নীল লিপস্টিক

নীল লিপস্টিক

আমি একটা নীল শাড়ি পরে রুম্মানের সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমার বফের গুষ্ঠি উদ্ধার করছি।আমার পরনে যে নীল তা যেই সেই নীল না একদম ক্যাটক্যাটা নীল।সাথে ম্যাচিং করা নীল ব্লাউজ,নীল চুরি,নীল দুল,নীল টিপ,নীল জুতা,নীল আইলাইনার,নীল কাজল,শুধু লিপস্টিকটা নীল দেওয়া বাকি ছিল।যদিও বা আমি নীল লিপস্টিক খোঁজার কম চেষ্টা করিনি।কিন্তু ব্যর্থ হয়ে এখন বেগুণী লিপস্টিক লাগিয়েছি।রাস্তার লোকজন কেমন করে যেনো তাকাচ্ছে।কিছুক্ষণ আগে তো স্কুল পড়ুয়া দুটো মেয়ের একটি মেয়ে বলেই ফেললো-“আল্লাহ!দেখ কি সুন্দর ক্লাউন..আমি আমেরিকায় দেখেছি ভিক্ষুকরা এরকম সেজে ভিক্ষা করে বাংলাদেশেও বুঝি আজকাল এমন হয়!”

আমার কান্নায় বুক ফেটে যাচ্ছে কোন কুক্ষণে যে ঐ পাতি কবির কথা শুনতে গিয়েছিলাম।রুম্মানের অবস্থা তখন বিপরীত তার হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে।এমন একটা জিনিস আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কীভাবে হলো এটা নিয়ে আমি প্রায়ই ভাবি।যাই হোক ঘটনাটা শুরু থেকে বলা দরকার। আমি গত কয়েক মাস আগে ফ্রেন্ড সার্কেলে হাসির পাত্রী হই এই কথা নিয়ে যে ভার্সিটিতে উঠেও আমি আজও সিঙ্গেল কেন।তখন রুম্মান বলে উঠে-“তুই যেমন ছেলে চাস সেসব গুণের অধিকারী ছেলে খুঁজতে খুঁজতে বুড়ি হয়ে যাবি তাও ছেলে পাবিনা”বলেই কি হাসি!পুরা ক্যান্টিন জুড়ে এদের হাসির আওয়াজ শুনা যাচ্ছে।অনেক হয়েছে আর সহ্য করা যায়না।আমি ওর মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়েই বললাম-“দেখ বফ আমারও আছে কিন্তু তোদেরকে সারপ্রাইজ দিবো বলে বলিনি।

তাও ঠিক যেমন আমি চাই।কবি কবি ভাব,পুরু চশমার নিচে উদাসীন চোখ,খুব কায়দা করে এলোমেলো বানানো-জেল সেট করা চুল,দুই ফিতার স্যান্ডেল আর শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বারো মাসই একটা বাধ্যতামূলকভাবে ঝুলানো কালো চাদর।খানিকটা কৃষ্ণ বর্ণ কিছুটা সান কিস্ড টাইপ স্কিন আর কি,উচ্চতা ইয়া লম্বা,স্বাস্থ্য একদম ফিট,ভূরির ‘ভ’ ও নেই…আহা পুরাই সিনেমার নায়ক!”এবার আমি থামলাম সবার মুখের দিকে তাকালাম।সবাই কিছুটা ভ্যাবাচেকা খাওয়া।আর রুম্মান বেচারা কেবলই একটা লেগ পিসে দাঁত বসাতে যাচ্ছিলো সেটা পড়ে গেছে।আমার খুব ভালো লাগছে।আমি এখন খুব ভাব নিয়ে উঠে চলেই আসছিলাম পিছন থেকে রুম্মান বলে উঠলো সে দেখা করবে,না দেখেই আমি বুঝলাম তার চোখ জ্বলজ্বল করছে।অনেকটা শেয়াল মুরগী খাওয়ার আগে যেমন চোখে তাকায়।

আমার মাথায় এ মূর্হুতে আকাশ ভেঙে পড়েছে।কারণ এত্ত জোস একটা মিথ্যা বলার আগে এই ব্যাপারটা কীভাবে আমি ভাবলাম না।নিজেকে উঠিয়ে আছাড় দিতে মন চাচ্ছে।কিন্তু আমি নিরুপায় আর ব্যাপারটা এখন আমার মান-সম্মানের।দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে গম্ভীর হয়ে বলা শুরু করলাম-“তা সম্ভব নয়, আমার রাহুল বেবি (বফের সদ্য আকিকাহীন নাম যা কিনা শাহরুখ খানের অনেক মুভিতে দেখেছি তাই মেরে দিলাম)যে কিনা আজকাল অনেক ব্যস্ত তার নতুন উপন্যাস নিয়ে।সে একমাস দরজা জানালা বন্ধ করে শুধু লিখালিখিই করবে।এমতাবস্থায় তার সাথে কোন কাক পক্ষীও দেখা করতে পারবেনা এমনকি আমিও না।

“হ্যাঁ কাজ হয়েছে রুম্মানের চোখ দপ করে নিভে গেছে।এখন আমার নিজেকে বাহবা দিতে মন চাইছে। কারণ এক মাস হতে হতে এই ঘটনা এদের কারো মনেই থাকবেনা।কিন্তু খুশিটাকে পুরোপুরি হজম করার আগেই জেসি বলে উঠলো-“এক মাস আর এমন কি!আমি প্রত্যেকদিন রুম্মানকে এ কথা স্মরণ করিতে দিবো তাও দুলাভাইকে তো দেখেই ছাড়বো”এবার আমার সমস্ত রাগ গিয়ে পড়লো এই জেসির উপর।এই মেয়ের স্মৃতিশক্তি আসলেই প্রখর।আমি শুধু ঠিকাছে বলে বেরিয়ে আসলাম।

বাসায় এসে মাথায় আগে পানি ঢাললাম কতক্ষণ। যা করার ঠান্ডা মাথায় করতে হবে। এবার কোন ভুল না।একবার ভাবলাম রুম্মানকে সত্যি জানিয়ে দেই পরে ভাবলাম ওকে জানানো আর পুরো ভার্সিটিতে ঢোল পিটানো একই কথা।বেশ খানিকক্ষণ ভাবার পরেই মাথায় বুদ্ধি আসলো।ফেসবুকে লগ ইন করলাম।বিভিন্ন গল্প,কবিতার পেইজ থেকে লেখক,কবিদের খুঁজতে লাগলাম।সমান তালে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টও পাঠাতে লাগলাম।যেখানেই ডাল গলুক সমস্যা নেই।কিন্তু দুঃখের ব্যাওয়ার হচ্ছে কেউ পাত্তা দিলোনা।কেউ কেউ রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করলেও ইনবক্সে গিয়ে শুনলাম তারা অলরেডি অনাগত গুল্টু,বল্টু,পল্টু ইত্যাদি নামক বাচ্চার বাবা।অর্থাৎ মিঙ্গেল,আমার বেইল নাই সেক্ষেত্রে।

এক রাশ হতাশা নিয়ে লগ আউট করতে যাবো এমন সময় একটা রিকুয়েস্ট আসলো “AmI shae akaki kobe”যে টাকলা ভাষাকে বাংলায় রূপান্তর করলে দাঁড়ায় “আমি সেই একাকী কবি” নামক আইডি থেকে।আইডির এত জঘন্য নামকেও সেসময় আমার সোনাতুল্য মনে হচ্ছিলো শুধু মাত্র কবি শব্দটার জন্য।আর সবচেয়ে বড় কথা প্রোফাইলে ঝুলছে আমার বর্ণনার সেই সুপুরুষের ছবি তবে উলটা ঘুরা।সে যাই হোক বর্তমানে একেবারে সোজা হয়ে ভোটার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট সাইজ ছবির মতো পোজ দিয়ে পিক তুললে খ্যাত বলে। সেই হিসেবে কবি মহাশয় বেশ স্মার্ট বলা যায়।আমাকে আর পায় কে..আমিও সাথে সাথে এক্সেপ্ট করে ফেললাম।দৌঁঁড়ে গিয়ে আগের সব ফুল,লতা,পাতার ছবি সরিয়ে তামিল নায়িকার ছবি প্রোফাইলে ঝুলালাম।

কবি সেখানে সাথে সাথে লাভও দিয়ে ফেলেছেন।ইনবক্সে ওয়েভ আর হাই হেলোও পাঠানো হয়ে গেছে তার।আমি খোদা মুখ তুলে চেয়েছেন ভেবে তাড়াতাড়ি কথা বলা শুরু করলাম।আমার ননাম তাকে নীলা বললাম।যেভাবেই হোক একে হাত ছাড়া করা যাবেনা।কবিও প্রতি মূহুর্তে নতুন উদ্যমে মেসেজ দেয়।তার টাকলা ভাষা বুঝতে আমার বেশ কষ্ট হলেও আমি অনুমান করে গদগদ হয়ে রিপ্লাই দেই।এভাবেই কবিকে কীভাবে পটাবো ভাবতে ভাবতেই ২দিন যাওয়ার পর কবি সাহেব নিজেই আমাকে প্রোপজ করে বসেন।আমি যেন মেঘ না চাইতেই জল পেয়ে গেছি এই খুশিতে তো আমার পাগল হওয়ার জোগাড়। আমিও রাজি হয়ে গেলাম।আমাদের প্রেম চলতো সকাল দুপুর রাতে।কবি প্রায়ই মেসেজ দিতেন-babo kaiso?(বাবু খাইসো?)

-tome ke gomasso?(তুমি কি ঘুমাচ্ছো?)ইত্যা

দি ইত্যাদি আমিও তার কেয়ার দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতাম।কিন্তু তার এই টাকলা ভাষা নিয়ে আমি তাকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাস করেছি যে কবি হয়ে এভাবে লিখে কেন!তার কথা একটাই সে বাংলায় সাহিত্য রচনা করে বাংলিশ পারেনা।তার ফোনে নাকি বাংলা কীবোর্ড সাপোর্ট করেনা তাই।আমিও সরল মনে মেনে নিয়েছি।আর ভালোবাসায় আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকা ভালো জিনিস।

তো এভাবেই দিনকয়েক পার হওয়ার পর আমি ভাবলাম আজকালকার রিলেশনের কোন ভরসা নাই।তাকে তাড়াতাড়ি আমার বন্ধুমহলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া দরকার।এছাড়াও আমার কবি বফ আমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছে।আমাদের প্রথম দেখা হতে যাবে পাশাপাশি বন্ধুদের মাঝে একটা ভাব নিয়েও ঘুরতে পারবো।এক ঢিলে দুই পাখি।তো আমি রুম্মানকে জানিয়ে দিলাম আমার প্রেমিকের উপন্যাস লিখা শেষ।তার সাথে আগামীকালই দেখা করতে পারবে তারা।কিন্তু আমার মনে খটকা লাগলো প্রথম দেখা করতে যাচ্ছি আমাকে দেখে মত বদলে ফেললে এতজনের সামনে বেইজ্জত হয়ে যাবো।তাই রুম্মানকেই সাথে নিবো বললাম।অন্যদের সাথে পরে দেখা করাবো।সবাই রাজি হলো।আমিও খুশি।

ক্যান্টিনে বসে বার্গার খাচ্ছি আর প্রেমিকের সাথে চ্যাট করছি।এমন সময় রুম্মান এসে বসলো।সে যে অনেক উঁকিঝুঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছিলো সেটা ভালোই বুঝতে পারছিলাম।আমিও রীতিমত দেখিয়ে দেখিয়েই টেক্সট করছিলাম।রুম্মান হঠাৎ করে মৃদু আর্তনাদ করে বলে উঠলো “এটা তোর প্রেমিকের আইডি?” আমিও সিংহমানবী টাইপ ভাব নিয়ে শুধু মাথা নাড়ালাম আর উঠে আসার আগে জানিয়ে দিলাম আমরা কালকেই ওর সাথে দেখা করতে পারবো।

মনে মনে অনেক আনন্দ লাগছে। বাসায় এসে আরামের একটা ঘুম দিলাম।আফটার অল কালকে আমাকে চোখে কালো শিরা পড়া কোনো ভূতের মতো লাগুক আমি চাইনা।সন্ধ্যা ৭ টায় একটা আননোন নাম্বার থেকে কল পেয়ে ঘুম ভাঙ্গলো।বিরক্ত লাগলো,তবুও রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো,-“এটা কি নীলার নাম্বার?” ইচ্ছা করলো ঠাটায়া চড় দেই,কোন নীলা না ঢিলার কাছে কল দিছে নিজেই জানেনা।কিছু বলতে যাবো ঐ সময়ই মাথায় বিদ্যুৎগতিতে ব্যাপারটা খেলে গেলো।আরেহ!এই নাম তো আমি আমার সদ্য প্রাপ্ত বফকে বলেছিলাম।দ্রুত বললাম

-জ্বি,জ্বি আপনি কি সেই কবি?
-জ্বি(গম্ভীর কন্ঠে)
-আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?
-তুমিই না কাল দিলে জানু?আর আমাকে আপনি আপনি করছো যে?(গলায় কিঞ্চিৎ অভিমান)

কথোপকথনের এ পর্যায়ে এসে নিজেকে চড় মারার প্রয়োজন অনুভব করলাম।আমাদের আজ পর্যন্ত ফেসবুকে মেসেজ আদানপ্রদান ছাড়া কথা হয়নি,তাই কাল নাম্বার দিয়েছি।নাম্বার দেওয়ার পেছনে আরেকটা কারণ ওর টাকলা ভাষা বুঝতে আমার কষ্ট হয়।আর ওর সাথে ফোনে কথা বলে সেগুলো স্টোরিও দিবো ঠিক করে রেখেছি।আমরাও এখন কপত-কপোতী!অতি আবেগে এই ব্যাপারটাই ভুলে গেছি।যাক এখন সামাল দিতে হবে।

-আরেহ না না!নিজেকে আমি ভুলতে পারি যাবেনা তোমাকে ভোলা (ভ্যারভ্যারা গলায় গান গেয়ে মন জয়ের ব্যর্থচেষ্টা)দশটা না পাঁচটা না একমাত্র বফ আমার তুমি।
-(ভয়ানক হো হো হাসির আওয়াজ)তোমার গানের গলা খুবই সুন্দর।

মনে মনে লাড্ডু ফুটলো।কিন্তু আমার বফের গলা আসলে কেমন জানি ঘ্যারঘ্যার শব্দের,পরিচিত লাগে।থাক এতসব ভাবার সময় নেই।তাছাড়া আমি তার আত্মাকে ভালোবাসার চেষ্টা চালাচ্ছি তার গলার আওয়াজকে নয়,হুহ।
এরপর অনেকক্ষণ কথা হলো।অনেক লুতুপুতু টাইপ কথা।এর মাঝে বফ আমার জানিয়ে দিলো তার নীল রঙ ভীষণ প্রিয়।কাল যেন আমি তার মনের মতো সব নীল রঙের পরে আসি।আমিও রাজি হয়ে গেলাম।

একটু পরে ফোনে কতক্ষণ কথা বঅলেছি তার স্ক্রিনশট মাইডেতে দিয়ে লিখলাম “My baby” কিছুক্ষ ণের মধ্যেই লাভ,ওয়াও,স্যাড সব রিয়েক্ট চলে এল।এইতো রুম্মান সিন করেছে।নিশ্চই কিছু বলবে নাহ সে বললো না।যাক আমিই আগ বাড়িয়ে শুনালাম এসবের কথা।রুম্মান শুনে নীল আইলাইনার আর লিপস্টিকের আইডিয়া দিলো,বললো শাড়ি,চুড়ি নীল যে কেউই পরতে পারে,কিন্তু আমি যেহেতু তাকে বেশি ভালোবাসি সেটাও দেখানো প্রয়োজন। খচখচ করলাম এই ভেবে যে নীল শাড়ি,চুড়ি পর্যন্ত না হয় ঠিক আছে কিন্তু নীল লিপস্টিক,আইলাইনার, টিপ,দুল সব এক পরলে কেমন একটা লাগে না!কিন্তু রুম্মানের যুক্তিটাও অকাট্য ঠেকলো।তাই সকাল সকাল সেভাবেই সাজলাম।মা বারবার আড়চোখে তাকাচ্ছিলো।না পেরে জিজ্ঞাসই করে বসলো,”আজ কি যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় যাচ্ছো?”

আমার ভয়ানক রাগ লাগলো।মা ফ্যাশনের কিছুই বুঝে না,আজকাল এই ম্যাচিংই ট্রেন্ড ইত্যাদি বুঝিয়ে বের হয়ে আসলাম রাগে।রুম্মান দাঁড়িয়ে আছে।আমাকে দেখে সে ভাঁড় দেখে ফেলেছে এমন ভাব করছে।কষিয়ে একটা চড় দিলাম।আইডয়া ওরই ছিলো।যাক সে চুপচাপ হাঁটলো।আমাদের দেখা করার কথা পার্কে।বফের কল আসলো সে নাকি চলে এসেছে,সেও নীল পাঞ্জাবি পরে এসেছে।আমি তাকে দেখতে অনেক আগ্রহী।কল্পনায় ভেবে নিজেই লজ্জায় মরে যাচ্ছি।আমি তার ছবি দেখিনি কারণ তার আত্মাকে ভালোবাসতে চেয়েছি।আর মূলকথা হচ্ছে প্রোফাইল পিকচারটাই তো মন কেড়ে নিয়েছে আমার।পৌঁছালাম পার্কে।কত মানুষ চিনবো কেমনে।নীল পাঞ্জাবীওয়ালা একজনকে দেখে হার্ট গলায় উঠে গেলো।উলটা ঘুরে বসে আছে।কাছে গিয়ে ডাক দিতেই দেখি এটা তো আমাদের বাসার নিচের ফ্লেক্সিলোডের দোকানদার রহিম চাচা।তিনিও আমাকে দেখে সমান বিস্মিত!তিনি বললেন “মা তুমি এইখানে এমন সাইজ্যা কী করো?”

আমি বললাম “একজনের সাথে দেখা করার কথা চাচা তারও নীল পাঞ্জাবী পরে আসার কথা।তা আপনি এখানে?”
চাচা শুকনা মুখে বললো ” আমারও একজনের লগে দেখা করুনের কথা,তারও নীল শাড়ী পইরা আওনের কথা।”
আমি আর চাচা দুজনই বুঝতে পেরেছি ব্যাপারটা কী ঘটেছে।রহিম নামটাকেই তিনি রুদ্র বলে চালিয়েছেন আর আমিও আহা কি নান্দনিক নাম বলে গলে গেছিলাম,মনে পড়ে গেলো। এমন সময়ই রুম্মান বলে উঠলো, “চাচা আপনার ame shae akaki kobe আইডিতে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিছি,এক্সেপ্ট করেন।বলেই হাসতে হাসতে ফেটে পড়ছে।

আমি দ্রুত সেখান থেকে চলে আসলাম।রাগে কান ঝাঁ ঝাঁ করছে।চোখ ফেটে কান্না আসতে চাচ্ছে।ঘরে বউ,তিনটা বাচ্চা রেখেও কেউ কেমনে একাকী কবি হতে পারে ব্যাপারটা ধরতে না পেরে আমার মরে যেতে মন চাচ্ছে,সমানে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গালি দিচ্ছি এই বুইড়া বয়সে ভিমরতি ধরা চাচারে।রুম্মানকে দেখে মনে হচ্ছে সে হেসেই আত্মহত্যা করবে আজকে।।এই বদমাইশ ছেলে আগে থেকেই।ভীষণ রোদে ক্লাউন সেজে দাঁড়িয়ে আছি।রুম্মান এই সময় কাকে যেন কল দিয়ে বললো “হ্যাঁ হ্যাঁ নীল শাড়ীর সাথে নীল লিপস্টিক লাগাইতে ভুলিস না,এটাই ট্রেন্ড চলে।”
স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তার ঠোঁটের কোণায় একটা পৈশাচিক হাসি।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত