দুটি শব্দ

দুটি শব্দ

বেশ কিছুক্ষণ ধরে বাসরঘরে ঘুপটি মেরে বসে আছে নূরী। এতে একটা সময় তার অস্বস্তি লাগতে শুরু করলো। সে ভাবলো তার স্বামী আসাদের আসতে হয়তো আরও কিছুটা সময় লাগবে। এতো ভারী কাপড় ও গহনা পরার অভ্যাস নূরীর নেই। তাই সে উঠে ওয়াশরুমে গেল। হাত মুখ ধুয়ে ফিরে এলো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে একটু গুছিয়ে নিচ্ছে। “ওহ মাই গড! তোমাকে তো হেব্বি হ* লাগছে।” কথাগুলো শুনতেই নূরী পেছনে ঘুরলো। ঠোঁটের কোণে হাসি ও চোখে সরলতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আসাদ। দেখে বুঝার উপায় নেই একটু আগের কথাটা ও বলেছে। আসাদ এক নজর ভালোভাবে নূরীকে দেখলো। তারপর আবার বলল, “তোমার কোমড়ের তিলটা তোমাকে আরও সে* করে তুলেছে।”

বাসরঘরে স্বামীর মুখে এসব শুনে নূরী থতমত খেয়ে গেল। সে এসব বিশ্বাসই করতে পারছে না। ভাবছে হয়তো এটা তার স্বপ্ন। কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে এমনটা ভাবতে পারে বলে নূরীর বিশ্বাস হয় না। সে নিজেকে চিমটি কাটলো। না, এটা কোনো স্বপ্ন নয়। মুচকি হাসি দিয়ে আসাদ বলল, “চিমটি কাটছো কেন? আমাকে দেখে বিশ্বাস হচ্ছে না? আমি একটু বেশিই হ্যান্ডসাম, তাই না? তুমিও কিন্তু হেব্বি হ*।” আসাদ এগিয়ে এসে নূরীর হাতটা ধরে একটা চুমো দিলো।। নূরী যেন এতক্ষণ ঘোরের মধ্যে ছিল। আসাদের স্পর্শে তার চেতনা ফিরে এলো। নূরী তার শাড়ির আঁচলটা ফেলে দিয়ে বলল, “আসুন। তাড়াতাড়ি আসুন। এটার জন্যই তো বিয়ে করেছেন। তো আর দেরি কেন?” আসাদ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে নূরীর হাতটা ছেড়ে খানিকটা পিছিয়ে গেল।

– কি হলো? ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? নিজের চাহিদা পূরণ করে নিন।
– কি বলছো এসব?
– ঠিকই তো বলছি।
– ছি, আমি তোমার থেকে এমন কিছু আশা করিনি।

আসাদ হনহনিয়ে হেঁটে বাইরে চলে গেল। নূরী মেঝেতেই বসে পড়লো। এ কেমন ছেলের সাথে তার জীবনটা জড়িয়ে গেল? যে ছেলে তার স্ত্রীকে নিয়ে এমন কথা বলতে পারে তার চরিত্র কেমন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই রাতটা নিয়ে নূরীর মনে অজস্র স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সব ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। ভেবেছিল আসাদকে নিজের কিছু গল্প শুনাবে, কিছু আসাদের শুনবে, একে অপরকে জানবে, চিনবে, বুঝবে। দুজনে মিলে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করবে। কিন্তু আসাদের এমন আচরণের পর নূরী সব স্বপ্ন খণ্ড খণ্ড হয়ে গেছে। মনের মাঝে জমিয়ে রাখা আবেগ-ভালোবাসা সব উড়ে গেছে। প্রতিটি মেয়ের স্বপ্ন, সে তার প্রিয় মানুষটার কাছে প্রিয়জন হবে, কোনো চাহিদার বস্তু নয়। বাবার ওপর ভীষণ রাগ হচ্ছে নূরীর। ছেলে আমেরিকায় থাকলেই হলো? মেয়ে বিয়ে দেওয়ার আগে তার চরিত্রের ব্যাপারে যাচাইবাছাই করার প্রয়োজন নেই? টাকাই কি সবকিছু? নূরী ডুকরে ডুকরে কেঁদে যাচ্ছে।

ছাদে বসে রাগে ফুঁসছে আসাদ। বিয়ের জন্য প্রথমে রাজি ছিল না আসাদ। কিন্তু তার বাবা-মা বলেছিল মেয়ে অনেক নম্র, ভদ্র ও সুশীল। তাই রাজি হয়েছিল। অথচ নূরীর কথাবার্তায় ভদ্রতার চিহ্ন পর্যন্ত দেখতে পায়নি আসাদ। যেখানে ঘোমটা দিয়ে বসে থাকার কথা, সেখানে নূরী আঁচল ফেলে দাঁড়িয়ে ছিল। ঘণ্টাখানেক পর আসাদ রুমে ফিরে এলো। নূরী এখনো মেঝেতে বসে আছে। আসাদকে দেখে নূরী উঠে দাঁড়ালো। বিয়ের প্রথম রাতে দুজনের চোখে শুধু ভালোবাসা থাকার কথা অথচ তাদের চোখে একে অপরের জন্য ঘৃণা ভেসে আছে। আসাদ চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর নূরী মাঝে বালিশ দিয়ে শুয়ে পড়লো।

সকাল হতেই আসাদ উঠে পড়লো। নূরীর দিকে একবার ফিরেও তাকালো না। নয়তো এলোমেলো চুলের মাঝে মায়াবী মুখটা দেখে প্রেমে পড়ে যেতো। ঘরের মাঝে উত্‍সবের একটা আমেজ এখনো আছে। মন ভালো থাকলে এই আমেজটা আসাদও উপভোগ করতো। কিন্তু আসাদের মধ্যে অত্যন্ত রাগ কাজ করছে। তাই এই রঙিন পরিবেশটাও সাদামাটা লাগছে। নাস্তার টেবিলে বসেই আসাদ তার বাবা-মাকে বলে দিলো সে আমেরিকায় চলে যাবে। টিকিট কেটে রেখেছে। দুদিন পরেই ফ্লাইট।

ছেলের মুখে এমন কথা শুনে বেশ অবাক হলেন সাহেরা বানু। তিনি ভেবেছিলেন বিয়ের মাধ্যমে হয়তো ছেলেটাকে দেশেই আটকিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু এ তো যে লাউ সেই কদু। তিনি বললেন, “এ কেমন কথা? মাত্র তোর বিয়ে হলো। কিছুদিন পরে যা।” স্ত্রীর কথার সাথে সুর মিলিয়ে আসাদের বাবা শফিক সাহেব বললেন, “হ্যাঁ, কিছুদিন পরে যা। তুই তো এক মাসের ছুটি নিয়েই এসেছিস। তবে এতো তাড়া কিসের? তাছাড়া বউমার পাসপোর্ট, ভিসার জন্যও তো সময় লাগবে।”

– আমি ওখানে ঘুরতে যাচ্ছি না। চাকরি করি সেটার জন্যই যাচ্ছি।
– তোকে তো আমি বললামই যে, দেশে কিছু একটা কর। টাকা যা লাগে আমি দিবো।
– তোমার টাকা তুমিই রাখো।
– আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু বউমার পাসপোর্ট তো হতে দে।
– তোমাদের বউ তোমরাই রাখো।

আসাদ রাগ দেখিয়ে উঠে চলে গেল। সাহেরা বানু কিছুই বুঝলেন না। বিয়ে তো ছেলের পছন্দ মতোই করিয়েছেন। তাহলে এমন রাগ দেখাচ্ছে কেন? তবে কি বউয়ের সাথে ঝগড়া হয়েছে? কিন্তু আসাদ তো ঝগড়া করার মতো ছেলে না। নিজে হারে তবুও কারও সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় না এমন ছেলে আসাদ।

সকাল থেকেই ঘরের বাইরে আসাদ। কারও ফোন রিসিভ পর্যন্ত করছে না। পরিচিত সবার বাসায় যোগাযোগ করেছে তার বাবা। কারও বাসাতেও যায়নি। এই নিয়ে সাহেরা বানু বেশ চিন্তায় আছেন। নূরীকে বকাঝকা করেই যাচ্ছেন তিনি। “তুমি নিশ্চয়ই আমার ছেলের সাথে ঝগড়া করেছ। নয়তো আমার ছেলে আমাকে না বলে কোথাও যায় না। কত আশা ছিল, বিয়ে দিয়ে ছেলেটাকে চোখের সামনে দেখতে পারবো। এখন তো কথাও বলতে পারছি না। সব দোষ সাইদ মিয়ার। ওর কথা শুনে আজ আমার এই দিন দেখতে হচ্ছে।” নূরী চুপচাপ সব শুনে যাচ্ছে। একটা মেয়েকে কথা বলার আগে অনেক কিছুই চিন্তা করতে হয়। তার একটি বাক্যের সাথে তার ও তার পরিবারের মান সম্মানও জড়িয়ে থাকে। নূরীর অন্তর ফেটে অনেক কথাই বের হতে চাচ্ছে। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে কিছুই বলতে পারছে না। সাইদ হলেন তার মামা। এই বিয়ের ঘটকালি তিনিই করেছেন।

আকাশটা ধূসর রঙে ছেয়ে গেছে। রাতের জানান দিচ্ছে এই বিস্তীর্ণ আকাশ। আসাদও নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়ে বাসায় উপস্থিত হলো। আসাদকে দেখামাত্রই সাহেরা বানু কেঁদে কেঁদে চোখের জল ভাসিয়ে দিয়েছেন। কোথায় ছিলি সারাদিন, ফোন ধরছিলি না কেন, কি হয়েছে এসব প্রশ্ন করতে লাগলেন তিনি। কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আসাদ শুধু খাবারের কথা বলল। সাহেরা বানু তাড়াতাড়ি রান্না করতে লাগলেন। সকালের পরে আর ঘরে চুলো জ্বলেনি। নূরী এগিয়ে এলেও রাগ দেখিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন।

আসাদকে দেখে নূরীর মনে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হলেও তার চোখ দুটো এখন শান্ত হয়ে আছে। যেন সকাল থেকে এই চেহারাটা দেখার জন্যই তার চোখ দুটো অশান্ত হয়েছিল। হয়তো এটাকেই বিয়ের বন্ধন বলে। স্বামী যেমনই হোক, স্ত্রীর মনের কোনো এক কিনারা তার জন্যই বরাদ্দ। মন এটা বলে, মানুষটা ভালো না বাসুক তবুও পাশে থাকুক।

আসাদ তার কাপড়চোপড় গোছাতে ব্যস্ত। নূরী একমনে দেখে যাচ্ছে। যেন এটাই শেষ দেখা। বেশ কিছুক্ষণ রুম জুড়ে নীরবতা চলার পর নূরী এক পাশ হয়ে আকাশের দিকে তাকালো। তারপর আসাদের উদ্দেশ্যে বলল, “সারাদিন বাইরে ছিলেন। কারও ফোনও ধরেননি। জানেন, আপনার মা আমাকে কত কথা বলেছে? আপনি আমেরিকা চলে যাচ্ছেন। এটার জন্যও আমাকে দোষারোপ করছেন।” আসাদ নিজের কাজই করে যাচ্ছে যেন নূরীর কথা সে শুনতেই পায়নি। “আমার দোষটা কোথায় একটু বলবেন?”

কান্নার সাথে যুদ্ধ করে শেষ কথাটা বলল নূরী। ফলে চাপা স্বরে বেরিয়ে আসা শব্দগুলো একে অপরের সাথে জড়িয়ে জড়িয়ে উচ্চারিত হয়ে আসাদের কানে ভেসে এলো। আসাদ এতক্ষণ নূরীর দিকে ফিরেও না তাকালেও এবার ফিরে তাকালো। কারণ শব্দগুলোর মাঝে অনেক কষ্ট চাপা ছিল। জানালা দিয়ে ভেসে আসা চাঁদের আলোতে নূরীর অশ্রুশিক্ত মায়াভরা মুখটা দেখে কিছুক্ষণের জন্য আসাদ থমকে গেল। চাঁদের আলোতে চোখের কোঠরে জমে থাকা জল গুলো যেন হীরার মতো চকচক করছে। যে চেহারাটা না দেখার জন্য আসাদ সারাদিন বাইরে ছিল এখন সেই চেহারা থেকে তার চোখ সরতেই চাচ্ছে না। গতরাতের ঘটনা মনে হতেই আসাদ তার চোখ সরিয়ে নিলো।

ব্যাগ গুছিয়ে কাঁধে নিয়ে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালো আসাদ। পেছনে ঘুরে নূরীর দিকে তাকালো। মেয়েটার দৃষ্টি এখনো তার দিকে। উত্তরের আশায় এখনো তাকিয়ে আছে। শান্ত স্বরে আসাদ বলল, “তুমি কি ভাবো, ছেলেদের কাছে বিয়েটা শুধুমাত্র ফিজিক্যাল ব্যাপার? হয়তো এটাও মনে করো, তুমি সুন্দরী তাই আমি তোমাকে বিয়ে করেছি। তাই গতকাল ওভাবে শাড়ির আঁচল ফেলে কথাগুলো বলেছিলে। কিন্তু এটা তোমার ভুল ধারণা। মা বলেছিল তুমি খুব ভালো। নম্র ভদ্র। তাই এই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।

আমার ভাগ্য ভালো তাই গতকালই তোমার সত্যতা জানতে পেরেছি। বাকি ছেলেদের কথা আমি জানি না। তবে আমার কাছে বিয়ে মানে দায়িত্ব ও ভালোবাসা।” নূরী ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে আসাদের দিকে তাকিয়ে রইলো। তার বিশ্বাসই হচ্ছে না আসাদ এতো সুন্দর কথাগুলো বলেছে। গতকালের আসাদ আর এই আসাদের মাঝে বিস্তার তফাৎ দেখা যাচ্ছে। নূরীর মনে প্রশ্ন জেগে উঠলো। আচ্ছা‚ গতকালের মানুষটাই কি এই আসাদ? প্রস্থানের জন্য আসাদ পা বাড়াতেই নূরী ডাক দিয়ে বলল, “বাহ খুব ভালো তো। এখন সম্পূর্ণ দোষটা আমার কাঁধে চাপিয়ে নিজে পালাচ্ছেন‚ তাই না?”

– মানে?
– সাধু সাজবেন না। আপনার মা যদি এবার আমাকে কিছু বলে তবে আমিও বলে দিবো তার ছেলে বাসররাতে স্ত্রীকে কি বলেছিল।
– কথা না প্যাঁচিয়ে সরাসরি বলো।
– কেন? ভুলে গেছেন? গতরাতে ঘরে এসে আমাকে দেখে কি কি বলেছিলেন?
আসাদ একটু চিন্তা করে তারপর বলল, “হ্যাঁ, তোমাকে দারুণ হ* লাগছিল এটা বলেছিলাম।”

– আপনি তো বড্ড বেহায়া।
– স্ত্রীর প্রসংশা করলে বুঝি বেহায়া হয়?
– হ* বলা বুঝি প্রসংশা করা?
– হ্যাঁ, ভার্সিটিতে পড়েও তুমি এটা জানো না?
– কি সব আজেবাজে বকছেন? আমি ওভাবে চলাফেরা করতাম না যে‚ কোনো ছেলে আমাকে এসব বলার সাহস পাবে। আপনার জন্য এসব স্বাভাবিক কিভাবে?
– আমি তো প্রায়ই বলি। তাই আমার কাছে স্বাভাবিক।
– কিইইইই!

বারান্দায় মুখোমুখি হয়ে বসে আছে আসাদ-নূরী। অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরী। অনুশোচনায় ডুবে আছে আসাদ। সে বুঝতে পারলো যে, কোনো মেয়েই তার স্বামীর মুখে হ*, সে* শব্দগুলো আশা করে না। বাইরের রাষ্ট্রে এসব খুব সহজলভ্য হলেও বাংলাদেশে এসব অনাকাঙ্খিত। কর্কশ স্বরে নূরী বলল, “আপনি তো আমেরিকার রোড বয়।”

– মানে?
– রাস্তার ছেলে।
– হোয়াট!
– আবার ইংলিশ বলেন!
– তুমি আমাকে রাস্তার ছেলে বললে কেন?
– আমাদের দেশে রাস্তার ছেলেরা যেমন মেয়েদেরকে আজেবাজে শব্দ দিয়ে সম্বোধন করে। আপনিও তো আমেরিকায় তেমন করেন। তাই আপনি আমেরিকার রোড বয়।
– ওখানে এসব খুব কমন।
– জ্বি না।

হয়তো আপনি যেসব মেয়েদের সাথে মিশেছেন তারাই এমন। কেননা কোনো ভালো মেয়েই চাইবে না তাকে দেখে কেউ এমন এডাল্ট কথা বলুক। আমি মেয়ে। তাই আমি এই ব্যাপারে নিশ্চিত। আসাদ চুপ হয়ে গেল। নূরীর এই কথাটা সত্য হতে পারে। কেননা এমন মন্তব্য করার জন্য আমেরিকায় একবার একটা মেয়ে তাকে বারণ করেছিল। নূরীর মন বদলানোর জন্য আসাদ বলল, “আজ চাঁদটা কিন্তু খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।”

– কোনটা? এই চাঁদ নাকি ওই চাঁদ?
– তুমি তো ভীষণ বেহায়া। নিজের প্রসংশা নিজেই করছো।
– আপনি আমাকে হ* বলে প্রসংশা করতে পারেন। আর আমি নিজেকে চাঁদ বললেই দোষ?
– বাদ দাও এসব। তোমার মনের কষ্টের দাগ মুছেছে তো?
– এক দাগ মুছেছে। কিন্তু আপনি তো আরও বড় দাগ দিতে যাচ্ছেন।
– আবার কি করলাম?
– এই যে এভাবে হুট করে আমেরিকায় যাচ্ছেন। এতে সবাই আমাকে দোষারোপ করবে।
– কে বলল আমি আমেরিকায় যাচ্ছি? আমি তো ভেবেছি এবার দেশে থেকেই কিছু একটা করব।
হাস্যোজ্জ্বল মুখে নূরী বলল, “সত্যি?”

খাবার খাওয়ার সময় আসাদ তার সিদ্ধান্ত বদলানোর কথাটা জানিয়ে দিলো। এতে তার বাবা মা বেশ খুশি হলেন। খাবার শেষে আসাদ এসে পুনরায় তার কাপড়চোপড় পূর্বের জায়গায় রাখতে লাগল।

– কি করছেন এসব?
– যেহেতু যাবো না। তাই জায়গামতো রাখছি।
– এসব আমি করতে পারবো। আপনি ছাড়ুন।
– ডোন্ট ফরগেট…
– আবার ইংলিশ?

আসাদ ব্যাগ রেখে একটা বই নিয়ে শুয়ে পড়লো। নূরী সবকিছু গুছিয়ে তারপর বিছানায় এলো। আসাদের হাত থেকে বইটা নিয়ে বলল, “মিস্টার রোড বয়, এমন সময় বই নয় বউকে কাছে রাখতে হয়।”

– ইংলিশ নয়।
– আচ্ছা। তাহলে রাস্তার ছেলে বলি?
– এর চেয়ে ইংলিশই ভালো। নূরী হেসে উঠলো। মুহূর্তেই নূরীকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো আসাদ। এতে নূরী বেশ হকচকিয়ে গেল। তবে কোনো বাধা দিলো না। আসাদের বুকে নিজেকে সমার্পন করলো।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত