জানিস আকাশ মেঘলা মেয়েটা এমন কেন?কত্ত বড় মিথ্যাবাদী!!!কেন কি করলো আবার তোর সাথে?কি করে নাই তাই বল!ওর জন্য আমি এতো কিছু করি আর ও আমারে পাবলিকলি সবার সামনে ইনসাল্ট করে!!আমি জীবনে আর ওর হয়ে কথা বলবো না। আমার যথেষ্ট শিক্ষা হয়ছে।আচ্ছা তমালিকা কি হয়েছে সেটা বলবি তো আগে!!!তোর এই বকর বকর স্বভাব আমার সবসময় ভালো লাগেনা।মাথাটা খুব ব্যথা করতাছে।ভাবলাম আজকে একটু ঘুমাবো।তা না!তুই এসে ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিলি।যা বলার তাড়াতাড়ি বল।আকাশ তুই এমন করতাছোস কেন আমার সাথে?তোরা সবাই খালি এমন করোস।তখন একটু শান্ত হয়ে তমালিকার কথা শুনতেছিলাম।
আজকে রেস্টুরেন্টে জাহিদের সামনে বলতাছে রিয়া আর জাহিদের মধ্যে যে ঝামেলা হয়ছে ঐটা আমি তৈরী করছি।জাহিদ কি ভাবলো বল তো?!!আমিও সরাসরি বলে দিসি সবকিছুর জন্য দায়ী মেঘলা।কিন্তু মেঘলা আমায় ডেলিবারেটলি জাহিদের সামনে ছোট করলো,বারবার বলতেছে সব আমি করছি।তখন রাগে আমি মেঘলাকে বলছি তোর আর সাগরের মধ্যেকার ভুল বুঝাবুঝি মেটানোর জন্য আমি অনেক খাটছি।আর তুই তার এই প্রতিদান দিলি?!!!তখন মেঘলা কি বলে শুনবি আকাশ?কি বলছে মেঘলা?বলছে যে তোকে কি আমি আমার হয়ে ওকালতি করার জন্য মাসে মাসে টাকা দেই?!!!একটা ছেলের সামনে এবং রেস্টুরেন্টের মানুষের সামনে আমি কত বড় অপমানিত হইলাম বল তো?!!!
আরে!মেঘলা তোর সাথে মজা করে কথা বলছে।আর ঐদিন জাহিদের সামনে সবটা স্বীকার করছে। জাহিদ জানেই মেঘলা ওর আর রিয়ার সম্পর্ক খারাপ করছে।আসলে মেঘলা ঐটা ইচ্ছায় করে নাই।পুরোটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল তিন জনের মাঝে।না আকাশ তাই বলে মেঘলা আমাকে নিয়ে এমন মজা কেন করবে?আর ওকালতির কথাটা গায়ে লাগার মত।মানলাম আমি একটু হাইপার হইছি।আমি কি জানতাম ভেতরের খবর যে ও মজা করছে না সিরিয়াসলি?!!!আহ!তমালিকা তুই একটু বেশি বেশি ভাবোস।বন্ধু বন্ধুকে এসব বললে কখনো মান-সম্মান যায়না। বরং যে বলে সে ছোট হয়।তুই বুঝতাছোস না আকাশ ওকালতির কথাটা মেঘলা রেগে সিরিয়াসলি বলছে।আমি তো ওরে আপন ভেবেই ওর প্রবলেম সলভ করে দিছিলাম।আর ও এমন কেন করলো?!!!আচ্ছা ঠিকাছে আমি মেঘলাকে তোর পায়ে ধরতে বলবো কালকে।এখন যা!!তমালিকা রেগে-মেগে রুম থেকে বের হওয়ার সময় দরজাটা ঠাস করে লাগিয়ে চলে গেল।
এমনিতেই আজকে আমার মনটা ভালো নেই।তার উপর তমালিকার সবসময় অন্যের নামে অভিযোগ শুনতে ভালো লাগেনা।ওর কি কম সমস্যা?কথায় কথায় এতো হাইপার হয় কেন?!! আমার সাথেও এমনটা করে মাঝে মাঝে। কালকে থেকে তমালিকাকে ফোনে পাচ্ছিনা।আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের কারও সাথে যোগাযোগ করছে না।ব্যাপার কি মেয়েটার?আমার গত দিনের ব্যবহারে আঘাত পেল নাকি?!!!আমার কি এখন ওর পায়ে ধরা লাগবো?!!!পারবোনা,যা করার করুক।
রাতের বেলা একটা নিউজ পড়ছিলাম।শিরোনাম মুড সুইং।এই বিষয়ে আমার কোন আয়ডিয়া নেই।তাই কৌতূহলবশত পড়লাম।এটা হল মানুষের মেজাজ হুট করে বদলে যাওয়া।এই হাসি আবার এই কান্না।মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা বেশি দেখা যায়।সাধারণত শারীরিক কোন পরিবর্তনে হরমোনের তারতম্যের জন্য কারও কম বা বেশি মুড সুইং হয়।গর্ভাবস্থাতেও নারীর মুড সুইং হয়ে থাকে।এটা এক ধরনের মনের সমস্যা।মানুষ তখন ডিপ্রেশড হয়ে যায়।এসময় সে অন্যের সাপোর্ট খুঁজে।তাকে যদি আমরা তখন অবহেলা করি তখন সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চায়।এদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হয় যতটা সম্ভব।
তাহলে কি তমালিকা এমন কিছুর ভিতর দিয়ে যাচ্ছে?যেটা আমি বুঝতে পারিনি।ওর কথাগুলোকে আমি সাপোর্ট করার বদলে ওর সাথে আমি আরও তর্ক করলাম শুধু শুধু।ওকে জ্ঞানও দিলাম।ও হয়তো কোন বিষয় নিয়ে ডিপ্রেশড।তাই ছোট-খাটো ঘটনার জন্য ওর যে ইফেক্ট হয় সেগুলো শেয়ার করতে এসেছিল।ছি!ছ!! আমি ওর প্রতি সহানুভূতিশীল না হয়ে ওকে উল্টো মেজাজ দেখিয়েছি,রুম থেকে চলে যেতে বলেছি।মেয়েটি মনে হয় রুমে গিয়ে অনেক কেঁদেছে।তাই আমার ফোন তুলছে না।যায়হোক এমনটা আমি তমালিকার সাথে আর কোনদিন করবো না
মেয়েটা এমনিতে না খুব ভালো।ওর যে এরকম একটা প্রবলেম থাকতে পারে আমি কখনো চিন্তাও করিনি।ব্যাপার না!মুড সুইং তো।মন ভালো হয়ে গেলে নিজে থেকেই আমাকে ফোন করবে।কিন্তু তার আগে তমালিকার মন ভালো করার জন্য আমি কিছু করতে চাই!!!