০২ .হাসির লহরী কী হিংসার তুফান
এ হাসির লহরী কী হিংসার তুফান যে তুলবে তা ঘনরাম যদি জানতেন!
জানলে অবশ্য করতেনই বা কী? তিনি তো এ চঞ্চলা হাস্যময়ীকে কোনও প্রশ্রয় দেননি। নির্লিপ্ত নির্বিকার দূরত্বেই নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন।
কিন্তু মুশকিল হয়েছে জাহাজ হঠাৎ একেবারে অচল হওয়ায়। সাগরবাজ নিয়ে বাজি ধরার সকাল থেকে সেই যে হাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে তার পর থেকে সেনোরা আনা-র চুলের একটা গুছিও কাঁপায়নি।
মাস্তুলে পালগুলো ঢিলে হয়ে ঝুলছে। জাহাজের পতাকাটাও তাই!
নতুন মহাদেশ থেকে স্পেনে ফেরার পথে এই একটি জায়গার ভয়ে নাবিক যাত্রী সবাই তটস্থ হয়ে থাকে। সমুদ্রের মাঝখানে সত্যিই এ এক বদ্ধ জলা। নাম সার্গাসো সাগর। সমুদ্রের শৈবালদাম জমে জমে ও অঞ্চলটাকে এমনিতেই বেশ দুর্ভেদ্য করে রেখেছে। তার ওপর সেখানে বাতাসও প্রায় ঘুমন্তই থাকে। সেকালের পালতোলা জাহাজ একবার সেখানে হাওয়া বিহনে আটকে পড়লে আকাশের দেবতা দয়া করে একটু ঝড়-তুফান না পাঠানো পর্যন্ত তার আর নিষ্কৃতি নেই। চারিদিকে অসীম সমুদ্রের মাঝখানে অচল হয়ে থাকা তখন এক শাস্তি!
সে শাস্তি হালকা করতে একটু আমোদ-প্রমোদ ফুর্তির ব্যবস্থা করতেই হয়। তাতে যাত্রীদের পরস্পরের মধ্যে মেলামেশাটাও খুব আড়ষ্ট থাকে না।
জাহাজে পনেরোজন নাবিক। তাদের অধিনায়ক হলেন সানসেদো। যাত্রী ঘনরাম আর সোরাবিয়াকে নিয়ে সবসুদ্ধ সাতজন মাত্র। তার মধ্যে দুজন মাত্র স্ত্রীলোক। সেনোরা আনা আর তার সঙ্গিনী পরিচারিকা এক প্রৌঢ়া।
পুরুষ পাঁচজনের মধ্যে একজন ফ্রানসিসকান পাদরি। বর্বরদের অন্ধ তমসার নরক থেকে সত্যধর্মে দীক্ষিত করবার জন্যে স্পেন থেকে তাঁর ধর্মভাইদের আনতে যাচ্ছেন। ঘনরাম বাদে বাকি তিনজনই সৈনিক হিড্যালগো। তবে সোরাবিয়াই তার মধ্যে একটু দুর্নামের কলঙ্ক নিয়ে মেক্সিকো থেকে একরকম বরাবরের জন্যে বিদায় নিয়েছে। অন্য দু-জন হিড্যালগোর মধ্যে অ্যালনসো কিনটেরো মেক্সিকোর সেনাবাহিনীর জন্যে স্পেন থেকে ঘোড়া কিনে আনতে যাচ্ছে আর বার্নাল সালাজার যাচ্ছে স্বয়ং কর্টেজ-এর দূত হয়ে স্পেন সম্রাটের কাছে কর্টেজ-এর পত্র আর মহামূল্য সব উপহার নিয়ে।
এসব যাত্রীদের মধ্যে একমাত্র বানাল সালাজার-এরই ঘনরামের পূর্ব-পরিচয় জানা সম্ভব ছিল। কারণ দু-একবার কর্টেজ-এর সঙ্গে তাঁর নিজস্ব কামরাতেই সালাজার দেখা করতে আসার সুযোগ পেয়েছে। কর্টেজ-এর পেয়ারের ক্রীতদাস হিসেবে ঘনরামকে একটু-আধটু লক্ষ করা তার পক্ষে অসম্ভব ছিল না।
তবে ক্রীতদাসের দিকে কে আর কবে ভাল করে চেয়ে দেখে! ঘনরাম নিজেই কর্টেজ-এর সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের সময়ে সে-কথা বলেছিলেন। ক্রীতদাসেরা গোরু-ছাগলের শামিল বলে নিজের নাম বলেছিলেন গানাদো।
সালাজার ঘনরামকেই মনে রাখবার মতো করে লক্ষ নিশ্চয়ই করেনি। তার ওপর ক্রীতদাসের ভূমিকা ছেড়ে নতুন সাজপোশাক আর মর্যাদায় ঘনরামের ভোল যা বদলে গেছে, তাতে তাকে চিনতে পারা অসম্ভব বললেই হয়।
দাসত্ব থেকে ঘনরামের মুক্তির খবর ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সকলের মধ্যে প্রচার করা হলে তবু হয়তো নতুন মুখ ও চেহারার ধাঁচ ও সেই সঙ্গে নাম-টাম শুনে কেউ কেউ একটু সন্দিগ্ধ হতে পারত।
কিন্তু কর্টেজ ডোনা মারিনারই পরামর্শে ঘনরামের সেই উপকারটুকু করেছেন। ঘনরামকে মুক্তি দিয়ে নতুন সাজপোশাকে সম্ভ্রান্ত করে তুলে স্পেনে পাঠাবার ব্যবস্থা করেছেন একেবারে নিঃশব্দে। কেউ ঘুণাক্ষরেও কিছু জানতে পারেনি।
স্পেনের গ্র্যান্ডীদেরই কেউ হিসাবে ঘনরামের নতুন চেহারায় তার পুরনো পরিচয় একেবারে চাপাই পড়ে গেছে।
নতুন মহাদেশ আবিষ্কৃত হবার পর থেকে কম দিন তো যায়নি, হিসপ্যানিওলা, ফার্নানদিনা, নয়া স্পেন য়ুকাটান, এমনকী পানামা পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই স্পেনের উপনিবেশ ছড়িয়ে পড়ে শিকড় পর্যন্ত মেলেছে।
ঘনরাম দাসকে একটু ভিন্ন গোছের যাদের মনে হয়েছে, তারা তাকে তাই য়ুকাটান।
কি পানামার প্রবাসীই ভেবে নিয়েছে সম্ভবত।
হিড্যালগোদের তাঁর সঙ্গে মেলামেশা ও আলাপ করার ধরনে ঘনরাম তা-ই বুঝেছেন। এক সোরাবিয়া ছাড়া তাঁর সম্বন্ধে বেশি কৌতূহল কেউ প্রকাশও করেনি।
সার্গাসো সমুদ্রে জাহাজ অচল হওয়ার আগে পর্যন্ত খুব বেশি মেলামেশার সুযোগও ছিল না। যে যার নিজের গণ্ডির মধ্যেই তখন থেকেছে। খাবার টেবিলে কখনও সকলের একসঙ্গে দেখা হয়েছে, কখনও হয়নি। আজকালকার জাহাজের মতো খাওয়া-দাওয়ার নির্দিষ্ট সময় আর কেতাদুরস্ত ব্যবস্থা তখনকার এসব সেপাই আর মালবওয়া জাহাজে ছিল না। যার যখন মর্জি খেতে শুতে যেত।
ঘনরাম তো ইচ্ছে করেই কোনওদিন সকলের সঙ্গে এক টেবিলে তখন খেতে বসেননি। দরকারও অবশ্য হয়নি তার। পাইলট সানসেদোর সঙ্গে তিনি আলাদাই খেতেন।
সানসেদোর সঙ্গে ঘনরামের আগের আলাপ অবশ্য ছিল না। আলাপ হয়েছে এই জাহাজে ওঠার পরই। কর্টেজ সানসেদোকে একটা চিঠি দিয়েছিলেন সেনর ঘনরাম দাসকে যত্ন করে স্পেনে পৌঁছে দেবার জন্য। ঘনরাম কে, কী বৃত্তান্ত আর কিছুই তাতে লেখেননি। লেখাটা অবশ্য জরুরিও নয়।
স্বয়ং কর্টেজ যার জন্যে চিঠি লিখে পাঠান, তাকে উপরি খাতির করতেই হয়। সে খাতির থেকে ভাব জমে উঠেছে প্রৌঢ় আর জোয়ানের মধ্যে। ঘনরাম সুবিধা থাকলে সানসেদোর সঙ্গেই সময় কাটিয়েছেন এতদিন।
সার্গাসো সমুদ্রে সব ওলটপালট হয়ে গেল।
বেকার মাঝিমাল্লারা পুরো একদিন হাওয়ার আশায় আশায় থেকে নিজেদের মধ্যে জুয়ায় বসে গেল। তারা এ হতচ্ছাড়া জায়গার হালচাল জানে। একবার যদি হাওয়া থামে তো জাহাজসুদ্ধ সবাইকে একেবারে না কাঁদিয়ে আর বইবে না।
আগেকার ফিনিসিয়ান গ্রিক কি রোম্যান জাহাজ হলে তাতে পালের সঙ্গে দাঁড়েরও ব্যবস্থা থাকত। হাওয়া না থাকলে দাঁড়ই হত ভরসা। কিন্তু সে সাগরদাঁড়ী জাহাজ আসলে বড় নৌকো ছাড়া কিছু নয়। মেয়ার-ই নসট্রম-এর কূল ঘেঁষে ঘেঁষেই তা চালানো হত। আতলান্তিকের ঢেউ সামলানো তাদের কর্ম নয়।
মাঝিমাল্লাদের তাই কোনও দায়ই নেই এ-জাহাজে, হাওয়া যদি বন্ধ হয়।
পাইলটের শাসন কি বকুনির কোনও ভয় নেই জেনে তারা নিশ্চিন্ত হয়ে জুয়ায় বসেছে।
তাদের দেখাদেখি হিড্যালগো সৈনিকরাও নিজেদের আসর বসাতে দেরি করেনি। ঘনরাম সে-আসর প্রথমটা এড়িয়েই থেকেছেন, কিন্তু তাতে নতুন এক অস্বস্তি দেখা দিয়েছে।
সেনোরা আনা পর্দানশিন নয়। স্বামীর খোঁজে ফার্নানদিনা থেকে অজানা বিপদের দেশ মেক্সিকোয় যে বেপরোয়া হয়ে পাড়ি দিতে পারে সে লজ্জাবতী লতা গোছের হবে আশা করাই ভুল।
প্রথম প্রথম কিন্তু খানদানি সমাজের ভব্যতা মেনে সে নিজেকে একটু আড়ালে আড়ালেই রেখেছে। জাহাজের ডেকে তাকে একা কোনও সময়ে দেখা যায়নি। সঙ্গে স্যাপেরোন থেকেছে প্রৌঢ়া পরিচারিকা। তখনও তার চোখের কোণে কটাক্ষ যদি ঝিলিক দিয়ে থাকে, তা সোজাসুজি নয়। কারণ সেনোরা আনা তখন যে সময়টুকু ডেক-এর ওপর থাকত, ততক্ষণ তার মুখ ফেরানো থাকত সমুদ্রের দিকেই।
হাওয়া বন্ধ হবার প্রথম দিন বাজি ধরে আলাপের চেষ্টার পর সোরাবিয়া চলে গেলে ডেক থেকে নীচে নামবার সিঁড়িতে, যে তরল হাসিটুকু শোনা গেছল, সেইটেই সেনোরা আনার ব্যবহারের প্রথম দুর্বোধ ব্যতিক্রম বলা যেতে পারে।
সোরাবিয়া অবশ্য সেই সময়টাতেই সুযোগ নিত ঝুটিদার মোরগের মতো নিজেকে সেনোরার কাছে জাহির করবার। হিড্যালগোদের মধ্যে এক কিনটেরোর সঙ্গে তখন পর্যন্ত তার কিছু পরিচয় ছিল। তাকে হাতের কাছে পেলে হাসি-ঠাট্টার মাতামাতি যে তার মাত্রা ছাড়িয়ে যেত, ঘনরাম ছাড়া অন্যেরাও হয়তো তা লক্ষ করে থাকবে।
কিনটেরোকে না পেলে যে-কোনও মাঝিমাল্লাই সোরাবিয়ার কাছে সই। একা একা তো আর কথার কেরামতি দেখানো যায় না।
জুয়ার আসরে বসবার পর থেকেই সোরাবিয়ার এ-মোরগনাচ যা একটু কমেছে।
জাহাজ অচল হওয়ার পর থেকেই সেনোরা আনার চালচলন একটু বেশি স্বাধীন হতে শুরু করেছে। স্যাপেরোন ছাড়াই তাকে এখন প্রায়ই ডেক-এর ওপর দেখা যায়। আর পিঠটা জাহাজের দিকে না হয়ে সমুদ্রের দিকেই ফেরানো থাকে বেশির ভাগ। : আর-একটা ব্যাপারও লক্ষ করে ঘনরাম একটু অস্বস্তি বোধ করতে শুরু করেছেন। তখন। সোরাবিয়া আর দলবল যেখানে জুয়ায় বসত, তিনি সাধারণত সেখান থেকে একটু দূরেই থাকতেন। হঠাৎ তিনি লক্ষ না করে পারলেন না যে সেনোরা আনাও যেন জুয়ার আড্ডা থেকে দূরে থাকবার জন্যে তাঁরই মতো উৎসুক।
মানে যাই হোক, এরকম ঘটনার মিল আর বাড়তে দেওয়া উচিত নয় বলে মনে হয়েছে ঘনরামের। এর মধ্যে সোরাবিয়া বারকয়েক তাঁকে খেলতে ডাকলেও তিনি কোনওরকমে সে-অনুরোধ এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু শেষবার অবস্থাটা একটু অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খেলুড়ে কম পড়ায় সোরাবিয়া তাঁকে খেলায় যোগ দেবার জন্যে অনুরোধ করতেই এসেছিল। তার ছ্যাবলা ধরনেই সাধাসাধি করে সে বলছিল, আরে মশাই, জাহাজ থেকে নেমেই তো মাথা কামিয়ে সোজা ফ্রানসিসক্যান মঠে ঢুকবেন বুঝতে পারছি। একটু পাপতাপ সুতরাং পথে করে যাওয়াই আপনার উচিত নয় কি? দোষই যদি না করেন তো পরমপিতার ক্ষমা চাইবেন কীসের জন্যে! ধোয়া কাপড় আবার কেউ ধোলাই করে! আসুন একটু কালির ছিটে লাগাবেন আমাদের সঙ্গে।
নির্দোষ পরিহাসের সুরে কথা বলতে বলতে হঠাৎ সোরাবিয়ার মুখের ভাব আচমকা বদলে যাওয়ায় ঘনরাম বেশ অবাক হয়েছেন।
সোরাবিয়ার মুখের ভাব শুধু বদলায়নি, গলার স্বরও তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তীক্ষ্ণ কঠিন হয়ে উঠেছে।
ও! আপনি আমাদের জুয়ায় কেন বসতে চান না, তা আহাম্মক বলেই আমি বুঝতে পারিনি। আপনি আরও বড় বাজির খেলোয়াড়!
সোরাবিয়ার মুখের ভাব থেকে গলার সুর হঠাৎ বদলাবার কারণটা বুঝতে না পেরে ঘনরাম তখন সত্যিই একটু অবাক হয়েছেন। সেদিন ওই সময়টায় অন্তত তিনি নিজেকে একাই মনে করেছিলেন। সোরাবিয়ার দৃষ্টি অনুসরণ করে কিন্তু অদূরে একটি মাস্তুলের আড়ালে সেনোরা আনাকে দাঁড়িয়ে থাকতে তিনি দেখেছেন এবার। মাস্তুল থেকে ঝুলে থাকা পালটা তাকে অর্ধেক আড়াল করে আছে।
ঘটনাটার মানে সোরাবিয়া বা আর যে কোনও লোকের কাছে কী হওয়া স্বাভাবিক, ঘনরামের তা অজানা নয়। সোরাবিয়াকে মাথায় চড়তে না দেওয়ার জন্যে তাই তাঁকে অন্য ভঙ্গি নিতে হয়েছে। সে-ভঙ্গি সোরাবিয়ার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া দম্ভ ও ঔদ্ধত্যের।
তিনি স্পষ্টই নাক বেঁকিয়ে বলেছেন, আপনি ঠিকই ধরেছেন সেনর সোরাবিয়া, আমি বড় বাজি ছাড়া খেলি না। আপনাদের ও এলেবেলে ছেলেখেলায় তাই আমার মন ওঠে না।
বটে! সোরাবিয়ার চোখে যেন ছোরার ঝিলিক দেখা গেছে—কীরকম বাজি হলে খেলায় আপনার মন ওঠে? প্রতি বাজিতে এক পেসো-দে অরো? দুই, পাঁচ, দশ পেসো দে-অরো?
পেসো দে-অরো হল স্পেনের সোনার মোহর। সোনার দশ পেসো মানে বেশ কিছু টাকা। গরিবদের পক্ষে প্রায় এক বছরের উপার্জন।
ঘনরামকে কর্টেজ বিদায় দেবার আগে দিল খুলে উপহার দিয়েছেন বটে, কিন্তু তা আর কতটুকু! সাবধানে খরচ করলে তা দিয়ে স্পেন পর্যন্ত পৌঁছে সেখানে ভদ্রভাবে দু-এক বছর চালানো যায়, কিংবা পোর্তুগিজদের কোনও ভারত-মুখো জাহাজে অন্তত তাদের সেখানকার ঘাঁটি দমন, দিউ কি গোয়ায় ফিরে যাওয়া যায়। ফি বাজিতে দশ পেসো করে ধরলে সে-পুঁজিতে একদিনও কুলোয় কিনা সন্দেহ, বিশেষ যদি পড়তা খারাপ পড়ে।
কিন্তু সোরাবিয়ার কাছে এখন পিছু হটার চেয়ে মরণই ভালো।
ঘনরাম যেন অনুগ্রহ করার ধরনে বলেছেন, তা দশ পেসো হলে চলতে পারে?
তাহলে আসুন দয়া করে আমাদের আসর ধন্য করতে।
সোরাবিয়া কুর্নিশের ভঙ্গিতেই কথাটা বলেছে। ঘনরাম কিন্তু তার দাঁতে দাঁত ঘষার শব্দটাও শুনেছেন সেই সঙ্গে।
প্রতি দানে দশ পেসো—দে—অরো!
মনটাকে শক্ত করে আসরের দিকে যেতে যেতে ঘনরামকে একটু থামতে হয়েছে। সোরাবিয়াকেও সেই সঙ্গে।
সেনোরা আনা তাদের সামনে দিয়েই জাহাজের একদিক থেকে আর-একদিকে পার হয়ে যাচ্ছে।
যেতে যেতে দ্বিধাহীনভাবে সোজা ঘনরামের মুখের দিকে যে দৃষ্টিটা সে চকিতে ছুড়ে দিয়ে গেছে, তাতে কৌতুকের সঙ্গে একটা তারিফ আর উৎসাহের উসকানি
স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে।
এ-দৃষ্টি সোরাবিয়ার চোখেও পড়েছে সন্দেহ নেই।
আগের পর্ব:
০১. অর্থাৎ তস্য তস্য
পরের পর্ব:
০৩. বাজির খেলা
০৪. ভুলতে বারণ করেছিলেন
০৫. রাজধানী পানামায়
০৬. মোরালেস-এর ক্রীতদাস
০৭. উৎসবের আনন্দ কোলাহল
০৮. কুড়ি বছর বাদে আবার
০৯. সোরাবিয়ার শয়তানি ফন্দি
১০. আনা শেষ পর্যন্ত
১১. পিজারোর সেভিল-এর বন্দরে
১২. গাঢ় কুয়াশাচ্ছন্ন রাত
১৩. মার্কুইস আর মার্শনেস গঞ্জালেস
১৪. সূর্য কাঁদলে সোনার দেশ
১৫. তৃতীয় অভিযানেও পিজারো
১৬. মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা
১৭. ইংকা আতাহুয়ালপা
১৮. আতাহুয়ালপা যখন পিজারোর ভোজসভায়
১৯. ঘনরামকে তাঁর নির্দিষ্ট সেনাবাসে
২০. দিনের আলোর জন্যে অপেক্ষা
২১. মেয়েটির সমস্ত রহস্য
২২. প্রচ্ছন্ন বিদ্রূপের সঙ্গে
২৩. অনুমান ভুল হয়নি গানাদোর
২৪. কয়ার ভিকুনার পশমে বোনা থলি
২৫. সূর্যদেবের উত্তরায়ণ
২৬. গানাদো অনেক কিছুই ভাবেন
২৭. কী করছেন তখন গানাদো
২৮. সোরাবিয়া ফেলিপিলিও
২৯. মেঘ-ছোঁয়া উত্তুঙ্গ পাহাড় চূড়া
৩০. হেরাদা ও সোরাবিয়ার তাড়নায়
৩১. বন্দরে জাহাজ লাগাবার পর
৩২. পানামা থেকে বার হওয়া
৩৩. বন্দরের নাম নোমব্রে দে দিয়স
৩৪. ফেরারি গোলাম বলে চিহ্নিত হয়ে