর যদি বলে না তাহলে অন্য রুমে গিয়ে ঘুমায়। এই প্রথম শ্রাবণীর বিরুদ্ধে পিয়াস কোন অভিযোগ খুঁজে পেলো সেদিন রাতে শ্রাবণী যখন অন্য রুমে চলে যাচ্ছিলো তখন পিয়াস মুখটা গোমড়া করে বললো,

— তুমি অন্য রুমে ঘুমাও কেন? শ্রাবণী শান্ত গলায় বললো,
~আমার একা ঘুমাতে ভালো লাগে. পিয়াস কিছুটা রেগে গিয়ে বললো,
— রাত জেগে হয়তো কারো সাথে কথা বলো।আমার পাশে থাকলে তো কথা বলতে পারবে না তাই হয়তো অন্য রুমে থাকো।

শ্রাবণী কিছু না বলে পিয়াসের হাতে ওর মোবাইল ফোনটা রেখে অন্য রুমে চলে গেলো। পিয়াস ফোনটা ঘেটে তেমন কিছুই পেলো না। পিয়াসের মনে সন্দেহটা কেন জানি আরো বেড়ে গেলো। শ্রাবণী কি তাহলে তার অগোচরে কারো সাথে রিলেশন করে। সে শ্রাবণীকে না জানিয়ে বাসার প্রতিটা রুমে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে রাখে কিন্তু সে সন্দেহ করার মত কিছুই পেলো না।। আজকার শ্রাবণীর উপর পিয়াস খুব হাঁপিয়ে গেছে। মনে হচ্ছে ওর মত একটা রোবটের সাথে সংসার করলে পিয়াস মরে যাবে। তাই সে শ্রাবণীকে সরাসরি বললো সে শ্রাবণীর থেকে মুক্তি চাই। থাকে ডিভোর্স দিতে চাই। কথাটা শুনার পর শ্রাবণী শান্ত গলায় বললো,

~ডিভোর্স লেটারটা দিও আমি সাইন করে দিবো শ্রাবণীর হাতে এখন পিয়াসের পাঠানো ডিভোর্স লেটার। পিয়াস নিজে দেয় নি অফিসের পিয়নকে দিয়ে পাঠিয়েছে। মনের অজান্তেই সে মুচকি হাসি দিলো। সেই হাসিটা কষ্টের না আনন্দের শ্রাবণী বুঝতে পারছে না। সে ডিভোর্স লেটারে সাইন করে দিলো। আর শেষ বারের মত পিয়াসকে কিছু কথা বলার জন্য চিঠি লিখতে বসলো, পিয়াস, আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো। তোমার কাছে বিয়ে মানে কি? আমি জানি তোমার কাছে বিয়ে মানে কি। তোমার কাছে বিয়ে মানে হলো,সামাজিক ভাবে আনলিমিটেড সেক্স।পিয়াস তুমি জানো একটা মেয়ে কত স্বপ্ন নিয়ে পরিবারের সবাইকে ছেড়ে স্বামীর ঘরে আসে? সেই স্বামী যখন তাকে ভোগের বস্তু বানিয়ে ফেলে তখন সেই মেয়েটার কেমন লাগে?

এখন আমি যদি পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করি আমি প্রতি রাত আমার স্বামীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হই তাহলেও তোমার কিছু হবে না কারণ তোমার কাছে ধর্ষণের লাইসেন্স আছে। কাবিন নামা দেখিয়ে তুমি ঠিক পার পেয়ে যাবে।আমাকে তোমার রোবট মনে হয় কিন্তু এই রোবট হওয়ার পিছনের কারণ টা কি তুমি কখনো জানতে চেয়েছো? প্রতিদিন বাসায় ফেরার সময় তুমি ফার্মেসি থেকে তোমার বুক পকেটে করে কনডমের প্যাকেট নিয়ে আসো আচ্ছা তোমার কখনো ইচ্ছে হয় নি আজ কনডম না নিয়ে শ্রাবণীর জন্য বুক পকেটে করে একটা বেলিফুলের মালা নিয়ে যায়? আমার উন্মুক্ত বুকে তোমার স্পর্শ করতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু সেই বুকের বাম পাশে যে হৃৎপিন্ড নামের ১ টুকরো জিনিস আছে সেই হৃৎপিন্ডের খোঁজ নিতে তোমার একবারও ইচ্ছে হয় নি?

প্র‍তিদিন যখন অফিসে যাবার জন্য বাসা থেকে বের হতে একবারও কি ইচ্ছে হতো না আমার কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে বলতে, নিজের খেয়াল রেখো? তোমাদের মত কিছু পুরুষ আছে যারা বিয়ে করে শুধু মাত্র স্ত্রীকে ভোগ করার জন্য। কারণ পতিতালয়ে গিয়ে পতিতাকে ভোগ করলে তার বিনিময়ে টাকা দিতে হবে তার চেয়ে বরং একটা বিয়ে করে ফেলে আর প্রতিরাত স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে থাকে। যে ধর্ষণের শাস্তি এই দেশে নেই। জানো পিয়াস নিজেকে খুব অপবিত্র মনে হচ্ছে। আমি জানি না কোন নদীর জলে গা ডুবালে আমার অপবিত্রতা দূর হবে।

ইতি
স্ত্রী নামক দাসী

জলিল মিয়ার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেছে৷ এই নিয়ে তিনবার।এই ব্রিজে উঠলেই তার গাড়ির চাকা লিক হয়ে যায়। জলিল মিয়া তার হেলপার রতনকে বললো,

~রতন, চাক্কা পাল্টাইতে হইবো যা গাড়ির ভিতর থেকে যন্ত্র গুলো নিয়া রতন একমনে কেন জানি নদীর দিকে তাকিয়ে আছে। জালিল মিয়া রতনের কাঁধে হাত রাখতেই রতন বললো,

— ওস্তাদ, নীল কাপড়ের মত নদীতে এটা কি ভাসে?????

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত