বাচ্চা

বাচ্চা

বসেন বসেন বইসা যান,বসেন বসেন বইসা যান,কি ভাবছেন জিকির করতাছি? আরেহ ভাই আমার ফোনের রিংটোন বাজতেছে।ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম আমার সেক্স এ সর্যি সিক্সে পড়া গফ এর ফোন।ফোন ধরার সাথে সাথেই ওপাশ থেকে বলে উঠলো।

-রকি তুমি বাবা হতে চলেছ। লও ঠ্যালা এখন পর্যন্ত বিয়েটাই তো করলাম না।থাক ফ্রি তে যদি বাবা হওয়া যায় তাতো ভালোই হয়।অধির আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

-কার বাবা হতে চলেছি গো?
-কার আবার তোমার বাচ্চার।
-ওহ হ্যাঁ তাই তো,কিন্তু বাচ্চার মা কে গো?
-কে আবার আমি!
-ওপ্স কংগ্রাচুলেশনস বেপি।
-জানো আমার বান্ধবীরা খবরটা শুনে আমাদের বাবুর জন্য কাথা সেলাই করাও শুরু করে দিয়েছে।
-ওয়াও সো কিউট।
-তুমিও তোমার বন্ধুদের আমাদের বাবুর জন্য প্যাম্পার্স আর বাবুদের যা লাগে তা কিনতে বলবা।
-আচ্ছা এবার মজা করা বাদ দিয়ে বলো কি জন্য অসময়ে ফোন দিয়েছ?
-আমি মজা করছিনা আমি সিরিয়াস।

-সিরিয়াস মানে?
-ওহ বুঝে গেছি আমি এইজন্যই আমার বান্ধবিরা বলতো ছেলেরা মেয়েদের খেয়ে ছেড়ে দেয়।
-কিন্তু বাবু আমি তো খাইনি মানে তোমাকে কিছু করিনি।
-করোনি মানে? তুমি যে আমাকে কয়েকদিন আগে একটা কিস করছিলা।এখন অসিকার করছ।
-মা মা মানে কি একটা কিস করেছি তাতে বাচ্চা পেটে আসছে তু তুমি কি করে বুঝলা?
-আমার মাথা ব্যাথা করছে বমি বমি পাচ্ছে আমার বান্ধবিরা বলেছে এগুলা আবির্ভাবের লক্ষণ তাছাড়া আমি সিনেমাতেও দেখেছি।

-তা বাবু তোমার বান্ধবিরা এতকিছু জানে কি করলে বাচ্চা হয় তা জানেনা?
-জানে তো ওরাই আমাকে বলছে যে একটা ছেলে একটা মেয়েকে ধরলেই বাবু হয় আর তুমি তো আমাকে ধরছো আবার কিস ও করছো।তাহলে দেখবে আমাদের টুইন বেবি হবে। বুঝতে পেরেছি একে কোনভাবেই বুঝানো যাবেনা সময় হলেই নিজেই বুঝে যাবে।কোন কুক্ষানে এই ল্যাদা মাইয়ার প্রেমে পড়ছিলান ডব্লিওটিএফ আমি পড়িনি আমাকে জোড় করে প্রেমে পড়ানো হয়েছে। ওই মাইয়া আমার জন্য হাত কাটছে তাও দুইবার যার জন্যই আজ অনার্স এ পড়া ছেলেটার সিক্স এ পড়া মেয়েটার সাথে প্রেম করা লাগছে।

-হ্যালো অবন্তির আব্বু কথা বলছো না কেন?ওহ বুঝেছি তুমি আমাকে ছেড়ে দিবে তাই তো? তাহলে আমি আমার বাবাকে সব বলে দেব

-না না বাবু আমি ভাবছিলাম বাচ্চার নাম কি রাখা যায় তা তো রেখেই দিলা তুমি অবন্তির আম্মু।
-লাবিয়্যু বাবু উম্মাহ।শুনো বাবু আমার জন্য একটা মাদার্স হরলিক্স কিনবে কিন্তু।এই বলেই ফোন টা রেখে দিলো।

প্রেগন্যান্ট হলে মাদার্স হরলিক্স খেতে হয় তা জানে আর কেম্নে বাচ্চা হয় তা জানেনা।নাহ যেভাবেই হোক ওকে বুঝাতেই হবে।কিন্তু তা বুঝাতে গেলে ব্রেকাপ হবে নিশ্চিত। আমি এখন কোন মাইনকার চিপায় পড়লাম।এসব ভাবতে ভাবতে আবার গফ এর ফোন।

-অবন্তির আব্বু শুনো আমার জন্য মাদার্স হরলিক্স কেনার সময় তুমিও একটা ফাদার্স হরলিক্স কিনে নিও।তুমিও তো বাবা হতে চলেছ তোমারো তো একটু শরীরের যত্ন নিতে হবে তাইনা।
-হ্যা বাবু ঠিক বলেছ তুমি, যদি ফাদার্স হরলিক্স পৃথিবীতে না পাওয়া যায় তাহলে আমি মঙ্গলগ্রহ থেকে নিয়ে আসবো।
-অহ আমার কিউত বাচ্চার আব্বুতা।আচ্ছা মঙ্গলগ্রহ কোথায় তোমার পাশের গ্রাম টা?
-না বাবু জানিনা গুগল এ সার্চ দিতাছি হুম রাখি বাই।

যেই মেয়ে মঙ্গলগ্রহই চেনেনা সে বাচ্চা হয় কি করলে তা কিভাবে জানবে।যাই হোক আমি প্রতিদিন তার আর আমার বাচ্চার খোজ খবর নেই।তাকে একটা মাদার্স হরলিক্স ও কিনে দিয়েছি সেটা নিয়মিত খায় কিনা তার ও খবর নেই।কিন্ত্য আমি ফাদার্স হরলিক্স মঙ্গলগ্রহ গিয়েও খুজে পাইনি।দুই মাস যেতে না যেতেই হঠাৎ একদিন সে বলে।তার পেট নাকি আগের থেকে বড় হয়েছে।

আমি তো সত্যি সত্যিই ভয় পেয়ে গেছিলাম যাহ আমিও কি সিক্স এ পড়ি নাকি।ছোট মানুষ কি সব ভাজাপোড়া খায় তাই হয়তো পেটে গ্যাস জমেছে।কিন্ত তাকে আমি তা একদমই বললাম না।এখন সে আমাকে দেখা করতে বলছে বাচ্চা নাকি পেটের ভিতর থেকে আব্বু আব্বু ডাকে তা শুনাতে।আমিও অনেকটা আগ্রহ নিয়ে দেখা করতে গেলাম শিশু পার্কে।আব্বু ডাক শুনতে।শিশুর সাথে তো শিশু পার্কেই দেখা করতে যাব তাইনা।পার্কে গিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরেই আমার সিক্স এ পড়া গফ হাজির।হাজির তো হাজির তাও আবার স্কুল ড্রেস পড়ে এসেছে।এমনিতেই পিচ্চি তার উপর স্কুল ড্রেসে কিন্ডারগার্টেন এর বাচ্চাদের মত লাগছে।থাক ছোট বোন বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে।

এসেই আমাকে পেটের কাছে কান দিতে বললো। কিন্তু চারদিকে এত মানুষ কি করে পেটের কাছে কান নেব।তাই পাশে বসেই বললাম।আমি তো এখান থেকেই শুনছি ওমাহ বাচ্চা আমাকে আব্বু আব্বু বলে ডাকছে।সেও বিশ্বাস করে নিলো।এখন সে বায়না ধরেছে তাকে বেলুন কিনে দিতে হবে।আমরা যে টুল টাতে বসেছি তার পাশে আরও কিছু টিনেজার কাপলরা বসে আছে।তাই ঘটনা বেশি দূর গড়ানোর আগে বেলুন ওয়ালাকে ডাক দিলাম।মন চাইতাছে বেলুন এর সাথে বেলুন ওয়ালাকে বেধে উড়িয়ে দেই।বেলুন ওয়ালারে বললাম দুইটা বেলুন দিতে।কিন্তু আমার গফ আরো চেয়ে জোরে জোরে চিৎকার করছিলো তখন আরো এক মহিলা তার বাচ্চাকে বেলুন কিনে দিতে এসেছেন। সে বলে উঠলো।দিন না বাচ্চাটাকে আরো কটা বেলুন কিনে মনে হচ্ছে খুব আদরের বোন।বোন কথাটা শুনে আমার গফ বোম মেরে বলে উঠলো কে ওর বোন আমি ওর গফ।

আরো কিছু বলতে যাবে তৎক্ষনাৎ আমি ওর মুখ চেপে ধরে নিয়ে গেলাম।তারপর যা হলো তা পাতিহাস হয়ে উড়ে গেছে।আবারো কেটে গেলো ছয় মাস। আমি মেসে থাকি তাই সপ্তাহে একদিন সময় পাই জামা কাপড় ধোয়ার তাই বাথরুমে বসে কাপড় কাচছিলাম এমন সময় ফোন বেজে উঠলো। রকি এসে ফোন টা ধরিয়ে দিয়ে বললো। হয় ফোনের রিংটোন চেঞ্জ করিস না হয় গার্লফ্রেন্ড টা।আমি ওকে বললাম কিন্তু আমি তো ভেবেছি কোনোটাই চেঞ্জ করব না।এরপর ফোনটা রিসিভ করলাম। ফোনের ওপাশ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে প্রবল আকারে।প্রবল বললে ভুল হবে সুনামির আকারে।

-কি হয়েছে অবন্তির আম্মু কাদতেছ কেন?বলো আমাকে কি হয়েছে।
-উমমমম অবন্তি আর নেই উমমমম
-নে নেই মানে কোথায় গেছে আর কখন হলো হয়ে আবার কোথায় চলে গেলো?
-উমমমম হওয়ার আগেই তো চলে গেলো। ভেবেছিলাম বাচ্চাটা হওয়ার পর মা বাবাকে সারপ্রাইজ দিয়ে তোমাকে বিয়ে করার ব্যাবস্থা করব।কিন্ত সব শেষ হয়ে গেলো উমমম।

-আহা কাদেনা বাবু বলো আমাকে কি হয়েছে।
-উমমম আমার বন্ধবিরা বলেছে যদি ব্লেডিং হয় তাহলে বুঝবি বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে।উমমমম আমার অনেক ব্লেডিং হচ্ছে।
-উমম সো স্যাড।এখন তুমি কোথায় আছো।
-বাথরুমে উমমম
-ওয়াও আমিওতো বাথরুমে আছি
-কেন?
-বাচ্চা তো আমারো নষ্ট হচ্ছে তাইনা? আলহামদুলিল্লাহ এতদিন নয় আজ প্রথম বাবা হইলাম।আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত