সৎ মা

সৎ মা

“বাবা!_ মা কখন আসবে? ছোট্ট মনির এই প্রশ্নে ছটফট করেন অতনু। কি উত্তর দেবেন খুঁজে পান না। মনির মা যে মনির জন্ম লগ্নেই ভগবানের কাছে চলে গেছেন___একথা মেয়েকে বোঝাবেন কি করে তিনি!

অতনুর পরিবারে তার বাবা রমেন্দ্রনাথ বাবু বর্তমান। মা নেই‌। আর আছেন অতনুর বড় দাদা বৌদি,_তাদের দুই ছেলে। অতনুর পরে ছোট দুই ভাই আর তাদের বউয়েরা। দুই ভাইয়ের একটি করে কন্যা সন্তান। আর আছেন অতনু নিজে এবং তার ছোট্ট মেয়ে মনিমালা। অতনুর স্ত্রী মনিকা কন্যা মনিমালার জন্ম ক্ষণেই মারা যান, তাও প্রায় পাঁচ বছর হল। মনি জেঠিমা কাকিমাদের কাছেই থাকে। অকালে স্ত্রী বিয়োগে অতনুও একটু আত্মভোলা গোছের হয়ে পরেছেন। পিতা রমেন্দ্রনাথ বর্তমান বলেই পরিবারটি এখনো যৌথ পরিবার ই রয়েছে।

দিন গড়াতে লাগল। ক্রমে ক্রমে দাদার দুই ছেলে আর ভাইদের মেয়েরাও বড় হতে লাগল। বৌদি এবং ভাইয়ের বউদেরও কাজ বাড়তে লাগলো। বাচ্চাদের স্কুল, টিউশনি, ঘর সংসার সামলে_ মনিকে দেখার মতো সময় টুকুও তাদের রইল না। মনির সাত বছর হতে চলল ,এখন ক্লাস টু তে পড়ে। “সবারই মা আছে, মনির কেন নেই “?_এই প্রশ্নে সে বাবা অতনুকে জর্জরিত করতে লাগলো। এই অবস্থায় পরিবারের সবাই চাইল অতনু আবার বিয়ে করে সংসারী হন। আর মনির মা এসে তাকে দেখভাল করুক। কিন্তু অতনুর একেবারেই তা ইচ্ছে নয়। কিন্তু পরিবারের জোরজবরদস্তির কাছে হার মেনে অসহায় ভাবে মনির কথা ভেবে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে রাজি হল অতনু।

ঘটক পাত্রীর খোঁজ নিয়ে এলো। পাত্রীর নাম সুধা।সুধা যখন একাদশ শ্রেণীতে পড়ে, তখন তার বাবা-মা দুজনেরই মৃত্যু হয়। তারপর থেকে সে মামা-মামির কাছেই থাকে। উচ্চ মাধ্যমিকের পর তার পড়াশোনা হয়নি। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার। সুধা মামীর সাথে ঘরের সব কাজ করে। মামীর কাছে সে গলগ্রহ মাত্র। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুধাকে ঘাড় থেকে নামাতে পারলেই তার শান্তি। অতনুর পরিবার যখন সুধা কে দেখতে গেল তখন সুধার মামা পরিষ্কার জানালেন, ভাগ্নিকে খুব বেশি কিছু দিতে পারবেন না ।তাই অতনু দোজবর, তার আগের পক্ষের একটি সন্তান আছে জেনেও, অতনুর সাথে সুধার বিয়ে দিতে তার কোন আপত্তি নেই।

সুধার মায়াবী মুখ খানি দেখে রমেন্দ্রনাথ বাবুর বড় ভালো লাগলো। তিনি সুধার সাথে অতনুর বিয়ের দিন ঐখানে বসেই ঠিক করে ফেললেন। মনি যখন শুনলো তার মা আসছে, মনির আনন্দ দেখে কে !…মনি সবাইকে বলতে লাগলো_” আমার মা আসছে, আমাকে এত ভালবাসবে, এত আদর করবে “। মনির লাফানি দেখে জেঠি কাকিরা মুখ বেঁকিয়ে বলল__” ওরেএ তো নিজের মা নয়…সৎ মা। আর সৎ মা কোনদিনও সতীনের সন্তানকে ভালোবাসে না। দেখিস তোকে বকবে, মারবে, বেশি লাফাস না মনি”। জেঠি কাকি দের কথা শুনে মনির খুব ভয় করতে লাগল। দু চোখ ভরা জল নিয়ে সে দাদুকে সরাসরি গিয়ে বলল_” দাদু! সৎ মা মানে কি গো”?

রমেন্দ্রনাথ বাবু শিউরে উঠলেন, সাত বছরের বাচ্চাকে এসব কথা কে বলল! তিনি তাড়াতাড়ি বললেন__”সৎ মানে হলো honest…. একথা তো তুমি জানো দিদি ভাই। দেখো তোমার মা খুব ভালো হবে। দয়া_ মায়া মমতা _ভালবাসা _সততার মত সমস্ত ভালো গুণাবলী নিয়ে সে তোমার কাছে আসবে”। মনি তখনকার মত চুপ করে গেল।বিয়ের দিন বিয়ের আসরে মনি দেখল ওড়না দিয়ে মুখ ঢাকা এক মহিলা তার বাবার পাশে বসে ।সবাই বলল_ ওই হল মনির মা। মনি ছুটে মায়ের কোলে উঠতে গেলে, কেউ একজন গম্ভীর গলায় বলল__”এখন নয় । তোমার মা এখন খুব ব্যস্ত, দেখতে পাচ্ছ না! তুমি পরে মায়ের কাছে যাবে”।

আরেকজন বলল__”ও আচ্ছা! এই হল তাহলে আমাদের সুধার সতীনের মেয়ে ।একেই দেখভালের জন্য সুধাকে বিয়ে করে নিয়ে যাচ্ছে হায়! সুধার পোড়া কপাল”! মনি ওইখান থেকে কাঁদো কাঁদো মুখ জেঠি কাকিদের কাছে ফিরে গেল। এক অজানা আশঙ্কায় কেঁপে উঠল তার প্রাণ। সেখানেও শুনলো যে জেঠি _কাকিরা বলাবলি করছে__”ওই এখন দুই-একদিন মনির প্রতি একটু দরদ দেখাবে। তারপর যেই নিজের ছেলে মেয়ে হবে ,ব্যস শুরু হবে মনির উপর অত্যাচার। সৎ মা তো সৎ মা ই হবে। কি জানি, জেদ করে তো ঠাকুরপোর বিয়ে দিলাম ঠিক হল কিনা”! মনির মনে “মা”কে নিয়ে এক বিশাল ভয় ঢুকল। সে মনে মনে বলল মা না…. সৎ মা। আর সৎ মা রা ভালো হয়না।
সে কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পরল।

পরদিন সকালে ঘুম ভাঙলে দেখলো বাবা তার সৎ মাকে নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে। সুধা স্নান করে পাট ভাঙ্গা শাড়ি পরে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে। ইশারায় মনিকে তার কাছে ডাকলো। সবাই অমনি বলল__ যা! যা! মনি! মা ডাকছে । মায়ের কাছে যা”। মনি ভয়ে ভয়ে কাছে গেলে সবাই বলল তোমরা মায় _মেয়েতে ভাব জমাও ,আমরা পরে আসবো। সুধা মনিকে আদর করতে গেলে মনি ছিটকে সরে বলল___”আমি জানি তুমি আমার নিজের মা নয়।_ সৎ মা। আমাকে ভালোবাসবে না, কষ্ট দেবে। আমিও তোমাকে একটুও ভালোবাসবো না”।

মনির মুখে এই কথা শুনে সুধা অবাক। বুঝতে পারল মনিকে কেউ এইসব বুঝিয়েছে।মনি তখনও গড় গড় করে বলে চলেছে _”যখন আমার ভাই বোন হবে, তখন তুমি আমাকে আরো বকবে, একটু ও আদর করবে না। ভালোবাসবে না”। সুধা কোন কথা না বলে চুপ করে রইলো। ফুলশয্যার রাতে অতনু আর সুধা একাকী কক্ষে। অতনু বলল_ “সুধা ক্ষমা করে দিও। তোমার জন্য কোন কিছুই আনতে পারিনি। আমি আসলে ভুলে গেছিলাম”। সুধা বলল _”অতনু আজ আমি তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো। তোমাকে দিতেই হবে”। অতনু বলল_” বল সুধা কি চাই তোমার”! রমেন্দ্র বাবু হঠাৎ করে ছেলে বৌমার ঘরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে ঘরের ভিতরের টুকরো টুকরো কথা শুনলেন।

“এ কি বলছো, সুধা তুমি”। “হ্যাঁ! অতনু !আমাকে কথা দাও ।আমি যেটা চাইলাম তুমি আমাকে সেটা দেবে। আমাকে দিতেই হবে”। রমেন্দ্রনাথ বাবু আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখের জল মুছে বললেন _”হা! ঈশ্বর !সবই তোমার মর্জি”। দেখতে দেখতে দিন পার হতে লাগলো। মনি এখন দশম শ্রেণীতে পড়ে। কিন্তু সুধার সাথে তার সম্পর্ক দায়সারা গোছের। সুধা যতই মনির কাছে এগোতে চায়, মনি ততোই কঠোর হয় সুধার প্রতি। কথায় কথায় সুধাকে যা_তা বলতেও দ্বিধা করেনা। সুধা চুপ করে থাকে।

এদিকে বিয়ের আট বছরেও সুধা মা হতে পারেনি। বাজা নামে পরিবারে তার পরিচিতি এখন‌। মনির কাকি জেঠি বলে সুধার শারীরিক দোষ ছিল বলেই সুধার মামা-মামী তাকে অতনুর সাথে গচিয়ে দিয়েছে। পরিবারের সবাই জানত সুধা আর মনির সম্পর্ক ভালো নয়। তাই তারা প্রায়শই বলত_”যে নিজে সন্তানের মা হতে পারে না, সে অন্য কারো সন্তানের মা হবে কি করে”! সুধা তবু চুপ করেই থাকে। সুধা আর মনির দূরত্ব অতনুকে মানসিক ভাবে খুব আঘাত করে। ক্রমে অসুস্থ হয়ে পরে অতনু। তারপর মনি যখন একাদশ শ্রেণীতে তখন হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় অতনুর। মৃত্যুর সময় সুধার হাত দুটি ধরে অতনু শুধু এইটুকুই বলে__”মনি”!

অতনুর মৃত্যুর পর পরিবারের সবাই মিটিংয়ে বসল এই মা _মেয়ের দায়িত্ব কে নেবে অতনু তো তেমন কিছুই রেখে যেতে পারেনি। কোনোক্রমে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলো মনি। এরপরই মনির জেঠি কাকিরা মিলে তার বিয়ে দেবার জন্য উঠে পরে লেগে গেল। পাত্র ও ঠিক করে ফেলল। পাত্রের নাম রমেশ। বেশ বয়স।সে একজন উঠতি প্রোমোটার। এছাড়া দুনম্বরী কিছু ধান্দা আছে। উঠতি বড়লোক। কিন্তু ঐ যে বলে সোনার আংটি বাঁকা হলেও ক্ষতি নেই। সুধা বারবার বলতে লাগল _মনির এত তাড়াতাড়ি তোমরা বিয়ে দিও না। ওকে আর একটু পড়তে দাও”। অমনি জেঠিমা জেঠু মুখঝামটে বলে উঠলো_”এত ভালো সন্মন্ধ নষ্ট করব না। খুব ভাগ্য মনির যে এত বড়লোক বাড়িতে বিয়ে হচ্ছে।

হু! ভারী আমার মা এলেন রে! ওরে মনি তোর এই সৎ মা তো তোর ভালো দেখতে পারে না। সৎ মা এবার তার স্বরূপ দেখাচ্ছে রে”। সুধা মনিকে বারবার বলল_” মনি তুমি এখন বিয়ে করোনা”। কিন্তু মনি যেহেতু সুধার কোন কথাই শুনবে না ঠিক করেছিল, তাই চুপ করে রইল। বাবা চলে যাওয়ার পর বড় একা হয়ে পরেছিল মনি। নিজের জীবনের ভালো-মন্দ বুঝতেও পারলো না। যথারীতি বিয়ে হল। কিন্তু বিয়ের পর মনি বাড়ি আশাই ছেড়ে দিল। সুধা ফোন করলে হু…হা__ বলে দায়সারা গোছের উত্তর দিয়ে ফোন নামিয়ে রাখত। মনির বর ছিল উঠতি প্রোমোটার। প্রচুর শত্রু ও ছিল তার। ব্যাবসায়িক শত্রুতার বসে একদিন খুন হয়ে যায় রমেশ।একুশ বছর বয়সে মনি বিধবা হয়ে আবার বাপের বাড়ি ফিরে এলো। জেঠি কাকিরা বলল __”ওই দেখো মুখপুড়ী কপাল পুড়িয়ে বাড়ি ফিরল ।নাও এবার থেকে এর বোঝা ও টানো”।

মনি বাপের বাড়ি ফিরে এসে আরো চুপ করে গেল। কয়েকদিন পর থেকেই কাকিমা জেঠিমা বলল_ “মনি সারাদিন ঘরে কি পরে থাকিস, এবার আমাদের হাতে হাতে একটু সংসারের কাজ কর। তোকে সারাজীবন কে বসিয়ে খাওয়াবে? যা দাদা বৌদিদের চা দিয়ে আয়। আর বড় বৌদির জামা কাপড় ইস্ত্রি করে দে,তারপর রান্নাবান্নার কাজে আমাদের সাহায্য কর”। এই সুযোগে ছোট কাকি ও বলল__”আমার সোনির জামা কাপড় ও ইস্ত্রি করে দিস মনি।

সারাদিন তো ঘরে এমনি বসে থাকিস, আর আমাদের অন্নধ্বংস করিস”। সুধা তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে বলল__”এতদিন ধরে তো এইসব কাজ আমি করেছি। এখনো আমিই করব। মনি তুমি ঘরে যাও। তোমার সঙ্গে আমার কথা আছে। আমি হাতের কাজ সেরে তোমার ঘরে যাচ্ছি”। মনি সুধার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে চুপচাপ নিজের ঘরের দিকে চলে গেলো।@জ্যোতিকা সুধা একটু পরে মনির ঘরে এসে বলল__”মনি আবার তুমি পড়াশোনা শুরু করবে। বাড়িতে শুধু শুধু বসে থেকে লাভ নেই। এই নাও তোমার কলেজে ভর্তি হওয়ার পর ফর্ম।”_বলে মনির হাতে একটা অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম দিল। মনি ফর্ম টা হাতে নিয়ে বলল_”কিন্তু পড়াশোনার এত খরচ”!

সুধা বলল_”তা নিয়ে তোমায় চিন্তা করতে হবে না। তোমার বাবার কোম্পানি থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের যে টাকাটা পেয়েছি, সেটা দিয়েই তুমি তোমার কলেজের পড়া শেষ করবে” ‌। মনি আবার কলেজে ভর্তি হবে শুনে যে জেঠি_ কাকিরা মুখ বেঁকাল। শুধু দাদু মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে বলেন__”সঠিক সিদ্ধান্ত মনি। পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। নিজের পায়ে দাঁড়াও”। পাঁচ বছর পার হয়ে গেল। মনি এখন বিএ, বিএড, করে একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। সুধার সাথে তার অত সদ্ভাব না থাকলেও একটা মাঝামাঝি সমঝোতার সম্পর্ক হয়েছে।

হঠাৎ একদিন মনির জ্যাঠতুতো দাদা তপনের বন্ধু সৈকতের মা এসে জানালেন যে, তার পুত্র সৈকত মনিকে বিয়ে করতে চায়। আর মনিকে বৌমা হিসেবে পেতে তিনি নিজেও খুব আগ্রহী। মনি কি বলবে বুঝতে পারে না, একে সে বিধবা, তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করেছে তার শ্বশুরবাড়িতে ,কারণ_ সে নাকি অপয়া। জন্ম লগ্নে ই সে তার মাকে খেয়েছে, আর বিয়ের দু বছর যেতে না যেতেই স্বামীকে। মনি বিয়েতে কিছুতেই রাজি হতে পারছিল না। জেঠি _কাকিরা মুখ বাঁকিয়ে বলল_”যতসব আদিখ্যেতা!মেয়ের ঢং দেখো।বিধবা জেনেও বিয়ের সম্বন্ধ এল আর মুখ পুড়ীর এখন দেমাগ দেখো”।

শেষে সুধা মনি কে বোঝায় যে, একটা অ্যাক্সিডেন্টে জীবন শেষ হয়ে যায়না। জীবনকে আরও একটা সুযোগ দিতে হয়। স্বয়ং মণির দাদু এই বিয়েতে রাজি হলেন। শুভদিনে শুভক্ষণে মনির সাথে সৈকতের বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হল ।শুভদৃষ্টি মালাবদল সব হল। এবার কন্যাদান‌। মনির জেঠু এগিয়ে গেলেন কন্যাদান করতে। মনি জেঠুকে বলল__” তুমি না। আমার মা করবে আমার কন্যাদান”। সবাই হাঁ! হাঁ! করে উঠলো_”সুধা একে মেয়েমানুষ, তার উপর বাজা এবং বিধবা , সে কি করে মঙ্গল কাজে অংশ নেবে”?

শুধু দাদু বললেন_” মনি এতদিনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে”।_ দূরে দাঁড়িয়ে সুধা তখন চোখের জল মুছছে।
বৃদ্ধ রমেন্দ্রনাথ বলে চললেন__” জানিস দিদি ভাই সুধার মত মা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।@জ্যোতিকা ফুলশয্যার রাতেই তোর মা তোর বাবার কাছে কথা আদায় করে নিয়েছিল যে, সে কোনদিনও নিজের সন্তানের মা হবে না। শুধু তোর মা হয়েই থাকবে। এই কারণে তাকে বাজা অপবাদ ও শুনতে হয়েছে। তবু সে তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল”।

মনি অশ্রুসিক্ত নয়নে ডাকলো__”মা তুমি কন্যাদান না করলে আমার যে বিয়ে হবে না”। ধীর পদক্ষেপে এসে সুধা মনির হাত ধরলে মনি বলল__”সবাই বলে তুমি আমার সৎ মা। তবে step_mother নয়। honest mother। তোমার মত মায়া-মমতা সততা শুধু তো “মা” রাই দেখাতে পারে। আর দাদু এটা আমাকে অনেক আগেই বলেছিল, কিন্তু তখন আমি শুনিনি। তোমাকে এতদিন ভুল বুঝেছি আমাকে ক্ষমা করো।শুধু তুমি ছিলে বলে, আমি আরো একবার জীবনকে খুঁজে পেলাম। আর হ্যাঁ আরেকটা কথা শুধু আমি ই কিন্তু তোমার মেয়ে”। সুধা হেসে সৈকতের হাতে মনির হাত দিয়ে কন্যাদান এর সাথে সাথে মনির প্রতি মায়ের কর্তব্য ও পালন করল। আজ সুধার এতদিনের সাধনা সত্যিই পরিপূর্ণতা পেল। আজ প্রকৃত অর্থেই সুধা মনিমালার মা।।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত