অতীত

অতীত

রিয়ানের মোবাইলে বেশ কয়েকবার রিং হচ্ছে।ঝিনুক রান্নাঘরে থেকেই শুনতে পাচ্ছে। রিয়ান রুমেই আছে ভেবে ঝিনুক যাচ্ছে না।কিন্তু রিয়ান তো ফোন তুলছেই না।তাই ঝিনুক চুলা বন্ধ করে রুমে এলো। এসে দেখলো রিয়ান রুমে নেই। ওয়াশরুমে শাওয়ার নিচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ঝিনুকই কলটা রিসিভ করলো।নাম্বারটা সেভ নেই রিয়ানের ফোনে। অপরিচিত নাম্বার। ঝিনুক কল রিসিভ করে ওপাশে থাকা ব্যক্তিটির কন্ঠ শুনে ঝিনুকের বুকটা ধক করে উঠলো। ওর শিরদাঁড়া দিয়ে যেন শীতলরক্তের স্রোত বয়ে গেলো। কন্ঠটা যে ওর খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। এই কন্ঠটা ওকে একটানে ওকে ওর অতীতে নিয়ে যাচ্ছে। যে অতীত থেকে ও পালিয়ে বেড়াচ্ছে এতোদিন ধরে। ওপাশের ব্যক্তিটি হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছে। ঝিনুকের হঠাৎ সেদিকে খেয়াল হলো।

” জ্বি বলুন।
” ওহ ম্যাডাম, স্যার নেই?
” আছে ওনি শাওয়ার নিচ্ছেন। ওয়াশরুমে।
” আচ্ছা ম্যাডাম আমি স্যারের অফিসের নতুন কলিগ।

আজ জয়েন করার কথ ছিলো আমার।কিন্তু আমার কিছু প্রবলেম এর কারণে আজ জয়েন করতে পারবো না।স্যারকে সেটাই বলার জন্য কল দিয়েছিলাম। ” ঠিক আছে আমি বলে দিবো। বলেই ফোন কেটে দিলো ঝিনুক। ততোক্ষণে রিয়ানও গোসল শেষে বেরিয়েছে।

” কে কল করেছিলো ঝিনুক?
” তোমার অফিসে আজ কারও জয়েন করার কথা ছিলো?
” হ্যা,, নতুন একজন জয়েন করবে আজকে।
” আজ জয়েন করবেন না। কি নাকি প্রবলেম হয়েছে।সেটা বলার জন্যই কল করেছিলেন।
” ওহ,,ঠিক আছে।
” আচ্ছা শোনো আমি বেরুবো এখন।
” না খেয়েই বেরুবে নাকি? আমার রান্না প্রায় শেষ।আমি খাবার দিচ্ছি।
” না জান। অনেক লেট হয়ে গেছে এমনিতেই। ঘুম থেকে উঠতেই লেট হলো। রাতে তো তুমি ঘুমাতেই দাও না।
” আমি কি ঘুমাতে না করেছিলাম? নিজেই তো সারারাত দুষ্টুমি করো। তো উঠতে তো লেট হবেই।
” তোমার মতো বউ পাশে রেখে ঘুমিয়ে থাকা যায় নাকি?
” রিয়ান বেশি বেশি হচ্ছে কিন্তু।
” তুমি ব্রেকফাস্ট করে নিও ঠিক টাইমে।আমি অফিসে গিয়ে সময় করে খেয়ে নিবো।

রিয়ান ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করতে করতে বললো। রিয়ান অফিসে বের হওয়ার সময় রোজ ঝিনুকের কপালে চুমু দিয়ে বের হয়।আজও ব্যাতিক্রম হলো না। রিয়ান বেরিয়ে যাবার পর ঝিনুক বাকি রান্না শেষ করে সব কাজ গুছিয়ে রুমে এলো। ওর সংসারের কাজ নিজে করতেই ভালো লাগে।যদিও এতে রিয়ানের আপত্তি আছে। এসব কাজ করার জন্য অনেক লোক আছে।দরকার হলে রিয়ান আরও লোক রাখবে।কিন্তু ঝিনুক রাজি নয়। ও রান্নাবান্না নিজেই করে। ঘরের জিনিসপত্র সে নিজেই ঘুছায়। সারাদিন বাসায় থেকে এটুকু সে করতেই পারে।

রুমে আসার পর ঝিনুকের সকালের কলটার কথা মনে পড়লো। কন্ঠটা ওর পরিচিত মনে হলো। এই কন্ঠটাতো অনেকটা আবিরের মতো। ওর কেন যেন মনে হচ্ছিলো ফোনের ওপাশের লোকটা আবির। কিন্তু এটা আবির কি করে হবে? কি ভাবছে এসব ঝিনুক। ফোনে তো অনেকেরই voice একইরকম মনে হয়। এক্ষেত্রেও হয়তো তাই হয়েছে।এটা নিছকই ঝিনুকের মনের ভুল। ঝিনুক ব্যপারটাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাচ্ছে। কিন্তু ঝিনুকের ওর অতীতের কথাগুলো বারবার মনে পড়ছিলো। এই অতীত কখনোই ওর পিছু ছাড়বে না।
সেসময়ই ঝিনুকের ফোনে কল আসে। ঝিনুক ফোন হাতে নিয়ে দেখলো ওর মা কল করেছে।

” আম্মু কেমন আছো তুমি?
” ভালো আছি।তুই কেমন আছিস? কি করছিস?
” বসে আছি আম্মু। তুমি কি অফিসে?
” হুম। রিয়ান বেরিয়ে গেছে?
” হ্যা আম্মু।
” আচ্ছা তোর ভয়েজটা কেমন যেন শুনাচ্ছে? সত্যিই ঠিক আছিস তো?কিছু হয়েছে? রিয়ান কিছু বলেছে?
” ঠিক আছি আম্মু। আমার কিছু হয়নি।আর রিয়ান আমাকে কখনো কিছু বলে না আম্মু।তুমি টেনশন করো না তো।
” আচ্ছা রিয়ানকে নিয়ে বাড়িতে আয়।ঘুরে যা।
” আসবো আম্মু। তুমি নিজের খেয়াল রেখো কেমন?
” হুম। আচ্ছা এখন রাখছি। মিটিং আছে। সাবধানে থাকিস তুই।
” হুম আম্মু।

ঝিনুক ফোনটা কান থেকে নামিয়ে মনে মনে ভাবলো মা গুলো এমন হয় কেন? না বলতেই বুঝে যায় সবকিছু। রিয়ান অফিস থেকে ফেরার পর ঝিনুক ওকে নিয়ে ওর মায়ের বাড়িতে আসে।ওর মনটা খুব অস্থির লাগছিলো।তাই মায়ের ওখানে আসে মনটাকে শান্ত করার জন্য।পরের দিন রিয়ানের অফিস অফ তাই ওরা রাতটা মায়ের ওখানেই রয়ে গেল। পরদিন রিয়ান ঝিনুককে নিয়ে বাসায় চলে আসে।

” ঝিনুক আগামীকালকের কথা মনে আছে তো?
” কি আছে আগামীকাল?
” ভুলে গেছো?আমার অফিসে যে পার্টি আছে? তোমার তো যাওয়ার কথা ছিলো।
” ওহ, মাথা থেকে বেরিয়েই গিয়েছিলো।
” তুমি তো সবই ভুলে যাও।কবে যে আমাকেই ভুলে যাবে,,
” রিয়ান,,,
” সরি সরি। তো কাল যাচ্ছো তো?
” জ্বি স্যার যাবো।

রিয়ান ঝিনুককে কাছে টেনে নিয়ে ঝিনুককে জড়িয়ে নেয়। ঝিনুকের কপালে কপাল ঠেকিয়ে ঝিনুকের নাকের সাথে নাক ঘষতে থাকে।

” তুমি যেতে রাজি হয়েছে তাতে আমি খুব খুশি ঝিনুক। কোনো পার্টি বা অনুষ্ঠানেই তো এটেন্ড করতে চাও না।
” আমার এতো হৈ হুল্লোড় ভালো লাগে না রিয়ান। তবে তোমাকে যেহেতু কথা দিয়েছি আমি যাবো।

ঝিনুক পরদিন বিকেলে রেডি হয়ে রিয়ানের অফিসে পৌঁছে যায়। বেশ বড় করেই পার্টি হচ্ছে।রিয়ানদের কম্পানি একটা বড় প্রফিট করায় সেই অনারে পার্টি। রিয়ান ঝিনুককে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। এর আগে ঝিনুক কখনো রিয়ানের অফিসে আসেনি। তাই রিয়ান ওর অফিসের সবার সাথেই পরিচয় করালো। ঝিনুক রিয়ানের কলিগদের সাথে কথা বলছিলো।

” ঝিনুক ইনি আবির আমার অফিসের নতুন সদস্য। সেদিন তুমি ওনার সাথেই কথা বলেছিলে।
ঝিনুক যখন আবিরকে দেখলো ওর হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো। ও ভীষণ ঘামতে শুরু করলো।
” আর আবির সাহেব she is my wife ঝিনুক।
” Nice to meet u madam.

বলেই আবির ঝিনুকের দিকে তাকাতেই আবিরও চমকে গেলো। আবিরও ঝিনুকের দিকে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো। ঝিনুকের ভীষণ অস্থির লাগছিলো। ওর মাথাটা ভীষণ ধরে গেছে। সাত বছর ধরে ও যেই অতীত থেকে পালিয়ে বেরাচ্ছে মনে প্রাণে চাইছে সব ভুলে যেত আজ সেই অতীতই এভাবে ওর সামনে এসে দাঁড়াবে ও বুঝতেই পারেনি। ঝিনুক টেবিলের চেয়ার টেনে বসে পড়লো। চারদিকে সবাই বেশ আমোদেই আছে। গান, হৈ হুল্লোড় কিছুই ঝিনুকের কানে যাচ্ছে না। ও এখন বর্তমানে নেই। ওর অতীতের স্মৃতিগুলো একে একে চোখের সামনে ভেসে উঠছে। ঝিনুক বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। বেশ উচ্চবিত্ত পরিবারেই জন্ম হয়েছে ঝিনুকের। ঝিনুক যখন সবেমাত্র ক্লাস টেন এ পড়ে তখনই ওর বাবা মারা যান। তখন ঝিনুকের দ্বায়িত্ব ওদের বিজনেস এর দ্বায়িত্ব ঝিনুকের মায়ের কাধেই এসে পড়ে। ঝিনুকের মা আগে থেকেই বিজনেস এর সাথে জড়িত ছিলেন তাই ওনার তেমন কোনো সমস্যা হয়নি সব সামলাতে।

ঝিনুক ইন্টারে ভর্তি হওয়ার পর পরিচয় হয় আবিরের সাথে। ঝিনুকের এক ফ্রেন্ডের কাজিন আবির। ঝিনুকের ফ্রেন্ডের বোনের বিয়েতে আলাপ হয় ওদের। আবির তখন অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।আবিরের পরিবারটা মধ্যবিত্ত।ওদের কথা বলে ভালো লাগে দুজন দুজনকে। ফোন নাম্বার আদানপ্রদান হয় ওদের। নিয়মিত কথা হতে হতে এক পর্যায়ে বন্ধুত্ব। তারপর সে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমের দিকে।

ভালোই চলছিলো ওদের রিলেশন। ওদের সম্পর্কের দুবছরের মাথায় ঝিনুকের মা ওদের রিলেশন এর কথা জানতে পারেন। কিন্তু ওনি কিছুতেই সম্পর্ক মেনে নেননি। ঝিনুকের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেন যাতে ঝিনুক আবিরের সাথে যোগাযোগ করতে না পারে।ঝিনুককে অনেক বুঝান যে আবির ওর জন্য পার্ফেক্ট না। ও আবিরের সাথে ভালো থাকবে না। কিন্তু ঝিনুক কিছুতেই সেসব মানতে রাজি হচ্ছিলো। ঝিনুক তখন ঢাকার নামকরা একটা পাবলিক ভার্সিটিতে অনার্স এ চান্স পায়। ও ভর্তিও হয়। ঝিনুক ওর মাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে।কিন্তু লাভ হয়নি।

ওনি কিছুতেই ঝিনুককে আবিরের হাতে দেবেন না। ঝিনুক তখন ওর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। মায়ের সাথে জেদ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। বিয়ে করে নেয় আবিরকে। আবির তখন অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে পড়ার পাশাপাশি একটা প্রাইভেট সেক্টরে জব নিয়েছে। আবিরের সাথে বিয়ে হওয়ার পর ঝিনুকের জীবনটাই বদলে যায়।ঝিনুক কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারে ওর শাশুড়ি ননদ ওকে মন থেকে মানে নি। ঝিনুকের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ঝিনুকের শাশুড়ি স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ঝিনুকের ভার্সিটি যাওয়া হবে না। আবির যা খরচ দেয় তাতে সংসার চালিয়ে আবার ওর পড়াশোনা করানো সম্ভব না।তারওপর ও ঘরের বউ।ওর পড়াশোনার দরকার নেই। ঝিনুক মেনে নিলো।

ঝিনুকের খাপ খাওয়াতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো।ওর লাইফ স্টাইলের সাথে আবিরদের লাইফস্টাইল মিলে না।তবে ঝিনুক আপ্রাণ চেষ্টা করলো মানিয়ে নেওয়ার। ঝিনুক বাড়িতে কোনো কাজ করেনি।অথচ এখানে প্রায় সবকাজই ওকে করতে হয়। আবার পান থেকে চুন খসলেই ওর শাশুড়ির হাজারটা কথা শুনতে হয়। ঝিনুককে প্রতিনিয়ত মানসিক টর্চার করতো ওর শাশুড়ি ননদ। ঝিনুক তাও চুপচাপ সব সহ্য করে নিচ্ছিলো এই আশায় যে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। আবিরের দিকে তাকিয়ে ঝিনুক নিজেকে এই পরিবেশে অভ্যস্ত করে নিচ্ছিলো। সারাদিন এতো খারাপ লাগার ভীড়েও রাতে আবিরের বুকে শুয়ে ঝিনুক যেন সব ভুলে যেতো। প্রথম প্রথম আবির ঝিনুককে সাপোর্ট করতো। মাকে বুঝাতো ঝিনুকের সাথে খারাপ ব্যবহার না করতে। কিন্তু আবিরও কেমন যেন পরিবর্তন হওয়া শুরু করলো। আগে ওর মায়ের অহেতুক প্রলাপের পাল্টা জবাব দিলেও আস্তে আস্তে সেটা কমে আসছে।

এখন সেই কথা শুনাতে শুরু করে ঝিনুককে। ঝিনুক আবিরের কাছে ওর মায়ের কথা কিছু বললেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠতো। উঠতে বসতে কথা শুনাতে শুরু করে সেও। আবিরের এমন পরিবর্তনে ঝিনুক পুরোই হতবাক। সারাক্ষণ ওর শাশুড়ি আর ননদের হাজারটা কথা ঝিনুক সহ্য করে নিতে পারলেও আবিরের ঠুনকো কারণে শুনানো কথাগুলো ও সহ্য করতে পারতো না। খুব কষ্ট হতো ওর। আবির ক্রমাগত পরিবর্তন হতেই থাকলো। একপর্যায়ে ঝিনুকের গায়ে হাতও তোলা শুরু করে। সামান্য কোনো কারনেই ঝিনুকের গায়ে হাত তুলতো আবির। চেনা মানুষের এমন অচেনা রূপ ঝিনুক কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। ওর ওপর মানসিক আর শারীরিক অত্যাচার সমান তালেই চলতে থাকে। ঝিনুকের গায়ে ওর বাবা মা হাত তুলবে তো দূরের কথা জোরে ধমকও দেয়নি কখনো।

অথচ আজ ওকে প্রায়ই মার খেতে হচ্ছে। আবির দিনে দিনে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠে। ঝিনুক ভেবেই পায়না এই মানুষটা ওকে ভালোবাসতো?এই মানুষের হাত ধরে বেরিয়ে এসেছিলো? এই মানুষটাকে ভালোবেসে ও এতো বিলাসিতা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলো? এই মানুষটার জন্য মাকে কষ্ট দিলো? ওর মা ঠিকই বলেছিলো। আবির ওর জন্য পারফেক্ট নয়। ঝিনুকের ওপর অত্যাচারের পরিমাণ বাড়তেই থাকলো। আবির অফিস থেকে ফিরলেই ওর মা বোন ওকে ঝিনুকের নামে নানা মন গড়া গল্প শুনাতো।আর আবির সেসব বিশ্বাস করে ঝিনুকের ওপর চড়াও হতো। ঝিনুক বুঝতে পেরেছিলো ও কতো বড় ভুল করেছে। একটা Higher educated মানুষ এতোটা নিচু মেন্টালিটির মানুষ কেমন করে হয় ঝিনুক ভাবতেই পারেনা।

এ বাড়িতে শুধু একজন মানুষই ঝিনুকের ফেভারে ছিলো।সেটা হলো আবিরের বাবা। যদিও আবিরের মা বা আবিরের সাথে তিনি পেরে উঠতেন না তবুও যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন ঝিনুককে বাঁচাতে। ঝিনুককে এতোটা অত্যাচারিত হতে দেখে ওনিও সহ্য করতে পারছিলেন না। ঝিনুককে বারবার বলতেন এখান থেকে চলে যেতে। এখানে থাকলে ও বাঁচবে না। কিন্তু ঝিনুক ভাবতো কি করে ফিরবে ও।কোন মুখে ফিরবে।আম্মুর কাছে কেমন করে যাবে? আম্মুর কথা অমান্য করে এই অমানুষটার হাত ধরেছিলো।এখন আম্মুর সামনে কোন মুখেই বা দাঁড়াবে?

ঝিনুক সব মুখ বুজে সহ্য করছিলো। ও ভাবতো হয়তো একদিন আবির ওর ভুলটা বুঝতে পারবে। আবার ওকে আগের মতো ভালোবাসবে। আর আবির প্রতি ওর একটা সফট কর্নার তো আছেই। এই মানুষটাকে যে সে ভালোবেসেছে।কি করে ছেড়ে যেতে পারে? কিন্তু আবিরের তো সেসব মনে হতো না। ঝিনুককে কেন যেন ওর সহ্যই হতো না। তারওপর ওর মনে বিষ ঢালবার জন্য ওর মা তো আছেনই। একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়েকে এতোটা কষ্ট কি করে দিতে পারে ঝিনুক আজও ভেবে পায়না।

আবির একদিন ঝিনুককে খুব মারলো। রুমের দরজা বন্ধ করে ঝিনুককে ওর বেল্ট দিয়ে আঘাত করলো। সেদিন আবির যেন একদম নরপিশাচ হয়ে গেছিলো ঝিনুকের আর্তনাদ ওকে একটুও টলাতে পারেনি। সেদিনের অত্যাচারটা ঝিনুকের নরম শরীর নিতে পারেনি। ঝিনুক সেন্সলেস হয়ে যায়। আবিরের রাগ যখন কমে গেল তখন ও খুব ভয় পেয়ে যায়। ঝিনুকের আবার কিছু হয়ে যাবে না তো? ঝিনুকের কিছু হয়ে গেল ও কি করবে? রাগের মাথায় ঝিনুককে বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলেছে ও।এদিকে আবিরের মা ও ভীষণ ভয় পেয়ে যায়।ঝিনুকের যদি ভালোমন্দ কিছু হয়ে যায় তাহলে তো ওরা ফেঁসে যাবে। তাই ঝিনুককে তাড়াতাড়ি হসপিটালাইজড করা হলো।

ঝিনুকের শরীর দুর্বল ছিলো। শারীরিক আর মানসিক অত্যাচারে ও ডিপ্রেশনে ভুগছিলো। তাই ওর কন্ডিশন ভালো ছিলো না। দুদিন তো সেন্সই ছিলো না। এবার আর চুপ করে থাকে নি আবিরের বাবা।মেয়েটার এই অবস্থা ওনি আর নিতে পারছিলেন না। ঝিনুকের মাকে ফোন করে ব্যপারটা জানালেন। ঝিনুক মায়ের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখলেও ঝিনুকের মা মেয়ের দিক থেকে মুখ ফেরান নি। ছুটে এসেছিলেন হাসপাতালে। এমনিতে ঝিনুকের মা stronge মানুষ।তবে ঝিনুকের এমন অবস্থা দেখে ওনার চোখেও জল চলে এসেছিলো।ঝিনুককে ঢাকায় একটা ভালো হসপিটালে শিফট করালেন। ঝিনুককে আর এই নরকে ফিরতে দেননি তিনি।ঝিনুকও ফিরতে চায়নি। ঘৃণা ধরে গেছে ওর এই সংসারের প্রতি। আবিরের প্রতি। বিয়ের সাত মাসের মাথায় ডিভোর্স হয় ঝিনুক আর আবিরের। তবে ঝিনুক মেন্টালি ডিপ্রেশড হয়ে যায়। আকড়ে ধরে ওর মাকে। ঝিনুককে কাউন্সিলিং এ রাখা হয়। আস্তে আস্তে ঝিনুক বেরিয়ে আসে ডিপ্রেশন থেকে।

ঝিনুককে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়া পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওর মামা মামির কাছে। ঝিনুক সেখান থেকেই ওর স্টাডি শেষ করে। ওর বাংলাদেশের একটা মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিতে জব হওয়ায় দেশে ফিরে আসে ৫ বছর পর। ওর মা ওকে অনেকবার বলেছিলো ওদের অফিস জয়েন করতে।কিন্তু ঝিনুক নিজে কিছু করতে চায়।তাই ও সেই কম্পানিতেই জব করে। ফেরার কিছুদিন পরই ঝিনুকের মা ওকে বিয়ে করে লাইফ settled করার কথা বলে। কিন্তু ঝিনুকের বিয়ে সংসার থেকে মন উঠে গেছে অনেক আগেই। ও রাজি হয়না। ওর মা ও ছাড়ার পাত্রী না। অবশেষে ঝিনুককে রাজি করিয়েই নেয় বিয়ের জন্য।ছেলে ওনার বান্ধবী ছেলে রিয়ান। পড়াশোনা শেষ করে ফ্যামিলি বিজনেস জয়েন করেছে। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে সে। তবে ঝিনুক ওর মাকে বলে ওর অতীত সম্পর্কে সব জানাতে ওদের। ও ওর অতীত হাইড রেখে কারও জীবনে যেতে চায়না।

” আম্মু আমি একবার রিয়ানের সাথে কথা বলতে চাই।
” কেন?
” আমি ওনাকে ঠকাতে পারবো না মা। ওনার সবটা জানা দরকার। আমি আমার অতীত হাইড করে নতুন জীবন শুরু করতে চাই না।পরে এটা জানাজানি হলে আরও অশান্তি হবে।

” তোকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না। আমার ওপর ছেড়ে দে পুরো ব্যপারটা। তুই আগ বাড়িয়ে কিছু করতে যাস না। আমি যা করবো তোর ভালোর জন্যই করবো। তুই শুধু বিয়ের প্রিপেয়ার হ। ঝিনুক আর মায়ের ওপর কথা বলেনি। মায়ের কথা শুনে একবার ও ঠকে গেছে।এবার আর মায়ের বিরুদ্ধে যাবে না সে। মা যা ভালো বুঝে তা ই করুক। রিয়ানের সাথে বিয়ে হয় ঝিনুকের। বিয়ের রাতে ঝিনুক ভেবেছিলে ব্যপারটা রিয়ানকে বলবে।

” আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
” আগে আমার কথাগুলো শোনো, আজ থেকে আমাদের নতুন জীবন শুরু হয়েছে।

নতুনভাবেই সব হবে। পুরনো কিছু আমাদের স্পর্শ করবে না। আজ রাতটা আমরা গল্প করে কাটাবো। নতুন জীবনের গল্প। আমরা বাকি সময়গুলো কিভাবে কাটাবো, তোমার পছন্দ অপছন্দ, ভালো লাগা মন্দ লাগা,আমাদের সংসার কিভাবে গুছাবো এসবই হবে গল্পের টপিক।অন্যকিছু না। আর যা বলতে চাও অন্য কোনদিন বলো আজ না। আজ রাতটা খুব স্পেশাল। তাই আমি আমার ইচ্ছে অনুযায়ী সাজাবো রাতটা।

সেরাতে আর ঝিনুকের বলা হলো না কথাগুলো। এদিকে ঝিনুকের মনে ব্যপারটা খচখচ করতো। রিয়ানকে পেয়ে ঝিনুক আমোল পরিবর্তন হয়ে যায়। রিয়ানের ভালোবাসা ওকে নতুন পথের দিশা দিয়েছে। সংসার নিয়ে ওর মনে যে বিরক্তি ছিলো সেটা দূর হয়ে যায়। ঝিনুক এই জীবনটার লোভে পড়ে যায়। রিয়ানের ওর প্রতি কেয়ারিংগুলো, রিয়ানের ওর প্রতি ভালোবাসা,দায়িত্ববোধ দেখে ঝিনুক মুগ্ধ হতো। ঝিনুকও নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসে রিয়ানকে। বিয়ের পর রিয়ান ঝিনুককে চাকরি থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

খুব ভালোই চলছিলো ওদের সংসার।তবে কোথাও যেন একটা খরাপ লাগা কাজ করতো।ওর মনে ও রিয়ানকে ঠকাচ্ছে না তো? ওর অতীতটা জানার পর কি রিয়ান এভাবেই ওকে ভালোবাসবে? রিয়ান যদি ভুল বুঝে ওকে।যদি দূরে চলে যায়। এ ভেবে ঝিনুক আর রিয়ানকে ব্যপারটা জানায় না। আবার কখনো ভাবে রিয়ানকে বলেই দিবে। রিয়ান ওকে অনেক ভালোবাসে।নিশ্চয় ওকে ভুল বুঝবে না। মনে সাহস জুগিয়ে দূ একবার বলতে চেয়েও শেষ অব্দি আর বলা হয়না। রিয়ানকে হারানোর ভয়টা শেষ মুহুর্তে ওকে চেপে ধরে। তাই বিয়ের দেড় বছরেও ঝিনুক রিয়ানকে বলতে পারেনি ঝিনুক।ঝিনুকের মা ও ওকে নিষেধ করেছেন এ ব্যপারে রিয়ানের সাথে কথা বলতে। তাই ঝিনুক ওর অতীত থেকে মুক্তিও পাচ্ছে না। এক অজানা ভয় সবসময়ই প্যারা দিচ্ছে ওকে।

” ঝিনুক এভাবে বসে আছো কেন? কি ভাবছো? রিয়ানের কথায় ঝিনুকের ভাবনায় ছেদ পড়ে।
” কিছু না। আমি বাসায় যাবো রিয়ান।
” কেনো? পার্টি তো এখনও শেষ হয়নি।
” আমার শরীরটা ভালো লাগছে না রিয়ান। মাথাটা ভীষন ধরেছে।
” সে কি,, চলো তাহলে,, আগে বলবে তো।
” তুমি কোথায় যাবে? তোমার অফিসে পার্টি তুমি না থাকলে হবে? তোমার যাওয়ার দরকার নেই। গাড়ি তো আছেই। আমি ঠিক চলে যেতে পারবো। তুমি ড্রাইভার কে গাড়ি বের করতে বলো।

” তুমি একা যাবে? আমিও যাই চলো।
” আমি যেতে পারবো রিয়ান। তোমার এখানে থাকাটা দরকার।
” শিউর তুমি?
” হ্যা।
” আচ্ছা চলো আমি গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি।আমিও তাড়াতাড়িই ফিরবো।আর তোমার কোনো সমস্যা হলে কিন্তু আমাকে অবশ্যই কল করবে।
” ওকে। ঝিনুক বেরিয়ে আসার সময় আবিরের সাথে চোখাচোখি হলো। ঝিনুক তৎক্ষণাৎ চোখ নামিয়ে বেরিয়ে এলো।

আবিরের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে ঝিনুকের স্বাভাবিক জীবনটা কেমন যেন অস্বাভাবিক হয়ে গেলো। ঝিনুকের কিছুই ভালো লাগতো না। ও ভীষন টেনশনে থাকতো। রিয়ানের চোখে চোখ রাখতো না। রিয়ানের কাছে খুব একটা যেতো না। কেমন যেন উদাসীন থাকতো।কি যেন ভাবতো। রিয়ান বেশ কদিন যাবত ঝিনুকের পরিবর্তন টা লক্ষ্য করে। রিয়ান একদিন অফিস থেকে ফেরার পর ঝিনুককে কফি দিতে বলেছিলো। কিন্তু ঝিনুক আবিরের কথা ভাবতে ভাবতে বেমালুম ভুলে যায়। রিয়ান ফ্রেস হয়ে বের হয়ে দেখলো ঝিনুক জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে বাইরে উদাস চোখে তাকিয়ে আছে। রিয়ান আগে কখনও ঝিনুককে এতোটা অন্যমনস্ক হতে দেখেনি। রিয়ান ঝিনুকের কাধে হাত রাখে।রিয়ানের স্পর্শে ঘোর কাটে ঝিনুকের। ও রিয়ানের দিকে ফিরে তাকায়।

” তোমার কি হয়েছে বলো তো ঝিনুক?
” কি আবার হবে? কিছু হয়নিতো।
” কিছু না হলে তুমি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারছো না কেন? আমি বেশ কদিন যাবতই লক্ষ্য করছি তুমি কেমন যেন হয়ে গেছো। কোনোদিকে খেয়াল নাই তোমার। আমি যে কফি চেয়েছিলাম সেটাও ভুলে গেছো।

” ওহ হ্যা,, সরি। আমি একদম ভুলেই গিয়েছিলাম।আমি কফি নিয়ে আসছি এখনই। ঝিনুক পা বাড়াতেই রিয়ান ওর হাত ধরে ফেলে।

” আমার কফি লাগবে না। তোমার কি হয়েছে সেটা বলো। তোমাকে এভাবে দেখতে আমার একদমই ভালো লাগছে না।
” আমার কিছু হয়নি তো।
” তোমার চোখ কিন্তু জানান দিচ্ছে তুমি মিথ্যে বলছো। বলোনা কি হয়েছে তোমার। এমন চুপচাপ হয়ে গেছো কেন তুমি? কি ভাবো সারাক্ষণ। প্লিজ বলো।

” রিয়ান তুমি আমায় ভুল বুঝবে না তো?
” আমি তোমাকে ভুল বুঝবো কেন?
” আমি তোমার কাছে কিছু কথা লুকিয়েছি। তোমাকে কথাগুলো আগেই বলা উচিত ছিলো।কিন্তু সাহস হয়ে উঠেনি।তোমাকে হারানোর ভয়টা ঝেকে বসেছিলো মাথায়।
” কি কথা? বলো।
” রিয়ান তোমার সাথে বিয়ে হওয়ার আগে আমার একটা অতীত ছিলো। যেটা তুমি জানো না।
” তোমার আগে একটা বিয়ে হয়েছিলো সেটাই তো? ঝিনুক রিয়ানের দিকে অবাক হয়ে তাকালো।তারমানে রিয়ান জানে?

” তুমি জানো?
” হুম জানি। তোমার সম্পর্কে সবকিছু না জেনেই তোমাকে বিয়ে করিনি আমি। সবই জানি আমি। তুমি এই কারণেই এতো হেজিটেড এ ভুগতে? come on ঝিনুক এই ব্যপারটা নিয়ে এতো হেজিটেড করার কিছু নেই। ওটা তোমার একটা ভুল ছিলো।অল্প বয়সে করা আবেগী ভুল। ভুল তো মানুষই করে।শুধরাতেও হয় মানুষকেই।তুমিও তো সেই ভুলটাকে টেক ওভার করে এসেছো।

নিজের কতো ভালো একটা ক্যারিয়ার গড়েছো। আর সেই ঘটনাটায় তো তোমার কোনো দোষ ছিলো না। তুমি তো ভালোবেসেই হাত ধরেছিলে তার।ও তোমার ভালোবাসার মূল্য বুঝতে পারেনি।সেটা ওর ফল্ট। তোমার নয়। আমি যদি আগেই ঘটনাটা না জেনে আজ জানতাম তবুও আমি তোমাকে ভুল বুঝতাম না। কারন তুমি কোনো ভুল করোনি। ঝিনুকের চোখে ততোক্ষণে জল চলে এসেছে। রিয়ানের মতো মানুষকে পেয়ে ও সত্যিই ধন্য।

” এই মেয়ে কাঁদছো কেন? তোমাকে বলেছিলাম না কখনো কাঁদবে না। আমি সহ্য করতে পারিনা। রিয়ান ঝিনুকের চোখের জল মুছে দিয়ে বললো।

” তুমি তো আমার চেয়ে বেস্ট কাউকে ডিজার্ভ করো রিয়ান।তুমি চাইলেই বেস্ট কাউকে বিয়ে করতে পারতে।
” চুপ। আমার জন্য তুমিই বেস্ট। আমি জানতাম তুমি ভালোবাসার মূল্য দিতে জানো। কিন্তু ঝিনুক বিয়ের পরও তোমাকে কখনো এতোটা চিন্তিত দেখিনি। তুমি এতোটা ভয় পেয়ে আছো কেন? Anything wrong?

” তুমি সবই জানো রিয়ান।কিন্তু এটা জানো না তোমার অফিসের নতুন কলিগ আমার Ex husband.
” what? You mean আবির?
” হুম।
” ওহ এই ব্যপার।এইজন্যই পার্টিতে যাওয়ার পর থেকে তুমি এমন বিচলিত হয়ে আছো।
” আমি আবিরকে দেখে ভয় পেয়েছিলাম।আমার মনে হচ্ছিলো আবির যদি তোমাকে আমাদের ব্যপারে বলতো তুমি হয়তো আমায় ভুল বুঝতে রাগ করতে। তুমি হয়তো ভাবতে আমি তোমাকে ঠকিয়েছি। আমার থেকে দূরে চলে যেতে।

” ধূর পাগলি, কি যে বলো। আমি তোমাকে ভালোবাসি।এতো সহজেই তোমাকে ভুল বুঝবো সেটা হয়না কি? আর আজ তোমাকে একটা সিক্রেট বলছি আমি তোমাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসতাম। তোমার বিয়ের আগেই।
তুমি বাইরে থেকে ফিরে আসার পর আন্টিকে বিয়ের প্রোপোজাল আমি নিজেই দিয়েছিলাম। আর তোমাকে কিনা আমি ভুল বুঝবো? আর আবিরের ব্যপারটা আমি দেখছি।ও সবেমাত্র জয়েন করেছে এখনই ওকে ট্রান্সফার করা যাবে না। কিছুদিন যাক তারপর ওকে আমি আমাদের অন্য ব্রান্চে শিফট করে দিবো। ও তোমার আশেপাশে থাকবে না। চিন্তা করো না। আর এসব মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেলে দাও। আর পিছনে ফিরে তাকিও না। সব ভুলে যাও। আর কখনো অতীত নিয়ে মন খারাপ করবে না। এখন শুধু বর্তমান আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাববে। আমাদের মধ্যে আর কারও কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।বুঝলে ম্যাডাম। ঝিনুক রিয়ানকে জড়িয়ে ধরে।

” আই লাভ ইউ রিয়ান। রিয়ান ঝিনুকের কপালে চুমু একে দিলো। শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ঝিনুককে। ঝিনুক রিয়ানের বুকে মাথা রেখে চুপটি মেরে রইলো। রিয়ানের বুকে ঝিনুক এক অদ্ভুত শান্তি অনুভব করে ঝিনুক।তবে আজ ওর মনটা একটু বেশিই শান্ত। অবশেষে সেই ভয়ংকর অতীত থেকে মুক্তি পেয়েছে ও। ওর আর এসব ভেবে মন খারাপ করতে হবে না।ভয় পেতে হবে না। সত্যি মা ওর জন্য অসাধারণ একটা মানুষ পছন্দ করেছে। ওর জীবনের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছি মানুষটা। ঝিনুক এভাবেই সারাটি জীবন ওর বুকেই থাকতে চায়। সৃষ্টিকর্তা যেন এভাবেই সারাজীবন রাখে ওদেরকে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত