আমার শ্বশুরের উপর পরী আছর করছে। আচার-আচরণ দেখে মনে হচ্ছে অল্প বয়সী কিশোরী পরী। শ্বশুর মহাশয় সেলুন থেকে চুল দাঁড়ি কালার করে বাসায় ফিরছিলেন পথিমধ্যে উড়ন্ত পরী ক্রাশ খেয়ে শ্বশুরের মাদারবোর্ডে ইন্সটল হয়ে গেছে। বৃদ্ধ শ্বশুরের দেহে কিশোরী পরীর আত্মা এ এক অদ্ভুত সিচুয়েশন। রিহানের আম্মু কাঁদছে, শাশুড়ীও কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলছে। আমারও কাঁদা উচিৎ কিন্তু চোখে পানি আসছে না বিধায় আমি আর রিহান মুখ ভোতা করে দাঁড়িয়ে আছি। আমি বিনীতভাবে ক্রন্দনরত শাশুড়ী কে জিজ্ঞেস করলাম,
– মা আমি এখন উনাকে কী বলে সম্বোধন করবো?
– কাকে?
– পরী বাবাকে!
– পরী বাবা মানে!!
– না বলছিলাম কী, উনি আমার শ্বশুর ঠিক আছে কিন্তু উনার অন্তরাত্মা তো লেডিস!
– অনি তুমি এটা নিয়েও ফাজলামো শুরু করছো?
– না মা সিরিয়াসলি বলছি, উনাকে পরী আন্টি ডাকলে কী অসুবিধা আছে ?
শাশুড়ী আমার দিকে কঠিন চোখে তাকালেন। আমি খানিকটা সরে গিয়ে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়ালাম। শেষ বয়সে পরীর আছর লক্ষ্মণ মোটেও সুবিধার না। এই পরীকে যেকোন মূল্যে বের করে আনতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করে এর নাড়ীনক্ষত্র জানতে হবে। পরীমনি আমাকে দেখে মিষ্টি লাজুক হাসি দিলো। আমি হাতে খানিকটা সরিষার তেল নিয়ে পরী আন্টির মুখে ছিটিয়ে বললাম,
– এই পরী তোর নাম কী? সলজ্জ আনত বদনে পরীমনি উত্তর দিল,
– আমার নাম রুখসানা।
– নাইচ নেম!
– থ্যাঙ্ক য়্যূ।
– ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম। নাউ টেল মি, হয়্যার আর ইউ কাম ফ্রম?
– আই অ্যাম ফ্রম পরীস্থান!
– ওয়াও গ্রেট, ভেরি বিউটিফুল প্লেস!
– থ্যাঙ্ক য়্যূ!
– ওয়েলকাম এগেইন, তা আমার বৃদ্ধ শ্বশুরকে কেন ধরলি?
– তোর শ্বশুরকে আমার পছন্দ হইছে! উনাকে নিয়ে আমি পরীস্থানে উড়াল দিবো!
আমি আতঙ্কিত নয়নে শাশুড়ীর দিকে তাকালাম। শাশুড়ীর কান্নার ভলিউম আরেক ধাপ বাড়ছে। আমি তাকে অভয় দিয়ে বললাম,
– চিন্তা করবেন না মা, এই দুষ্টু পরীকে উচ্ছেদ করে বাবাকে আমি উদ্ধার করবোই! শাশুড়ী মা আমার কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না। তিনি আরো বড় কবিরাজ আনার পক্ষে।
– অনি যতো টাকা লাগে লাগুক তুমি মাওলানা সাহেবকে আনার ব্যবস্থা করো!
– প্লিজ মা ঘাবড়াবেন না, আমাকে একটু চেষ্টা করতে দিন!
রিহানের আম্মুও আমার উপর ভরসা করতে পারছেনা। সেও চাচ্ছে মাওলানা সাহেবকে আনতে। কিন্তু আমি হাল ছাড়ার পাত্র না। আমি রিহানকে নিয়ে পরী উচ্ছেদ অভিযানে নেমে গেলাম। পরীমনি হাসি হাসি মুখে বসে আছে। আমি তাকে কঠিন ধমক দিয়ে বললাম,
– এই রুখসানা তোকে পাঁচ মিনিট সময় দিলাম, আমার শ্বশুরকে ছেড়ে চলে যা ? ঘাড়তেড়া রুখসানা জবাবে বলে,
– যাবো না!
– তাহলে কঠিন যন্ত্রণার জন্য তৈরি হ!
আমার কথা শুনে রুখসানা ভিলেনের মতো হু হু হা হা করে হাসছে। অসুবিধা নাই, সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকাতে হবে। আমি রিহানকে ডেকে বললাম,
– রিহান প্যান্টটা খুলতো বাপ! রিহান একটানে প্যান্ট খুলে ন্যাংটা হয়ে গেছে। কিশোরী পরী লজ্জায় মুখ ঢেকে বলছে,
– একি করিস! একি করিস!
– আমার শ্বশুরকে না ছাড়লে তোর গায়ে পেশাব করা হবে!
রিহান তার ছোট্ট ডেলিভারি পাইপটা পরীমনির দিকে তাক করে দাঁড়িয়ে আছে। কমান্ড পেলেই হট ওয়াটার সার্ভিস উইল স্টার্ট। কিন্তু নির্লজ্জ পরী বলে
– না না আমি তোর শ্বশুরকে ছেড়ে যাবো না!
– তোকে লজ্জার সাগরে চুবিয়ে মারবো হারামজাদী।
রুখসানাকে চরম লজ্জা দিতে হবে! লজ্জা দিলেই বাপ বাপ করে পালাবে। আমি সবাইকে রুম থেকে বের করে দরজা বন্ধ করে দিলাম। অতঃপর আমার প্যান্টটা খুলে হাঁটুর নিচে নামাতেই রুখসানা লজ্জায় ফিট হয়ে বিছানার পরে গেলো। কিন্তু হায় হায় এটা আমি কী করলাম! রুখসানা বিদায় নিয়েছে এই উত্তেজনায় প্যান্ট না উঠিয়েই রুমের বাইরে চলে আসছি। সদ্য জ্ঞান ফেরত শ্বশুরসহ সবাই এখন আমাকে ভুল বুঝছে।