ঘনাদার ফুঁ: কুরুক্ষেত্রে ঘনাদা

ঘনাদার ফুঁ: কুরুক্ষেত্রে ঘনাদা

কুরুক্ষেত্রে ঘনাদা

ভুল! বললেন ঘনাদা।

মনে মনে বললাম, শুরু হল গুল! মুখে কিন্তু পুরো ভ্যাবাচ্যাকা ভাব ফুটিয়ে বললাম, বলেন কী, ঘনাদা? কুরুক্ষেত্রের ওই পরিণাম হল দুর্যোধনের শুধু একটি ভুলে?

কী ভুল বলব? শিবু আগ বাড়িয়ে সাহায্য করতে–বিচক্ষণতা দেখাতে এল, যুদ্ধের তারিখটা আরও একটু পিছিয়ে না দেওয়া।

ঘনাদা তো নয়ই, আমরাও কেউ তার বিচক্ষণতায় উৎসাহ না দেখালেও সে সবিস্তারে তার ব্যাখ্যাটা আমাদের না শুনিয়ে ছাড়ল না। এই যেমন আমাদের ইলেকশনে হয়। বেশ জাঁকিয়ে যারা গদিতে বসে আছে তারা ভাবে তাড়াতাড়ি ইলেকশন করালে নতুন উটকো দল জোগাড়যন্তর করে লড়বার জন্য তৈরি হবার সময়ই পাবে না। দখলদার দলই ফাঁকা মাঠে লাঠি ঘুরিয়ে বাজিমাত করবে। কিন্তু সেইখানেই হয় ঠিকে ভুল। দুর্যোধন ভেবেছিল তাড়াতাড়ি যুদ্ধটা আরম্ভ করিয়ে দিলে পাণ্ডবেরা কৌরবদের মতো সৈন্য জোগাড় করতে পারবে না

তা তো পারেইনি। শিশির একটানে শিবুর মাঞ্জা দেওয়া যুক্তির সুতো ভোকাট্টা করে দিল। কোথায় কৌরবদের এগারো অক্ষৌহিণী সৈন্য আর পাণ্ডবদের মোটে সাত। ভুল এখানে নয়, দুর্যোধনের মারাত্মক ভুল হয়েছে পাণ্ডবেরা বোকার মতো যে প্রস্তাব করে বসেছিল তাতে তৎক্ষণাৎ রাজি না হয়ে যাওয়া। কী চেয়েছিল পাণ্ডরেরা? পাঁচটা মাত্র গাঁ। কেমন গাঁ, কোথায়, তা তো কিছু বলেনি। একসঙ্গে দিতে হবে এমনই কথা ছিল না। পাঁচ ভাইকে জম্বু দ্বীপের পাঁচ ধাড়ধাড়া গোবিন্দপুরে পাঁচটা অখদ্দে গাঁ দিলেই চুকে যেত ল্যাটা। নামগুলো যাই হোক ম্যালেরিয়া কালাজ্বর পেলেগ-টেলেগ তখন কি আর ছিল না! খুব ছিল। বেছে বেছে সেই রকম ক-টা গাঁয়ে পাঁচ ভাই পাণ্ডবকে বসিয়ে দিলেই ব্যাস, আর দেখতে হত না। যুধিষ্ঠির নকুল সহদেব তো নস্যি! ওই ভীমার্জুনও বছর ঘুরতে না ঘুরতে কুপোকাত! কী বলেন, ঘনাদা?

ঘনাদা আবার কী বলবেন? গৌর শিশিরের বাহাদুরির ফাঁপা ফানুসটা ঘনাদার কাছে পর্যন্ত পৌছবার আগেই খুঁচিয়ে ফুটো করে বললে, ভীমার্জুন পাঁচ ভাইকে পাঁচটা বনগাঁ দিলেই দুর্যোধন যেন কুরুক্ষেত্রে না নেমে পাণ্ডবদের রামঠকান ঠকাতে পারতেন! আরে পাঁচটা মাত্র গ্রাম চেয়ে পাঠিয়েছিলেন যুধিষ্ঠির। শুনতে ভারী সহজ সরল আহাম্মকের মতো প্রস্তাব। কিন্তু ওর ভেতর যা প্যাঁচ, তা শকুনির পাশার খুঁটিতেও ছিল না সেই দূতক্রীড়ার সময়। ও প্যাঁচ যার-তার তো নয়—প্যাঁচের চ্যাম্পিয়ন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের মাথা থেকে বার করা। এ প্রস্তাব মেনে নিলে দুর্যোধন কীরকম গাঁ যে দিতেন তা বাসুদেবের ভাল করেই জানা ছিল। তাঁর প্যাঁচের খেলা শুরু জম্বুদ্বীপের পাঁচ কোনায় পাঁচটি গ্রাম পাবার পর।

গৌরের ব্যাখ্যান শুনতে শুনতে চোখটা ঘনাদার দিকেই রাখতে হয় তাঁর মেজাজের ওয়েদার রিপোর্ট ঠিকঠাক নিয়ে যাবার জন্য। তাঁর দান ফেলতে দেরি করিয়ে দেবার জন্য একটু আধটু তাতলে কোনও ক্ষতি নেই। বরং গরম হলে তুবড়ি ছুটবে ভাল বলে একটু তাতাতেই চাই। কিন্তু তাতে গিয়ে তেতো না হয়ে যায় সেটাও খেয়াল রাখা চাই।

ঘনাদার একটু যেন সেরকম ভাবগতিক দেখে গৌরকে একটু তাড়া দিতে হল।

প্যাঁচটা কী কেষ্ট ঠাকুরের? পাঁচ গাঁয়ের প্রত্যেকটিতে পাণ্ডবভবন বসিয়ে পাণ্ডব কীর্তিকাহিনী শুনিয়ে শুনিয়ে দুর্যোধনের বিরুদ্ধে খেপানো?

উঁহুঃ!! গৌর একেবারে কৌটিল্য সেজে বললে, করিডর দাবি।

করিডর দাবি? আমরা যথাবিহিত আর যথোচিত হতভম্ব।

হ্যাঁ, করিডরই—গৌর বিশদ হল। আয়ুব খাঁ যেমন তখনকার পুব পশ্চিমের দুই পাকিস্তানের মধ্যে করিডরের কথা ভেবেছিলেন, সেইরকম করিডর দাবি করা পাঁচ-ভাইয়ের পাঁচ রাজ্যের মধ্যে। দুর্যোধন সস্তায় সারবার লোভে পাঁচ গাঁ দেবার প্রস্তাবে রাজি হলেই জম্বুদ্বীপ এফোঁড় ওফোঁড় করা এই পাঁচ করিডরের ঠেলাতেই কুপোকাত হতেন। শ্রীকৃষ্ণের লুকোনো প্যাঁচটি ধরে ফেলেই বিনা যুদ্ধে ছুঁচের ডগার জমিও দেব না বলে তিনি যে তম্বি করেছিলেন সেটা তাঁর ভুল নয়। দুর্যোধনের ভুল হল ওই এগারো অক্ষৌহিণী সৈন্য।

তার মানে? গৌরকে কড়া গলায় জেরা করতে হল, ওই অত সৈন্য জোগাড় করাই দুর্যোধনের ভুল তুমি বলতে চাও।

হ্যাঁ, দারুণ ভুল! গৌর তার সিদ্ধান্তে অটল, ওই অত সেনাদের সামলানো কি সোজা কথা! তখন তো আর রেডিয়ো ছিল না, টেলিফোনও নয়। শুধু তুরী ভেরী বাজিয়ে দরকারের সময় ঠিক মতো কাউকে কি পাওয়া যায়। ধনুর্ধারী বাহিনীকে চাইলে জগঝম্প বাজিয়েরা এসে কান ঝালাপালা করে। অত অগুনতি সৈন্যে বেসামাল হয়েই দুর্যোধন কুরুক্ষেত্রে কাবু। তাই না, ঘনাদা?

না–বলে একটি প্রচণ্ড ধমক শোনবার জন্য ঘনাদার দিকে উৎসুক ভাবে চাইলাম।

তাঁকে এতক্ষণ কিউ-এ দাঁড় করিয়ে রাখার শোধ কেমন করে তিনি নেন তাই দেখবার জন্যই তো এত তোড়জোড়।

কিন্তু এ কী হল? দুমফটাস করে যা ফাটবে তা যে শুধু একটু ফুস করল মাত্র!

একদিক দিয়ে তা অবশ্য বলা যায়! আমাদের যেমন হতাশ তেমনই হতভম্ব করে ঘনাদা গৌরের কথাতেই সায় দিলেন যে!

শুধু কি সায়। সেই সঙ্গে গৌরের তরফে নজিরও হাজির করে যেন হাতের খবরের কাগজের মতো পড়ে গেলেন, মিলিটারি রেকর্ডে তো পাচ্ছি, হস্তিনাপুর নগরে ধরেনি বলে শুধু পঞ্চনদে নয়—সমস্ত কুরু জাঙ্গাল, রোহিতকারণ্য, অহিচ্ছত্র, কালকূট, গঙ্গাকুল, বারণ, বাটধান, সামুন পর্বত পর্যন্ত তাদের চালান করা হয়েছে।

কুরুক্ষেত্রের মিলিটারি রেকর্ডে তাই আছে বুঝি? আমরা হতাশ হয়ে ঘনাদার দিকে তাকিয়ে বললাম, তা হলে ওই এগারো অক্ষৌহিণীই দুর্যোধনের কাল হয়েছে বলতে হবে!

হ্যাঁ, তা-ই হত। ঘনাদা গলাটায় যেন একটু বাঁকা সুর দিয়ে বললেন, যদি—

যদি? আমরা যেন মৃতসঞ্জীবনীর কৌটায় চাঙ্গা হতে হতে বললাম, যদি কী?

যদি, গুনতিটা ঠিক হত।ঘনাদা হাতের শেষ করা সিগারেটটা অ্যাশট্রেতে চেপে ধরে বললেন।

আর কি কিছু আমাদের ভুল হয়!

তাঁর ফুরোনো সিগারেটটা অ্যাশট্রেতে ঘষে নেভানো হতে না হতে শিশির তার নতুন টিনটা খুলে সামনে ধরে জিজ্ঞাসা করলে, গুনতিতেই ভুল আছে বুঝি? এগারো অক্ষৌহিণী নয়?

ঘনাদা শিশিরের টিন থেকে নতুন সিগারেট নিয়ে বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলের নখের ওপর ঠুকতে ঠুকতে একটু নাসিকাধ্বনি করলেন মাত্র। শিশির ততক্ষণে লাইটার জ্বেলে সামনে ধরেছে।

সিগারেটটা মুখে নিয়ে সেই লাইটারের আগুনে ধরিয়ে একটানেই একরাশ ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে ঘনাদা অবজ্ঞাভরে বললেন, মেরেকেটে আট অক্ষৌহিণী হলেও যথেষ্ট! যথেষ্ট!

তা হলে? আমরা পালা করে বিস্মিত জিজ্ঞাসা চালালাম।

ওই যে এগারো অক্ষৌহিণী বলে লেখা? আমি বিস্ময়ে মুখব্যাদান করলাম।

সে লেখার তা হলে কোনও দাম নেই! শিবু হাঁ হল!

মাত্র আট অক্ষৌহিণী তা হলে এগারো বলে চালু হল কী করে? গৌরের সোজাসুজি প্রশ্ন।

সেই সঙ্গে শিশিরের ছোট্ট একটু টিপ্পনি–দুর্যোধনের হামবড়াই নিশ্চয়!

না, দুর্যোধনের হামবড়াই নয়। ঘনাদা শিশিরকেই আগে জবাব দিয়ে আর একরাশ ধোঁয়ার সঙ্গে তাঁর মোক্ষম সম্মোহন শর কয়টি ছাড়লেন, আট অক্ষৌহিণী এগারো হওয়ার মূলেই আছে দুর্যোধনের সর্বনাশা ভুল, যার নাম হল উলুক।

উলূক? এবার আমাদের আর অবাক হবার ভান করতে হল না।

হ্যাঁ, উল্লুক নয়, উলূক! ঘনাদা বিশদ হলেন–তবে নামটা যে একদিন ওই গালাগাল হয়ে উঠবে ভারত বীর ভগদত্ত শাপ দিয়ে সেই ভবিষ্যদ্বাণী তখনই করে গিয়েছিলেন।

এই উল্লুক থুড়ি উল্কই হল দুর্যোধনের ভুল? আমরা আঁচটা পড়তে না দেবার জন্য উসকে দিয়ে বললাম, যে কুরুক্ষেত্রে কৌরবদের হারের মূল? কে ইনি?

ইনি কে জানো না! ঘনাদা খুশি হয়ে আমাদের অজ্ঞতা দূর করলেন, ইনি হলেন স্বয়ং ধৃতরাষ্ট্রের সম্বন্ধী, দুর্যোধনের মাতুল স্বনামধন্য শকুনির ছেলে। বাপের চেয়ে এক কাঠি সরেস। ছোকরা খুব চটপটে চালাক চতুর, চোখে মুখে খই ফোটে বলে এই মামাতো ভাইটিকে দুর্যোধনের খুব পছন্দ। পাণ্ডবদের কাছে তাকেই পাঠিয়েছেন দূত করে, শ্রীকৃষ্ণের কাছে দ্বারকায় পর্যন্ত দৌত্য করতে গেছে এই উলুক।

দৌত্য করতে গিয়ে সব গুবলেট করেছিল বুঝি উল্লুকটা থুড়ি ওই উল্ক? সরলভাবে জিজ্ঞাসা করলে শিবু।

উঁহু! মাথা নাড়লেন ঘনাদা। এ পক্ষে ও পক্ষে কথা যা চালাচালি করেছে তা একেবারে যেন টেপ রেকর্ডারের মতো। একটি কথাও ভুলচুক নেই।

তবে? আমাদের বিমূঢ় জিজ্ঞাসা—উলূককে নিয়ে দুর্যোধনের ভুলটা কোথায়?

ভুল! ঘনাদা এবার বোঝালেন, তার দৌত্যের বাহাদুরি দেখে তাকে যুদ্ধের কমিশেরিয়াটের মাথায় বসিয়ে দেওয়া—উলূক এইটেই চেয়েছিল। যুদ্ধ আরম্ভ হবার আগেই সে রীতিমত গুছিয়ে নিয়ে তার নিজের দেশ গান্ধারে যা পাঠালে তাতে, কৌরব পাণ্ডব যে পক্ষই জিতুক, তার কিছু আসবে যাবে না। পায়ের ওপর পা দিয়ে অমন সাতপুরুষ তার সুখে কাটিয়ে দিতে পারবে।

তার মানে চুরি করেছিল উলুক? আমরা স্তম্ভিত কিন্তু যুদ্ধ আরম্ভ করবার আগে অত চুরি করল কী করে?

কী করে আবার? ঘনাদা ঈষৎ হাসলেন। স্রেফ ওই গুনতির ফাঁকিতে। দুর্যোধনের হয়ে যুদ্ধ করতে এক এক রাজা তাঁর দলবল আর লটবহর নিয়ে আসেন আর উলূক তাদের খাওয়া থাকার ব্যবস্থা থেকেই মোটা রোজগারের ব্যবস্থা করলেন। বেশি কিছু ঝামেলা তো নয়, শুধু একটা দুটো শূন্য বাড়িয়ে যাওয়া। এক অক্ষৌহিণী কীসে হয় জানো তো? পদাতিক, ঘোড়সওয়ার, রথ আর হাতি নিয়ে মোট দু লক্ষ আঠারো হাজার সাতশো সেনায় এক চতুরঙ্গ। পুরো চতুরঙ্গ হবার তো দরকার নেই। উকের কাছে। এখানে একটা, ওখানে একটা শূন্য বসিয়েই সে অক্ষৌহিণী পুরো করে দিয়ে তাদের খানাপিনা তোয়াজ তদ্বির বাবদ দুর্যোধনের খাজাঞ্চিখানা ফাঁক করবার ফিকির করে নেয়, সামনাসামনি রাখলে পাছে ভীষ্ম দ্রোণ কর্ণের মতো ধুরন্ধর সেনাপতিদের চোখে ধরা পড়ে যায় বলে জায়গার অভাবের ছুতোয় উলূক যত দলকে পারে, পাঠিয়ে দেয় দূর-দূরান্তরে।

ঘনাদা একটু থামতে তাঁর এ ব্যাখ্যানের একটু খুঁত ধরতেই হল। তা উনূকের এই চুরির জন্য, কুরুক্ষেত্রে কৌরবদের হার হয়েছিল বলতে চান?

পাগল! ঘনাদা অবজ্ঞাভরে প্রতিবাদ জানালেন, ও চুরি তো দুর্যোধনের খাজাঞ্চিখানায় একটু বড় গোছের ফুটোও করতে পারেনি। ও চুরির ওপর উলূক যদি হস্তিনাপুরের সব কটা পুকুর মায় কুরুক্ষেত্রের দ্বৈপায়ন হ্রদটাও চুরি করে পাচার করত কৌরবেরা তাতেও কাবু হত না।

তা হলে কাবু তারা হল কেন? আমরা যুক্তি দেখালাম, গুনতির ফাঁকি-টাকি সব বাদ দিয়ে ধরেও দুর্যোধনের পক্ষে মোটমাট আট অক্ষৌহিণী তো ছিল। পাণ্ডবদের চেয়ে পুরো এক অক্ষৌহিণী বেশি। তাতে তাদের হার হওয়া কী উচিত?

কখনও নয়। তবু হার হল কেন? নিজেই প্রশ্ন তুলে ঘনাদা তার উত্তর দিলেন, হার হল উলূকের চুরির দরুন নয়, তার মুখখু মাতব্বরিতে। একাই গাণ্ডিবী অর্জুন সমেত পাঁচ ভাই পাণ্ডবকে যিনি কুপোকাত করতে পারতেন সেই বীরের সেরা বীরকেই উলূক দিয়েছে খেপিয়ে। নেহাত এক কথার মানুষ বলে দুর্যোধনের কাছে প্রতিজ্ঞা রাখবার জন্য চলে যেতে আর পারেননি। তবে নিজের যা বড় মূলধন তার অর্ধেকই দিয়েছেন দেশে পাঠিয়ে।

উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের শুকনো ন্যাড়া পাহাড়ের দেশ গান্ধারের ছেলে উলুক, ওই বীরের সেরা অতিরথ বীরের মর্ম সে আর কী জানবে!

কাজকর্মের পর সন্ধেয় ইয়ারবন্ধুর কাছে ওই বীরের সেরা বীরকে সে ঠাট্টা-তামাশাই করেছে।

ইয়ারবন্ধু তার অবশ্য হেঁজিপেজি কেউ নয়। দুর্যোধনের ছেলে লক্ষ্মণ, দুঃশাসনের ছেলে বৃহদ্বল, কর্ণের ছেলে বৃষসেন, এদের কাছেই ঠাট্টা করে নাক সিঁটকে সে বলেছে, কী সব মাল যে এই যুদ্ধের টানে আমদানি হচ্ছে হস্তিনাপুরে! আজ এক চিজ এসেছিলেন আমাদের কৌরবপক্ষকে কৃতার্থ করতে! জিভের এখনও আড়ই ভাঙেনি। সমস্তকে বলে হমন্ত। চোর বলতে বলে চুর, আর সঙ্গে যাদের এনেছে প্রায় অর্ধেক হস্তিনানগরই চাই তাদের থাকার জন্য।

বৃষসেন বাদে অন্য সবাই এ কথায় উলূকের সঙ্গে হেসে উঠেছে। কর্ণের ছেলেই একটু প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, মানুষটা নিশ্চয় পূর্বী। পূর্বীদের উচ্চারণ এমনই একটু বাঁকা হয়। কিন্তু তাতে হাসবার কী আছে! ওরা উচ্চারণ যেমনই করুক, যুদ্ধ যা করে দেখলে চোখ টেরা হয়ে জিভ এড়িয়ে যাবে তোমারও। মানুষটা কোথাকার বলো তো? মনে আছে তার দেশটার নাম?

আছে, আছে। তাচ্ছিল্য ভরে বলেছে উল্ক, ওই পুব সীমান্তের প্ৰাগজ্যোতিষপুর না কী যেন বললে।

প্রাগজ্যোতিষপুর! চমকে উঠে বলেছে বৃষসেন, সেখানকার ভগদত্ত নয় তো?

হ্যাঁ, হ্যাঁ, ভগদত্তই যেন বলছিল নামটা। উলূক অবজ্ঞাভরেই বলেছে, যা কথাবার্তার ধরন আর উচ্চারণ, ভাল করে বুঝতেই পারিনি। তা ছাড়া তোমার এই ভগদত্ত সঙ্গে করে কী এনেছেন জানো? একটি দুটি নয়, শ-দুয়েক এক হাতির পাল। সেই হাতির পালের জন্য জায়গা দিতে হবে শুনে বলেছি—অত হাতির আমাদের কিছু দরকার নেই।

তুমি তা-ই বললে? উলূকের দিকে তাজ্জব হয়ে চেয়ে হতাশ সুরে বলেছে বৃষসেন, প্রাগজ্যোতিষপুরের ভগদত্তকে তুমি বললে যে তার হাতিতে আমাদের দরকার নেই! তা তুমি গান্ধারের নীরস ন্যাড়া পাহাড়ের গাধা আর অশ্বতরই চেনো, পুব মুলুকের বিশেষ করে প্রাগজ্যোতিষপুরের ভগদত্তের হাতির দাম আর তুমি কী করে জানবে? ভগদত্তের কথা ছেড়েই দাও, তার ওই এক-একটা হাতি প্রায় আধা অক্ষৌহিণী চতুরঙ্গ সেনার সমান তা জানো?

খুব জানি! খুব জানি? উলূক ব্যঙ্গের সুরে বলেছে, ও পূর্বিয়াদের দৌড় আমার খুব জানা আছে! নিজেদের বনজঙ্গলে সবাই ওরা খুব বাহাদুর। এখানে লড়াইয়ের দুটো হাঁক শুনলেই দাঁত চিরকুটিয়ে ভির্মি যাবে। ওই মালেদের এক পাল হাতি পুষতে আমি রোজ রোজ এক জঙ্গল করে খোরাক জোগাতে পারব না।

উলূক অতিরথ ভগদত্তের কোনও খাতির গোড়া থেকেই রাখেনি। প্রথম দিনই ভগদত্ত অতি কষ্টে নিজেকে সামলেছেন। তিনি যে কে তা ওই একটা চ্যাংড়া ছোকরা জানবে কোথা থেকে! ক্ষত্রিয় যোদ্ধাদের ভেতর সেরা যারা, তাদের বলে রথ, রথের ওপর হল মহারথ। যেমন দ্রোণাচার্যের ছেলে অশ্বত্থামা, জরাসন্ধ। এই মহারথদের ওপর যাঁরা তাঁরা হলেন অতিরথ, যেমন ভীষ্ম দ্রোণাচার্য অর্জুনের মতো প্রাগজ্যোতিষপুরের ভগদত্ত। এই অতিরথ ভগদত্তের মতো মানুষকে চিনে যোগ্য সমাদরে অভ্যর্থনা করবার জন্য দুর্যোধনের পয়লা নম্বর হুঁশিয়ার পাকা লোক রাখা উচিত ছিল।

ভগদত্ত তো যুদ্ধের নামে রাজধানী হস্তিনাপুরটা একটু বেড়িয়ে যেতে আসেননি। যুদ্ধ করা কাকে বলে তিনি কুরু-পাণ্ডব দুই পক্ষকে দেখিয়ে দিতে এসেছেন। তা দেখতে শুধু হাতেআসবেন কেন? সঙ্গে যা এনেছেন দরকার হলে একাই তাতে বুঝি কুরুক্ষেত্রর যুদ্ধের ফয়সালা করে দিতে পারেন।

আমাদের কাশীরাম দাস তো সে সৈন্যসামন্তের মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া বহর বোঝাতে অঙ্ক-টঙ্কই সব গুলিয়ে ফেলেছেন।

ভগদত্ত রাজা আসে পেয়ে নিমন্ত্রণ।
অবুদ অর্বুদ সৈন্য করিয়া সাজন।।
সহস্র শতেক কোটি অশ্ব আসোয়ার।
ষষ্ঠী-কোটি মহারথী তার পরিবার।।
ছত্রিশ সহস্র কোটি সঙ্গে মত্ত হাতি।
চতুরঙ্গ দল সহ আসে নরপতি॥
বিবিধ বাদ্যের শব্দে কাঁপে মহীধর।
মিলিত হইল কুরু সৈন্যের ভিতর।।

মিলিত হওয়া আর হল কই! প্রথম থেকেই উলূকের সঙ্গে খটাখটি।

দপ্তরে বসে ভারিক্কি চালে জাবদা খাতা খুলে টুকতে ঢুকতে মুখ না তুলেই বলেছে, কী নাম? ভগদত্ত। ঠিকানা? প্রাগজ্যোতিষপুর। সঙ্গে লটবহর লোকজন কত?

অতিরথ ভগদত্ত তখনই রাগে ফুলছেন। তবু নিজেকে সামলে উত্তর যা দিতে গিয়েছেন তার কটা শব্দ উচ্চারণ করতে না করতেই উলূক খাতায় চোখ রেখেই ক-টা টিক মারতে মারতে বলেছে, যান, চলে যান যামুন পর্বতে।

যামুন পর্বতে কেন? ভগদত্তের গলা তখনও নামানো। যুদ্ধ করতে এসেছি। কুরুক্ষেত্রে, যামুন পর্বতে যাব কোন দুঃখে!

যামুন পর্বত পছন্দ না হয় চলে যান রোহিতকারণ্যে। উলুক তখনও মুখ তোলেনি, অঢেল জায়গা পড়ে আছে।

অঢেল জায়গার লোভে তো আসিনি, ভগদত্ত কোনও রকমে নিজের ওপর রাশ টেনে বলেছেন, অঢেল জায়গার অভাব আমার দেশে নেই। আমি কৌরবপক্ষে যুদ্ধ করতে এসেছি। এখানেই কাছাকাছি থাকার ব্যবস্থা চাই।

মনে মনে ভগদত্তের উচ্চারণের খুঁতগুলোতে মজা পেলেও মানুষটার জেদের দাবিতে তখন বিরক্ত হয়ে উঠেছে উল্ক। জাবদা খাতায় কী লিখতে লিখতে মাতব্বরি চালে যেন হুকুম শুনিয়েছে, কাছাকাছি কোথাও হবে না। এখানে বড় ভিড়। হয় যামুন পর্বত নয় রোহিতকারণ্যে যেতেই হবে।

না।

এবার চমকে উলূককে মুখ তুলতে হয়েছে। হঠাৎ এই বাজ পড়ার আওয়াজ যিনি গলা থেকে বার করতে পারেন, দেখতেও হয়েছে সে মানুষটাকে একটু মন দিয়ে।

হ্যাঁ, বাজের আওয়াজ বার করবার মতোই যে চেহারা তা স্বীকার করতে হয়েছে মনে মনে। লম্বা চওড়া তেমন নয়, কিন্তু একেবারে যেন লোহা পিটিয়ে গড়া। মুখের দিকে চাইলে তো একটু শিউরে উঠতেই হয়। চোখ দিয়ে যেন আগুনের হলকা বার হচ্ছে।

উলূক আর তর্কাতর্কি করেনি। হস্তিনানগরের কাছেই জায়গা দিয়েছে প্ৰাগজ্যোতিষপুরের ভগদত্তকে। কিন্তু সে জায়গায় তাঁর সৈন্য-সামন্ত আর হাতির পাল নিয়ে কুলোবে কেন?

বিরক্ত হয়ে ভগদত্ত তাঁর সেরা এক কুড়ি হাতি ফেরতই পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্ৰাগজ্যোতিষপুরে।

উলূক একদিকে হার মানতে বাধ্য হলেও এ হারের শোধ নিয়েছে আর-এক দিকে। হাতে না মারতে পেরে ভাতে মেরেছে বলা যায়। ভগদত্তের সেইসব মত্ত মাতঙ্গের খোরাক দিয়েছে যেন ঘোড়ার মাপে।

এই নিয়ে ভগদত্তকে প্রায় রোজ আসতে হয়েছে উলূকের কাছে নালিশ জানাতে।

শকুনির ছেলে উলূক এখন ভগদত্তের সামনে যেন ননীর মতো নরম। হাত জোড় করে নালিশ শুনে তার অনুচরদের লোক-দেখানো গালাগাল দেয়, কিন্তু হাতিদের খোরাকের ব্যবস্থা থাকে যথাপূর্বম।

ভগদত্ত শেষে একদিন তাই আগুন হয়ে উঠে শাপ দিয়েছেন উলূককে, তোমার জন্য যমদূতেরা তো নরকের দরজা খুলেই রেখেছে, তোমার নামটাকে আমি অভিসম্পাত দিয়ে গেলাম। যুগ যুগ বাদেও এ নামটা লোকের মন থেকে মুছে যাবে না, গালাগাল হয়ে থাকবে মানুষের মুখে।

ও! আমরা যথারীতি বিস্মিত হয়ে বললাম, ও! উল্কই হয়েছে উল্লুক।

হ্যাঁ, ঘনাদা মুখটাকে যেন করুণ করে এবার বললেন, কিন্তু উল্লুক না উলুক যাই বলো, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধটার পরিণাম ওলট-পালট হয়ে যাবার মূল হল সে-ই। তাকে। তোমরা যাকে বলো কমিশারিয়েট, সেখানে বসাবার মতো ভুল যদি দুর্যোধন না করতেন তাহলে কোথায় থাকে পাণ্ডবদের জারিজুরি, পাঁচ ভাই পাণ্ডবের মধ্যে যিনি মধ্যমণি সেই গাণ্ডিবী অর্জুনই কেঁসে যান সবার আগে।

ওই উল্লুক, থুড়ি উলুক সৈন্যসামন্তদের তদ্বির তদারক আর খানাপিনার সেরেস্তাদার হয়েছিল বলে স্বয়ং অর্জুনের নির্ঘাত মৌথের ফাঁড়া কেটে গেল।— ঘনাদার কাছ থেকেও এতটা বাড়াবাড়ি হজম করা যে একটু শক্ত গলায় তার সুরটা একেবারে গোপন রাখলাম না।

কিন্তু ঘনাদা নট নড়নচড়ন নট কিচ্ছু! রীতিমতো জোর দিয়ে বললেন, তাই তো গেল। ভগদত্তের সৈন্যসামন্ত আর হাতির পালের কথাই শুনেছ, সে কী রকম লড়িয়ে তা আর কতটুকু জানো! কাশীরাম দাস তো বর্ণনা দিতে গিয়েই হার মেনে শুধু লিখেছেন,

অতি ক্রোধে ভগদত্ত করয়ে সংগ্রাম।
লিখনে না যায় তার যুদ্ধ অনুপম॥
লক্ষ লক্ষ সেনা মারে চক্ষের নিমেষে।
ভগদত্ত যুদ্ধ দেখি দুর্যোধন হাসে॥
পাণ্ডবের সেনাগণ হইল অস্থির।
দেখি মহা ভয় পান রাজা যুধিষ্ঠির॥

এ তো কাশীরাম দাসের তিন হাত ফের বিবরণ। আদি মূল মহাভারতেই কী। লিখেছেন, শোনো—এইরূপ গজারোহী মহাবাহু ভগদত্ত পাণ্ডব ও পাঞ্চাল সৈন্যগণকে সংহার করিতে আরম্ভ করিলে তাহারা রণে ভঙ্গ দিয়ে পলায়ন করিতে লাগিল।

গোপাল বনমধ্যে দণ্ড দ্বারা পশুগণকে যেরূপ তাড়িত করে, মহাবীর ভগদত্ত তদ্রপ পাণ্ডব সৈন্যগণকে বারবার তাড়িত করিতে লাগিলেন।

এ ভগদত্তকে ভয় করে না কুরুক্ষেত্রে এমন কেউ নেই। ধনঞ্জয় অর্জুন নিজেই স্বীকার করেছেন—মহাবীর ভগদত্ত গজযান বিশারদ ও পুরন্দর সদৃশ। উনি এই ভূমণ্ডলে গজবোধীগণের প্রধান। উঁহার গজের প্রতিগজ নাই। ওই গজ কৃতকর্মা জিতক্লম এবং অস্ত্রাঘাত ও অগ্নিস্পর্শ সহনক্ষম। অদ্য ওই হস্তী একাকী সমুদয় পাণ্ডব সৈন্য সংহার করিবে।

শুধু পাণ্ডব সৈন্য নয়, স্বয়ং অর্জুনেরও মরণ বাণ ওই ভগদত্তের হাতে।

ঠিক ঠিক? গৌর বিদ্যে জাহির করবার সেই মৌ-কাটা ছাড়তে পারল না, ভগদত্তের সেই বৈষ্ণবাস্ত্র কেমন! কিন্তু সে অস্ত্র তো শ্রীকৃষ্ণ নিজের বুক দিয়ে ঠেকিয়ে বৈজয়ন্তীমালা বানিয়ে ফেললেন।

বানিয়ে ফেললেন আবার কোথায়? ঘনাদা প্রায় ধমকই দিলেন আমাদের, সে অস্ত্র বজ্র হয়ে পড়তে গিয়ে আলোর মালাই হয়ে গেল আকাশে! কিন্তু কেন? ভগদত্তের অমোঘ বৈষ্ণবাস্ত্রের ও দশা হল কেন?

আমরা নির্বাক। কারও মুখে আর কথা নেই।

ঘনাদা নিজের জিজ্ঞাসার জবাব নিজেই দিলেন, এ ভেস্তা বৈষ্ণবাস্ত্রের মূলেও দুর্যোধনের সেই ভুল উলুক। তাঁর হাতিদের ন্যায্য খোরাক না দিতে পেরে ভগদত্তের কিছুদিন থেকেই মেজাজটা খুব খারাপ। যুদ্ধটা তাড়াতাড়ি চুকিয়ে দিয়ে দেশে ফেরার জন্য তাই তিনি অস্থির। সেই মতলবেই ক-দিন থেকে রোজ তিনি উলূককে কটা জিনিস আনিয়ে দেবার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। তিনি নিজে হস্তিনার বাজারে জিনিসগুলোর সরেস নমুনা পাননি বলেই অন্য কোনও শহর থেকে সেগুলো আনিয়ে দেবার জন্যে উন্মুককে এই ফরমাশ। উলূক কিন্তু যেন গা-ই দেয় না তাঁর কথায়। দু-চারটে নমুনা যা এনে তাঁকে দেখিয়েছে ভগদত্ত তা দেখেই হস্তিনার বাজারেরই রদ্দি মাল বলে চিনে বাতিল করলেন। হস্তিনার বাজারে রদ্দি ছাড়া কোনও মাল কেন নেই এই বিষয়েই কোনও সন্দেহ শুধু তাঁর মাথায় আসেনি। সত্যের খাতিরে অবশ্য স্বীকার করতে হবে যে বাজারের সরেস মাল উধাওর ব্যাপারে উকের কোনও হাত ছিল না। অন্য শহরে গিয়ে সওদা করে আনার দায়টুকু শুধু সে নেয়নি, আর গড়িমসি করে শেষ পর্যন্ত হস্তিনার বাজার থেকে সে রদ্দি মাল এনে। দিয়েছে, নিরুপায় হয়ে ভগদত্তকে কাজ সারতে হয়েছে তাই দিয়েই।

সেই জন্যেই বজ্র হয়ে যার নামবার কথা অব্যর্থ সে বৈষ্ণবাস্ত্রের ওই দশা। হাউইজার হয়ে ছোটার বদলে আকাশে হাউই-এর তারাবাজি। বাসুদেব সত্যিই গলায় পরুন বা না পরুন, তাঁর নামে গল্পটা ভালভাবেই রটেছে যুগের পর যুগে।

ঘনাদা থেমে শিশিরের সিগারেটের টিনটা হাতিয়ে উঠে যাবার উপক্রম করতেই আমাদের এবার তাঁকে ধরে থামাতে হয়েছে।

রদ্দি মশলার জন্যেই কি ভগদত্তের বৈষ্ণবাস্ত্রের ওই দুর্দশা? আমার প্রশ্ন।

মশলাগুলো কী? গৌরের কৌতূহল।

হস্তিনার বাজার থেকে সরেস মশলা সব উধাও হয়ে রদ্দি মালই শুধু রইল কেন? শিবুর সন্দিগ্ধ জিজ্ঞাসা।

মশলাগুলো হল সোরা, গন্ধক আর চিনি, ঘনাদা সংক্ষেপে তাঁর জবাব সেরেছেন। মশলা বাজে হওয়ায় কামানের বারুদের কাজ না হয়ে তাতে শুধু তারাবাজির হাউই-ই উড়েছে, আর বৈষ্ণবাস্ত্রের মশলা জেনে তা ভণ্ডুল করবার জন্য স্বয়ং কেশব বাসুদেবই বাজার থেকে সব সরেস মাল আগে থাকতে সরিয়ে ফেলেছেন।

শুনুন! শুনুন, ঘনাদা!

আরও অনেক প্রশ্ন তখন আমাদের মাথায় চাড়া দিয়ে উঠেছে সেগুলোর জবাবের জন্য ঘনাদাকে বৃথাই আকুলভাবে ডেকেছি।

ঘনাদা ততক্ষণে সিঁড়ি বেয়ে তাঁর টঙের ঘরে। শিশিরের সিগারেটের টিনটা নিয়ে অবশ্য।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত