নিয়তি

নিয়তি

৬ নং বাসের প্রচন্ড ভিড়ে আমি আমার সামনে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটার পিঠের দিকে তাকিয়ে আছি। ঘামে ভিজে গেছে মেয়েটার সাদা জামা। আর ঘেমে যাওয়ার কারনে কালো ব্রা টা একদম পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। আমার নজর এখন সেই ব্রার দিকে।

আমি জাহিদ হাসান। একটা কোম্পানিতে চাকরি করতাম। কিছু মেয়েলি ঘটনায় চাকরিটা চলে যায়। আপাতত বেকার। এখন আমার নিয়মিত কাজ হচ্ছে যেসব বাস এ প্রচন্ড ভিড় হয় আমি সেসব বাস এ উঠে মেয়েদের শরীর চোখ দিয়ে চেটে খাই। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে প্রচন্ড ভিড়ে স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে ফেলি। মেয়ে বুঝতে পারলেও কিছু বলার সুযোগ পায় না। আমিও ভান করি যে ইচ্ছা করে হাত দেই নাই। সমাজে আমার মত মানুষ অনেক আছে। যারা সুযোগ পেলেই মেয়েদের হেনস্তা করে। সবাই দেখে, কিন্তু কেউ কিছু বলে না। কার এত ঠেকা পরছে অন্য কাওকে কিছু বলার!

এক নজরে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি আমি। মেয়েটার সামনের দিকে কিছু দেখতে পারছি না। ভাবছি মেয়েটাকে ডেকে আমার সিট এ বসতে দেব কিনা। সেক্ষেত্রে দুইটা লাভ। এক, মানুষের কাছে ভালো হওয়ার একটা সুযোগ। দুই, মেয়েটার বুক দেখার সুযোগ। ঘামে ভিজে যাওয়ার কারনে যেভাবে মেয়েটার ব্রা দেখা যাচ্ছে, আমি সিওর সামনে থেকে বুকের কিছু না কিছু দেখতে পারব। আর কপাল আরও ভাল থাকলে ছুয়ে দেয়ার সুযোগ ও পেয়ে যেতে পারি।

মেয়েটাকে ডেকে বসতে বলব, এমন সময় মেয়েটা নেমে গেল। ইশ! দেখতে পারলাম না মেয়েটার লোভনীয় শরীর টা। কিছুক্ষন পরে আমিও নেমে গেলাম ফার্মগেট এর কাছে। শরীর গরম হয়ে আছে আমার। অতি দ্রুত বাসায় যেতে হবে। দেহের সমস্ত জ্বালা বউ এর উপরে মিটাতে হবে। কিন্তু সেই এক শরীর আর কত! আমার নতুন নতুন মেয়েদের শরীর নিয়ে ভাবতে ভাল লাগে। এক একটা শরীর এক একটা রহস্য। নতুন রহস্যে ডুব দিয়ে থাকতে চাই আমি।

সন্ধ্যার দিকে ফেসবুক এ বিভিন্ন মেয়েকে মেসেঞ্জার এ বিরক্ত করার সময় হঠাৎ কিছু ছবিতে চোখ পরে গেল। কিছু মেয়ে একটা টিশার্ট পরে ছবি দিয়েছে। তাতে লেখা আছে “গা ঘেষে দাঁড়ানো নিষেধ।“ উরে বাপ, গা ঘেষে দাড়াবো না মানে! মগের মুল্লুক নাকি? ছবিগুলা সাথে সাথে পিসি তে সেভ করে এডিট করে দিলাম আমি। গা ঘেষে দাঁড়ানো নিষেধ কথাটা মুছে দিয়ে সেখানে কুৎসিত কিছু কথা লিখে আমার ফেক আইডি দিয়ে ছেড়ে দিলাম ফেসবুক এ। কিছুক্ষনের মাঝেই আমার ছবিগুলো পুরাই হিট। অনেক অনেক মানুষ ছবি গুলো শেয়ার করতে লাগল।

এবার বোঝ মাগি! মানুষ তোদের ছবি দিয়ে তোদের সাথেই মজা নিবে। এই সমাজে আমার মত অনেকেই মেয়েদের নিয়ে মজা নিতে চায়। সেই সুযোগ টা আমি করে দিলাম। অনেকেই এর বিপক্ষে থাকবে। তাতে আমার কি যায় আসে! আমার যতটুকু করার দরকার ছিল তততটুকু আমি করে দিলাম। বাকিটুকু আমার মত মানুষরাই করবে। কিন্তু আমার আফসোস লাগতেছে যে মেয়েগুলা অনেক ঢিলাঢালা টিশার্ট পরে ছবিগুলো দিয়েছে। আর একটু টাইট ফিটিংস এর টিশার্ট পরলে কি হতো! বজ্জাত মেয়ে।

আজকে আমি দাড়িয়ে আছি শাহবাগ এ। সন্ধ্যা হবে হবে করছে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে অনেক অনেক মেয়ে আজকে শাহবাগ এসেছে। আর আমি এসেছি ভিড়ের মাঝে মেয়েদের নরম শরীর এ হাত দেয়ার জন্য। যেদিকে চোখ যাচ্ছে সেদিকে সুন্দরী রমণীদের ভিড়। সবাই শাড়ি পরে এসেছে আজকে। আমার চোখের সামনে সব পরী হেটে বেড়াচ্ছে। আমি একটু অপেক্ষাকৃত বেশি ক্রাউড আছে এমন জায়গায় চলে আসলাম। মেয়েরা ভিড়ের মাঝে আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সুযোগ বুঝে একটা মেয়ের পিছনে দাড়িয়ে গেলাম আমি। নিজের শরীর এর সমস্ত ভার সামনের মেয়েটার গায়ে দিয়ে দিলাম।

যেন পিছন থেকে আমাকে কেউ ঠেলা দিচ্ছে। মেয়েটা বিরক্ত হয়ে পিছনের দিকে তাকানোর সু্যোগে দুইহাত দিয়ে মেয়েটির পশ্চাতদেশ স্পর্শ করে ফেললাম। স্পর্শ করার সাথে সাথে যা হল সেটা কল্পনাও করতে পারলাম না। মেয়েটা সাথে সাথে আমার দুই হাত ধরে চিল্লায়ে উঠে গালে থাপ্পর মারল। আমি কেন মারলেন বলে ওঠার সাথে সাথে আমার পিছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরে টানতে টানতে সাইড এ নিয়ে গেল আরো দুইটি মেয়ে। চোখের পলকে আশে পাশের আরো অনেক মেয়ে ঘিরে ধরল আমাকে। কি হচ্ছে বুঝে ওঠার আগেই যেই মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছিলাম সে আমার দুই পায়ের মাঝে গায়ের সমস্ত শক্তি নিয়ে লাথি বসিয়ে দিল। তারপরে আরও একটা, তারপর আবার।

রাস্তার ধারে পড়ে কোকাচ্ছি আমি। আস্তে আস্তে আমার চিন্তা শক্তি লোপ পাচ্ছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। বারবার চোখের উপরে কালো একটা পর্দা নেমে আসতে চাচ্ছে যেটা আমি জোর করে আটকিয়ে রেখেছি। বুঝতে পারছি যে কালো পর্দা নেমে আসলেই আমি মারা যাবো। আগেও এমন সিচুয়েশন এ পরেছি আমি। কিন্তু কেউ না কেউ আমার পক্ষে কথা বলেছে। কিন্তু আজকে কেউ আমার পক্ষে কথা বলা তো দুরের কথা আমাকে বাচাতেও এগিয়ে আসে নাই। সবাই আমাকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে, যা সব ই আমার বিপক্ষে। আর আমি অবাক হয়ে ভাবছি আজকে হঠাৎ সবাই এত ভালো হয়ে গেল কেন!!!

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত